Masadir Book

Go Back
Book Id: 10160

বাইবেল- পুরানো ইচ্ছাপত্র

Chapter: 26, এজেকিয়েল / Ezekiel

26-Ezekiel 1:1 : আমি যাজক বুষির পুত্র যিহিষ্কেল। আমি কবার নদী তীরে বাবিলে নির্বাসনে ছিলাম। সে সময় আকাশ খুলে গিয়েছিল এবং আমি ঈশ্বরীয দর্শন পেয়েছিলাম।এটা ছিল ত্রিশতম বছরের চতুর্থ মাসের পঞ্চম দিন। যিহোয়াখীন রাজার রাজত্বের সময় নির্বাসনের পঞ্চম বছরের ঐ মাসের পঞ্চম দিনে প্রভুর এই কথাগুলি যিহিষ্কেলের কাছে এসেছিল। প্রভুর ক্ষমতাও ঐ জায়গায় তার ওপর এল।
26-Ezekiel 1:2 : -
26-Ezekiel 1:3 : -
26-Ezekiel 1:4 : আমি (যিহিষ্কেল) দেখলাম উত্তর দিক থেকে একটা বড় ঝড় আসছে। জোরালো বাতাসের সঙ্গে এক বড় মেঘ, মেঘের মধ্যে থেকে আগুন ঝলসে উঠছিল। তার চারদিকে আলো চমকাচ্ছিল; মনে হচ্ছিল যেন উত্তপ্ত ধাতু আগুনে জ্বলছে।
26-Ezekiel 1:5 : মেঘের মধ্যে ছিল চারটি পশু যাদের মানুষের মত রূপ।
26-Ezekiel 1:6 : প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল।
26-Ezekiel 1:7 : তাদের পাগুলো সোজা, দেখতে যেন গরুর পায়ের মত। আর তা পালিশ করা পিতলের মত চকচক করছিল।
26-Ezekiel 1:8 : তাদের পাখার তলায় মানুষের হাত ছিল। চারটি পশুর প্রত্যেকের চারটি করে মুখ ও চারটি করে ডানা ছিল। ডানাগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
26-Ezekiel 1:9 : যাবার সময় সেই পশুরা পিছন ফেরেনি। তারা সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।
26-Ezekiel 1:10 : প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ ছিল। প্রত্যেকের সামনের মুখটা ছিল মানুষের মুখের মত, ডানদিকের মুখটা ছিল সিংহের মত, বাম দিকের মুখটা ছিল গরুর মত, আর পিছনের মুখটা ঈগলের মত।
26-Ezekiel 1:11 : পশুগুলির ডানা তাদের উপর ছড়িয়ে ছিল। প্রত্যেক পশু অপর পশুকে স্পর্শ করার জন্য দুটি করে ডানা বাড়িয়ে রেখেছিল। আর অন্য দুটি ডানা দিয়ে নিজের দেহ ঢেকে রেখেছিল।
26-Ezekiel 1:12 : প্রত্যেক পশু যে দিকে দেখছে সেই দিকেই যাচ্ছিল। আর বাতাস যে দিকে তাদের উড়িযে নিয়ে যাচ্ছিল শুধু সেই দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু চলার সময় তারা যে দিকে যেত সেই দিকে তাকাচ্ছিল না।
26-Ezekiel 1:13 : পশুগুলো দেখতে একই রকম ছিল।পশুদের মধ্যবর্তী স্থানটি দেখতে আগুনে জ্বলা কযলার আভার মত লাগছিল। এই ছোট ছোট মশালের মত আগুনগুলো পশুদের মধ্য দিয়ে তাদের চারি দিকে ঘুরছিল। আগুন উজ্জ্বল ভাবে জ্বলছিল আর তার থেকে বিদ্য়ুত চমকাচ্ছিল!
26-Ezekiel 1:14 : সেই সব পশুরা সামনে পেছনে বিদ্য়ুতের মত দৌড়চ্ছিল!
26-Ezekiel 1:15 : আমি পশুদের দিকে তাকালাম এবং সেই সময় আমি দেখলাম চারটি চাকা মাটি স্পর্শ করে রয়েছে। প্রত্যেক পশুর একটি করে চাকা ছিল। প্রত্যেকটা চাকা দেখতে একই রকম, দেখে মনে হচ্ছিল যেন স্বচ্ছ হলুদ রঙের কোন অলঙ্কার থেকে তৈরী। দেখে মনে হচ্ছিল যেন চাকার ভেতরে চাকা রয়েছে।
26-Ezekiel 1:16 : -
26-Ezekiel 1:17 : চাকাগুলি যে কোনো দিকে যাবার জন্য ঘুরতে পারত, কিন্তু চলবার সময় চাকাগুলো তাদের দিক্ পরিবর্ত্তন করেনি।
26-Ezekiel 1:18 : চাকার ধারগুলো ছিল লম্বা এবং ভয়ঙ্কর! চার চাকার ধার ছিল চোখে পূর্ণ।
26-Ezekiel 1:19 : চাকাগুলি সব সময় পশুদের সঙ্গেই যাচ্ছিল। পশুরা আকাশে গেলে চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল।
26-Ezekiel 1:20 : বাতাস যেখানে তাদের নিয়ে যেতে চাইছিল তারা সেখানেই যাচ্ছিল, আর চাকাগুলোও তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। কারণ চাকার মধ্যে পশুগুলোর আত্মা ছিল।
26-Ezekiel 1:21 : তাই পশুরা চললে চাকাগুলোও চলছিল, থামলে চাকাগুলোও থামছিল। চাকাগুলো শূন্যে গেলে পশুরাও তাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। কারণ চাকাগুলির মধ্যেই বাতাস ছিল।
26-Ezekiel 1:22 : পশুগুলির মাথার ওপর খুব আশ্চর্য় কোন একটা জিনিস ছিল। সেটা ছিল ওলটানো এক পাত্রের মত কোন একটা জিনিষ আর সেই ওলটানো পাত্র ছিল স্ূফুটিকের মতো স্বচ্ছ।
26-Ezekiel 1:23 : এই পাত্রের ঠিক নীচেই একটি পশুর ডানাসমূহ পরবর্তী পশুকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছিল। দুটি ডানা এক দিকে ছড়িয়ে থাকছিল আর অন্য দুটি অন্যদিকে ছড়িয়ে দেহকে ঢেকে রেখেছিল।
26-Ezekiel 1:24 : তারপর আমি ঐ ডানাগুলোর শব্দ শুনলাম। প্রত্যেকবার ভ্রমণের সময় পশুদের ঐ ডানাগুলো খুব জোরে শব্দ করত, যেন একটি বিশাল জলপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের শব্দের মতোই উচ্চ ছিল। সেটা সৈন্যদলের আওয়াজের মত জোর ছিল। আর চলা শেষ হলে পশুগুলো তাদের ডানাগুলো নামিয়ে দিচ্ছিল।
26-Ezekiel 1:25 : পশুরা চলা বন্ধ করে তাদের ডানাগুলো নামাল। তারপর আরেকটি শব্দটি শোনা গেল; ঐ শব্দ তাদের মাথার ওপরের পাত্র থেকে এসেছিল।
26-Ezekiel 1:26 : সেই পাত্রের ওপরে সিংহাসনের মত একটা কিছু যেন দেখা গেল। আর তা ছিল নীলকান্ত মণির মত নীল। সেই সিংহাসনে মানুষের মত এক জনকে বসে থাকতে দেখা গেল!
26-Ezekiel 1:27 : আমি তার কোমরের ওপরটা দেখতে পেলাম। তাকে দেখতে যেন গরম ধাতুর মত, যেন তার চারিদিকে আগুন! আর আমি তার কোমরের নীচেও তাকালাম, দেখলাম তার চারিদিকে তাপযুক্ত আগুন।
26-Ezekiel 1:28 : তার চারি দিকের জাজ্বল্যমান আলো ছিল মেঘের মধ্যে একটি ধনুর মত। যেটা প্রভুর মাহাত্ব্য়ের চিত্র। আমি তা দেখামাত্র মাটিতে পড়ে প্রণাম করলাম। তারপর শুনলাম একটি শব্দ আমায় কিছু বলছে।
26-Ezekiel 2:1 : সেই শব্দটি আমায় বলল, “মনুষ্যসন্তান,উঠে দাঁড়াও, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব।”
26-Ezekiel 2:2 : যে সময় তিনি আমার সঙ্গে কথা বললেন, তখন আত্মা আমাতে প্রবেশ করে আমাকে আমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড় করালো, তখন আমি তাঁকে আমার সঙ্গে কথা বলতে শুনতে পেলাম।
26-Ezekiel 2:3 : তিনি আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে কথা বলতে পাঠাচ্ছি। ঐ লোকেরা বহুবার আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তাদের পূর্বপুরুষরাও আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তারা আমার বিরুদ্ধে বহুবার পাপ করেছে। আর আজও আমার বিরুদ্ধে পাপ করে চলেছে।
26-Ezekiel 2:4 : আমি তোমাকে ঐ লোকদের কাছে কথা বলতে পাঠাচ্ছি। ওরা খুব একগুঁযে কঠিন মনা। কিন্তু তুমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে কথা বল। বলবে, ‘প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।’
26-Ezekiel 2:5 : তারা বিদ্রোহী, কিন্তু তারা তোমার কথা শুনুক বা না শুনুক, তোমাকে অবশ্যই ওদের কাছে ওগুলো বলতে হবে যাতে তারা জানতে পারে যে তাদের মধ্যে এক জন ভাব্বাদী বাস করছে।
26-Ezekiel 2:6 : “মনুষ্যসন্তান, ঐসব লোকদের ভয় পেও না। যদি মনে হয় তুমি কাঁটাঝোপ, কাঁটা এবং কাঁকড়া বিছের ষ্ঠারা ঘিরে রয়েছ তাও তারা যা বলে তাতে ভয় পেও না। এটা সত্যি যে তারা তোমার বিরুদ্ধে যাবে এবং তোমায় আঘাত করতে চেষ্টা করবে। তারা তোমার কাছে কাঁটার মতো মনে হবে। তোমার মনে হবে যেন তুমি কাঁকড়া বিছের মধ্যে বাস করছ। কিন্তু তাদের কথায় ভয় পেও না। তারা বিদ্রোহী। তাদের মুখ দেখে ভয় পেও না।
26-Ezekiel 2:7 : আমি যা বলি তা তুমি অবশ্যই তাদের বলবে। আমি জানি তারা তোমার কথা শুনবে না। তারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করাও ছাড়বে না! কারণ তারা বিদ্রোহী বংশ।
26-Ezekiel 2:8 : “মনুষ্যসন্তান, আমি যা বলি তা অবশ্যই শোন। ঐ বিদ্রোহীদের মত আমার বিরুদ্ধে উঠো না। তোমার মুখ খোল এবং আমি যে বাক্য দিচ্ছি তা গ্রহণ কর, তারপর তা লোকদের বল। এই বাক্যগুলি ভোজন কর।”
26-Ezekiel 2:9 : এখন আমি (যিহিষ্কেল) দেখলাম একটা হাত আমার দিকে এগিয়ে আসছে। সেই হাতে একটা বাক্য লেখা গোটানো পুঁথি ছিল।
26-Ezekiel 2:10 : আমি যাতে পড়তে পারি তার জন্য ঐ হাতটি গোটানো পুঁথিটি খুলে ধরল। আমি সামনে এবং পেছনের লেখা দেখলাম। তাতে ছিল বিভিন্ন ধরণের দুঃখের গান, দুঃখের গল্প ও সাবধান বাণীসমূহ।
26-Ezekiel 3:1 : ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, যা দেখছ খাও। এই গোটানো পুঁথি ভোজন কর, এবং এই সমস্ত কথা ইস্রায়েল পরিবারকে গিয়ে বল।”
26-Ezekiel 3:2 : তাই আমি আমার মুখ খুললাম এবং তিনি সেই গোটানো পুঁথিটি আমার মুখে দিলেন।
26-Ezekiel 3:3 : তখন ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি তোমায় এই গোটানো পুঁথি দিচ্ছি। এটা গিলে ফেল! এই গোটানো পুঁথি তোমার উদর পূর্ণ করুক।”তাই আমি সেই গোটানো পুঁথি খেয়ে ফেললাম আর তার স্বাদ আমার মুখে মধুর মত মিষ্টি লাগল।
26-Ezekiel 3:4 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারের কাছে যাও। তাদের কাছে আমার বাক্য বল।
26-Ezekiel 3:5 : আমি তোমাকে এমন বিদেশীদের কাছে পাঠাচ্ছি না যাদের তুমি বুঝবে না। তোমাকে আরেকটা ভাষা শিখতে হবে না। আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে পাঠাচ্ছি!
26-Ezekiel 3:6 : আমি তোমাকে বিভিন্ন দেশ বিদেশে পাঠাচ্ছি না যাদের ভাষা তুমি বুঝবে না। তুমি ঐসব লোকের কাছে গিয়ে কথা বললে তারা তোমার কথা শুনত। কিন্তু তোমায় ঐসব কঠিন ভাষা শিখতে হবে না।
26-Ezekiel 3:7 : না! আমি তোমায় ইস্রায়েল পরিবারের কাছে পাঠাচ্ছি। কেবল এই সব লোকের মন কঠিন, তারা বড় একগুঁযে। আর ইস্রায়েলের লোকরা তোমার কথা শুনতে অস্বীকার করবে। তারা আমার কথাও শুনতে চায় না।
26-Ezekiel 3:8 : কিন্তু আমি তোমাকে তাদের মতোই একগুঁযে করব। তোমার কপাল তাদের কপালের চেয়েও দৃঢ় করব!
26-Ezekiel 3:9 : হীরক চক্মকি পাথরের চেয়েও দৃঢ়। সেই ভাবেই তাদের চেয়ে তোমার কপাল দৃঢ় হবে। তুমি আরো একগুঁযে হবে আর তাই ঐ লোকদের ভয় করবে না। সব সময় আমার বিরুদ্ধাচরণকারী ঐ লোকদের তুমি ভয় করবে না।”
26-Ezekiel 3:10 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমার প্রতিটি কথা তোমার শোনা উচিত, আর সেগুলো মনে রাখা উচিত।
26-Ezekiel 3:11 : নির্বাসনে রয়েছে এমন লোকদের কাছে যাও। তাদের কাছে গিয়ে বল, ‘আমাদের প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন।’ তারা শুনুক বা না শুনুক, তুমি তাদের এই কথাগুলো বলবে।”
26-Ezekiel 3:12 : তারপর বাতাস আমায় ওপরে উঠিযে দিল আর আমি আমার পেছনে একটা স্বর শুনতে পেলাম। সেটা ছিল বজ্রের মত জোরালো। শব্দটি বলল, “যেখানে ওটি ছিল সেই জায়গা থেকে উঠে আসা প্রভুর মহিমা।”
26-Ezekiel 3:13 : তারপর পশুরা সেই ডানা ঝাপটাতে লাগল আর তারা পরস্পরের গায়ে লাগলে ভীষণ শব্দ হল। আর তাদের সামনের চাকাগুলোও জোরে শব্দ করতে শুরু করল - তা বজ্রের মত জোরালো।
26-Ezekiel 3:14 : আত্মা আমায় তুলে নিয়ে গেল। আমি সেই স্থান পরিত্যাগ করলে খুব দুঃখিত ও আত্মায উষ্ঠিগ্ন হলাম। কিন্তু আমি আমার মধ্যে প্রভুর শক্তি অনুভব করলাম।
26-Ezekiel 3:15 : আমি ইস্রায়েলের সেই লোকদের কাছে গেলাম যাদের কবার নদীর ধারে তেল আবিবে বাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমি গিয়ে তাদের মাঝে সাত দিন ধরে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম।
26-Ezekiel 3:16 : সাত দিন পর প্রভু আমায় বললেন,
26-Ezekiel 3:17 : “মনুষ্যসন্তান, আমি তোমাকে ইস্রায়েলের প্রহরী নিযুক্ত করছি। আমি তোমাকে যা কিছু বলব, তুমি সেই সম্বন্ধে ইস্রায়েলীয়দের সাবধান করে দেবে।
26-Ezekiel 3:18 : যদি আমি বলি, ‘এই মন্দ লোকটি মারা যাবে!’ তখন তুমি অবশ্যই তাকে সাবধান কোরো! তুমি তাকে অবশ্যই বলবে তার জীবনধারা পরিবর্ত্তন করতে ও মন্দ কাজ আর না করতে। সেই ব্যক্তিকে সাবধান না করলে সে মারা যাবে বটে কিন্তু তার মৃত্যুর জন্য আমি তোমাকে দায়ী করব! কারণ তুমি তার প্রাণ বাঁচাতে তার কাছে যাওনি।
26-Ezekiel 3:19 : “হতে পারে তুমি কোন ব্যক্তিকে তার জীবন পরিবর্ত্তন ও পাপ হতে বিরত হবার কথা বললেও সে সেই সাবধান বাণী শুনতে অস্বীকার করল; সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি মারা যাবে। সে পাপ করেছে বলেই মারা যাবে কিন্তু তুমি তাকে সাবধান করেছিলে বলে নিজের প্রাণ বাঁচাবে।
26-Ezekiel 3:20 : “এক জন ভালো লোক যদি আর ভালো হতে না চায়, আর আমি যদি তার সামনে এমন একটি বিক্ রাখি যে সে মারা যাবে তাহলে সে মারা যাবে কারণ সে পাপ কাজ করেছিল এবং তুমি তার মৃত্যুর জন্য দায়ী হবে কারণ তুমি তাকে সাবধান করোনি এবং সে যে সকল ভাল কাজ করেছিল তা আর স্মরণ করা হবে না।
26-Ezekiel 3:21 : কিন্তু তুমি যদি সেই ভালো লোকটিকে পাপ কাজ থেকে বিরত হতে বল এবং সে যদি আর পাপ না করে তবে সে মরবে না। কারণ তুমি তাকে সাবধান করলে সে তোমার কথায় কান দিয়েছিল। এই ভাবে তুমি তোমার প্রাণ বাঁচালে।”
26-Ezekiel 3:22 : প্রভুর পরাক্রম আমার কাছে এলে তিনি আমায় বললেন, “ওঠো, সেই উপত্যকায় যাও। আমি সেই জায়গায় তোমার সঙ্গে কথা বলব।”
26-Ezekiel 3:23 : তাই আমি উঠে সেই উপত্যকায় গেলাম। প্রভুর মহিমা সেখানে ছিল - যেমনটি আমি কবার নদীর ধারে দেখেছিলাম। তাই আমি মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করলাম।
26-Ezekiel 3:24 : কিন্তু একটি বাতাস এসে আমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড় করালেন। তিনি আমায় বললেন, “যাও বাড়ি গিয়ে নিজেকে ঘরে তালাবন্ধ কর।
26-Ezekiel 3:25 : মনুষ্যসন্তান, লোকে দড়ি নিয়ে এসে তোমাকে বাঁধবে। তারা তোমাকে লোকদের মধ্যে যেতে দেবে না।
26-Ezekiel 3:26 : আমি তোমার জিভ তোমার তালুতে আটকে দেব, তুমি কথা বলতে পারবে না। তাই, এই লোকরা যে ভুল করছে সে সম্বন্ধে তাদের শিক্ষা দেবার জন্য কেউ থাকবে না। কারণ ঐ লোকরা সর্বদাই আমার বিরুদ্ধাচরণ করে।
26-Ezekiel 3:27 : কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব আর তোমাকে কথা বলতে দেব। কিন্তু তুমি অবশ্যই তাদের বলবে, ‘প্রভু আমাদের সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন,’ যদি কেউ শুনতে চায় ভালো; যদি কেউ না শুনতে চায় তাও ভালো। কারণ ঐ লোকরা সবসময় আমার বিরুদ্ধে যায়।
26-Ezekiel 4:1 : “মনুষ্যসন্তান, একটি ইঁট নাও আর তার ওপর আঁচড় কেটে জেরুশালেম শহরের একটা ছবি আঁকো।
26-Ezekiel 4:2 : তারপর এমন অভিনয় কর যেন তুমি একটি শহর দখলকারী সৈন্যদল। শহরের প্রাচীরগুলোর ওপর উঠে যাতে শএু সৈন্যরা শহরে প্রবেশ করতে পারে তার জন্য স্তম্ভসমূহ এবং একটি জাঙ্গাল তৈরী কর। প্রাচীর ভেদক যন্ত্র নিয়ে এস এবং শহরের চারিধারে সৈন্য শিবির বসাও।
26-Ezekiel 4:3 : তারপর একটা চ্যাপটা লোহার চাটু নিয়ে এস এবং সেটাকে তোমার এবং শহরের মাঝখানে রাখো। সেটা তোমার ও শহরের মধ্যে একটা লোহার প্রাচীরের মত হোক। এই ভাবে তুমি দেখাবে যে তুমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে। তুমি সেই শহর ঘিরে তা আক্রমণ করবে। কারণ তা হবে ইস্রায়েল পরিবারের সামনে দৃষ্টান্তস্বরূপ।
26-Ezekiel 4:4 : “তারপর বাম পাশ ফিরে শুয়ে পড়। তুমি এমন আচরণ করবে যাতে দেখাবে যে ইস্রায়েলের পাপ তোমার ঘাড়ে। সেই দোষ তুমি তত দিন ধরেই বইবে যত দিন বাম পাশ ফিরে শুয়ে থাকবে।
26-Ezekiel 4:5 : তুমি অবশ্যই 390 দিন ধরে ইস্রায়েল জাতির দোষ বইবে। এইভাবে আমি তোমায় বলছি কত দিন ধরে যিহূদা শাস্তি পাবে; এক দিন এক বছরের সমান।
26-Ezekiel 4:6 : সেই সময়ের পর তুমি 40 দিন ধরে ডানপাশ ফিরে শুয়ে থাকবে। এই সময় তুমি যিহূদার পাপ 40 দিন ধরে বইবে। এক দিন এক বছরের সমান। আমি বলছি যিহূদা কত কাল শাস্তি ভোগ করবে।”
26-Ezekiel 4:7 : ঈশ্বর আবার বললেন, “এখন, তোমার হাতের আস্তিন গোটাও এবং ইটটার উপর তোমার হাত ওঠাও। অভিনয় কর যেন তুমি জেরুশালেম শহর আক্রমণ করছ। শহরটির বিরুদ্ধে ভাব্বানী কর।
26-Ezekiel 4:8 : এখন দেখ আমি দড়ি দিয়ে তোমাকে বাঁধছি। তুমি এক দিক থেকে অন্য দিকে গড়িযে যেতে পারবে না, যে পর্য়ন্ত না শহরের বিরুদ্ধে তোমার আক্রমণ শেষ হয়।”
26-Ezekiel 4:9 : ঈশ্বর আরও বললেন, “তুমি অবশ্যই কিছু শস্য নিয়ে এসে রুটি তৈরী কর। গম, বার্লি, বীন, মসুর, ভুট্টা ও কাজু এই সব কিছু কিছু পরিমাণ নাও। এই সমস্ত একটি পাত্রে নিয়ে মেশাও, তারপর তা গুঁড়ো করে তা দিয়ে আটা তৈরী করে রুটি বানাও। তুমি 390 দিন ধরে কেবল সেই রুটি খাবে।
26-Ezekiel 4:10 : প্রতিদিন কেবল 1 পোযা ময়দা নিয়ে রুটি বানাবে। সারা দিন ধরে মাঝে মাঝে সেই রুটি খেও।
26-Ezekiel 4:11 : আর প্রত্যেকদিন কেবল 3 পেয়ালা জল পান করো। সময় সময় সমস্ত দিন ধরেই তা খেতে পার।
26-Ezekiel 4:12 : প্রতিদিন, নিজের রুটি তৈরী করবে। কিছু মানুষের মল নিয়ে তা আগুনে পুড়িও। তারপর সেটা যখন পুড়ছে তখন রুটিটা সেঁকো। যেখানে লোকরা তোমাকে দেখতে পাবে সেখানে রুটিটা খাবে।”
26-Ezekiel 4:13 : তারপর প্রভু বললেন, “এটা বোঝাবে যে ইস্রায়েল পরিবার বিদেশে অশুচি রুটি খাবে। আমি তাদের ইস্রায়েল ত্যাগ করে সেইসব দেশে বাস করতে বাধ্য করেছি!
26-Ezekiel 4:14 : তখন আমি বললাম, “হায, প্রভু আমার সদাপ্রভু, আমি কখনও অশুচি খাবার খাইনি। রোগে মারা গেছে এমন কোন পশু বা বন্য পশুতে মেরে ফেলেছে এমন কোন পশুও আমি কখনও খাইনি। আমি শিশুকাল থেকে আজ পর্য়ন্ত কখনও অশুচি মাংস খাইনি। কখনই ঐসব মন্দ মাংস আমার মুখে প্রবেশ করেনি।”
26-Ezekiel 4:15 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “ঠিক আছে! রুটি পাক করার জন্য গোবরের ঘুঁটে ব্যবহার করো। মানুষের মল ব্যবহার করার দরকার নেই।”
26-Ezekiel 4:16 : তারপর ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি জেরুশালেমের রুটির য়োগান নষ্ট করছি। লোকে অল্প পরিমান রুটিই আহার করার জন্য পাবে। তারা তাদের খাদ্যের য়োগান সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন হবে। আর পান করার জলও অল্প থাকবে। আর জল পান করার সময় তারা ভীষণ ভীত হবে।
26-Ezekiel 4:17 : কারণ লোকদের আহার ও পান করার জন্য যথেষ্ট খাবার ও জল থাকবে না। লোকরা একে অপরের দিকে শুধু তাকাবে কারণ তারা জানে না কি করতে হবে। তারা একে অপরকে তাদের পাপের জন্য ক্ষীণ হতে দেখবে।”
26-Ezekiel 5:1 : “হে মনুষ্যসন্তান, একটি ধারালো তরবারি নেবে এবং তা নাপিতের ক্ষুরের মত ব্যবহার করবে। তোমার মাথার চুল ও দাড়ি কামিয়ে সেইটা একটি ওজন পাত্রে ওজন করবে। তোমার চুল সমান তিন ভাগে ভাগ কর। তারপর তোমার শহর দখল করা সম্পূর্ণ হলে তোমার চুলের এক - তৃতীয়াংশ ‘শহরে’ পুড়িয়ে ফেল।এর অর্থ হল, কিছু লোক শহরের মধ্যে মারা যাবে। তারপর তরবারি ব্যবহার করে চুলের অন্য এক তৃতীয়াংশকে শহরের বাইরে কাটবে। এর অর্থ হল, কিছু লোক শহরের বাইরে মারা যাবে। তারপর এক - তৃতীয়াংশ চুল বাতাসে ছুঁড়ে দাও - যাতে বাতাস তা বহু দূরে নিয়ে যায়। এতে বোঝাবে যে আমি আমার তরবারি বের করে কিছু লোককে খুব দূরের শহর পর্য়ন্ত তাড়া করে নিয়ে যাবো।
26-Ezekiel 5:2 : -
26-Ezekiel 5:3 : কিন্তু তুমি তার মধ্যে অবশ্যই কিছু চুল নিয়ে তোমার পোশাকের ভাঁজে রেখে দেবে। এতে বোঝাবে যে আমি আমার কিছু লোককে পরিত্রাণ করব।
26-Ezekiel 5:4 : তুমি অবশ্যই আরও কিছু চুল নিয়ে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। এর অর্থ হবে যে একটা আগুন উত্পন্ন হয়ে তা ইস্রায়েলীয় পরিবারসমূহকে ধ্বংস করে দেবে।
26-Ezekiel 5:5 : তারপর প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “ইটটি জেরুশালেমের চিত্র। আমি জেরুশালেমকে অন্য জাতির মধ্যে রেখেছি, আর তার চারিদিকে অন্য জাতিসমূহ রয়েছে।
26-Ezekiel 5:6 : জেরুশালেমের লোকরা আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তারা অন্য যে কোন জাতির চেয়ে অধিক মন্দ! তারা তাদের চার ধারের দেশের যে কোন লোকের চেয়ে আমার দেওয়া বিধি অনেক বেশী করে লঙঘন করেছে। তারা আমার আজ্ঞা শুনতে অস্বীকার করেছে। তারা আমার বিধিগুলি পালন করেনি!”
26-Ezekiel 5:7 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বললেন, “তোমরা আমাকে মান্য করনি। তোমাদের চার ধারে বসবাসকারী লোকদের চেয়েও তোমরা আমার আজ্ঞা অনেক বেশী অমান্য করেছ এবং তারা যেসব জিনিস মন্দ বলে বিবেচনা করে তাও করেছ!”
26-Ezekiel 5:8 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমিও তোমাদের বিরুদ্ধে! আর ঐ লোকদের চোখের সামনে আমি তোমাদের শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 5:9 : আমি তোমাদের প্রতি এমন কাণ্ড ঘটাব যা আগে ঘটাই নি আর পরেও ঘটাব না! কেন? কারণ তোমরা বহু ভয়ঙ্কর কাজ করেছ।
26-Ezekiel 5:10 : জেরুশালেমের লোকরা এত ক্ষুধার্ত্ত হবে যে পিতামাতা তাদের নিজেদের সন্তানদের এবং সন্তানরা তাদের পিতামাতাদের মাংস খাবে। আমি তোমাদের বহু ভাবে শাস্তি দেব। আর অবশিষ্ট যারা বেঁচে থাকবে, তাদের আমি বাতাসে ছড়িয়ে দেব।”
26-Ezekiel 5:11 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “জেরুশালেম, আমার প্রাণের দিব্য দিয়ে বলছি যে আমি তোমায় শাস্তি দেব! আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে তোমায় শাস্তি দেব! কেন? কারণ তুমি আমার পবিত্র স্থানের প্রতি ভয়ঙ্কর কাজ করেছ। তুমি এমন ভয়ঙ্কর কাজ করেছ যাতে তা ময়লা হয়ে গেছে! আমি তোমায় শাস্তি দেব, দয়া করব না। দুঃখ বোধ করব না!
26-Ezekiel 5:12 : শহরের মধ্যে মহামারী এবং দুর্ভিক্ষে তোমার এক - তৃতীয়াংশ লোক মারা যাবে। শহরের বাইরে এক - তৃতীয়াংশ লোক যুদ্ধে মারা যাবে। তারপর আমি আমার তরবারি বের করে বাকী এক - তৃতীয়াংশকে দূর দেশ পর্য়ন্ত তাড়া করে নিয়ে যাব।
26-Ezekiel 5:13 : কেবল তারপরই আমার প্রজাদের প্রতি আমার রোধ ক্ষান্ত হবে। তারা আমার প্রতি যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্যই যে তারা শাস্তি পেয়েছে সেটা আমি জানাব। আর তারাও জানবে যে আমিই প্রভু, এবং তাদের প্রতি আমার গভীর ভালোবাসার জন্যই আমি তাদের কাছে কথা বলেছিলাম!”
26-Ezekiel 5:14 : ঈশ্বর বললেন, “জেরুশালেম, আমি তোমায় ধ্বংস করব - তোমায় ইঁট পাথরের ঢিবি ছাড়া অন্য কিছু বলে মনে হবে না। তোমার চার পাশের লোকরা তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে। যারাই তোমার পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে তারাই তোমাকে নিয়ে মজা করবে।
26-Ezekiel 5:15 : তোমার চার ধারের লোক তোমাকে নিয়ে মজা করলেও তাদের কাছে তুমি এক শিক্ষা স্বরূপ হবে। তারা দেখবে যে আমি এোধ তোমাকে শাস্তি দিয়েছি। আমি অত্যন্ত এোধ করেছিলাম। সাবধানও করেছিলাম। আমিই প্রভু জানিয়ে ছিলাম আমি কি করব!
26-Ezekiel 5:16 : তোমায় বলেছিলাম যে ভযানক দুর্ভিক্ষ পাঠাব। বলেছিলাম এমন বিষয় পাঠাব যা তোমায় ধ্বংস করবে। আমি তোমায় বলেছিলাম যে তোমার খাবারের য়োগান শেষ করে দেব আর সেই দুর্ভিক্ষ সময় সময় আসবে।
26-Ezekiel 5:17 : আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তোমার বিরুদ্ধে ক্ষুধা ও বন্য জন্তুদের পাঠাব যা তোমার শিশুদের হত্যা করবে। আমি বলেছিলাম শহরের সর্বত্র রোগ এবং মৃত্যু বিরাজ করবে। আমি বলেছিলাম শএুসেনাকে তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসতে। আমি প্রভুই তোমাকে বলেছিলাম যে এই সব ঘটবে।”
26-Ezekiel 6:1 : তারপর প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল।
26-Ezekiel 6:2 : তিনি বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পর্বতগুলির দিকে ফের। আমার জন্য তাদের কাছে ভাব্বাণী বল।”
26-Ezekiel 6:3 : ঐসব পর্বতগুলিকে এই কথাগুলি বল:‘ইস্রায়েলের পর্বত আমার প্রভুসদাপ্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা শোন! প্রভু আমার সদাপ্রভু পাহাড়, পর্বত ও উপত্যকাগুলিকে এইসব কথা বলেন। দেখ! আমিই (ঈশ্বর) তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শএু আনছি। আমি তোমার উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করব!
26-Ezekiel 6:4 : তোমার বেদীগুলি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে দেব। তোমার ধুপধূনোর বেদী গুঁড়িযে দেওয়া হবে। আর তোমার নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সামনে আমি তোমার মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলব।
26-Ezekiel 6:5 : ইস্রায়েলের লোকদের মৃতদেহগুলিও আমি নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সামনে ছুঁড়ে দেব। আমি তোমার হাড়গুলি বেদীর চারধারে ছড়িয়ে দেব।
26-Ezekiel 6:6 : যেখানেই তোমার লোক বাস করবে সেখানেই অমঙ্গল ঘটবে। তাদের শহরগুলি পাথরের ঢিবিতে পরিণত হবে। তাদের উচ্চ স্থানগুলো ধ্বংস করা হবে। যেন ঐসব পূজার স্থানগুলি আর কখনও ব্যবহার করা না হয়। ঐ বেদীগুলি ধ্বংস করা হবে আর লোকরা কখনও ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলোর পূজো করবে না। ধুপধূনোর বেদীগুলোও গুঁড়িযে দেওয়া হবে। যা কিছু তোমরা গড়েছিলে তার সবই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হবে।
26-Ezekiel 6:7 : তোমার লোকদের হত্যা করা হবে এবং তখন তুমি জানবে যে আমিই প্রভু!”‘
26-Ezekiel 6:8 : ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু আমি তোমার কিছু লোককে পালাতে দেব। তারা অল্প কালের জন্য অন্য দেশে বাস করবে। আমি তাদের ছড়িয়ে দেব এবং অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য করব।
26-Ezekiel 6:9 : তারপর ঐ অবশিষ্টদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য করা হবে। কিন্তু ঐ অবশিষ্টরা আমায় স্মরণ করবে। আমি তাদের আত্মা ভগ্ন করব। তারা যে মন্দ কাজ করেছিল তার জন্য নিজেদেরই ঘৃণা করবে। অতীতে তারা আমার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, আমায় ত্যাগ করেছিল। তারা নোংরা মূর্ত্তির পেছনে দৌড়েছিল। তারা এমন স্ত্রীর মত ব্যবহার করেছিল যে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে অন্য পুরুষের পেছনে দৌড়ায। তারা বহু ভয়ঙ্কর কাজ করেছে।
26-Ezekiel 6:10 : কিন্তু তারা জানবে যে আমিই প্রভু। তারা এও জানবে যে যদি আমি বলি কিছু করব তবে তা করেই থাকি। তারা জানবে তাদের প্রতি যেসব অমঙ্গল ঘটেছে তার সব আমিই ঘটিযে ছিলাম।”
26-Ezekiel 6:11 : তারপর প্রভু, আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হাততালি দাও ও পা দাপাও। ইস্রায়েলের লোকরা যেসব ভযানক কাজগুলি করেছে তার বিরুদ্ধে কথা বল। তাদের সাবধান করে বল যে রোগে, তরবারির দ্বারা এবং ক্ষুধায তারা মারা যাবে। তাদের বল যে তারা যুদ্ধেও মারা যাবে।
26-Ezekiel 6:12 : দূরের লোকরা রোগে মারা যাবে। কাছের লোকরা তরবারির আঘাতে মারা যাবে এবং তারপর যারা বেঁচে থাকবে তারা ক্ষুধায মারা যাবে। কেবল তখনই আমার রোধ প্রশমিত হবে।
26-Ezekiel 6:13 : আর কেবল তখনই তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। তোমরা এটা তখনই জানবে যখন দেখবে তোমাদের দেহগুলি নোংরা প্রতিমাগুলির সামনে ও তার বেদীর চারধারে পড়ে আছে। তোমাদের প্রতিটি পূজা স্থানের কাছেই এবং প্রত্যেক পর্বত পাহাড়ের নীচে সবুজ বৃক্ষের তলায় ও সপত্র ওক বৃক্ষের তলায় ঐ দেহগুলি পাওয়া যাবে। ঐ সমস্ত জায়গায় তোমরা তোমাদের সুগন্ধি নৈবেদ্য উত্সর্গ করেছিলে। ঐসব তোমাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর জন্য সুগন্ধস্বরূপ ছিল।
26-Ezekiel 6:14 : কিন্তু আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার হাত ওঠাব এবং তোমাকে ও তোমার লোকেদের শাস্তি দেব, তা তারা যেখানেই থাকুক না কেন। আমি তোমার দেশ ধ্বংস করব আর তা দিব্লা মরুভূমির থেকেও শূন্য হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
26-Ezekiel 7:1 : তারপর প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল।
26-Ezekiel 7:2 : তিনি বললেন, “এখন, মনুষ্যসন্তান, প্রভু আমার সদাপ্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা এসেছে। এই বার্তাটি ইস্রায়েল দেশের জন্য।শেষ কাল, শেষ সময় আসছে, সমস্ত দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
26-Ezekiel 7:3 : তোমার শেষ দশা এবার আসছে! আমি দেখাব যে আমি তোমার ওপর কত রুদ্ধ। তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমায় শাস্তি দেব। তুমি যে সব জঘন্য কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমায় তার মূল্য দিতে বাধ্য করব।
26-Ezekiel 7:4 : আমি তোমার প্রতি কোন দয়া দেখাব না। আমি তোমার জন্য দুঃখ অনুভব করব না। তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমাকে শাস্তি দিচ্ছি। তুমি এমন জঘন্য কাজগুলি করেছ। এখন, তুমি জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 7:5 : প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐ কথাগুলি বলেছিলেন। “একের পর এক অমঙ্গল ঘটবে!
26-Ezekiel 7:6 : শেষ কাল আসছে আর তা খুব শীঘ্রই আসবে!
26-Ezekiel 7:7 : তোমরা যারা ইস্রায়েলে বাস করছ তোমাদের অন্তিমকাল আসছে। শাস্তির সেই দিন খুব শীঘ্রই ঘনিয়ে আসছে। পর্বতের ওপর কোলাহল এমে এমে বেড়েই চলেছে।
26-Ezekiel 7:8 : এখন খুব শীঘ্রই আমি দেখাব যে আমি কত রুদ্ধ। আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার সমস্ত রোধ প্রকাশ করব। তোমাদের সমস্ত মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব। তোমরা যে সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছিলে তার জন্য তোমাদের আমি শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 7:9 : আমি তোমাদের প্রতি কোন দয়া দেখাব না। তোমাদের জন্য দুঃখিত হব না। তোমরা যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি। তোমরা এমন সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছ। এখন, জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 7:10 : “শাস্তির ঐ সময়, যেমন করে উদ্ভিদের অঙ্কুরোদ্গম, মুকুলাযন ও কুসুম প্রস্ফুটিত হয়, সেই রকম ভাবে এসেছে। ঈশ্বর সঙ্কেত দিয়েছেন, শএু তৈরী, গর্বিত রাজা নবূখদ্নিত্‌সর প্রস্তুত।
26-Ezekiel 7:11 : সেই লোক ঐসব মন্দ লোকদের শাস্তি দেবার জন্য তৈরী। ইস্রায়েলে অনেক লোকই রয়েছে কিন্তু সে তাদের একজনও নয়। সে ঐ জনতার ভীড়ের কেউ নয়। সে ঐ লোকদের কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতাও নয়।
26-Ezekiel 7:12 : “শাস্তির সেই সময় এসেছে। সেই দিন এখানে লোকে যারা জিনিস কেনাকাটা করে তারা আনন্দিত হবে না, আর যারা জিনিস বেচে তারাও বেচতে খারাপ বোধ করবে না। কারণ সেই ভযানক শাস্তি সবার প্রতিই ঘটবে।
26-Ezekiel 7:13 : লোকে যারা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করেছিল তারা আর তার কাছে ফিরে যাবে না। এমনকি যদি কেউ জীবিত ও পালিয়ে যায় তাও সে নিজের সম্পত্তির কাছে ফিরে যাবে না। কারণ এই দর্শন সমস্ত জনতার জন্য। তাই যদি কোন ব্যক্তি জীবিত পালায় তাতে অন্যেরা ভাল বোধ করবে না।
26-Ezekiel 7:14 : “তারা লোকদের সাবধান করতে শিঙা বাজাবে। লোকরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে। কিন্তু তারা যুদ্ধ করতে যাবে না। কারণ আমি সমস্ত জনতাকে দেখাব আমি কত রুদ্ধ।
26-Ezekiel 7:15 : শএু তার তরবারি নিয়ে শহরের বাইরে রয়েছে। রোগ ও ক্ষুধা শহরের মধ্যে। যদি কোন লোক থেকে যায় তবে এক শএুসেনা তাকে হত্যা করবে। যদি সে শহরে থাকে তবে ক্ষুধা ও রোগ তাকে ধ্বংস করবে।
26-Ezekiel 7:16 : “কিন্তু কিছু লোক পালাবে। ঐ অবশিষ্টরা পাহাড়ে দৌড়ে যাবে। কিন্তু তারা সুখী হবে না তাদের পাপের জন্য দুঃখ বোধ করবে। তারা ঘুঘুর মত গোঙাবে।
26-Ezekiel 7:17 : লোকে তাদের হাত তুলতে ক্লান্ত ও দুঃখ বোধ করবে। তাদের পা জলের মত শিথিল মনে হবে।
26-Ezekiel 7:18 : তারা শোকবস্ত্র পরবে এবং ভয়ে আচ্ছন্ন হবে। তুমি তাদের মুখে লজ্জা দেখতে পাবে। তারা তাদের শোক ব্যক্ত করতে মাথা কামাবে।
26-Ezekiel 7:19 : তারা তাদের রূপো রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলবে। তাদের সোনাগুলিকেনোংরা বস্তার মত জ্ঞান করবে। কারণ প্রভু রোধন্বত হলে ঐসব জিনিস তাদের রক্ষা করতে পারবে না। ঐসব জিনিস আর কিছুই না কেবল লোককে পাপে ফেলার ফাঁদ। ঐসব জিনিস লোকদের প্রাণ তৃপ্ত করবে না অথবা তাদের পেটও ভরাতে পারবে না।
26-Ezekiel 7:20 : “ঐ লোকরা তাদের সুন্দর অলঙ্কার ব্যবহার করে প্রতিমা গড়েছিল। তারা ঐ প্রতিমার বিষয়ে গর্ব করেছিল। তারা তাদের ভয়ঙ্কর প্রতিমা গড়েছিল, ঐসব নোংরা জিনিস বানিয়েছিল। তাই আমি (ঈশ্বর) তাদের নোংরা বস্তার মত ছুঁড়ে ফেলব।
26-Ezekiel 7:21 : আমি আগন্তুক লোকদেরও তাদের ধনসম্পদ নিয়ে যেতে দেব। ঐ আগন্তুকরা তাদের নিয়ে ঠাট্টা করবে। ঐ দুষ্ট লোকরা তাদের সোনা ও রূপো নিয়ে চলে যাবে।
26-Ezekiel 7:22 : আমি তাদের থেকে আমার মুখ ফিরিয়ে নেব, তাদের দিকে তাকাব না। ঐ আগন্তুকরা আমার মন্দির ধ্বংস করবে, তারা পবিত্র গৃহের গোগনস্থানে ঢুকে তা অশুচি করবে।
26-Ezekiel 7:23 : “বন্দীদের জন্য শেকল তৈরী কর! কারণ হত্যা করার জন্য এবং অন্যাযের অপরাধে বহু লোককে শাস্তি দেওয়া হবে।
26-Ezekiel 7:24 : এই কারণে আমি অন্য জাতির মন্দ লোকেদের নিয়ে আসব। আর ঐ মন্দ লোকরা ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত বাড়িঘর অধিকার করবে। আমি বলবান সমস্ত লোকদের গর্ব চূর্ণ করব। অন্য জাতির ঐ লোকরা তোমাদের পূজার সমস্ত স্থান অধিকার করবে।
26-Ezekiel 7:25 : “তোমরা ভয়ে কাঁপবে। তোমরা শান্তির অন্বেষণ করবে কিন্তু শান্তি পাবে না।
26-Ezekiel 7:26 : তোমরা একটার পর একটা দুঃখের ঘটনা শুনবে। তোমরা দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাবে না। তোমরা ভাব্বাদীর খোঁজ করবে এবং তার কাছে দর্শন চাইবে, কিন্তু পাবে না। যাজকরা তোমাদের শিক্ষা দেবার জন্য কিছুই খুঁজে পাবে না। প্রবীণেরাও শিক্ষা দেবার জন্য কোন ভাল উপদেশ খুঁজে পাবে না।
26-Ezekiel 7:27 : তোমাদের রাজা মৃত লোকদের জন্য কাঁদবে। নেতারা শোকবস্ত্র পরবে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হবে। কেন? কারণ তারা যা করেছে তার জন্য তাদের পরিশোধ করতে আমি বাধ্য করব। তাদের শাস্তি আমি ঠিক করব। আর আমি তাদের শাস্তি দেব। তাহলে ঐ লোকরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 8:1 : একদিন আমি (যিহিষ্কেল) আমার বাড়িতে বসেছিলাম এবং যিহূদার প্রবীণরা আমার সামনে বসেছিল। এটা ছিল নির্বাসনের ষষ্ঠ বছরের ষষ্ঠ মাসের পঞ্চম দিনের কথা। হঠাত্‌ আমার প্রভু সদাপ্রভুর শক্তি আমার ওপর এল।
26-Ezekiel 8:2 : আমি আগুনের মত কিছু একটা দেখলাম। দেখে মনে হল যেন কোন মানুষের দেহ। কোমরের নীচ থেকে আগুনের মত। কোমরের উপর থেকে তিনি আগুনে রাখা উত্তপ্ত ধাতুর মত উজ্জ্ব্বলভাবে চমকাচ্ছিলেন।
26-Ezekiel 8:3 : তারপর আমি হাতের মত কিছু একটা দেখলাম। সেই হাত বেরিয়ে এসে আমার মাথার চুল টেনে আমায় ধরল। তারপর বাতাস আমায় শূন্যে তুলে নিল এবং তিনি আমাকে জেরুশালেমে ঈশ্বরীয দর্শনে নিয়ে গেলেন। তিনি আমাকে অভ্য়ন্তরের ফটক, অর্থাত্‌ উত্তর দিকের ফটকের কাছে নিয়ে গেলেন। যে মূর্ত্তি ঈশ্বরকে ঈর্ষান্বিত করে তা সেই ফটকে রয়েছে।
26-Ezekiel 8:4 : কিন্তু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা সেখানে ছিল। সমস্থলীতে কবার নদীর ধারে দর্শনে আমি যেমন দেখেছিলাম, এই মহিমা সেই রকমই দেখতে ছিল।
26-Ezekiel 8:5 : ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, সোজা উত্তর দিকে দেখ!” তাই আমি উত্তর দিকে তাকালাম। আর সেখানে বেদীর উত্তর দিকের দরজায সেই মূর্ত্তি ছিল যা ঈশ্বরকে ঈর্ষান্বিত করে।
26-Ezekiel 8:6 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের লোকরা যে ভযানক কাজ করছে তা কি তুমি দেখছ? তারা আমার পবিত্র স্থানের ঠিক পাশেইঐ জিনিসটা গড়েছে। আর তুমি আমার সঙ্গে এলে এর থেকেও আরও ভযানক ঘৃণিত জিনিষ দেখতে পাবে।”
26-Ezekiel 8:7 : তাই আমি প্রাঙ্গণের মধ্যে প্রবেশ পথ দিয়ে গেলাম আর দেওয়ালে এক গর্ত দেখতে পেলাম।
26-Ezekiel 8:8 : ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, দেওয়ালে একটা গর্ত তৈরী কর।” তাই আমি দেওয়ালে একটা গর্ত তৈরী করলাম। আর সেখানে আমি একটা দরজা দেখতে পেলাম।
26-Ezekiel 8:9 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “যাও, লোকরা এখানে যেসব মন্দ ও ভয়ঙ্কর ঘৃণিত কাজ করছে তা দেখ।”
26-Ezekiel 8:10 : তাই আমি ভেতরে গিয়ে তাকালাম আর দেখলাম বিভিন্ন ধরণের সরীসৃপ ও জন্তুদের মূর্ত্তি যাদের কথা চিন্তা করতেও ঘৃণা জন্মে সেই সবগুলো এবং ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত মূর্ত্তিগুলি দেখলাম। সব দেওয়ালেই ঐসব পশুদের ছবি খোদাই করা ছিল।
26-Ezekiel 8:11 : তারপর আমি লক্ষ্য করে দেখলাম যে শাফনের পুত্র যাসনিয় ও ইস্রায়েলের আরো 70 জন প্রবীণ সে স্থানে লোকদের সঙ্গে পূজা করছিল। তারা লোকদের সামনেই দাঁড়িয়েছিল। আর প্রত্যেক নেতার কাছে ছিল তার নিজের ধূপদানী। জ্বলা ধূপের ধোঁযার সেই সুগন্ধ উপরে উঠছিল।
26-Ezekiel 8:12 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের নেতারা অন্ধকারে কি করে তা কি তুমি দেখেছ? প্রত্যেক জনের তার নিজের মূর্ত্তি পূজার জন্য আলাদা কক্ষ রয়েছে। ঐ লোকরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, ‘প্রভু আমাদের দেখতে পাবেন না। প্রভু এই দেশ ত্যাগ করে গেছেন।”‘
26-Ezekiel 8:13 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “এরপরও তুমি এই সব লোকদের আরও কত ঘৃণিত কাজ দেখতে পাবে!”
26-Ezekiel 8:14 : তখন ঈশ্বর আমাকে প্রভুর মন্দিরের প্রবেশ পথের দিকে নিয়ে চললেন। এই দরজাটি উত্তর দিকে অবস্থিত ছিল। সেখানে আমি মহিলাদের বসে বসে কাঁদতে দেখলাম। তারা তম্মুষের মূর্ত্তির জন্য শোক করছিল!
26-Ezekiel 8:15 : ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি এই সব ভয়ঙ্কর বিষয়গুলি দেখছ? আমার সঙ্গে এলে এর চেয়ে আরও খারাপ বিষয় দেখবে!”
26-Ezekiel 8:16 : তারপর তিনি আমাকে প্রভুর মন্দিরের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেলেন। সেখানে, আমি 25 জন লোককে উপুড় হয়ে পূজা করতে দেখলাম। তারা ছিল মন্দিরে ঢোকবার জায়গাটাতে। কিন্তু তারা ভুল দিকে মুখ ফিরে ছিল! পূর্বদিকে উদিত সূর্য়্য়ের উপাসনা করবার সময় তাদের পশ্চাদ্দেশ আমার মন্দিরের দিকে ফেরানো ছিল।
26-Ezekiel 8:17 : তখন ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি এসব দেখতে পাচ্ছো? তারা এই সমস্ত নোংরা জিনিষ এখানে করছে এটা কি ভালো? এই শহর হিংসাত্মক ঘটনায পূর্ণ। আর আমাকে বিরক্ত করে তুলতে তারা সর্বদাই ব্যস্ত। দেখ, ওরা আমায় অশ্লীল ইঙ্গিত করছে।
26-Ezekiel 8:18 : আমি তাদের আমার রোধ কি তা দেখাব। তাদের প্রতি দয়া করব না। তারা আমার কাছে আর্তনাদ করবে কিন্তু আমি শুনতে অস্বীকার করব!”
26-Ezekiel 9:1 : তখন আমি শুনতে পেলাম যে, যে নেতারা শহরকে শাস্তি দেবার দায়িত্বে ছিল, ঈশ্বর তাদের ডাকছেন। প্রত্যেক নেতার হাতে ছিল তার নিজস্ব মারণাস্ত্র।
26-Ezekiel 9:2 : তারপর আমি উচ্চতর ফটক থেকে ছয়জনকে হাঁটতে দেখলাম। এই ফটকটি ছিল উত্তরমুখী। প্রত্যেকের হাতে ছিল তার নিজস্ব মারাত্মক অস্ত্র। এক জন মানুষের পরনে ছিল মসিনার কাপড়। তার কোমরে গোঁজা ছিল একটি লেখনী ও কালির একটি দোয়াত। ঐ লোকরা মন্দিরের পিতলের বেদীর কাছে গিয়ে সেখানে দাঁড়াল।
26-Ezekiel 9:3 : তারপর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা করূব দূতগণের মধ্য থেকে উঠে এল। সেখানেই তিনি ছিলেন। তারপর সেই গৌরব পরাক্রম মন্দিরের দরজা পর্য়ন্ত গেল। চৌকাঠের কাছে গিয়েই তিনি থামলেন। তারপর প্রভুর মহিমা মসিনা কাপড় পরা এবং লেখনী ও দোয়াত কোমরে বাঁধা লোকটিকে ডাকলেন।
26-Ezekiel 9:4 : তখন প্রভু (মহিমা) তাকে বললেন, “জেরুশালেম শহরের মধ্য দিয়ে যাও। সেই সব লোক যারা শহরের লোকদের ভয়ঙ্কর কাজকর্মের জন্য দুঃখ করে এবং মনমরা তাদের প্রত্যেকের কপালে দাগ দাও।”
26-Ezekiel 9:5 : তারপর আমি শুনলাম ঈশ্বর অন্য বাকী লোকেদের বলছেন, “আমি চাই তোমরা প্রথম মানুষটিকে অনুসরণ কর। যে সব ব্যক্তির কপালে চিহ্ন নেই তাদের তোমরা অবশ্যই হত্যা করো। তারা প্রবীণ হোক, যুবক বা যুবতী, শিশু বা মায়েরা হোক তাতে কিছু আসে যায় না। কোন রকম দয়া দেখিও না। কোন ব্যক্তির জন্য দুঃখ বোধ করো না। এখানে আমার মন্দির থেকেই শুরু কর।” তাই তারা মন্দিরের সামনে যে প্রবীণরা ছিল তাদের দিয়েই শুরু করল।
26-Ezekiel 9:6 : -
26-Ezekiel 9:7 : ঈশ্বর তাদের বললেন, “এই মন্দির অশুচি কর। এর প্রাঙ্গন মৃতদেহ দিয়ে পূর্ণ কর! এখনই যাও!” তাই তারা গিয়ে শহরের লোকদের হত্যা করল।
26-Ezekiel 9:8 : এই লোকরা যখন শহরে গিয়ে লোক হত্যা করছিল সে সময় আমি সেখানেই ছিলাম। আমি মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে কেঁদে বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, জেরুশালেমের প্রতি তোমার রোধ প্রকাশ করতে কি তুমি ইস্রায়েলের অবশিষ্ট সবাইকেই হত্যা করবে?”
26-Ezekiel 9:9 : ঈশ্বর আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল ও যিহূদা পরিবার বহু জঘন্য পাপ কাজ করেছে। দেশের সর্বত্র, লোকদের হত্যা করা হয়েছে। আর শহর অপরাধে পূর্ণ হয়ে গেছে! কেন? কারণ লোকরা নিজেদের মধ্যেই বলাবলি করে, ‘প্রভু এই শহর ত্যাগ করেছেন এবং চলে গেছেন। তাই আমরা কি করছি তা তিনি দেখতে পাবেন না।’
26-Ezekiel 9:10 : আর আমিও কোন দয়া দেখাব না। এই লোকদের জন্য আমি অনুশোচনাও করব না। তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর ওসব এনেছে। আমি কেবল ঐ লোকদের তাদের পাওনা শাস্তি দিচ্ছি।”
26-Ezekiel 9:11 : তারপর সেই মসিনা কাপড় পরা আর লেখনী ও কালির দোয়াত কোমরে বাঁধা লোকটা বললেন, “আপনি যা আজ্ঞা করেছেন তা আমি করেছি।”
26-Ezekiel 10:1 : তারপর আমি করূব দূতদের মাথার ওপরের পাত্রের দিকে তাকালাম। পাত্রটিকে নীলকান্ত মণির মত পরিষ্কার নীল দেখাচ্ছিল। আর সেই পাত্রের ওপরে সিংহাসনের মত কিছু একটা দেখতে পেলাম।
26-Ezekiel 10:2 : তখন যে ব্যক্তিটি সিংহাসনে বসেছিলেন তিনি মসিনা কাপড় পরা মানুষটিকে বললেন, “করূব দূতের নীচে যে চাকাগুলি রয়েছে তার মধ্যে ঢুকে যাও। করূব দূতদের মাঝখান থেকে মুঠো করে জ্বলন্ত কযলা তুলে নিয়ে তা জেরুশালেম শহরের উপর ছুঁড়ে দাও।”মানুষটি আমায় অতিএম করে গেলেন।
26-Ezekiel 10:3 : মানুষটি যখন তাদের দিকে হেঁটে গেলেন সে সময় করূবদূতগণ মন্দিরের দক্ষিণ দিকে দাঁড়িয়েছিলেন। মেঘে ভিতরের প্রাঙ্গণ পরিপূর্ণ করল।
26-Ezekiel 10:4 : তারপর প্রভুর মহিমা মন্দিরের দরজার চৌকাঠের কাছে স্থিত করূব দূতেদের মধ্যে থেকে উঠে এল। আর ঐ মেঘ মন্দির পূর্ণ করল আর প্রভুর গৌরবের উজ্জ্ব্বল আলো সমস্ত প্রাঙ্গণ পূর্ণ করল।
26-Ezekiel 10:5 : করূব দূতেদের ডানা ঝাপটানোর শব্দ এমনকি একেবারে বাইরের প্রাঙ্গনেও শোনা যেতে লাগল। সেই শব্দের প্রচণ্ড আওয়াজ - যেমন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান বজ্রের রবে কথা বলেন।
26-Ezekiel 10:6 : ঈশ্বর, সেই মসিনা কাপড় পরা লোকটিকে এক আজ্ঞা দিয়েছিলেন। ঈশ্বর বলেছিলেন চাকাগুলির মধ্যে করূব দূতদের মাঝখানে গিয়ে কিছু গরম কযলা নিয়ে আসতে। তাই লোকটি সেখানে গিয়ে চাকার পাশে দাঁড়ালেন।
26-Ezekiel 10:7 : করূব দূতদের এক জন হাত বাড়িয়ে তাদের মধ্যের অঞ্চল থেকে উত্তপ্ত কযলা তুলে নিলেন। তারপর তা সে মানুষটির হাতে ঢেলে দিলেন। আর মানুষটি স্থান ত্যাগ করলেন।
26-Ezekiel 10:8 : (করূব দূতটির ডানার তলায় মানুষের হাতের মতোই দেখতে কিছু ছিল।)
26-Ezekiel 10:9 : তারপর আমি সেখানে চারটি চাকা দেখতে পেলাম। প্রতিটি করূব দূতের পাশে একটি করে চাকা। চাকাগুলিকে স্বচ্ছ হলুদ রঙের বৈদুর্য়্য়মণির মতো দেখাচ্ছিল।
26-Ezekiel 10:10 : চারটি চাকা ছিল এবং তাদের প্রত্যেকেরই এক রূপ। দেখে মনে হচ্ছিল যেন চাকার মধ্যে চাকা রয়েছে।
26-Ezekiel 10:11 : তারা গমন করার সময় যে কোন দিকে যেতে পারত। কিন্তু গমন করার সময় করূব দূতেরা মুখ ঘোরাত না। তাদের মাথা যে দিকে মুখ করে থাকত সেই দিকেই যেত। চলার সময় পাশে ফিরত না।
26-Ezekiel 10:12 : তাদের দেহের সর্বত্র চোখে পূর্ণ। তাদের পিঠে, হাতে, ডানায ও চাকায় চোখে পূর্ণ। হ্যাঁ, চার চাকাও চোখে পূর্ণ ছিল!
26-Ezekiel 10:13 : আমি শুনলাম সেই চাকাগুলিকে কেউ চিত্কার করে বলল, “ঘূর্য়্ণমান চাকা।”
26-Ezekiel 10:14 : প্রত্যেক করূব দূতের চারটি করে মুখ ছিল। প্রথম মুখটি করূবের মুখ। দ্বিতীয়টি মানুষের মুখ। তৃতীয়টি সিংহের মুখ, আর চতুর্থটি ঈগলের মুখ। তখন আমি বুঝলাম দর্শনে যে পশুদের আমি কবার নদীর ধারে দেখেছিলাম তা করূব দূত ছিল!তারপর সেই করূব দূতরা আকাশে উঠল।
26-Ezekiel 10:15 : -
26-Ezekiel 10:16 : আর চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে উঠল। যখন সেই করূব দূতগুলি ডানা তুলে বাতাসে উড়ল তখন চাকাগুলি পাশেও ঘুরাত না।
26-Ezekiel 10:17 : করূব দূতরা আকাশে উড়লে চাকাগুলিও তার সঙ্গে যেত। করূব দূতেরা স্থির হয়ে দাঁড়ালে চাকাগুলিও স্থির হত। কারণ ঐ চাকাগুলিতে সেই প্রাণীদের আত্মা ছিল।
26-Ezekiel 10:18 : তারপর প্রভুর মহিমা মন্দিরের চৌকাঠ থেকে উঠে এসে করূব দূতদের উপরে অবস্থান করল।
26-Ezekiel 10:19 : করূব দূতরা ডানা তুলে আকাশে উড়ে গেল। আমি তাদের মন্দির ত্যাগ করে চলে যেতে দেখলাম। চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল। তারপর তারা প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায এসে থামল। ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা শূন্যে তাদের উপরে ছিল।
26-Ezekiel 10:20 : তখন আমি কবার নদীর ধারে দেখা দর্শনের সেই পশুদের কথা স্মরণ করলাম; যারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমার নীচে ছিল। আর বুঝতে পারলাম যে তারা করূব দূত ছিল।
26-Ezekiel 10:21 : অর্থাত্‌ প্রত্যেক পশুর চারটি করে মুখ, চারটি ডানা আর ডানার তলায় মানুষের হাতের মত দেখতে হাত ছিল।
26-Ezekiel 10:22 : করূব দূতগুলির মুখগুলি ছিল দর্শনে কবার নদীর ধারে দেখা চারটি পশুর মুখের মত। আর তারা যে দিকে যেত সোজা সেই দিকেই তাকাত।
26-Ezekiel 11:1 : তারপর আত্মা আমাকে প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায বয়ে নিয়ে গেল। এই দরজার মুখ পূর্বদিকে যেদিকে সূর্য় ওঠে সেই দরজার মুখে আমি
26-Ezekiel 11:25 : জন পুরুষ দেখতে পেলাম। অসূরের পুত্র যাসনিয় এই সব লোকদের সঙ্গে ছিল। বনায়ের পুত্র প্রটিয সেখানে ছিল। এই দুই জন ছিল লোকদের অধ্যক্ষ।
26-Ezekiel 11:2 : তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, এরাই সেই লোক যারা এই শহরের মধ্যে মন্দ পরিকল্পনাগুলি করছে। তারা সব সময়েই লোকদের মন্দ কাজ করতে বলে।
26-Ezekiel 11:3 : এই লোকেরা বলে, ‘আমরা খুব শীঘ্রই আমাদের বাড়ীঘর বানাব। আমরা হলাম রান্নার হাঁড়ির ভেতর মাংসের মতন।’
26-Ezekiel 11:4 : তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে লোকেদের কাছে বলবে। মনুষ্যসন্তান, যাও লোকেদের কাছে গিয়ে ভাব্বাণী কর।”
26-Ezekiel 11:5 : তখন প্রভুর আত্মা আমার কাছে এল। তিনি আমায় বললেন, “তাদের বল প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ইস্রায়েলের গৃহ, তুমি বড় বড় পরিকল্পনা করছ। কিন্তু আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছ।
26-Ezekiel 11:6 : এই শহরে তুমি অনেক লোক হত্যা করেছ। শহরের রাস্তা মৃতদেহে ভরিয়ে দিয়েছ।
26-Ezekiel 11:7 : এখন প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘ঐ মৃতদেহরা মাংস আর শহরটা পাত্র। কিন্তু নবূখদ্নিত্‌সর তোমাদের এর মধ্যে থেকে বের করে আনা হবে!
26-Ezekiel 11:8 : তোমরা তরবারির ভয়ে ভীত। কিন্তু আমি আর কারো নয়, শুধু তোমার বিরুদ্ধেই তরবারিটি আনছি।”‘ প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
26-Ezekiel 11:9 : ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের শহরের বাইরে নিয়ে যাব। আর বিদেশীদের হাতে তুলে দেব। আমি তোমাদের শাস্তি দেব!”
26-Ezekiel 11:10 : তোমরা তরবারির ঘাযে মারা যাবে। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতে তোমাদের শাস্তি দেব, যেন তোমরা জান যে আমিই তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি, আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 11:11 : হ্যাঁ, এই জায়গা রান্নার পাত্র হয়ে উঠবে না। আর তোমরা তার মধ্যে পাক করা মাংস হবে না। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতেই তোমাদের শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 11:12 : তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। আমার আজ্ঞা তোমরা লঙঘন করেছিলে। তোমরা আমার পথ অনুসরণ করনি। পরিবর্ত্তে, তোমরা তোমাদের চার দিকের জাতিদের পথই অনুসরণ করেছিলে!”
26-Ezekiel 11:13 : আমি যেই ঈশ্বরের কথা বলা শেষ করলাম, বনায়ের পুত্র প্লটিয মারা গেল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। উপুড় হয়ে মাটিতে মুখ ঠেকিযে জোরে কেঁদে উঠে আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আপনি কি অবশিষ্ট ইস্রায়েলীয়দের সবাইকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবেন?”
26-Ezekiel 11:14 : কিন্তু তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 11:15 : “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পরিবারগুলি অর্থাত্‌ তোমার ভাযেদের, যারা ইস্রায়েল দেশটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল তাদের স্মরণ কর। কিন্তু এখন জেরুশালেমের অধিবাসীরা বলছে, ‘প্রভুর কাছ থেকে তারা বহু দূরে চলে গিয়েছিল। এই দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছিল - এটা আমাদেরই!’
26-Ezekiel 11:16 : “তাই ঐ লোকদের এই বিষয়গুলি বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘এটা সত্য যে আমি আমার প্রজাদের দূরের দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম। আমিই তাদের বহু দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য ঐসব দেশে আমিই তাদের মন্দির হব।
26-Ezekiel 11:17 : কিন্তু তুমি ঐসব লোকদের অবশ্যই বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের ফিরিয়ে আনবেন। আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমি তোমাদের আবার এক জায়গায় সংগ্রহ করব এবং ঐসব জাতির মধ্যে থেকে ফিরিয়ে আনব। ইস্রায়েলের ভূমি আবার তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব!
26-Ezekiel 11:18 : আর আমার প্রজারা ফিরে এলে তারা এখানে এখন যে সব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তি রয়েছে সে সব ধ্বংস করবে।
26-Ezekiel 11:19 : আমি তাদের একত্র করব। আমি তাদের নতুন আত্মা দেব। আমি তাদের পাথরের হৃদয় সরিয়ে সেখানে প্রকৃত হৃদয় স্থাপন করব।
26-Ezekiel 11:20 : তখন তারা আমার বিধিগুলি পালন করবে। তারা আমার আজ্ঞাগুলি পালন করবে। আমি তাদের যা বলব তারা তাই করবে। তারা প্রকৃতই আমার লোক হবে, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।”‘
26-Ezekiel 11:21 : তখন ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু এখন তাদের মন অধিকার করে আছে ঐসব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তিরা। আর ঐ লোকরা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য অবশ্যই আমি তাদের শাস্তি দেব।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 11:22 : তারপর করূব দূতরা তাদের ডানা ওঠাল আর আকাশে উড়ে গেল। চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল। আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের ওপরে ছিল।
26-Ezekiel 11:23 : পরে প্রভুর মহিমা নগরের মাঝখান থেকে উঠে গিয়ে নগরের পূর্বদিকে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে থেমে গেল।
26-Ezekiel 11:24 : তারপর আত্মাটি আমায় তুলে নিয়ে আবার বাবিলনে সেই সব লোকদের কাছে, যারা ইস্রায়েল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে আনল। আমি ঐসব ঈশ্বরীয দর্শনে দেখলাম। তারপর যাকে আমি আমার দর্শনে দেখেছিলাম তিনি শূন্যে উঠে চলে গেলেন।
26-Ezekiel 11:25 : তখন আমি নির্বাসনে যারা ছিলেন তাদের কাছে প্রভু আমায় যা যা দেখিয়েছিলেন তা বললাম।
26-Ezekiel 12:1 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 12:2 : “মনুষ্যসন্তান, তুমি বিদ্রোহীদের মধ্যে বাস করছ! তারা সব সময়ই আমার বিরুদ্ধাচরণ করে। আমি তাদের প্রতি যা করেছি তা দেখার চোখ তাদের রয়েছে, কিন্তু তারা সে সব দেখবে না। আমি তাদের যা বলেছি তা শোনবার কান তাদের রয়েছে কিন্তু তারা আমার আদেশ শুনবে না। কারণ তারা বিদ্রোহী।
26-Ezekiel 12:3 : তাই, মনুষ্যসন্তান, তোমার জিনিসপত্র গোটাও। এমন অভিনয় কর যেন তুমি বহুদূর দেশে যাচ্ছ। দেখ, লোকে যেন তোমাকে তা করতে দেখে। হয়ত তারা তোমায় দেখবে কিন্তু তারা বিদ্রোহী।
26-Ezekiel 12:4 : “দিনের বেলায় তোমার জিনিসপত্র বাইরে বের করে এনো যাতে লোকে দেখতে পায়। তারপর বিকেলে এমন অভিনয় কর যেন নির্বাসিত হয়ে বহুদূর দেশে চলে যাচ্ছ।
26-Ezekiel 12:5 : লোকরা যখন দেখছে সে সময় দেওয়ালে একটা গর্ত কর আর সেই গর্ত দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাও।
26-Ezekiel 12:6 : রাতে সেই জিনিসপত্র কাঁধে করে চলে যাও। মুখ ঢেকে ফেল যাতে দেশটি দেখতে না পাও। কারণ আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করছি।”
26-Ezekiel 12:7 : তাই আমাকে যেরকম আজ্ঞা করা হয়েছিল আমি সেই মত কাজ করলাম। দিনের সময় আমি আমার জিনিসপত্র তুলে নিয়ে এমন অভিনয় করলাম যেন বহু দূরের দেশে চলে যাচ্ছি। সেই সন্ধ্যায় আমি হাত দিয়ে দেওয়ালে একটা গর্ত করলাম। রাতের বেলায় আমি জিনিসপত্র ঘাড়ে করে স্থান ত্যাগ করলাম। আমি সব লোকের সামনেই তা করলাম।
26-Ezekiel 12:8 : পরের দিন সকালে প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 12:9 : “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি করছ তা কি ঐ বিদ্রোহী ইস্রায়েল সন্তানেরা জিজ্ঞাসা করেছে!
26-Ezekiel 12:10 : তাদের বল যে প্রভু, তাদের সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন। এই বার্তাটি জেরুশালেমের নেতাদের জন্য এবং ইস্রায়েলে বাসকারী সমস্ত লোকেদের জন্য।
26-Ezekiel 12:11 : তাদের বল, ‘আমি তোমাদের সকলের সামনে এক উদাহরণস্বরূপ। আমি যা করেছি তা সত্যিই তোমাদের প্রতি ঘটবে। বন্দী হিসাবে সত্যিই তোমাদের দূর দেশে যেতে বাধ্য করা হবে।
26-Ezekiel 12:12 : তোমাদের নেতা তার কাঁধে তার তল্পিগুলো রাখবে। সে রাতের বেলায় দেওয়ালে একটি গর্ত করে পালিয়ে যাবে। সে তার মুখ ঢাকবে যাতে লোকে তাকে চিনতে না পারে। সে চোখে দেখতে পাবে না সে কোথায় যাচ্ছে।
26-Ezekiel 12:13 : আমি তাকে ধরব। সে আমার ফাঁদে ধরা পড়বে। আর আমি তাকে বাবিলে কল্দীযদের দেশে নিয়ে আসব। শএুরা তার চোখ দুটো উপড়ে নেবে। তাই সে দেখতে পাবে না কোথায় চলেছে। সে বাবিলে মারা যাবে।
26-Ezekiel 12:14 : আমি রাজার লোকদের ইস্রায়েলের চারধারের অন্যান্য দেশগুলিতে থাকতে বাধ্য করব। আমি তার সৈন্যদের বাতাসে ছড়িয়ে দেব আর শএু সেনারা তাদের পেছনে ধাওযা করবে।
26-Ezekiel 12:15 : তখন লোকে জানবে যে আমিই প্রভু। তারা জানবে যে আমিই তাদের অন্য দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম।
26-Ezekiel 12:16 : “কিন্তু তবুও আমি তাদের মধ্যে কিছু লোককে জীবিত রাখব। কেউ কেউ প্লেগের হাত থেকে রক্ষা পাবে। কিছু লোক অনাহারে মারা যাবে না। কেউ বা আবার যুদ্ধে বেঁচে যাবে। আমি তাদের বাঁচাব যাতে তারা অন্যদের বলতে পারে তারা আমার বিরুদ্ধে কি ভয়ঙ্কর কাজ করেছিল। আর শুধুমাত্র তখনই তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 12:17 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 12:18 : “মনুষ্যসন্তান, এমন অভিনয় কর যেন তুমি ভীষণ ভীত। তোমার খাদ্য আহার করার সময় ভয়ে কাঁপবে এবং উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত অবস্থায় জল পান করবে।”
26-Ezekiel 12:19 : তুমি সাধারণ লোকদের এসব অবশ্যই বলবে। বলবে, ‘প্রভু আমাদের সদাপ্রভু জেরুশালেমে ও ইস্রায়েলের অন্যান্য অংশে বাসকারী লোকেদের বলেছেন। তোমরা তোমাদের খাদ্য ভোজন করার সময় খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে। জল পান করার সময় ভীত হবে। কারণ তোমার দেশের সব কিছুই ধ্বংস করা হবে। সেখানে বসবাসকারী সবার প্রতিই শএুরা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হবে।
26-Ezekiel 12:20 : তোমাদের শহরে এখন অনেকেই বাস করে, কিন্তু ঐসব শহর ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। তোমাদের সমস্ত দেশকেই ধ্বংস করা হবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 12:21 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 12:22 : “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলে লোকে কেন এই ছড়াটি বলে:দুর্দশা আসবে না চট করে,দর্শনগুলো ফলবে না রে।
26-Ezekiel 12:23 : “ঐ লোকদের বলো যে প্রভু তাদের ঈশ্বর তাদের ছড়াটি থামিয়ে দেবেন। ইস্রায়েল সম্বন্ধে আর তারা ওসব বলবে না, কিন্তু এখন এই ছড়াটি আবৃত্তি করবে:দুর্দশা আসবে শীঘ্রই।দর্শনগুলো সব ফলবে ওরে।
26-Ezekiel 12:24 : “সত্যি সত্যিই ইস্রায়েলে আর কোন মিথ্যা দর্শন থাকবে না। আর কোন জাদুকর থাকবে না যারা মিথ্যা করে ভবিষ্যত্‌ সম্বন্ধে বলে।
26-Ezekiel 12:25 : কারণ আমিই প্রভু আমি যা বলতে চাই তা বলব, আর তাই ঘটবে। আর আমি সময় দীর্ঘ হতে দেব না। ঐসব দুর্ভোগ খুব শীঘ্রই আসছে তোমাদের জীবন কালেই। ওহে বিদ্রোহী বংশ আমি যখন কিছু বলি, তা ঘটে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 12:26 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 12:27 : “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের লোকরা মনে করে যে সব দর্শন আমি তোমায় দিচ্ছি তা সুদূর ভবিষ্যতের। তারা মনে করে তুমি এমন বিষয়ে কথা বলছ যা এখন থেকে বহু বছর পরে ঘটবে।
26-Ezekiel 12:28 : তাই তুমি অবশ্যই তাদের এই সব কথা বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: আমি আর দেরী করব না। যদি আমি কিছু ঘটবে বলে বলি তবে তা ঘটবেই!”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 13:1 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 13:2 : “মনুষ্যসন্তান, তুমি আমার হয়ে ইস্রায়েলের ভাব্বাদীদের অবশ্য এই কথা বলবে। এই সব ভাব্বাদীরা প্রকৃতপক্ষে আমার হয়ে কথা বলে না। এই সব ভাব্বাদীরা নিজেরা যা বলতে চায় তাই - ই বলে। তাই তুমি তাদের অবশ্যই এই কথা বোলো, ‘প্রভুর এই বার্তা শোন!
26-Ezekiel 13:3 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন। ওহে মূর্খ ভাব্বাদীরা, তোমাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটবে। তোমরা নিজের নিজের আত্মার অনুগমণ করছ। তোমরা দর্শনে প্রকৃতপক্ষে যা দেখছ তা লোকদের কাছে বলছ না।’
26-Ezekiel 13:4 : “‘ইস্রায়েল তোমার ভাব্বাদীরা পোড়ো বাড়ীর মধ্যে দৌড়ে যাওয়া শিয়ালের মতো হবে।
26-Ezekiel 13:5 : তোমরা ভাঙ্গা প্রাচীরের কাছে সৈন্য মোতাযেন করনি। ইস্রায়েল পরিবারকে রক্ষা করতে প্রাচীর তৈরী করনি। তাই যখন প্রভুর কাছ থেকে শাস্তির দিন নেমে আসবে তোমরা যুদ্ধে হারবে।
26-Ezekiel 13:6 : “‘মিথ্যা ভাব্বাদীরা বলে তারা দর্শন দেখেছে। তারা তাদের জাদু করে মিথ্য়ে মিথ্য়ে ওসব ঘটবে বলে বলেছে। তারা বলে প্রভুই তাদের পাঠিয়েছেন - কিন্তু তা মিথ্যা কথা। তারা এখনই তাদের মিথ্যা কথা সফল হবে ভেবে বসে আছে।
26-Ezekiel 13:7 : “‘মিথ্যা ভাব্বাদীর দল, তোমাদের দেখা দর্শন সত্যি নয়। তোমরা তোমাদের জাদু ব্যবহার করে ভবিষ্যতে কি ঘটবে বলেছ। সব মিথ্য়ে কথা। তোমরা বলেছ প্রভুই ঐসব কথা বলেছেন। কিন্তু আমি তোমাদের কোন কথাই বলিনি!”‘
26-Ezekiel 13:8 : তাই এখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “তোমরা মিথ্য়ে কথা বলেছ। তোমাদের দেখা দর্শন সত্যি নয়। তাই আমি এখন তোমাদের বিরুদ্ধে!” প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন।
26-Ezekiel 13:9 : প্রভু বলেন, “যে সব ভাব্বাদী মিথ্যা দর্শন দেখেছে ও মিথ্যা বলেছে আমি তাদের শাস্তি দেব। আমি তাদের আমার প্রজাদের মধ্য থেকে উচ্ছেদ করব। ইস্রায়েলের পরিবারের নামের তালিকায তাদের নাম থাকবে না। তারা কখনও ইস্রায়েল দেশে আর আসবে না। তখন তোমরা জানবে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু!
26-Ezekiel 13:10 : “বার বার ঐসব ভাব্বাদীরা আমার প্রজাদের কাছে মিথ্যা বলেছে। ঐ ভাব্বাদীরা বলেছে শান্তি আসছে, কিন্তু শান্তি আসেনি। প্রাচীর মেরামত করে লোকদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত। কিন্তু তারা ভাঙ্গা প্রাচীরে কেবল চুনকাম করেছে।
26-Ezekiel 13:11 : ওদের বলো যে আমি শিলা ও প্রবল বৃষ্টি পাঠাব। বাতাস প্রবলভাবে বইবে আর ঘূর্ণিঝড় আসবে। তখন প্রাচীর ভেঙ্গে পড়বে।
26-Ezekiel 13:12 : প্রাচীর ভেঙ্গে পড়লে লোকে ভাব্বাদীদের জিজ্ঞেস করবে, ‘চুনকাম করা দেওয়ালের কি হল?”‘
26-Ezekiel 13:13 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি রোধন্বত এবং তোমাদের বিরুদ্ধে ঝড় পাঠাব। রোধ আমি প্রবল বৃষ্টি পাঠাব। এোধ আমি আকাশ থেকে শিলা বৃষ্টি পাঠাব এবং তোমাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব।
26-Ezekiel 13:14 : তোমরা দেওয়ালে চুনকাম করেছ কিন্তু আমি সমস্ত দেওয়ালটাকেই ধ্বংস করব। আমি তা মাটিতে ফেলে দেব। সেই প্রাচীর তোমাদের ওপরেই পড়বে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 13:15 : আমি সেই প্রাচীরের প্রতি ও যে লোকরা তার ওপর প্রলেপ লাগিয়েছে, তাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ শেষ করব। সেখানে আমি বলব, ‘দেওয়ালও নেই আর তার ওপর প্রলেপ লাগানোরও কেউ নেই।’
26-Ezekiel 13:16 : “ইস্রায়েলের মিথ্যা ভাব্বাদীদের প্রতি ঐ সবকিছুই ঘটবে। ঐ ভাব্বাদীরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে কথা বলে। ঐ ভাব্বাদীরা বলে শান্তি হবে কিন্তু শান্তি হয় না।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 13:17 : ঈশ্বর বলেছেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের ভাব্বাদিনীদের দিকে দেখ। ঐ সমস্ত ভাব্বাদিনীরা আমার হয়ে কথা বলে না। তারা নিজেরা যা চায় তাই বলে। তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। তুমি অবশ্যই এই সব কথা তাদের বলবে।
26-Ezekiel 13:18 : ‘প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন: ভাব্বাদিনীরা, তোমাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটবে। লোকদের হাতে বাঁধার জন্য তোমরা কাপড়ের তাবিজ বানিয়েছ, লোকদের মাথায় বাঁধ্বার জন্য তোমরা একটি বিশেষ মাথার পাগড়ী তৈরী কর। তোমরা বলে থাক ঐসব জিনিসের যাদুর মত ক্ষমতা রয়েছে। যেন তোমরা অন্য লোকদের জীবন চালনা করতে পার। কেবল নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তোমরা ঐসব লোকদের ফাঁদে ফেল!
26-Ezekiel 13:19 : তোমরা লোকদের ভাবতে শেখাও যে আমার আদৌ কোন গুরুত্ব নেই। কয়েক মুঠো বার্লি ও রুটির টুকরোর জন্য তোমরা আমাকে অসম্মান কর? তোমরা আমার প্রজাদের কাছে মিথ্যা বল আর তারাও মিথ্যা কথা শুনতে ভালোবাসে। যাদের বাঁচা উচিত তাদের তোমরা মেরে ফেল আর যাদের মৃত্যু হওয়া উচিত্‌ তাদের তোমরা বাঁচাও।
26-Ezekiel 13:20 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন: তোমরা ঐসব কাপড়ের তাবিজ লোকদের ফাঁদে ফেলতে তৈরী করে থাকো। কিন্তু আমি তাদের মুক্ত করব। তোমাদের হাত থেকে ঐসব তাবিজ ছিঁড়ে নেব, আর লোকরা মুক্ত হবে। তারা ফাঁদ থেকে উড়ে যাওয়া পাখীর মত হবে!
26-Ezekiel 13:21 : আর আমি ঐসব মাথার আবরণ ছিঁড়ে তোমাদের হাত থেকে আমার প্রজাদের বাঁচাব। ঐ লোকরা তোমাদের ফাঁদ থেকে পালাবে আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 13:22 : “তোমরা ভাব্বাদীরা মিথ্যা কথা বল। তোমাদের মিথ্যা ভালো লোকদের আঘাত করে। ঐসব ভাল লোকেদের আমি আঘাত করতে চাইনি! তোমরা মন্দ লোকদের পক্ষ সমর্থন কর আর তাদের খারাপ কাজ67 করতে উত্সাহ দাও যাতে তাদের প্রাণহানি হয়।
26-Ezekiel 13:23 : তাই তোমরা আর অযথা দর্শন দেখবে না, আর জাদু করবে না। আমি আমার প্রজাদের তোমাদের হাত থেকে বাঁচাব। আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”‘
26-Ezekiel 14:1 : ইস্রায়েলের কিছু প্রবীণ আমার কাছে এসে আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য বসল।
26-Ezekiel 14:2 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 14:3 : “মনুষ্যসন্তান, এই লোকদের হৃদয়ে এখনও তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলো রয়েছে। যে জিনিষগুলি তাদের পাপের পথে নিয়ে গিয়েছিল সেগুলো তারা এখনও রেখে দিয়েছে। তারা এখনও ঐ মুর্ত্তিগুলোর পূজো করে। সুতরাং পরামর্শের জন্য কেন তারা আমার কাছে এসেছে? তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কি আমার উচিত্‌? না!
26-Ezekiel 14:4 : কিন্তু আমি তাদের একটি উত্তর দেব। আমি তাদের শাস্তি দেব। ঐসব লোকদের তুমি এসব কথাগুলো অবশ্যই বলবে: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: যদি কোন ইস্রায়েলীয়, যে ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলি রাখে এবং পূজো করে, একজন ভাব্বাদীর কাছে যায় এবং আমার কাছ থেকে পরামর্শ নেবার কথা বলে, যদিও তারা ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলি রাখে তবু আমি তাদের উত্তর দেব। তাদের কাছে সেই সব নোংরা মূর্ত্তি থাকলেও আমি তাদের উত্তর দেব।
26-Ezekiel 14:5 : কারণ আমি তাদের হৃদয় স্পর্শ করতে চাই। আমি দেখাতে চাই যে আমি তাদের ভালোবাসি, যদিও তাদের নোংরা প্রতিমার জন্য তারা আমায় পরিত্যাগ করেছে।”
26-Ezekiel 14:6 : “তাই ইস্রায়েল পরিবারকে এই সব কথা বলো। তাদের বলো, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: তোমরা নোংরা মূর্ত্তি ছেড়ে আমার কাছে ফিরে এসো। ঐসব ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি থেকে দূরে সরে যাও।
26-Ezekiel 14:7 : যদি কোন ইস্রায়েলীয়, অথবা ইস্রায়েলে বসবাসকারী আমাকে প্রশ্ন করবার জন্য কোন বিদেশী ভাব্বাদীর কাছে যায়, আমি তাকে উত্তর দেব। যদিও সে আমাকে ত্যাগ করে থাকে এবং যে সব নোংরা মূর্ত্তিগুলি তাকে পাপের পথে ঠেলে নিয়ে গিয়েছিল সেগুলি রাখে এবং পূজা করে তবুও আমি তাকে উত্তর দেব। আর আমি তাকে এই উত্তর দেব।
26-Ezekiel 14:8 : আমি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াব। আমি তাকে ধ্বংস করব, অন্য লোকেদের কাছে সে উদাহরণ স্বরূপ হবে। লোকে তাকে দেখে হাসবে। আমি তাকে আমার প্রজাদের মধ্য থেকে উচ্ছেদ করব। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু!
26-Ezekiel 14:9 : আর যদি কোন ভাব্বাদী প্রতারিত হয় এবং অন্য কিছু বলে, তার মানে, আমি, প্রভু, ঐ ভাব্বাদীকে ঠকিয়েছি। আমি তাকে শাস্তি দেব। আমি তাকে ধ্বংস করব এবং আমি তাকে আমার প্রজা ইস্রায়েলের মধ্য থেকে সরিয়ে নেব।
26-Ezekiel 14:10 : তাই সেই পরামর্শ প্রার্থী প্রশ্নকারক ও উত্তরকারী ভাব্বাদী দুজনেই একই শাস্তি পাবে।
26-Ezekiel 14:11 : আমি এটা করব যাতে ইস্রায়েলীয়রা আমাকে আর ছেড়ে না যায়। আর তাহলে আমার লোকরা তাদের পাপে আর নোংরা হবে না। তখন তারা আমার বিশেষ লোক হবে। আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 14:12 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 14:13 : “মনুষ্যসন্তান, যে জাতিই আমাকে পরিত্যাগ করবে ও আমার বিরুদ্ধে পাপ করবে তাকেই আমি শাস্তি দেব। আমি তাদের খাদ্যের য়োগান বন্ধ করে দেব। আমি দুর্ভিক্ষ এনে সেই দেশ থেকে লোকজন ও পশুদেরও দূর করে দিতে পারি।”
26-Ezekiel 14:14 : যদিও নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করেছিল তবু আমি সেই দেশকে শাস্তি দেব। ঐসব মানুষ তাদের ধার্মিকতার জন্য প্রাণে বেঁচ্ছেিল, কিন্তু তারা সমস্ত দেশ বাঁচাতে পারেনি।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব বলেছিলেন।
26-Ezekiel 14:15 : ঈশ্বর বলেন, “অথবা আমি বন্য জন্তুদের সেই দেশে পাঠাতে পারি আর তারা দেশের সব লোক হত্যা করতে পারে। ফলে কোন লোক বন্য জন্তুদের জন্য সেই দেশের মধ্য দিয়ে যাবে না।”
26-Ezekiel 14:16 : যদি নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করত তবে আমি ওই তিনজন ধার্মিককে বাঁচাতাম। ঐ তিন ব্যক্তি তাদের নিজের প্রাণ বাঁচাত। কিন্তু আমার জীবনের দিব্য তারা অন্য লোকদের প্রাণ বাঁচাতে পারত না। তাদের নিজের ছেলেমেয়েদেরও না! সেই মন্দ দেশ ধ্বংস হতোই।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 14:17 : ঈশ্বর বলেন, “অথবা আমি ঐ দেশের বিরুদ্ধে একটি শএুসেনা পাঠাতে পারি। ঐ শএুরা দেশটি ধ্বংস করবে। সেই দেশ থেকে আমি সমস্ত লোকজন ও পশু সরিয়ে দেব।
26-Ezekiel 14:18 : নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করলে আমি ঐ তিন ধার্মিককে রক্ষা করতাম। ঐ তিনজন তাদের নিজের নিজের প্রাণ বাঁচাত কিন্তু আমার জীবনের দিব্য তারা অন্যদের প্রাণ বাঁচাতে পারত না। এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদেরও না। সেই মন্দ দেশ ধ্বংস হোত।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছিলেন।
26-Ezekiel 14:19 : ঈশ্বর বললেন, “অথবা আমি দেশের বিরুদ্ধে কোন রোগ পাঠাতে পারি। আমি ঐ লোকদের ওপর আমার রোধ ঢেলে দেব। আমি সমস্ত লোক ও পশু সেই দেশ থেকে দূর করব।”
26-Ezekiel 14:20 : যদি নোহ, দানিয়েল ও ইযোব সেখানে বাস করত, তবে আমি ঐ তিন জনকে বাঁচাতাম কারণ তারা ধার্মিক। ঐ তিনজন নিজের প্রাণ বাঁচাতে পারত। কিন্তু আমার জীবনের দিব্য তারা অন্য লোকেদের জীবন বাঁচাতে পারত না। এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদেরও না।” আমার প্রভু সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছিলেন।
26-Ezekiel 14:21 : তখন প্রভু আমার সদাপ্রভু বললেন, “ভেবে দেখ তাহলে জেরুশালেমের পক্ষে তা কত অমঙ্গলজনক হবে: এই চারটি শাস্তির সব কটাই আমি তাদের বিরুদ্ধে পাঠাব। আমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে সৈন্য, ক্ষুধা, রোগ ও বন্য পশু এই সব কটিই পাঠাব। সেই দেশ থেকে আমি লোকজন ও পশুপাখী উচ্ছেদ করব!
26-Ezekiel 14:22 : সেই দেশ থেকে কেউ কেউ পালাবে। তারা তাদের পুত্র, কন্যা নিয়ে তোমার কাছে সাহায্যের জন্য আসবে। তখন তুমি দেখতে পাবে যে ঐ লোকরা প্রকৃতপক্ষে কত মন্দ এবং জেরুশালেমের বিরুদ্ধে আমি যে সব অমঙ্গল এনেছি তা তোমার কাছে যথার্থ মনে হবে।
26-Ezekiel 14:23 : তুমি তাদের জীবনযাপন ও তাদের মন্দ কাজগুলি দেখতে পাবে। আর তখন তুমি বুঝবে যে আমি যথার্থ কারণেই ঐ লোকেদের শাস্তি দিয়েছি।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 15:1 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 15:2 : “মনুষ্যসন্তান, দ্রাক্ষালতার কাঠের খণ্ডগুলো বনের বৃক্ষের ছোট কাঁটা ডালের থেকে কোন অংশে উত্তম?”
26-Ezekiel 15:3 : দ্রাক্ষালতার সেই কাঠ কি কোন কিছু তৈরী করার জন্য ব্যবহার করা যায়? না! সেই কাঠ দিয়ে কি থালা ঝোলানোর জন্য কীলক তৈরী করা যায়? না!
26-Ezekiel 15:4 : লোকে সেই কাঠ কেবল জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে। কাঠগুলির কিছু কিছুর সামনে পিছনে আগুন ধরে। মাঝখানের অংশও আগুনে কালো হয়ে যায় কিন্তু কাঠিটি সম্পূর্ণরূপে পোড়ে না। সেই পোড়া কাঠ দিয়ে কি কিছু তৈরী করতে পারো? না!
26-Ezekiel 15:5 : যদি পোড়াবার আগে তা দিয়ে কোন কাজ না হল তবে এটা নিশ্চিত যে পোড়াবার পরেও তা কোন কাজে লাগবে না। তাই দ্রাক্ষালতার কাঠের টুকরোগুলো বনের বৃক্ষের কাঠের টুকরোর মতই। লোকরা সেই টুকরোগুলো আগুনে ফেলে দেয় আর আগুন তা পুড়িয়ে দেয়। সেইভাবেই, আমি জেরুশালেমে বাসকারী লোকদের আগুনে ছুঁড়ে ফেলব।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 15:6 : -
26-Ezekiel 15:7 : “আমি ঐ লোকদের শাস্তি দেব। কিন্তু কিছু লোক সেই লাঠির মত হবে যা সম্পূর্ণ দহয় না - তাদের শাস্তি হলেও তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে না। তোমরা দেখবে যে আমি ঐ লোকেদের শাস্তি দিয়েছি, আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 15:8 : আমি ঐ দেশ ধ্বংস করব কারণ লোকরা আমায় পরিত্যাগ করেছে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 16:1 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 16:2 : “মনুষ্যসন্তান, জেরুশালেমের লোকরা যে সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছে সে সম্বন্ধে তাদের বল।
26-Ezekiel 16:3 : তুমি অবশ্যই বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু জেরুশালেমকে এই সব কথা বলেন: তোমার দিকে দেখ। তুমি জন্মেছিলে কনানে। তোমার বাবা ছিলেন ইমোরীয়, তোমার মা হিত্তীয়া।
26-Ezekiel 16:4 : জেরুশালেম যে দিন তোমার জন্ম হয়, তোমার নাড়ি কাটার জন্য কোন জায়গা ছিল না। কেউ তোমার গায়ে লবণ ছড়িয়ে তোমাকে পরিষ্কার করার জন্য স্নান করায় নি। কেউ তোমায় কাপড়ে মোড়াযনি।
26-Ezekiel 16:5 : জেরুশালেম, তুমি সম্পূর্ণ একা ছিলে। কেউ তোমার জন্য দুঃখ বোধ করেনি, তোমার যত্নও নেযনি। জেরুশালেম তোমার জন্মদিনে, তোমার পিতামাতা তোমাকে ক্ষেতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। তারা এরকম করেছিল কারণ তারা তোমাকে ঘৃণা করত।
26-Ezekiel 16:6 : “তখন আমি (ঈশ্বর) সেখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমি তোমায় রক্তের মধ্যে ছটফট করতে দেখলাম। তুমি রক্তে ঢাকা ছিলে কিন্তু আমি বললাম, “বাঁচ!” হ্যাঁ, তুমি রক্তে ঢাকা ছিলে কিন্তু আমি বললাম, “বাঁচ!”
26-Ezekiel 16:7 : আমি তোমাকে মাঠের গাছের মত বেড়ে উঠতে সাহায্য করলাম। তুমি বাড়লে, বেড়ে উঠে একজন যুবতী হলে: তোমার মাসিক হতে লাগল, স্তন দুটি বেড়ে উঠল, চুল বড় হল। কেউ তোমার প্রতি স্নেহভরে তাকিযে তোমার প্রতি মাযা করে তোমার কোন যত্ন নেযনি। কিন্তু তবুও তুমি উলঙ্গ ও ব্বিস্ত্রা ছিলে।
26-Ezekiel 16:8 : আমি তোমার দিকে তাকিযে দেখলাম, তোমাকে প্রেম করবার সময় হয়েছে। তাই আমি তোমার ওপর আমার কাপড় বিছালাম এবং তোমার উলঙ্গতা আবৃত করলাম। তোমাকে বিয়ে করার প্রতিজ্ঞাও করলাম। তোমার সঙ্গে বিয়ের চুক্তিও হল, আর তুমি আমার হলে।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এসব বলেছেন।
26-Ezekiel 16:9 : “‘আমি তোমায় জলে স্নান করালাম। তোমার রক্ত ধুলাম ও তোমার গায়ে তেল মালিশ করলাম।
26-Ezekiel 16:10 : তোমায় সুন্দর পোশাক ও পায়ে চামড়ার জুতো পরালাম। আমি তোমার মাথায় মসিনার পট্টি ও সিল্কের মাথা ঢাকা দিলাম।
26-Ezekiel 16:11 : তারপর তোমায় কিছু অলঙ্কার দিলাম, তোমার হাতে বালা ও গলায় হার দিলাম।
26-Ezekiel 16:12 : তোমার নাকে দিলাম নথ, কানে দুল, আর সুন্দর মুকুটও পরতে দিলাম।
26-Ezekiel 16:13 : তোমায় রূপো ও সোনার গহনায বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল; এমনকি তোমার মসিনা সিল্ক ও কাজ করা সজ্জায সাজলে। তুমি সব থেকে উত্তম খাবার খেতে। তুমি খুব সুন্দরী হয়ে উঠলে। তুমি রাণী হলে!
26-Ezekiel 16:14 : তোমার রূপের জন্য তুমি হলে বিখ্যাত কারণ আমিই তোমায় সুন্দরী করেছিলাম।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছিলেন।
26-Ezekiel 16:15 : ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু তুমি তোমার সৌন্দর্য়ের ওপর নির্ভর করতে শুরু করলে। তোমার সুনাম ব্যবহার করতে শুরু করলে ও আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হলে। যেই যায় তার সঙ্গে তুমি বেশ্যার মত ব্যবহার করলে। তুমি তাদের সকলের কাছে নিজেকে বিকিযে দিলে!
26-Ezekiel 16:16 : তুমি সেই সুন্দর কাপড় নিয়ে তোমার পূজার স্থান সাজালে। আর সেসব জায়গায় বেশ্যার মত আচরণ করলে। এরকম একটা ব্যাপার আগে কখনও হয়নি, পরেও আর কখনও হবে না।
26-Ezekiel 16:17 : তারপর আমি তোমায় যে সুন্দর অলঙ্কার দিয়েছিলাম তা তুমি নিলে। তারপর সেই রূপো ও সোনা ব্যবহার করে পুরুষ মানুষের মূর্ত্তি তৈরী করলে। তারপর তাদের সঙ্গেও য়ৌন কাজ করলে!
26-Ezekiel 16:18 : তারপর তুমি সেই সুন্দর কাপড় নিয়ে ঐসব মূর্ত্তির জন্য কাপড় বানালে। আমি তোমায় যে সব সুগন্ধি ও ধূনো দিয়েছিলাম তা তুমি ঐসব মূর্ত্তির সামনে রাখলে।
26-Ezekiel 16:19 : আমি তোমায় রুটি, মধু ও তেল দিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি ওগুলো ঐসব মূর্ত্তিদের নিবেদন করলে। তুমি সেসব তোমার মূর্ত্তিদের সন্তুষ্ট করবার জন্য উত্সর্গ করলে। হ্যাঁ, তুমি তাই করেছিলে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 16:20 : ঈশ্বর বলেছেন, “তোমার এবং আমার সন্তান ছিল। কিন্তু তুমি আমার সন্তানদের নিয়ে গেলে। এমনকি তুমি তাদের হত্যা করলে এবং তাদের ঐসব মূর্ত্তিদের দিলে। ঐ সব মূর্ত্তিদের কাছে যাওয়া এবং তাদের সঙ্গে বেশ্যার মত আচরণ করবার চেয়েও এটা নিকৃষ্ট কাজ ছিল।
26-Ezekiel 16:21 : তুমি আমার সন্তানদের বলি দিতে তাদের এই মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে আগুনের মধ্য দিয়ে অতিএম করালে।
26-Ezekiel 16:22 : তুমি আমায় পরিত্যাগ করেছিলে এবং ঐসব ভয়ঙ্কর কাজ করেছিলে। তুমি কখনও তোমার য়ৌবনকাল স্মরণ করনি। স্মরণ করনি যে তোমাকে যখন আমি খুঁজে পেয়েছিলাম তখন তুমি রক্ত জড়ানো অবস্থায় উলঙ্গ হয়ে পড়েছিলে এবং শূণ্যে পা ছুঁড়ছিলে।
26-Ezekiel 16:23 : “ঐসব মন্দ কাজের পর, হায জেরুশালেম, এ তোমার পক্ষে ভীষণ অমঙ্গলদাযক হবে!” প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 16:24 : “ঐসব করার পর তুমি ঐ ঢিবি তৈরী করলে মূর্ত্তি পূজা করার জন্য। প্রতি রাস্তার কোণে ঐসব মূর্ত্তির উপাসনার স্থান তৈরী করলে।
26-Ezekiel 16:25 : প্রত্যেক রাস্তার মাথায় মাথায় ঐ ঢিবি তৈরী করলে। এই ভাবে তোমার সৌন্দর্য়্য় নষ্ট করলে। পথিককে ধরার জন্য তুমি তা ব্যবহার করলে। তুমি তোমার কাপড়ের নীচের ভাগ ওঠালে যাতে তোমার পা দেখা যায়; তারপর তুমি ঐসব লোকদের সঙ্গে বেশ্যার মত ব্যবহার করলে।
26-Ezekiel 16:26 : তারপর তুমি তোমার প্রতিবেশী মিশরে গেলে যার য়ৌনাঙ্গ বড় বড়। তারপর আমাকে রুদ্ধ করতে বহুবার তার সঙ্গে য়ৌন এযিা সম্পন্ন করলে।
26-Ezekiel 16:27 : তাই আমি তোমায় শাস্তি দিলাম! তোমার জমির অধিকারের অংশ নিয়ে নিলাম। আর তোমার শএু পলেষ্টীয়দের কন্যাদের শহর তোমাদের প্রতি তাদের যা ইচ্ছা তাই করতে দিলাম। এমনকি তারাও তোমাদের মন্দ কাজ শুনে চমকে উঠেছিল।
26-Ezekiel 16:28 : তারপর তুমি অশূরীয়দের সঙ্গে য়ৌন এযিা করতে গেলে। তোমার তৃপ্তি কিছুতেই হল না।
26-Ezekiel 16:29 : তাই তুমি কনানের দিকে ফিরলে, তারপর বাবিলের দিকে। তবু তোমার মন ভরল না।
26-Ezekiel 16:30 : তোমাকে দিয়ে ওসব কাজ করাবার জন্য তোমার হৃদয়কে অবশ্য দুর্বল হতে হবে। তুমি একজন দাপটমযী বেশ্যার মত আচরণ করলে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছিলেন।
26-Ezekiel 16:31 : ঈশ্বর বলেছিলেন, “কিন্তু তুমি ঠিক একেবারে বেশ্যার মত ছিলে না। তুমি প্রত্যেক বড় রাস্তার মাথায় ও প্রত্যেক গলির কোণে উপাসনার জন্য ঢিবি তৈরী করেছিলে। ঐসব লোকের সাথে য়ৌনএযিা করেছিলে কিন্তু বেশ্যার মত তাদের কাছ থেকে বেতন নাও নি।
26-Ezekiel 16:32 : তুমি ব্যভিচারী নারী। তোমার স্বামীর সাথে নয় কিন্তু আগন্তুকদের সঙ্গেই শুতে তুমি ভালোবাসো।
26-Ezekiel 16:33 : বেশীর ভাগ বেশ্যাই পুরুষদের বেতন দিতে বাধ্য করে; কিন্তু তুমি তোমার প্রেমিকদের অর্থ দিলে। তুমি চারধারের সমস্ত লোকেদের বেতন দিলে তোমার সঙ্গে য়ৌন কাজের জন্য।
26-Ezekiel 16:34 : বেশীর ভাগ বেশ্যার বিপরীত তুমি। অধিকাংশ বেশ্যা পুরুষদের বেতন দিতে বাধ্য করে কিন্তু যে পুরুষেরা তোমার সঙ্গে য়ৌন এযিা করে তাদের তুমি বেতন দাও।”
26-Ezekiel 16:35 : বেশ্যা, প্রভুর বার্তা শোন।
26-Ezekiel 16:36 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন: “তুমি তোমার টাকা খরচ করে তোমার প্রেমিকদের ও নোংরা দেবতাদের তোমার উলঙ্গতা দেখিয়েছ এবং তাদের সঙ্গে য়ৌন কাজ করেছ এবং তাদের তোমার ছেলে - মেয়েদের রক্ত দিয়েছ।”
26-Ezekiel 16:37 : তাই আমি তোমার সব প্রেমিকদের জড়ো করব। তুমি যাদের ভালোবেসেছিলে ও যাদের ঘৃণা করেছিলে সেই সমস্ত লোকদের আমি জড়ো করব আর তোমার উলঙ্গতা দেখাব। তারা তোমাকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ দেখবে।
26-Ezekiel 16:38 : তারপর আমি তোমায় শাস্তি দেব। আমি তোমায় নরঘাতকের ও ব্যভিচারিনীর উপযুক্ত য়ৌন পাপের শাস্তি দেব। তুমি এক রোধন্বত ও ঈর্ষান্বিত স্বামীর দ্বারা শাস্তি পাবে।
26-Ezekiel 16:39 : ঐ সমস্ত প্রেমিকদের হাতে তোমাকে দেব। তারা তোমার ঢিবিগুলো ধ্বংস করবে। তোমার পূজার স্থানগুলো বালিয়ে দেবে। তারা তোমার কাপড় ছিঁড়ে ফেলে তোমার সুন্দর অলঙ্কার নিয়ে নেবে। তারা তোমায় নিঃস্ব ও উলঙ্গ করে ছেড়ে যাবে সেই অবস্থায় যে অবস্থায় আমি তোমায় পেয়েছিলাম।
26-Ezekiel 16:40 : তারা জনতার ভিড় জড়ো করে পাথর ছুঁড়ে তোমায় মেরে ফেলবে। তারপর তাদের তরবারি দ্বারা তোমাকে টুকরো টুকরো করে কাটবে।
26-Ezekiel 16:41 : তারা তোমার গৃহ (মন্দির) বালিয়ে দেবে। তোমায় শাস্তি দেবে যাতে অন্য মহিলারা তা দেখে। আমি তোমার বেশ্যার মত জীবনযাপন বন্ধ করব। তোমার প্রেমিকদের বেতন দেওয়া বন্ধ করব।
26-Ezekiel 16:42 : তারপর আমার রোধ ও ঈর্ষা নিবৃত্ত করব। আমি শান্ত হব। আর রোধ করব না।
26-Ezekiel 16:43 : কেন এই সব ঘটবে? কারণ তোমার য়ৌবনকালে কি ঘটেছিল তুমি তা মনে রাখোনি। তুমি ঐসব মন্দ কাজের দ্বারা আমাকে রুদ্ধ করেছিলে। তাই তোমার এই সব মন্দ কাজের জন্য আমাকে তোমায় শাস্তি দিতে হল। কিন্তু তুমি আরও ভযাবহ বিষয়ের পরিকল্পনা করলে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 16:44 : “তোমার বিষয়ে যেসব লোকে কথা বলে তাদের আরেকটা কথা বলার থাকবে। তারা বলবে, ‘মা যেমন, মেয়ে তেমন।’
26-Ezekiel 16:45 : তুমি তোমার মায়ের মেয়ে। তুমি তোমার স্বামী এবং সন্তানদের জন্য কোন চিন্তা করো না। তুমি তোমার বোনের মতোই। তোমরা দুজনেই তোমাদের স্বামী ও সন্তানদের ঘৃণা করতে। তোমরা তোমাদের মা বাবার মতোই। তোমার মা ছিলেন একজন হিত্তীয়া আর বাবা ছিলেন একজন ইমোরীয়।
26-Ezekiel 16:46 : তোমার বড় বোন শমরিয়া তার কন্যাদের নিয়ে তোমার উত্তর দিকে থাকত। আর তোমার ছোট বোন সদোম তার কন্যাদেরনিয়ে তোমার দক্ষিণে থাকত।
26-Ezekiel 16:47 : তারা যেসব ভয়ঙ্কর কাজ করেছিল তার সবগুলোই তোমরা করেছিলে। এমনকি তাদের থেকেও খারাপ কাজ67 করেছিলে!
26-Ezekiel 16:48 : আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু। আমার জীবনের দিব্য, তুমি ও তোমার কন্যারা যেসব মন্দ কাজ করেছে, তোমার বোন সদোম ও তার কন্যারাও তা করেনি।”
26-Ezekiel 16:49 : ঈশ্বর বলেছিলেন, “তোমার বোন সদোম ও তার কন্যারা গর্বিত হয়েছিল, পেট ভরে খেতে পেয়েছিল এবং তাদের হাতে প্রচুর সময় থাকত। তারা গরীব, অসহায় লোকদের সাহায্য করত না।
26-Ezekiel 16:50 : সদোম ও তার কন্যারা খুবই গর্বিত হয়ে উঠেছিল এবং আমার সামনে এবং ভয়ঙ্কর সব কাজ করতে শুরু করেছিল। আর আমি তাদের তা করতে দেখে তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম।”
26-Ezekiel 16:51 : ঈশ্বর বলেছেন, “আর তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ, শমরিয়া তার অর্ধেকও করেনি। তোমার ভয়ঙ্কর কাজগুলো শমরিয়ার কাজের চেয়ে অনেক বেশী খারাপ!” তোমার মন্দ কাজগুলি আসলে তোমার বোন শমরিয়াকে ভালো হিসেবে দেখায়।
26-Ezekiel 16:52 : তাই তুমি তোমার লজ্জা বইবে। তুমি তোমার বোনকে তোমার চেয়ে উত্তম প্রমাণ করেছ। তুমি ভযানক কাজ করেছ তাই তোমাকে অবশ্যই লজ্জা পেতে হবে।”
26-Ezekiel 16:53 : ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমি সদোম ও তার চারপাশের শহর ধ্বংস করেছিলাম। আর তার পাশের শমরিয়াও ধ্বংস করেছিলাম। আর জেরুশালেম আমি তোমায় ধ্বংস করব। কিন্তু ঐ শহরগুলি আবার নির্মাণ করব। আর জেরুশালেম তোমাকেও আমি আবার নির্মাণ করব।
26-Ezekiel 16:54 : আমি তোমায় সান্তনা দেব। তখন তুমি তোমার করা ভযানক কাজগুলো মনে করবে আর লজ্জিত হবে।
26-Ezekiel 16:55 : তাই তোমাকে ও তোমার বোনকে আবার নতুন ভাবে গড়া হবে। সদোম ও তার চারপাশের শহরগুলিকে এবং শমরিয়া ও তার চারপাশের শহরগুলিকে এবং তোমাকে ও তোমার চারপাশের শহরগুলিকে আবার গড়া হবে।”
26-Ezekiel 16:56 : ঈশ্বর বলেছেন, “অতীতে তুমি গর্বিতমনা ছিলে ও তোমার বোন সদোমকে নিয়ে ঠাট্টা করতে কিন্তু তুমি আর তা করবে না।
26-Ezekiel 16:57 : শাস্তি পাবার আগে তুমি তা করেছিলে, তোমার প্রতিবেশীরা তোমাকে নিয়ে মজা করার আগে করেছিল। ইদোম ও পলেষ্টীয়ের কন্যারা, যারা তোমাকে ঘৃণা করে, তারা এখন তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা করছে।
26-Ezekiel 16:58 : এখন তুমি অবশ্যই তোমার কৃত ভয়ঙ্কর কাজগুলির জন্য শাস্তি পাবে।” প্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 16:59 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তুমি আমার সঙ্গে যেরূপ ব্যবহার করেছ আমিও তোমার সঙ্গে সেইরূপ ব্যবহার করব! তুমি তোমার ব্বিাহের প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গেছ। তুমি সেই কৃত চুক্তির সম্মান করনি।
26-Ezekiel 16:60 : কিন্তু তোমার য়ৌবনের সময় যে চুক্তি হয়েছিল তা আমি স্মরণে রেখেছি। তোমার সঙ্গে আমি এক চিরকালীন চুক্তি করেছিলাম!
26-Ezekiel 16:61 : আমি তোমার বোনদের, ছোট ও বড় উভয়কেই তোমার কাছে আনব এবং তাদের তোমার কন্যা করব। এটা চুক্তিতে ছিল না কিন্তু আমি এটা তোমার জন্য করব। তখন তুমি তোমার ভয়ঙ্কর কাজগুলি স্মরণ করবে আর লজ্জিত হবে।
26-Ezekiel 16:62 : সুতরাং আমি তোমার সাথে আমার চুক্তি করব আর তুমি জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 16:63 : আমি তোমার প্রতি সদয হব সুতরাং তুমি আমায় মনে করবে, এবং তোমার মন্দ কাজের জন্য এত লজ্জিত হবে যে কিছুই বলতে পারবে না। কিন্তু আমি তোমাকে শুচি করব, তুমি আর কখনও লজ্জিত হবে না!” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 17:1 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 17:2 : “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারকে এই গল্পটা বল। তাদের জিজ্ঞাসা কর এর অর্থ।
26-Ezekiel 17:3 : তাদের বল: এই হচ্ছে যা আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন:একটা বড় ঈগল তার বড় বড় পাখা সমেত লিবানোনে এল। সেই ঈগলের ডানাগুলি বহু বর্ণে রঞ্জিত ছিল।
26-Ezekiel 17:4 : সেই ঈগল এরস গাছের মাথা ভেঙ্গে তা কনানে নিয়ে এল। সেই ঈগল ব্যবসাযীদের শহরে সেই শাখা রাখল।
26-Ezekiel 17:5 : তারপর ঈগলটি কনান থেকে কিছু বীজ নিয়ে এল। সে তাদের ভাল জমিতে রোপণ করল। সে তাদের একটি ভালো নদীর তীরে একটি বাইশী গাছের মত রোপন করল। উত্তম নদীর তীরে লাগাল।
26-Ezekiel 17:6 : বীজ থেকে চারা বেড়ে দ্রাক্ষালতা হল। সে এক উত্তম দ্রাক্ষালতা, যা খুব উঁচু ছিল না কিন্তু অনেক জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হল। লতাগুলো কাণ্ডে পরিণত হল। এর ডাল - পালাগুলো দীর্ঘ হল।
26-Ezekiel 17:7 : তারপর দীর্ঘ ডানা বিশিষ্ট আর একটি ঈগল সেই দ্রাক্ষালতা দেখতে পেল। এই ঈগলের দেহে ছিল অসংখ্য পালক। ঐ দ্রাক্ষালতা চাইল যেন নতুন ঈগলটি তার যত্ন নেয। তাই সে তার মূল এই ঈগলের দিকে বাড়তে দিল। তার শাখাগুলি সেই ঈগলের দিকে সোজা হয়ে গেল। যে জমিতে রোপণ করা হয়েছিল সেখান থেকে শাখাগুলো অনেক দূরে চলে গেল। দ্রাক্ষালতা চাইল যেন নতুন ঈগল তাতে জল সেচ করে।
26-Ezekiel 17:8 : সেই দ্রাক্ষালতা উত্তম ভূমিতে রোপণ করা হয়েছিল। প্রচুর জলের কাছে তা রোপণ করা হয়েছিল। তাতে শাখা ও ফল হতে পারত। তা উত্তম দ্রাক্ষালতা হতে পারত।”
26-Ezekiel 17:9 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “তোমার কি মনে হয় সেই গাছ কৃতকার্য় হবে? না! নতুন ঈগলটি তা মাটি থেকে তুলে ফেলবে। আর পাখিটি সেই গাছের মূলগুলো ভেঙ্গে ফেলবে। সে সব দ্রাক্ষাগুলো খেয়ে নেবে। তখন নতুন পাতাগুলি কুঁকড়ে যাবে। গাছটি খুবই দুর্বল হয়ে পড়বে। গাছটিকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলে দিতে বলবান বাহুর বা পরাক্রমী জাতির প্রয়োজন হবে না।
26-Ezekiel 17:10 : যেখানে রোপণ করা হয়েছে সেখানে কি গাছটি বাড়বে? না! পূর্বীয বাযু বইবে আর সেই গাছ শুকিয়ে মরে যাবে। যেখানে সেটা রোপন করা হয়েছিল, যেখানে পোঁতা হয়েছিল সেই খানেই এটা মারা যাবে।”
26-Ezekiel 17:11 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 17:12 : “এই ঘটনা ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বুঝিযে বল: তারা সবসময় আমার বিরুদ্ধাচারী। তাদের এই কথাগুলি বল: বাবিলের রাজা জেরুশালেমে এসেছিলেন এবং রাজা ও অন্যান্য নেতাদের নিয়ে গেলেন। তিনি তাদের বাবিলে আনলেন।
26-Ezekiel 17:13 : তারপর নবূখদ্নিত্‌সর রাজপরিবারের এক জন লোকের সঙ্গে চুক্তি করলেন। রাজা জোর করে সেই লোকটিকে দিয়ে প্রতিশ্রুতি করালেন। তারপর ঐ লোকটি নবূখদ্নিত্‌সরের প্রতি বিশ্বস্ত হবার প্রতিশ্রুতি করল। তিনি তাঁকে যিহূদার রাজা করলেন। তারপর সে যিহূদা থেকে সমস্ত শক্তিশালী লোকদের বের করে দিল।
26-Ezekiel 17:14 : তাই যিহূদা দুর্বল রাজ্যে পরিণত হল, যা রাজা নবূখদ্নিত্‌সরের বিরুদ্ধে যেতে পারে না। নবূখদ্নিত্‌সর যিহূদার এই নূতন রাজার সঙ্গে যে চুক্তি করলেন লোকেরা তা মানতে বাধ্য হল।
26-Ezekiel 17:15 : কিন্তু, যাই হোক এই নতুন রাজা যেমন করে হোক্, বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হবার চেষ্টা করল। সে মিশরে সাহায্যের জন্য দূত পাঠাল। নতুন রাজা বহু ঘোড়া ও সৈন্য চাইল। এখন, তুমি কি মনে কর যে যিহূদার নতুন রাজা কৃতকার্য় হবে? তুমি কি মনে কর যে এই নতুন রাজা সেই চুক্তি ভেঙ্গে ফেলে শাস্তি এড়াতে যথেষ্ট শক্তিমান হবে?”
26-Ezekiel 17:16 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য, সেই নতুন রাজা যে ব্যক্তি তাকে রাজা করেছে সে যেখানে থাকে, সেখানে মারা যাবে। কিন্তু সেই রাজা তার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এই নতুন রাজা তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।
26-Ezekiel 17:17 : মিশরের রাজা যিহূদার রাজাকে বাঁচাতে সমর্থ হবেন না। তিনি অনেক সৈন্য পাঠালেও মিশরের মহাশক্তি যিহূদাকে বাঁচাতে পারবে না। বাবিলের রাজার সৈন্যরা শহর ঘিরে রেখে শহরটি অবরোধ করবে এবং শহরের প্রাচীরের ওপর পর্য়্য়ন্ত একটি মাটির রাস্তা বানিয়ে শহরে প্রবেশ করবে। অনেক লোকের মৃত্যুও হবে।
26-Ezekiel 17:18 : কিন্তু যিহূদার রাজা পালাবে না। কেন? কারণ সে তার চুক্তি উপেক্ষা করেছিল। সে তার চুক্তি ভঙ্গ করেছিল।
26-Ezekiel 17:19 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই প্রতিশ্রুতি করেন: “আমার জীবনের দিব্য দিয়ে বলছি যে আমি যিহূদার রাজাকে শাস্তি দেব। কারণ সে আমাদের চুক্তি অগ্রাহ্য করেছিল। সে আমাদের চুক্তি ভেঙ্গেছিল।
26-Ezekiel 17:20 : আমি আমার ফাঁদ পাতব আর সে তাতে ধরা পড়বে। আর আমি তাকে বাবিলনে ফিরিয়ে এনে সেখানে তাকে শাস্তি দেব। সে আমার বিরুদ্ধে গেছে বলে আমি তাকে শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 17:21 : আর আমি তার সৈন্য ধ্বংস করব। তার বীরদের ধ্বংস করব। আর অবশিষ্টদের হাওযাতে ছড়িয়ে দেব। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু আর আমিই এই সব বলেছিলাম।”
26-Ezekiel 17:22 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব বলেছিলেন:“আমি লম্বা এরস গাছের এক শাখা নেব। সেই লম্বা গাছের থেকে এক ছোট শাখা নেব। আর আমি তা নিজে খুব উঁচু পর্বতে পুঁতব।
26-Ezekiel 17:23 : আমি নিজেই তা ইস্রায়েলের উঁচু পর্বতে রোপণ করব। সেই শাখা বৃক্ষে পরিণত হবে। তাতে শাখা উত্পন্ন হবে ও ফল ধরবে। আর তা সুন্দর এরস বৃক্ষ হয়ে উঠবে। তার শাখায় বহু পাখিরা এসে বসবে। তার শাখার ছায়ায় বহু পাখি বাস করবে।
26-Ezekiel 17:24 : “তখন অন্য গাছরা জানবে যে আমিই অন্যান্য উঁচু বৃক্ষদের মাটিতে ফেলেছি, আর ছোট গাছেদের বড় বৃক্ষে পরিণত করেছি। সবুজ গাছদের আমি শুকনো করেছি আর শুকনো গাছেদের সবুজ করেছি। আমিই প্রভু, যদি আমি কিছু করব বলে থাকি তবে তা করব!”
26-Ezekiel 18:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 18:2 : “তোমরা কেন ইস্রায়েল দেশটি সম্বন্ধে এই প্রবাদ বাক্য বল? তোমরা বলে থাক:পিতামাতারা টক দ্রাক্ষা ফল খেয়েছিল?কিন্তু তার ফলে সন্তানদের দাঁত টকেছে।
26-Ezekiel 18:3 : কিন্তু প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য যে ইস্রায়েলের লোকরা আর এই প্রবাদ বাক্যকে সত্য বলে মানবে না।
26-Ezekiel 18:4 : প্রত্যেক জনের সঙ্গে আমি একই রকম ব্যবহার করব। সে ব্যক্তি পিতা হোক অথবা পুত্রই হোক না কেন। যে ব্যক্তি পাপ করে সে মারা যাবে।
26-Ezekiel 18:5 : “যদি কেউ সত্‌ হয় তবে সে বাঁচবে। সেই ভাল লোক বলতে তাকেই বোঝাবে যে প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করবে।
26-Ezekiel 18:6 : প্রতিমাদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত খাদ্যের ভাগ পাবার জন্য সে পর্বতে যায় না। ইস্রায়েলের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর কাছে সে প্রার্থনা করে না। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে সে ব্যভিচার করে না। মাসিকের সময় সে তার স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন কাজে লিপ্ত হয় না।
26-Ezekiel 18:7 : সেই লোক অপরের অবস্থার সুযোগ নেয না। কেউ ধার চাইলে সে বন্ধক নিয়ে তাকে ধার দেয়। আর ধার শোধ করলে তাকে সেই বন্ধক ফিরিয়ে দেয়। সে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়। বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেয়।
26-Ezekiel 18:8 : সে কাউকে টাকা ধার দিলে সুদ নেয না। সেই সত্‌ লোক খল হতে অস্বীকার করে। প্রতিটি ব্যক্তির সঙ্গে সে ন্যায্য আচরণ করে। ন্যায্যভাবে ঝগড়াঝাঁটি মিটিযে দেবার জন্য লোকে তার উপর নির্ভর করতে পারে।
26-Ezekiel 18:9 : সে আমার বিধিগুলি পালন করে। আমার সিদ্ধান্তগুলি সে চিন্তা করবে এবং ন্যায্য ও নির্ভরয়োগ্য হতে শিক্ষা করবে। সে সত্‌ লোক, তাই সে বাঁচবে। প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন।
26-Ezekiel 18:10 : “কিন্তু সেই সত্‌ লোকের কোন পুত্র থাকতে পারে যে ঐ সত্‌ কাজের কোনটিই করেনি। সে চোর বা নরঘাতক হতে পারে।
26-Ezekiel 18:11 : অথবা সেই পুত্র এই মন্দ কাজগুলির কোন একটি করতে পারে যেমন মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত খাদ্য খেতে পর্বতে যাওয়া, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া,
26-Ezekiel 18:12 : গরীব অসহায় লোকের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার, অপরের অবস্থার সুযোগ নেওয়া, কেউ ধার শোধ করলে তার বন্ধক ফিরিয়ে না দেওয়া। সে মন্দ সন্তান নোংরা মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা জানাতে ও জঘন্য কাজ করতে পারে।
26-Ezekiel 18:13 : সেই দুষ্ট সন্তান সুদের লোভে ঋণ দিয়ে সুদ দিতে বাধ্য করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই দুষ্ট পুত্র বাঁচবে না। সে জঘন্য কাজ করেছে বলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এবং তার মৃত্যুর জন্য সেই দায়ী হবে।
26-Ezekiel 18:14 : “এখন সেই দুষ্ট লোকের কোন সন্তান থাকতে পারে যে পিতার মন্দ কাজ দেখে সেইভাবে জীবনযাপন করতে অস্বীকার করছে। সেই ভাল সন্তান হয়তো ন্যায্য ব্যবহার করে।
26-Ezekiel 18:15 : সে হয়তো মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত বলির অংশ খেতে পর্বতে যায় না। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না।
26-Ezekiel 18:16 : সেই ভাল সন্তান হয়তো অপরের অবস্থার সুযোগ নেয না। বন্ধক দিয়ে ধার দেয় আবার ধার শোধ করলে বন্ধক ফিরিয়ে দেয়। সে হয়তো ক্ষুধার্ত লোককে খাদ্য দেয় এবং বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দেয়।
26-Ezekiel 18:17 : সে হয়তো গরীবদের সাহায্য করে, কেউ ধার চাইলে তাকে ধার দেয় এবং সুদ চায় না, সে হয়তো আমার বিধিসকল পালন ও তার অনুধাবন করে, সেই উত্তম সস্তান তার পিতার পাপের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে না, সে বাঁচবে।
26-Ezekiel 18:18 : তার পিতা লোকদের আঘাত ও চুরি করে থাকতে পারে, আমাদের প্রজাদের প্রতি কোন মঙ্গলজনক কাজ না করে থাকতে পারে। সেই পিতা তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে।
26-Ezekiel 18:19 : “তোমরা প্রশ্ন করতে পার, ‘কেন পিতার পাপেরজন্য পুত্র মারা যাবে না?’ এর কারণ, সেই পুত্র সত্‌ জীবনযাপন ও ভাল কাজ করেছিল। খুব সাবধানতাসহ সে আমার বিধিগুলি পালন করেছে তাই সে বাঁচবে।
26-Ezekiel 18:20 : যে ব্যক্তি পাপ করে কেবল সেই মারা যাবে। পুত্রকে তার পিতার পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে না; আবার পিতাকেও তার পুত্রের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে না। ভাল লোকের ধার্মিকতা তার নিজের হাতে; তেমনই মন্দ লোকের মন্দতাও কেবল তারই অধিকারগত।
26-Ezekiel 18:21 : “এখন যদি কোন মন্দ লোক তার জীবন পরিবর্তন করে, তবে সে মরবে না, বরং বাঁচবে। সেই ব্যক্তি মন্দ কাজ থেকে বিরত হয়ে যত্ন সহকারে আমার বিধি পালন করা শুরু করে ন্যায়বান ও ভাল হয়ে উঠতে পারে।
26-Ezekiel 18:22 : সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার কৃত মন্দ কাজগুলি মনে রাখবেন না। কেবল তার উত্তমতা স্মরণে রাখবেন আর তাই সেই ব্যক্তি বাঁচবে!”
26-Ezekiel 18:23 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “দুষ্ট লোকের মরণ হোক এ আমি চাই না। আমি চাই তারা যেন জীবন পরিবর্তন করে এবং বাঁচে।
26-Ezekiel 18:24 : “কিন্তু যদি কোন ভাল লোক ভাল হওয়া থেকে বিরত হয়ে দুষ্টলোকের মত আচরণ করে, অন্যায় করে, নানা ঘৃণিত কাজ করে তাহলে সে কি বাঁচবে? সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার পূর্বের সত্‌কাজগুলি স্মরণে আনবেন না। সে যে সত্য লঙঘনপাপ করেছে তার জন্যেই মারা যাবে।”
26-Ezekiel 18:25 : ঈশ্বর বলেন, “তোমরা যে বলে থাক, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু ন্যায়বান নন!’ কিন্তু হে ইস্রায়েল পরিবার শোন: আমিই ন্যায়বান, তোমরাই তারা যারা ন্যায়বান নও।
26-Ezekiel 18:26 : যদি কোন ভাল লোক পরিবর্তিত হয়ে দুষ্ট হয়ে ওঠে, তবে সে তার মন্দ কাজের জন্য অবশ্যই মারা যাবে।
26-Ezekiel 18:27 : আর যদি কোন দুষ্ট ব্যক্তি পরিবর্তিত হয়ে ভাল ও ন্যায়বান হয় তবে সে তার জীবন বাঁচাবে। সে বাঁচবে!
26-Ezekiel 18:28 : সেই ব্যক্তি নিজের মন্দতা দেখে বুঝে আমার কাছে ফিরে এসেছিল। সে অতীতে যে সব মন্দ কাজ করত তা আর করে না, তাই সে বাঁচবে, মরবে না।”
26-Ezekiel 18:29 : ইস্রায়েলের লোকরা বলে, “এটা ঠিক নয়! প্রভু আমাদের সদাপ্রভু ন্যায়বিচার করছেন না।”ঈশ্বর বলেন, “আমিই ন্যায়বান! তোমরাই ন্যায়বিচার করছ না!”
26-Ezekiel 18:30 : কারণ ইস্রায়েল পরিবার, আমি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কর্মানুসারে বিচার করব। প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তাই আমার কাছে ফিরে এস, মন্দ কাজ আর কর না! ঐসব ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি যেন তোমাদের পাপে না ফেলে।
26-Ezekiel 18:31 : তোমরা যে সব মন্দ জিনিষ করেছ তা ছুঁড়ে ফেলে দাও। তোমাদের হৃদয় ও আত্মার পরিবর্তন কর। হে ইস্রায়েলবাসীরা, কেন তোমরা নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনবে?
26-Ezekiel 18:32 : আমি তোমাদের হত্যা করতে চাইনা। তোমরা ফিরে এসো, বাঁচো। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 19:1 : ঈশ্বর আমায় বললেন, “ইস্রায়েলের নেতাদের সম্বন্ধে তুমি অবশ্যই এই শোকের গান গাইবে।
26-Ezekiel 19:2 : “‘তোমার মা যেন সিংহদের মাঝে শুয়ে থাকা এক সিংহী। সে যুব সিংহদের মাঝে শুতে গেল আর অনেক শাবকের মা হল।
26-Ezekiel 19:3 : তার এক শাবক উঠে দাঁড়াল, সে হয়ে উঠল এক শক্ত সমর্থ যুব সিংহ। সে তার খাবার শিকার করতে শিখে গেল। সে একটি লোককে মারল এবং তাকে খেল।
26-Ezekiel 19:4 : লোকে তার গর্জন শুনল এবং তাকে একটি খাঁচায় ভরল। তারা যুব সিংহটির নাকে একটি আংটা পরাল এবং তাকে মিশরে নিয়ে গেল।
26-Ezekiel 19:5 : “‘মা সিংহীর আশা ছিল যে তার শাবক নেতা হয়ে উঠবে। কিন্তু এখন সে তার সব আশা হারিযে ফেলেছে। তাই সে তার শাবকগুলি থেকে আরেকটি শাবককে নিল। তাকে সিংহ হবার প্রশিক্ষণ দিল।
26-Ezekiel 19:6 : সে পূর্ণাঙ্গ সিংহদের সঙ্গে শিকারে গেল। সে একটি শক্তিশালী যুব সিংহ হয়ে উঠল। সে শিকার ধরতে শিখল এবং একটি লোককে খেল।
26-Ezekiel 19:7 : তারপর রাজবাটীগুলো আক্রমণ করল। সে শহরগুলি ধ্বংস করল। ঐ দেশের প্রত্যেকে কথা বলতে ভয় পেত, যখন তারা তার গর্জন শুনত।
26-Ezekiel 19:8 : তারপর তার চার ধারের লোকরা তার জন্য একটি ফাঁদ পাতল এবং তারা তাদের ফাঁদে তাকে ধরল।
26-Ezekiel 19:9 : তাকে আংটা পরাল এবং তালা বন্ধ করে রাখল। তারা তাকে তাদের ফাঁদে আটকাল। তাই তারা তাকে বাবিল রাজার কাছে নিয়ে গেল এবং তাকে সেখানে রেখে দিল যাতে ইস্রায়েলের কোন পর্বতে তার গর্জন শুনতে না পাওয়া যায়।
26-Ezekiel 19:10 : “‘তোমার মা একটি দ্রাক্ষালতার মতো, যা জলের কাছে রোপিত। তার কাছে ছিল অনেক জল। তাই সে অনেক সবল দ্রাক্ষালতা জন্মাতে পেরেছিল।
26-Ezekiel 19:11 : তারপর সে বড় বড় শাখাসমূহ জন্মালো। তারা ছিল চলার ছড়ির মত শক্ত। তারা ছিল রাজদণ্ডের মত। দ্রাক্ষালতা এমেই বেড়ে উঠতে লাগল। তার অনেক শাখা - প্রশাখা ছিল এবং তারা মেঘ পর্য়ন্ত পৌঁছে গেল।
26-Ezekiel 19:12 : কিন্তু রাগে দ্রাক্ষা - লতাটিকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলা হল। এবং মাটিতে ফেলে দেওয়া হল। পূর্বীয উষ্ণবাযু তার ওপর বয়ে গেল এবং তার ফল শুকিয়ে গেল। যখন সবল শাখাগুলো ভেঙ্গে গেলে তাদের আগুনে ফেলে দেওয়া হল।
26-Ezekiel 19:13 : এখন সেই দ্রাক্ষালতা রোপিত হয়েছে মরুভূমিতে। সেটি একটি অত্যন্ত শুষ্ক ও তৃষ্ণার্ত ভূমি।
26-Ezekiel 19:14 : বিরাট শাখাগুলিতে আগুন লাগল এবং তা ছড়িয়ে গেল এবং অন্যান্য শাখাগুলিকে ও ফলগুলিকে ধ্বংস করল। তাই সেখানে রইল না কোন শক্ত হাঁটার ছড়ি। সেখানে রইল না কোন রাজদণ্ড।’এটি ছিল মৃত্যু নিয়ে এক শোক গাথা আর তা শোকের মত করে গাওযা হল।”
26-Ezekiel 20:1 : এক দিন কয়েকজন প্রবীণ প্রভুর পরামর্শ জানতে আমার কাছে এসে আমার সামনে বসলেন। এটা ছিল নির্বাসনে থাকার সপ্তম বছরের পঞ্চম মাসের দশম দিন।
26-Ezekiel 20:2 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 20:3 : “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের প্রবীণদের কাছে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: তোমরা কি আমার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছ? যদি এসে থাক তবে আমি তা দেব না।’ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেন।’
26-Ezekiel 20:4 : তুমি কি তাদের বিচার করবে? হে মনুষ্যসন্তান, তুমি কি তাদের বিচার করবে? তবে তাদের পিতারা যে জঘন্য কাজগুলি করেছে তার কথা নিশ্চয়ই তাদের বল।
26-Ezekiel 20:5 : তোমরা অবশ্যই তাদের বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যেদিন আমি ইস্রায়েলকে বেছে নিই, আমি যাকোব পরিবারের ওপর আমার হাত তুলে মিশরে তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম এবং বলেছিলাম, “আমি তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর।
26-Ezekiel 20:6 : আমি তাদের মিশর থেকে বের করে নিয়ে যাবার এবং যে দেশ তাদের আমি দেব সেই ভূমিতে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সেই দেশ বহু উত্তম বিষয়ে পরিপূর্ণএবং অন্য বহুদেশের চেয়ে ভালো!
26-Ezekiel 20:7 : “আমি ইস্রায়েল পরিবারকে তাদের জঘন্য মূর্ত্তিগুলো ছুঁড়ে ফেলতে বলেছিলাম। বলেছিলাম মিশরের ঐসমস্ত নোংরা মূর্ত্তি দ্বারা তারা যেন নিজেদের অশুচি না করে। আমি তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর।”
26-Ezekiel 20:8 : কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, আমার কথা শুনতে চায়নি। তারা তাদের জঘন্য মূর্ত্তিগুলো ফেলেও দেয়নি, মিশরে ছেড়েও আসেনি। তাই আমি (ঈশ্বর) তাদের মিশরেই ধ্বংস করার পরিকল্পনা করলাম - যেন তারা আমার রোধর পূর্ণ মাত্রা বুঝতে পারে।
26-Ezekiel 20:9 : কিন্তু আমি তাদের ধ্বংস করিনি। আমি আমার সুনাম রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। আমি চাইনি যে আমার নাম তাদের চারপাশের জাতিগুলোর মধ্যে কলঙ্কিত হোক্। আমি চেয়েছিলাম যে ঐ জাতিগুলি জানুক যে আমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বের করে আনছিলাম।
26-Ezekiel 20:10 : আমি ইস্রায়েল পরিবারকে মিশর থেকে বের করে এনেছি, তাদের মরুভূমির মধ্যে পরিচালিত করেছি।
26-Ezekiel 20:11 : আমার বিধিগুলি তাদের দিয়েছিলাম, যে সমস্ত বিধি আমাকে জানতে তাদের সাহায্য করবে সেগুলো তাদের বলেছিলাম। যদি কোন ব্যক্তি সেই সমস্ত নিয়ম পালন করে তবে সে বাঁচবে।
26-Ezekiel 20:12 : আমি তাদের বিশ্রামের বিশেষ বিশেষ দিনের কথাও বলেছিলাম। সেই সমস্ত ছুটির দিনগুলো তাদের ও আমার মধ্যে বিশেষ চিহ্নস্বরূপ ছিল। তারা এই বোঝাত যে আমিই প্রভু আর আমি তাদের আমার বিশেষ প্রজা করে তুলেছি।
26-Ezekiel 20:13 : “‘কিন্তু ইস্রায়েল পরিবার মরুভূমিতে আমার বিরুদ্ধে গেল। তারা আমার বিধিগুলি মানল না, আমার বিধি মানতে অস্বীকার করল। ঐসব বিধি পালন করলে লোকরা বাঁচবে। তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনগুলিকে মান্য করেনি, ঐসব দিনে আরও বেশী কাজ করেছে। আমি তাদের মরুভূমিতে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছিলাম, যেন তারা আমার রোধর পূর্ণ মাত্রা বুঝতে পারে।
26-Ezekiel 20:14 : জাতিগণ আমায় ইস্রায়েলকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনতে দেখেছিল। আমি আমার সুনাম নষ্ট করতে চাইনি তাই ইস্রায়েলকে ঐ লোকদের সামনে ধ্বংস করিনি।
26-Ezekiel 20:15 : ঐ লোকদের সঙ্গে মরুভূমিতে আমি আর একটি প্রতিশ্রুতি করে বলেছিলাম: যে দেশ আমি তাদের দিচ্ছি তাতে তারা পা রাখতে পাবে না। সেই দেশ উত্তম এবং বহু উত্তম বিচারে পরিপূর্ণ, সব দেশের চেয়ে সুন্দর!
26-Ezekiel 20:16 : “‘ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিধি মানতে অস্বীকার করেছিল, তারা আমার বিধিসকল পালন করেনি, বিশ্রামের দিনকে কোন গুরুত্বই দেয়নি। তারা এই সব করেছে কারণ তাদের হৃদয় সেই সব নোংরা মূর্ত্তির অধিকারে।
26-Ezekiel 20:17 : কিন্তু আমি তাদের জন্য দুঃখ বোধ করেছি তাই তাদের মরুভূমিতে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করিনি।
26-Ezekiel 20:18 : আমি তাদের সন্তানদের কাছে বলেছিলাম, “তোমরা তোমাদের পিতামাতার মতো হযো না। তাদের নোংরা মূর্ত্তি দ্বারা তোমাদের কলুষিত কোরো না। তাদের আজ্ঞার অনুসরণ ও আদেশ পালন কোর না।
26-Ezekiel 20:19 : আমিই প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমরা আমারই বিধি পালন কর ও আদেশ রক্ষা কর। তোমাদের যা বলি তাই - কর।
26-Ezekiel 20:20 : আমার বিশ্রাম দিনকে গুরুত্ব দিও। মনে রেখো যে, সব তোমার ও আমার মধ্যে বিশেষ চিহ্নস্বরূপ হবে যেন তোমরা জানতে পার যে আমিই তোমাদের প্রভু।”
26-Ezekiel 20:21 : “‘কিন্তু ঐ সন্তানরা আমার বিরুদ্ধাচরণ করল। তারা আমার বিধি পালন ও আদেশ রক্ষা করল না। আমি তাদের যা বলেছি তারা তা করেনি। ঐসব বিধি মঙ্গলের জন্য। যদি কোন ব্যক্তি তা পালন করে সে বাঁচবে। তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে কোন গুরুত্বই দেয়নি। তাই আমি তাদের মরুভূমিতে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যেন তারা আমার রোধর পূর্ণ মাত্রা বুঝতে পারে।
26-Ezekiel 20:22 : কিন্তু আমি থামলাম কারণ অন্য জাতিগণ আমায় ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে আনতে দেখেছিল। আমি চাইনি যে আমার উত্তম নাম ধ্বংস হোক তাই ঐসব জাতির সামনে ইস্রায়েলকে ধ্বংস করিনি।
26-Ezekiel 20:23 : তাই মরুভূমিতে তাদের সঙ্গে আর একটি প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলাম তাদের আমি বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেব।
26-Ezekiel 20:24 : “‘ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিধি পালন করেনি। তারা তা অগ্রাহ্য করেছিল। তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে কোন গুরুত্বই দেয়নি। তারা তাদের পিতাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলি পূজো করেছে।
26-Ezekiel 20:25 : তাই আমি তাদের এমন আজ্ঞা দিলাম যা মঙ্গলজনক নয়। এমন আদেশ দিলাম যা জীবনদায়ী নয়।
26-Ezekiel 20:26 : তাদের উপহারেই তাদের অশুচি হতে দিলাম। এমনকি তারা তাদের প্রথমজাত পুত্রদের বলি দিতে শুরু করল। যেন আমি তাদের ধ্বংস করি আর তারা জানে যে আমিই প্রভু।’
26-Ezekiel 20:27 : তাই, হে মনুষ্যসন্তান, এখন তুমি ইস্রায়েল পরিবার সমূহের কাছে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: ইস্রায়েলের লোকরা আমার সম্বন্ধে ভয়ঙ্কর সব কথা বলছে এবং আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে।
26-Ezekiel 20:28 : কিন্তু তবু আমি তাদের যে দেশ দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেখানে এনেছি। তারা যেখানে যেখানে পাহাড় ও সবুজ বৃক্ষ দেখেছে সেখানে সেখানেই পূজো করতে গেছে। তারা তাদের বলি ও রোধ উত্তেজক নৈবেদ্যনিয়ে ঐসব স্থানে গেছে। তারা ঐ স্থানে সৌরভ উত্পন্ন করে এমন বলি দিয়েছে ও পেয নৈবেদ্যও উত্সর্গ করেছে।
26-Ezekiel 20:29 : আমি ইস্রায়েলের লোকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন তারা ঐসব উচ্চ স্থানে যায়? কিন্তু সেই সব উচ্চ স্থান আজও এখানে রয়েছে।”‘
26-Ezekiel 20:30 : ঈশ্বর বলেছেন, “ইস্রায়েলের লোকরা ঐসব মন্দ কাজগুলি করেছে। তাই ইস্রায়েল পরিবারের কাছে বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মত কাজ করে নিজেদের নোংরা করেছ, তোমরা বেশ্যার মত ব্যবহার করেছ এবং আমাকে ছেড়ে তোমাদের পূর্বপুরুষদের এই সব জঘন্য দেবতাদের মধ্যে থাকতে গেছ।
26-Ezekiel 20:31 : তোমরা সেই একই ধরণের উপহার দিচ্ছ। তোমাদের দেবতাদের কাছে উপহারস্বরূপ তোমরা তোমাদের সন্তানদের আগুনে দিচ্ছ। তোমরা আজও ঐসব নোংরা মূর্ত্তি দ্বারা নিজেদের নোংরা করছ। ইস্রায়েলের পরিবারসমূহ, তোমরা কি মনে কর উপদেশ চাইবার জন্য আমি তোমাদের আমার কাছে আসতে দেব? আমিই প্রভুসদাপ্রভু; আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদের প্রশ্োন্নর উত্তর দেব না; কোন উপদেশও দেব না।
26-Ezekiel 20:32 : তোমরা বল যে তোমরা অন্য জাতির মতো হতে চাও এবং তোমরা তাদের মত জীবনযাপন করতে চাও। তোমরা কাঠ ও পাথরের দেবতার সেবা করে থাক।” সেটা অবশ্যই হওয়া উচিত্‌ নয়!”‘
26-Ezekiel 20:33 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদের ওপর রাজা হয়ে রাজত্ব করব। আমি আমার বলবান বাহু উঠিযে তোমাদের শাস্তি দেব। তোমাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ করব!
26-Ezekiel 20:34 : আমি তোমাদের ঐসব জাতিদের মধ্যে থেকে বার করে এনে জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমিই আবার সেই সব দেশ থেকে তোমাদের সংগ্রহ করে আনব; তবে আমার বলবান বাহু দ্বারা তাদের শাস্তি দেব। তোমাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ করব।
26-Ezekiel 20:35 : আমি আগের মত তোমাদের মরুভূমিতে চালিত করব, এ সেই জায়গা যেখানে জাতিগণ বাস করে। আমি সামনাসামনি হয়ে তোমাদের বিচার করব।”
26-Ezekiel 20:36 : তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশরের লাগোযা মরুভূমিতে আমি যে ভাবে বিচার করেছিলাম, সে ভাবেই তোমাদের বিচার করব।” প্রভু, আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 20:37 : “আমি বিচারে তোমাদের দোষী সাব্যস্ত করব ও বন্দোবস্ত অনুসারে তোমাদের শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 20:38 : যে সব লোক আমার বিরুদ্ধে উঠেছে ও পাপ করেছে, তাদের সবাইকে আমি দূর করে দেব। তাদের আমি তোমাদের দেশ থেকে দূর করব। তারা আর কখনও ইস্রায়েলে ফিরে আসবে না। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 20:39 : এখন হে ইস্রায়েল পরিবার, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যদি কেউ তার নোংরা মূর্ত্তি পূজো করতে চায় তবে সে তার পূজো করুক কিন্তু যেন মনে না করে যে পরে সে আমার কাছ থেকে পরামর্শ পাবে! তোমরা আর আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করবে না এমনকি তোমাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোকে উপহার দান দ্বারাও নয়।”
26-Ezekiel 20:40 : প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “লোকরা অবশ্যই ইস্রায়েলের পবিত্র উঁচু পর্বতে আমার সেবা করতে আসবে! সমস্ত ইস্রায়েল পরিবার তাদের ভূমিতে থাকবে আর তারা আমার কাছে উপদেশ চাইতে পারে। সেই স্থানেই তোমরা তোমাদের নৈবেদ্য আমার কাছে আনবে। তোমাদের ফসলের প্রথম অংশ ও সমস্ত পবিত্র উপহার সেই স্থানে আমার কাছে আনবে।
26-Ezekiel 20:41 : আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু আমিই আবার তোমাদের সংগ্রহ করে আমার বিশেষ প্রজা করে তুলব এবং তখন তোমাদের সুগন্ধযুক্ত বলির মত গ্রাহ্য করব আর ঐসব জাতি তা দেখবে।
26-Ezekiel 20:42 : আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দেব বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম সেই ইস্রায়েল দেশে যখন আমি তোমাদের আনব তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 20:43 : সেই দেশে তোমরা তোমাদের করা মন্দ কাজের কথা মনে করবে আর লজ্জিত হবে। ঐসব মন্দ বিষয় তোমাদের অশুচি করত।
26-Ezekiel 20:44 : ইস্রায়েল পরিবার, আমার সুনাম রক্ষার জন্য যে শাস্তি তোমাদের প্রাপ্য তা আমি তোমাদের দেব না। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 20:45 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 20:46 : “হে মনুষ্যসন্তান, দক্ষিণের দিকে মুখ করো, এবং নেগেভের বিরুদ্ধে কথা বল। নেগেভের বনভূমিরবিরুদ্ধে ভাব্বাণী কর।
26-Ezekiel 20:47 : ‘প্রভুর বাক্য শোন। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি বনে আগুন জ্বালাবার জন্যে তৈরী। সেই আগুন সমস্ত সবুজ ও শুষ্ক বৃক্ষ ধ্বংস করবে। প্রজ্জ্ব্বলিত শিখা নেভানো হবে না। দক্ষিণ হতে উত্তর দিকের সমস্ত ভূমিই আগুনে জ্বলে যাবে।
26-Ezekiel 20:48 : তখন লোকে দেখবে যে বয়ং প্রভুই অগ্নি প্রজ্জ্ব্বলিত করেছেন। সেই অগ্নি নেভানো হবে না!”‘
26-Ezekiel 20:49 : তখন আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু! যদি আমি এসব কথা বলি, লোকে বলবে যে আমি ধাঁধাঁ তৈরী করেছি!”
26-Ezekiel 21:1 : প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 21:2 : “হে মনুষ্যসন্তান, জেরুশালেমের দিকে তাকাও ও তার পবিত্র স্থানগুলির বিরুদ্ধে এই কথা বল। আমার হয়ে ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে কথা বল।
26-Ezekiel 21:3 : ইস্রায়েল দেশের প্রতি বল, ‘প্রভু এই সব কথা বলেন: আমি তোমার বিরুদ্ধে! আমি খাপ থেকে তরবারি খুলে ভাল ও মন্দ সব লোককেই তোমার কাছ থেকে দূর করব!
26-Ezekiel 21:4 : আমি যখন ভাল ও মন্দ উভয় প্রকার লোককেই তোমা হতে উচ্ছেদ করি তখন খাপ থেকে তরবারি বের করে তা দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকের লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করব।
26-Ezekiel 21:5 : তখন সমস্ত লোক জানবে যে আমিই প্রভু। আর এও জানবে যে আমিই খাপ থেকে তরবারি বের করেছি। আমার তরবারি কাজ শেষ না করা পর্য়ন্ত তার খাপে ফিরে যাবে না।”‘
26-Ezekiel 21:6 : ঈশ্বর বলেন, “হে মনুষ্যসন্তান, মন ভেঙ্গে গেছে এমন মানুষ যেভাবে শোক করে, লোকদের সামনে সেই ভাবে শোক কর।”
26-Ezekiel 21:7 : তখন তারা তোমায় জিজ্ঞেস করবে, ‘কেন তুমি এই সব আওয়াজ করছ?’ তখন তুমি বলবে, ‘শোকের সংবাদ আসছে বলে।’ ভয়ে প্রত্যেকের আত্মা দুর্বল হয়ে যাবে, সমস্ত হাত দুর্বল হয়ে পড়বে, প্রত্যেক আত্মাও দুর্বল হবে এবং সবার হাঁটু জলের মত হয়ে পড়বে।’ দেখ সেই খারাপ সংবাদ আসছে। এসব ঘটনাও ঘটবে। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব বলেন।
26-Ezekiel 21:8 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 21:9 : “মনুষ্যসন্তান লোকদের কাছে আমার হয়ে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন:“এই দেখ, একটি তরবারি এবং তরবারিটিতে শান দেওয়া হয়েছে ও পালিশ করা হয়েছে।
26-Ezekiel 21:10 : হত্যার জন্য সেই তরবারি ধারালো করা হয়েছে। তাতে ধার দেওয়া হয়েছে এমনভাবে যেন তা চমকায। “‘হে মনুষ্যসন্তান আমার শাস্তি দেবার লাঠির কাছ থেকে তোমরা দৌড়ে পালিয়েছ। বেতের আঘাত খেতে তোমরা অস্বীকার করেছ।
26-Ezekiel 21:11 : তাই তরবারিটিকে ঘসা - মাজা করা হয়েছে এবং ধার দেওয়া হয়েছে, এখন তা ব্যবহার করা যাবে। তরবারি ঘসে মেজে ধার দেওয়া হয়েছিল। আর এখন তা ঘাতকের হাতে দেওয়া যাবে।
26-Ezekiel 21:12 : “‘হে মনুষ্যসন্তান, চিত্কার কর। তীক্ষ্ণ শব্দে চিত্কার কর! কারণ আমার প্রজাদের ও ইস্রায়েলের শাসকদের বিরুদ্ধে সেই তরবারি ব্যবহার করা হবে। ঐ শাসকরা যুদ্ধ চাইত, তাই তরবারি এলে তারা আমার প্রজাদের সঙ্গে থাকবে। দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য তোমার জাঙ্গে চড় মেরে আঘাত কর। আর তোমার শোক প্রকাশ করতে উচ্চ শব্দ কর!
26-Ezekiel 21:13 : এটা কেবল পরীক্ষা নয়। তোমরা ছড়ির দ্বারা শাসন অগ্রাহ্য করেছিলে তাই তোমাদের শাস্তি দিতে আমি আর কি ব্যবহার করতাম? তরবারি।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 21:14 : ঈশ্বর বলেন, “মনুষ্যসন্তান, হাততালি দাও, আমার হয়ে লোকদের কাছে বল।”“হ্যাঁ, তরবারিকে দুবার, এমনকি তিন বার আসতে দাও। এই তরবারি মানুষ হত্যার জন্য, তা মহাহত্যার জন্য। এই তরবারি তাদের টুকরো টুকরো করে ফেলবে!
26-Ezekiel 21:15 : তাদের হৃদয় ভয়ে গলে যাবে আর বহু লোক পতিত হবে। নগরের দরজার কাছে খগ দ্বারা বহুলোক হত হবে। হ্যাঁ, খগ বজ্রের মত চমকাবে, হত্যার জন্যই তাতে শান দেওয়া হয়েছে!
26-Ezekiel 21:16 : তরবারি শাণিত হও! ডানদিকে ছেদ কর। সোজাসুজি কেটে চল, বাম দিকে ছেদ কর। তোমার তরবারি যে দিকে চায় যাক!
26-Ezekiel 21:17 : “তখন আমিও আমার হাতে তালি দেব। আমার রোধ নিবৃত্ত করব। আমি প্রভুই একথা বলছি।”
26-Ezekiel 21:18 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন,
26-Ezekiel 21:19 : “হে মনুষ্যসন্তান, দুটি রাস্তা অাঁক যা দিয়ে বাবিলের রাজার তরবারি ইস্রায়েলে আসতে পারে। দুটি রাস্তাই ঐ একই নগরী বাবিল থেকে এসেছে। তারপর রাস্তার মাথা থেকে শহর পর্য়ন্ত একটা চিহ্ন অাঁক।
26-Ezekiel 21:20 : চিহ্নটা ব্যবহার কর তরবারি কোন রাস্তা ব্যবহার করবে তা বোঝাতে। একটা রাস্তা অম্মোনীয়দের শহর রব্বার দিকে গেছে। অন্য পথটি গেছে যিহূদার দিকের সুরক্ষিত শহর জেরুশালেমে!
26-Ezekiel 21:21 : যে জায়গায় দুই রাস্তা আলাদা হয়ে গেছে সেখানে বাবিলের রাজা এসেছে। বাবিলের রাজা ভবিষ্যত্‌ জানার জন্য যাদু চিহ্ন ব্যবহার করেছে। সে তীর নিয়ে নাড়াচাড়া করেছে, পারিবারিক দেবতার কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছে এবং য়কৃতের দিকে তাকিযেছে।
26-Ezekiel 21:22 : “ঐ চিহ্নগুলি তাকে ডানদিকের পথ ধরতে বলেছে, যে পথ জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছে! সে প্রাচীর - ভেদক যন্ত্র আনার পরিকল্পনা করছে। আজ্ঞা পেলেই তার সৈন্যরা হত্যা করতে শুরু করবে। তারা যুদ্ধের সিংহনাদ করবে এবং তারপর শহরের চারধারে মাটির প্রাচীর গড়বে। প্রাচীর পর্য়ন্ত যাবার একটা জাঙ্গাল তৈরী করবে। শহর আক্রমণের জন্য একটা কাঠের মিনারও তৈরী করবে।
26-Ezekiel 21:23 : ইস্রায়েলের লোকরা ঐসব যাদু চিহ্নের মানে বুঝবে না। তারা তাঁর কাছে একটা প্রতিশ্রুতি করেছিল, কিন্তু তিনি তাদের পাপ সম্বন্ধে স্মরণ করাবেন। তখন ইস্রায়েলীয়রা বন্দী হবে।”
26-Ezekiel 21:24 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তোমরা অনেক মন্দ কাজ করেছ। তোমাদের পাপগুলো পরিষ্কার ভাবেই দেখা যাচ্ছে। তোমরা আমাকে স্মরণ করতে বাধ্য করেছ যে তোমরা দোষী; তাই তোমরা শএুদের হাতে ধরা পড়বে।
26-Ezekiel 21:25 : আর ওহে ইস্রায়েলের দুষ্ট নেতারা, তোমরা হত হবে। তোমাদের শাস্তির সময় এসেছে, শেষ দশা ঘনিয়ে আসছে!”
26-Ezekiel 21:26 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “শিরস্ত্রান খুলে ফেল! মুকুট খুলে নাও! পরিবর্তনের সময় এসেছে। গণ্যমান্য নেতাদের নত করা হবে আর যারা সাধারণ তারা গণ্যমান্য নেতা হবে।
26-Ezekiel 21:27 : আমি শহরটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব। এরকমটি আগে কখনও হয়নি, কিন্তু আমি এমন এক জনকে শহরটি দেব যার এটি দাবী করবার অধিকার আছে।”
26-Ezekiel 21:28 : ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, লোকদের কাছে আমার হয়ে এই কথা বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু অম্মোনের অধিবাসী ও তাদের লজ্জাকর দেবতাদের উদ্দেশ্যে এই সব কথা বলেন:“তরবারি! একটি তরবারি! সেই তরবারিটি তার খাপের বাইরে আছে। তাকে পরিষ্কার করে ঘসা মাজা হয়েছে। তরবারিটি হত্যা করার জন্য প্রস্তুত! বিদ্য়ুত্‌ চমকের মত তাকে পালিশ করা হয়েছে!
26-Ezekiel 21:29 : তোমার দর্শনগুলি কোন কাজের নয়। তোমার যাদু তোমায় কোন সাহায্য করবে না। তা কেবল মিথ্যার ঝুড়ি। খগ এখন দুষ্ট লোকের গলায়। শীঘ্রই তারা মৃতদেহে পরিণত হবে। তাদের সময় ঘনিয়ে এসেছে। মন্দের শেষ হবার সময় হয়েছে।”
26-Ezekiel 21:30 : “‘তরবারি (বাবিল) তুলে তা খাপে ফিরিয়ে রাখ। বাবিল তুমি যেখানে সৃষ্টি হয়েছিলে, যে দেশে তোমার জন্ম হয়েছিল, সেখানেই আমি তোমার বিচার করব।”
26-Ezekiel 21:31 : তোমার বিরুদ্ধে আমার রোধ ঢেলে দেব। গরম বাতাসের মত আমার রোধ তোমায় বালিয়ে দেবে। আমি তোমাকে হিংস্র, হত্যায পটু এমন লোকদের হাতে তুলে দেব।
26-Ezekiel 21:32 : তোমরা জ্বালানীর মত হবে। তোমাদের রক্ত পৃথিবীর গভীরে বইবে; লোকে আর তোমাদের স্মরণ করবে না। আমিই প্রভু এই কথা বলেছি!”‘
26-Ezekiel 22:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 22:2 : “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি নিধন শহরগুলির বিচার করবে? তারা যেসব ভয়ঙ্কর কাজ করেছে সে সম্বন্ধে কি তাকে বলবে?
26-Ezekiel 22:3 : তুমি অবশ্যই বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, এই শহরটি নরঘাতকে পূর্ণ, তাই তার শাস্তির সময় আসবে। সে নিজের জন্য নোংরা মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করেছিল আর সে ইসব মূর্ত্তিই তাকে নোংরা করেছে!
26-Ezekiel 22:4 : “‘জেরুশালেম নিবাসীরা, তোমরা বহুলোককে হত্যা করেছ, নোংরা মূর্ত্তি তৈরী করেছ। তোমরা দোষী আর তাই তোমাদের শাস্তি দেবার সময় এসেছে। তোমাদের শেষ দশা উপস্থিত এই জন্য অন্য জাতি তোমাদের নিয়ে ঠাট্ট করবে ও তোমাদের দেখে হাসবে।
26-Ezekiel 22:5 : দূরের ও কাছের লোকরা তোমাকে নিয়ে মজা করবে কারণ তুমি বিশৃঙ্খলতায পূর্ণ হয়ে তোমার সুনাম নষ্ট করেছ। ঐ দেখ উচ্চ হাসির শব্দ শোনা যায়।
26-Ezekiel 22:6 : “‘দেখ! জেরুশালেমে ইস্রায়েলের প্রতিটি শাসক অপর লোককে হত্যা করার জন্য নিজেকে বলবান করেছে।
26-Ezekiel 22:7 : জেরুশালেমের লোকরা তাদের পিতা - মাতাকে সম্মান করে না; তারা সেই শহরের বিদেশীদের আঘাত করে ও অনাথ এবং বিধ্বাদের ঠকায।
26-Ezekiel 22:8 : তোমরা আমার পবিত্র বিষয়গুলি ঘৃণা করে থাক ও আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে কোন মর্য়াদাই দাও না।
26-Ezekiel 22:9 : জেরুশালেমের লোকরা নির্দোষ লোকদের হত্যা করবার জন্য তাদের সম্বন্ধে মিথ্য়ে কথা বলে। লোকরা মূর্ত্তির পূজা করতে পর্বতগুলিতে যায় আর সহভাগীতার ভোজ খেতে জেরুশালেমে আসে।“‘জেরুশালেমে লোকে অনেক য়ৌনমূলক পাপ কাজ করে।
26-Ezekiel 22:10 : তারা তাদের পিতার স্ত্রীর সঙ্গে য়ৌন পাপ কাজ করে, মাসিকের সময় তাদের স্ত্রীদের ওপর বলাত্‌কার করে।
26-Ezekiel 22:11 : কেউ কেউ প্রতিবেশীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর পাপ কাজ করে; কেউ তার পুত্রবধূর সঙ্গে য়ৌন কাজ করে তাকে অশুচি করে; আবার কেউ কেউ তার নিজেরই বোনের ওপর বলাত্‌কার করে।
26-Ezekiel 22:12 : “‘জেরুশালেমের লোকরা, তোমরা হত্যা করার জন্য অর্থ নিয়ে থাক, ধার দিয়ে তার ওপর সুদ নিয়ে থাক, সামান্য অর্থের জন্য প্রতিবেশীকে ঠকিয়ে থাক। তোমরা আমায় ভুলে গেছ।’ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এইসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 22:13 : “‘ঈশ্বর বলেন ‘এখন দেখ! আমি সশব্দে হাত নামিয়ে তোমায় থামাব; লোক ঠকানো ও হত্যা করার জন্য তোমায় শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 22:14 : সে সময় তোমার কি সাহস হবে? যে সময় আমি শাস্তি দিতে আসি সে সময় কি তোমরা বলবান থাকবে? না! আমিই প্রভু, আমিই একথা বলছি আর যা যা বলেছি তাই সিদ্ধ করব।
26-Ezekiel 22:15 : আমি তোমাদের বিভিন্ন জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেব, বহু দেশে যেতে বাধ্য করব। শহরের নোংরা বিষয়গুলিকে আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব।
26-Ezekiel 22:16 : কিন্তু জেরুশালেম তুমি এই সব দোষে অপবিত্র হবে আর জাতিগণের সামনেই এইসব ঘটবে; তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”‘
26-Ezekiel 22:17 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 22:18 : “মনুষ্যসন্তান, রূপোর তুলনায় পিতল, লোহা, সীসা এবং টিন মূল্যহীন। স্বর্ণকার আগুন দিয়ে রূপো খাঁটি করে; রূপো তাপে গলে গেলে তা থেকে খাদ আলাদা করে। ইস্রায়েল জাতি আমার কাছে সেই অব্যবহার্য় খাদের মত হয়ে উঠেছে।”
26-Ezekiel 22:19 : প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘তোমরা মূল্যহীন জঞ্জালের মত হয়ে গেছ, তাই আমি তোমাদের জেরুশালেমে জড়ো করব।
26-Ezekiel 22:20 : স্বর্ণকার রূপো, পিতল, লোহা, সীসা ও টিন আগুনে ফেলে ফুঁ দিয়ে তা গরম করলে ধাতু যেমন গলতে শুরু করে, সেই একই ভাবে আমি তোমাদের আমার রোধরূপ আগুনে ফেলে গলাব।
26-Ezekiel 22:21 : আমি তোমাদের আমার সেই এোধরূপ আগুনে ফেলে তাতে ফুঁ দেব আর তোমরা গলতে শুরু করবে।
26-Ezekiel 22:22 : রূপো আগুনে গলে গেলে স্বর্ণকার যেভাবে তা সংগ্রহ করে, সেই একই ভাবে তোমরা শহরে গলে যাবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু আর এও জানবে যে আমিই তোমাদের বিরুদ্ধে আমার রোধ ঢেলে দিয়েছি।”‘
26-Ezekiel 22:23 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 22:24 : “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলকে বল যে সে শুচি নয়। নগরের উপরে আমার রোধর দিনে তা বৃষ্টি দ্বারা শুচি হয়নি।
26-Ezekiel 22:25 : জেরুশালেমের ভাব্বাদীরা দুষ্ট পরিকল্পনা করেছে; তারা গর্জনকারী সিংহের মত শিকার ধরে বহু প্রাণ নষ্ট করে; বহু মূল্যবান বিষয় হরণ করে; সেখানকার বহু মহিলাকে বিধ্বা করে।
26-Ezekiel 22:26 : “যাজকরা সত্যিই আমার শিক্ষাকে আঘাত করেছে; তারা আমার পবিত্র বিষয়গুলিকে যথার্থ মর্য়াদা দেয় না, গুরুত্বও দেয় না। তারা পবিত্র বিষয়গুলিকে মনেই করে না পবিত্র এবং শুচি বিষয়গুলিকে অশুচির মতোই দেখে। তারা লোকেদের এ বিষয়ে শিক্ষাও দেয় না। তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে সম্মান দেয় না এবং এমন আচরণ করে যেন আমার কোন গুরুত্বই নেই।
26-Ezekiel 22:27 : “জেরুশালেমের নেতারা নেকড়ের মত শিকার ধরে খাচ্ছে। এই সব নেতারা ধনের লোভে লোকেদের আক্রমণ ও হত্যা করে।
26-Ezekiel 22:28 : “ভাব্বাদীরা লোকদের সাবধান করে না। তারা সত্য ঢেকে রাখে। তারা সেই রকম কর্মীর মত যারা দেওয়াল মেরামত করে না, কেবল গর্ত বোজায। তারা কেবল মিথ্যা দর্শন পায়; মন্ত্র পড়ে মিথ্যা ভাবে ভবিষ্যত্‌ বলে। তারা বলে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেছেন’ কিন্তু সে সব মিথ্যা কথা - প্রভু তাদের সঙ্গে কথাই বলেন নি!
26-Ezekiel 22:29 : “সাধারণ লোকের অবস্থার সুযোগ নিয়ে একে অপরকে ঠকায ও চুরি করে। তারা গরীব অসহায় ভিখারীদের সাহায্যে ধনী হয়, বিদেশীদের ঠকায; তাদের সাথে ন্যায্য ব্যবহার করে না!
26-Ezekiel 22:30 : “আমি লোকদের তাদের জীবন ধারা পরিবর্ত্তন করতে এবং নগর রক্ষা করতে বলেছিলাম। আমি তাদের দেওয়াল মেরামত করতে ও দেওয়ালের ঐসব গর্তের সামনে দাঁড়িয়ে নগর রক্ষার্থে যুদ্ধ করতে বলেছিলাম কিন্তু সাহায্যের জন্য কেউ আসেনি।
26-Ezekiel 22:31 : এই জন্য আমি তাদের ওপর আমার রোধ ঢেলে দেব; তারা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য তাদের শাস্তি দেব কারণ এসব তাদের দোষ।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 23:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন,
26-Ezekiel 23:2 : “মনুষ্যসন্তান, শমরিয়া ও জেরুশালেমকে নিয়ে এই গল্পটা শোন। দুই বোন ছিল, তারা একই মায়ের মেয়ে।
26-Ezekiel 23:3 : তারা মিশরে য়ৌবন কালেই বেশ্যা হয়ে উঠল। মিশরেই প্রথম তারা প্রেম করল ও পুরুষদের দিয়ে তাদের চুচুক টেপাত ও স্তন ধরতে দিত।
26-Ezekiel 23:4 : বড় মেয়ের নাম ছিল অহলাআর তার বোনের নাম ছিল অহলীবা।তারা আমার স্ত্রী হল আর আমাদের সন্তানসন্ততি হল। (অহলা প্রকৃতপক্ষে শমরিয়া আর অহলীবা প্রকৃতপক্ষে জেরুশালেমকে বোঝায।)
26-Ezekiel 23:5 : “তারপর অহলা আমার প্রতি অবিশ্বস্তা হল। সেও একজন বেশ্যার মত জীবনযাপন করত। সে তার প্রেমিকদের চাইতে লাগল; নীল পোশাক পরা অশূরীয় সৈন্যদের প্রতি সে কামাসক্তা হল।
26-Ezekiel 23:6 : ঐ অশ্বারোহী যুবকরা সবাই তার আকাঙ্খিত বিষয় হল। তারা সবাই ছিল হয় নেতা নয়তো অধ্যক্ষ।
26-Ezekiel 23:7 : অহলা নিজেকে ঐসব যুবকদের কাছে দিয়ে দিল। ঐ অশূরীয় সৈন্যরা সবাই ছিল বাছা বাছা সৈন্য। সে তাদের সবাইকে চাইল এবং তাদের নোংরা প্রতিমাদের দ্বারা কলুষিত হল।
26-Ezekiel 23:8 : এছাড়াও মিশরের সাথে তার প্রেম থেকে সে পিছপা হল না। মিশরের জন্যই য়ৌবনকালে তার প্রেম এসেছিল, মিশরেই ছিল সেই প্রথম প্রেমিক যে তার য়ৌবনের স্তন স্পর্শ করেছিল। মিশর তার প্রতি তার মিথ্যা প্রেম ঢেলে দিয়েছিল।
26-Ezekiel 23:9 : তাই আমি তাকে তার প্রেমিকদের হাতে ছেড়ে দিলাম। সে অশূরীয়কে চেয়েছিল, আমি তাকে তা দিলাম।
26-Ezekiel 23:10 : তারা তাকে বলাত্‌কার করল, তার সন্তানদের নিয়ে গেল আর খগ ব্যবহার করে তাকে হত্যা করল। তারা তাকে শাস্তি দিল যার বিষয়ে মহিলারা এখনও আলোচনা করে।
26-Ezekiel 23:11 : “তার ছোট বোন অহলীবা এসব ঘটতে দেখেও তার বোনের চাইতে বেশী পাপ করে চলল, অহলার চাইতেও সে আরও অবিশ্বস্ত হল।
26-Ezekiel 23:12 : সে অশূরীয় নেতাদের ও অধ্যক্ষদের চাইল; অশ্বারোহী নীল পোশাক পরা ঐ সৈন্যদেরও চাইল। এই সব যুবকরা সবাই ছিল তার ঈপিসত বস্তু।
26-Ezekiel 23:13 : আমি দেখলাম ঐ দুই মহিলাই এক ভুল দ্বারা তাদের জীবন ধ্বংস করতে চলেছে।
26-Ezekiel 23:14 : “অহলীবা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েই চলল। বাবিলে সে দেওয়ালে খোদিত পুরুষের আকৃতি দেখল। এই আকৃতিগুলি ছিল লাল পোশাক পরা কল্দীয পুরুষদের।
26-Ezekiel 23:15 : তাদের কোমরে ছিল কোমরবন্ধ, মাথায় ছিল পাগড়ী। ঐসব লোকদের দেখে মনে হত যেন অশ্বারোহীদের অধিকারিক; তারা ছিল কল্দীয, বাবিলে তাদের জন্ম।
26-Ezekiel 23:16 : আর অহলীবা তাদের চাইল। সে বাবিলে তাদের কাছে দূত পাঠাল।
26-Ezekiel 23:17 : তাই ঐসব বাবিলের পুরুষরা তার প্রেম শয়্য়ার পাশে এসে তার সাথে সহবাস করল। তারা তাকে ব্যবহার করে এত নোংরা করল যে সে তাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠল।
26-Ezekiel 23:18 : “প্রত্যেকেই দেখল যে অহলীবা অবিশ্বস্ত। তার নগ্ন দেহকে সে এত জনকে উপভোগ করতে দিল যে আমি তার প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠলাম, যেমন তার বোনের প্রতি হয়েছিলাম।
26-Ezekiel 23:19 : বার বার অহলীবা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হল। তারপর সে মিশরে তার য়ৌবন কালের প্রেমের কথা স্মরণ করল।
26-Ezekiel 23:20 : সে গাধার মত শিশ্ন ও ঘোড়ার মত ভাসিযে দেওয়া বীর্য়্য় সম্পন্ন প্রেমিকদের কথা স্মরণ করল।
26-Ezekiel 23:21 : “অহলীবা, তুমি তোমার য়ৌবন কালের স্বপ্ন দেখলে, যে সময় তোমার প্রেমিকরা তোমার স্তনের বোঁটা স্পর্শ করত ও য়ৌবনের স্তন ধরত।
26-Ezekiel 23:22 : হে অহলীবা, প্রভু আমার সদাপ্রভু তাই এই সব কথা বলেছেন, ‘তুমি তোমার প্রেমিকদের প্রতি নিদারুণ বিরক্ত, কিন্তু আমি সেই প্রেমিকদের এখানে আনব আর তারা তোমায় ঘিরে ফেলবে।
26-Ezekiel 23:23 : আমি ঐ সমস্ত পুরুষদের বাবিল থেকে আনব, বিশেষ করে সেই কল্দীযদের। আমি পেকোদ, শোযা এবং কোযা থেকেও লোকদের আনব। আর অশূরীয় থেকেও লোকদের অর্থাত্‌ সেই নেতাদের ও আধিকারিকদের আনব। অশ্বারোহী আধিকারিকরা ও বাছাই করা অশ্বারোহী সৈন্যরা সবাই ছিল তোমার আকাঙ্খিত যুবক।
26-Ezekiel 23:24 : ঐ জনতার ভীড় তোমার কাছে আসবে। তারা ঘোড়ায় ও রথে চেপে তোমার কাছে আসবে। বহু লোক তাদের ঢাল ও শিরস্ত্রাণ নিয়ে তোমার চারিদিকে জড়ো হবে। আমি তাদের বলব তুমি আমার প্রতি কি করেছ আর তারা তাদের ইচ্ছে মত তোমাকে শাস্তি দেবে।
26-Ezekiel 23:25 : আমি যে কত ঈর্ষাণ্বিত তা তোমায় দেখাব। তারা তোমার প্রতি অতি রুদ্ধ হয়ে আঘাত করে তোমার নাক, কান কেটে ফেলবে। তারা তোমায় খগ দ্বারা হত্যা করে, তোমার সন্তানদের ধরে নিয়ে যাবে এবং অবশিষ্ট যা থাকবে তাতে আগুন লাগিয়ে দেবে।
26-Ezekiel 23:26 : তারা তোমার ভাল ভাল কাপড় ও অলঙ্কারগুলো নিয়ে যাবে।
26-Ezekiel 23:27 : আর মিশরে বসবাসের সময় থেকে তুমি যে সমস্ত কুকর্ম ও ব্যভিচার করেছিলে আমি তার সমাপ্তি ঘটাব। তুমি আর কখনও তাদের খোঁজ করবে না, আর কখনও মিশরকে স্মরণ করবে না।”‘
26-Ezekiel 23:28 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন, “তুমি যাদের ঘৃণা কর আমি তাদের হাতেই তোমায় তুলে দিচ্ছি। যাদের নিয়ে তুমি অতীষ্ঠ, তাদের হাতেই তুলে দিচ্ছি।
26-Ezekiel 23:29 : আর তারা যে তোমায় কত ঘৃণা করে তা দেখাবে। তোমার পরিশ্রমের দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই তারা নিয়ে যাবে আর উলঙ্গ ও ব্বিস্ত্র অবস্থায় তোমাকে পরিত্যাগ করবে। লোকে স্পষ্টই তোমার পাপ দেখতে পাবে। তোমার বেশ্যার মত ব্যবহার ও দুষ্ট স্বপ্ন দর্শনও তারা দেখবে।
26-Ezekiel 23:30 : আমায় ত্যাগ করে অন্য জাতির পেছনে পেছনে ছুটে যাবার সময় তুমি ঐসব মন্দ কাজ করতে। তাদের নোংরা মূর্ত্তি পূজো করতে আরম্ভ করার পরেই তুমি ঐসব বাজে কাজ করলে।
26-Ezekiel 23:31 : তুমি তোমার বোনের পথ অনুসরণ করে তার মতোই জীবনযাপন করেছ। তাই আমি, তার ভাগ্য যেমন হয়েছিল সেইরকম কষ্ট তোমাকে পাওয়াব।”
26-Ezekiel 23:32 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:“তুমিও তোমার বোনের পেয়ালা থেকে পান করবে। সেই পেয়ালাটি মাপে বেশ বড় ও গভীর। তোমার পান করা দেখে লোকে হাসবে আর তোমাকে উপহাস করবে।
26-Ezekiel 23:33 : তুমি এক জন মাতাল লোকের মত টলবে। তোমার শরীর মুর্ছিত হয়ে পড়বে। ঐ পেয়ালা ধ্বংসের ও উচ্ছেদের জন্য। তোমার বোন শমরিয়া যাতে পান করেছিল এটা তারই মত।
26-Ezekiel 23:34 : সেই পেয়ালার বিষ তুমি পান করবে, তার তলানি পর্য়ন্ত পান করবে। তারপর সেই পাত্র ছুঁড়ে ফেলে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করবে আর কষ্টে তোমার স্তন ছিঁড়ে ফেলবে। আমি প্রভুসদাপ্রভু বলছি এটা ঘটবে, আর আমিই এসব বলেছি।”
26-Ezekiel 23:35 : “তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘জেরুশালেম, তুমি আমায় ভুলে গেছ। তুমি আমায় দূর করে একাকী রেখে গেছ। আমাকে পরিত্যাগ করার জন্য ও বেশ্যার মত জীবন যাপন করার জন্য তোমায় তাই কষ্ট ভোগ করতে হবে। তোমার দেখা দুষ্ট স্বপ্নের জন্যও তোমায় কষ্টভোগ করতে হবে।”‘
26-Ezekiel 23:36 : প্রভু আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি অহলা ও অহলীবার বিচার করবে? তবে তারা যে ভযানক কাজগুলি করেছে তা তাদের বল।
26-Ezekiel 23:37 : তারা ব্যভিচারমূলক পাপ করেছে। তারা দণ্ডার্হ অপরাধে অপরাধী। তারা এক জন বেশ্যার মত আচরণ করেছে। তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সঙ্গে থাকবার জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে। তাদের কাছে আমার যে সন্তানেরা ছিল, তাদের তারা জোর করে আগুনের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে বাধ্য করেছে যাতে তারা তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোকে খাদ্য য়োগাতে পারে।
26-Ezekiel 23:38 : তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিন ও পবিত্র স্থানকে কোন গুরুত্ব দেয় নি।
26-Ezekiel 23:39 : তারা তাদের মূর্ত্তিগুলোর জন্য তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে এবং সেই একই দিনে আমার সে জায়গাটাকে অশুচি করেছে। দেখ, তারা এসমস্তই আমার মন্দিরের মধ্যে করেছে!
26-Ezekiel 23:40 : “তারা দূরের পুরুষদের ডেকে এনেছে। তুমি ঐ লোকদের কাছে দূত পাঠিয়েছিলে আর তারা তোমাকে দেখবার জন্য এসেছিল। তুমি তাদের জন্য স্নান করলে, তোমার চোখে কাজল দিলে ও গযনা পরলে।
26-Ezekiel 23:41 : তুমি রাজকীয় বিছানায বসে তার সামনের টেবিলে আমার দেওয়া সুগন্ধী ও তেল সাজিযে রাখলে।
26-Ezekiel 23:42 : “জেরুশালেমের শব্দ শুনে মনে হল যেন ভোজে আমন্ত্রিত জনতার ভীড়। সেই ভোজে অনেকে এল; লোকে মরুভূমি থেকে আসছিল বলে পান করতে করতেই আসছিল। তারা সেই স্ত্রীলোককে বাউটি ও সুন্দর মুকুট দিল।
26-Ezekiel 23:43 : তখন আমি ব্যভিচারে যে স্ত্রীলোকটি জীর্ণ হয়ে পড়েছে তার সাথে কথা বললাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারা কি তার সঙ্গে এই য়ৌন পাপ করেই চলবে আর সেও কি তাদের সঙ্গে করবে?’
26-Ezekiel 23:44 : কিন্তু লোকে যেমন বেশ্যার কাছে যায় সেই ভাবেই তারা তার কাছে যেতে থাকল। হ্যাঁ, তারা বারবার ঐ দুষ্টা স্ত্রীলোক অহলা ও অহলীবার কাছে যেতে থাকল।
26-Ezekiel 23:45 : “কিন্তু ধার্মিক লোকরা তাদের দোষী করবে। তারা ঐ দুই স্ত্রীলোককে ব্যভিচার ও হত্যার পাপে দোষী করবে। কারণ অহলা ও অহলীবা ব্যভিচারমূলক পাপ করেছে এবং যে সব লোকদের তারা হত্যা করেছে তাদের রক্ত এখনও তাদের হাতে লেগে রয়েছে!”
26-Ezekiel 23:46 : প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন, “লোকদের এক জায়গায় জড়ো কর, তারা অহলা ও অহলীবার শাস্তি দিক। ঐ লোকরা ঐ দুই স্ত্রীলোককে শাস্তি দেবে ও তাদের নিয়ে ব্যঙ্গ করবে।
26-Ezekiel 23:47 : তারপর তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলবে আর খগ দিয়ে ঐ দুই স্ত্রীলোককে টুকরো টুকরো করে কাটবে। তারা ঐ স্ত্রীলোকদের সন্তানদের হত্যা করে তাদের ঘরবাড়ী বালিয়ে দেবে।
26-Ezekiel 23:48 : এই ভাবে আমি ঐ দেশের লজ্জা দূর করব আর তারা যে কাজ করেছে অন্য স্ত্রীলোকরা সেই লজ্জাজনক কাজ হতে সাবধান হবে।
26-Ezekiel 23:49 : তোমার কৃত মন্দ কাজের জন্য তারা তোমায় শাস্তি দেবে। তোমরা নোংরা মূর্ত্তি পূজো করার জন্যও শাস্তি ভোগ করবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভুসদাপ্রভু।”
26-Ezekiel 24:1 : প্রভুর কথাগুলি আমার কাছে এল। এটা ছিল নির্বাসনে থাকার নবম বছরের দশম মাসের দশম দিন। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 24:2 : “মনুষ্যসন্তান, আজকের দিনের তারিখ ও এই কথাগুলি লেখ: ‘এই দিনে বাবিলের রাজার সৈন্যরা জেরুশালেম ঘিরে ফেলেছিল।’
26-Ezekiel 24:3 : এই ঘটনা সেই পরিবারকে বল যারা বাধ্য হতে অস্বীকার করে। তাদের এই বিষয়গুলি বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু একথা বলেন:“‘হাঁড়িটা আগুনে বসাও, হাঁড়িটা বসাও। আর তাতে জল ঢালো।
26-Ezekiel 24:4 : মাংসের টুকরোগুলো তার মধ্যে দাও। প্রত্যেকটা ভাল টুকরো তার মধ্যে দাও, উরু ও ঘাড়ের মাংসের টুকরোগুলি। সব চেয়ে ভাল হাড়ের টুকরো দিয়ে হাঁড়িটি ভর্তি কর।
26-Ezekiel 24:5 : পালের সেরা পশুগুলো নাও। হাঁড়ির নীচে কাঠগুলো জড়ো কর। মাংস সেদ্ধ কর, এমন ভাবে সেদ্ধ কর যেন হাড়গুলোও পরিপক্ক হয়!’
26-Ezekiel 24:6 : “প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “জেরুশালেমের পক্ষে এটা প্রাণনাশক হবে। নিধন শহরের পক্ষে এটা হবে অমঙ্গলজনক। জেরুশালেম মরচে পড়া হাঁড়ির মত। মরচের ঐ দাগগুলি মোছা যাবে না! সেই পাত্র পরিষ্কার নয়। তাই তুমি অবশ্যই হাঁড়ির ভেতরের প্রত্যেকটা মাংসের টুকরো বের করে নেবে! ঐ মাংস খেও না! আর যাজকদেরও সেই মন্দ মাংস বাছতে দিও না।
26-Ezekiel 24:7 : জেরুশালেম মরচে পড়া হাঁড়ির মত। কারণ হত্যাকারীদের হত্যার রক্ত এখনও সেখানে রয়েছে। সে ঐ রক্তখোলা পাথরের উপর রেখেছে, মাটিতে ঢেলে তা মাটি চাপা দেয়নি!
26-Ezekiel 24:8 : আমি তার সেই রক্তখোলা পাথরের ওপরে রেখেছি যেন তা ঢাকা না হয়। আমি এমনটা করেছি যেন লোকে রুদ্ধ হয়ে নির্দোষ লোককে হত্যা করার শাস্তি তাকে দেয়।”
26-Ezekiel 24:9 : “তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘হত্যাকারীদের শহরের পক্ষে এ হবে অমঙ্গলজনক! আমি আগুনের জন্য প্রচুর কাঠ জড়ো করব।
26-Ezekiel 24:10 : পাত্রের তলায় কাঠ বোঝাই করে রাখব। আগুন জ্বালাও, ভালো করে মাংস রান্না কর! মশলা মেশাও এমনকি হাঁড়িগুলোও পুড়ে যাক।
26-Ezekiel 24:11 : তারপর খালি পাত্রটিকে কযলার ওপর রাখ। ওটাকে এমন এমন ভাবে উত্তপ্ত হতে দাও যাতে তার দাগগুলোতেও আগুন ধরে যায়। ঐ দাগগুলো গলে যাবে ও মরচে পড়ে ধ্বংস হবে।
26-Ezekiel 24:12 : “ঐ দাগগুলো ধুয়ে ফেলতে জেরুশালেমকে প্রচুর খাটতে হবে। কিন্তু সেই মরচে যাবে না! কেবল আগুনই (শাস্তি) সেই মরচে দূর করতে সক্ষম হবে।
26-Ezekiel 24:13 : “তুমি আমার বিরুদ্ধে পাপ করে পাপের দাগে দাগযুক্ত হয়েছিলে। আমি তোমায় পরিষ্কার করার জন্য ধুতে চাইলাম। কিন্তু সেই দাগ উঠল না। আমি আর ধোবার চেষ্টা করব না, যতক্ষণ না আমার প্রচণ্ড এোধ তোমার উপরে শেষ না করি!
26-Ezekiel 24:14 : “‘আমিই প্রভু, আমিই বলেছিলাম তোমার শাস্তি আসবে আর আমিই তা ঘটাব। আমি শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত হব না। তোমার জন্য অনুশোচনাও বোধ করব না। তোমার মন্দ কাজের জন্য আমি তোমায় শাস্তি দেব।’ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথাগুলি বলেছেন।”
26-Ezekiel 24:15 : তারপর প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন,
26-Ezekiel 24:16 : “মনুষ্যসন্তান, তুমি তোমার স্ত্রীকে খুবই ভালবাস, কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে তাকে নিয়ে নেব। তোমার স্ত্রী হঠাত্‌ মারা যাবে কিন্তু তুমি তোমার দুঃখ প্রকাশ করবে না, জোরে জোরে কেঁদো না।
26-Ezekiel 24:17 : চোখের জল ফেলো কিন্তু নিঃশব্দে। মৃত স্ত্রীর জন্য উচ্চস্বরে কেঁদো না। সাধারণতঃ যে কাপড় পরে থাক তাই পর। তোমার পাগড়ী বাঁধ, জুতো পর। শোক প্রকাশ করতে তোমার গোঁফ ঢেকে রেখো না আর মানুষ মারা গেলে লোকে সাধারণতঃ যা খায় তাও খেযো না।”
26-Ezekiel 24:18 : পরের দিন সকালে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা আমি লোকদের বললাম। সেই বিকেলে আমার স্ত্রী মারা গেল। পরের দিন সকালে ঈশ্বর যা আদেশ করেছিলেন আমি সেই অনুসারে কাজ করলাম।
26-Ezekiel 24:19 : তখন লোকে আমায় জিজ্ঞেস করল, “তুমি কেন এসব করছ? এসবের অর্থ কি?”
26-Ezekiel 24:20 : তখন আমি তাদের বললাম, “প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল;
26-Ezekiel 24:21 : ইস্রায়েলের পরিবারগুলিকে এই কথা বলো। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘দেখ, আমি আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস করব। তুমি এই স্থান সম্বন্ধে গর্বিত ও এর সম্বন্ধে প্রশস্তি গীত গেযে থাক। তোমরা সেই স্থান দেখতে ভালবাস ও সত্যই তাকে ভালোবাস। কিন্তু আমি সেই স্থান ধ্বংস করব আর যুদ্ধে যে শিশুদের তোমরা ছেড়ে এসেছিলে, তারা হত হবে।
26-Ezekiel 24:22 : কিন্তু তোমরা সেই একই কাজ করবে যেমনটি আমি আমার মৃত স্ত্রীর বিষয়ে করেছি। তোমরা তোমাদের শোক প্রকাশ করতে গোঁফ ঢাকবে না। মানুষ মারা গেলে লোকে সাধারণত যা খায় তা খাবে না।
26-Ezekiel 24:23 : তোমরা তোমাদের পাগড়ী বাঁধবে, জুতো পরবে কিন্তু শোক প্রকাশ করবার জন্য কেঁদো না। তোমরা তোমাদের পাপের কারণে ক্ষীণ ও দুর্বল হয়ে পড়বে। একে অন্যের কাছে গভীরভাবে আর্তনাদ করবে।
26-Ezekiel 24:24 : যিহিষ্কেল তোমাদের কাছে একটি চিহ্নস্বরূপ। সে যা যা করেছে তোমরাও তাই করবে। শাস্তির সেই সময় যখন আসবে তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”‘
26-Ezekiel 24:25 : “মনুষ্যসন্তান, আমি লোকদের কাছ থেকে সেই নিরাপদ স্থান (জেরুশালেম) ছিনিয়ে নেব। সেই সুন্দর স্থান তাদের আনন্দ দেয়, তারা তা দেখতে চায় ও তাকে প্রকৃতই ভালবাসে। কিন্তু সেই সময়ে আমি ঐ লোকদের কাছ থেকে এই শহর ও তাদের সন্তানসন্ততি ছিনিয়ে নেব। জেরুশালেমের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে অবশিষ্ট কেউ এক জন তোমাদের কাছে আসবে।
26-Ezekiel 24:26 : -
26-Ezekiel 24:27 : সেই সময়, তোমরা ঐ লোকটির সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হবে এবং চুপ করে থাকবে না। এই ভাবে, তুমি তাদের কাছে একটি চিহ্নস্বরূপ হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 25:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 25:2 : “মনুষ্যসন্তান, অম্মোন সন্তানদের দিকে দেখ আর আমার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বল।
26-Ezekiel 25:3 : অম্মোন লোকদের বল: আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভুর বাক্য শোন! আমার প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যখন আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস হয়েছিল তখন তোমরা আনন্দিত হয়েছিলে। ইস্রায়েলের ভূমি কলূষিত হলে তোমরা তার বিরুদ্ধে গেলে। যিহূদা পরিবারের লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবার সময়ে তোমরা তাদের বিরুদ্ধে গেলে।
26-Ezekiel 25:4 : সেই জন্য আমি পূর্বের লোকদের হাতে তোমাদের সঁপে দেব আর তারা তোমাদের ভূমি অধিকার করবে। তাদের সৈন্যরা তোমাদের দেশে তাদের শিবির গড়বে। তারা তোমাদের মধ্যে বাস করবে, তোমাদের ফল খাবে ও তোমাদের দুধ পান করবে।
26-Ezekiel 25:5 : “‘আমি রব্বা শহরটিকে উটের চারণস্থান ও অম্মোন দেশকে মেষরা যেখানে বিশ্রাম নেয সেইরকম একটা স্থানে পরিণত করব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 25:6 : প্রভু এই কথাও বলেন, “জেরুশালেম ধ্বংস হলে পরে তোমরা আনন্দিত হয়েছিলে। তোমরা হাততালি দিয়েছিলে ও পা দাপিযেছিলে। তোমরা ইস্রায়েলের ভূমিকে নিয়ে অবজ্ঞাসহ ঠাট্ট া করেছিলে।
26-Ezekiel 25:7 : সেই জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব। তোমরা যুদ্ধে লুঠ করা মূল্যবান সামগ্রীর মত হবে। তোমরা তোমাদের অধিকার হারাবে। বহু দূর দেশে তোমাদের মৃত্যু হবে। আমি তোমাদের দেশ ধ্বংস করব! তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”‘
26-Ezekiel 25:8 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “মোয়াব ও সেযীর বলে, ‘যিহূদা পরিবার অন্য জাতিদের মতই।’
26-Ezekiel 25:9 : আমি মোয়াবের কাঁধ কেটে নেব। তার সীমার শহরগুলি নিয়ে নেব, ভূমির গৌরব বৈত্‌ - য়িশীমোত, বাল্ - মিযোন ও কিরিযাথযিম।
26-Ezekiel 25:10 : আর সেই শহরগুলো পূর্ব দেশের লোকদের দেব। তারা তোমাদের ভূমি অধিকার করবে আর আমি পূর্ব দেশের লোকদের দ্বারা অম্মোনের লোকদের ধ্বংস করব। তখন সবাই ভুলে যাবে এই কথা যে অম্মোন বলে এক জাতি ছিল।
26-Ezekiel 25:11 : তাই আমি মোয়াবকে বিচার অনুসারে শাস্তি দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 25:12 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “ইদোমের লোকরা যিহূদা পরিবারের বিরুদ্ধে উঠে প্রতিশোধ নিতে গিয়েছিল, তাই তারা দোষী।”
26-Ezekiel 25:13 : প্রভু আমার সদাপ্রভু আরও বলেন, “আমি ইদোমকে শাস্তি দেব, তাদের লোকজন ও পশুদের ধ্বংস করব। আমি তৈমন থেকে দদান পর্য়ন্ত সম্পূর্ণ ইদোম দেশটি ধ্বংস করব আর ইদোমীয়দের যুদ্ধে নিহত করব।
26-Ezekiel 25:14 : আমি ইদোমের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে আমার প্রজা ইস্রায়েলীয়দের ব্যবহার করব। এই ভাবে ইস্রায়েলের লোকেরা ইদোমের বিরুদ্ধে আমার রোধ প্রকাশ করবে। তখন ইদোমের লোকরা জানবে যে আমিই তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
26-Ezekiel 25:15 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “পলেষ্টীয়রা প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করেছিল, তারা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হয়েছিল এবং রোধ বহু সময় জ্বলেছে!”
26-Ezekiel 25:16 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি পলেষ্টীয়দের শাস্তি দেব; হ্যাঁ, আমি ঐ করেথীয লোকদের ধ্বংস করে দেব। সমুদ্রের উপকূলে বসবাসকারী ঐ লোকদের আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব।
26-Ezekiel 25:17 : আমি ঐ লোকদের শাস্তি দেব - প্রতিশোধ নেব। আমার রোধ তাদের শিক্ষা দেবে আর তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
26-Ezekiel 26:1 : নির্বাসনের একাদশতম বছরের মাসের প্রথম দিনে প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 26:2 : “হে মনুষ্যসন্তান, সোর জেরুশালেমের বিরুদ্ধে বাজে কথা বলেছে, বলেছে ‘সাবাস! নগরের লোক জন রক্ষা করে যে দরজা তা ধ্বংস হয়েছে। ঐ দরজা আমার জন্য খুলে গেছে। শহর তো ধ্বংসপ্রাপ্ত, তাই তার থেকে মূল্যবান জিনিসগুলি আমি আনতে পারি।”‘
26-Ezekiel 26:3 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “সোর, আমি তোমার বিরুদ্ধে। আমি যুদ্ধ করার জন্য তোমার বিরুদ্ধে বহু জাতিকে আনব, তারা সমুদ্রের তটে ফিরে আসা ঢেউযের মত বার বার আসবে।”
26-Ezekiel 26:4 : ঈশ্বর বলেন, “সেই শএু সেনারা সোরের প্রাচীর ধ্বংস করবে ও তার স্তম্ভগুলি টেনে মাটিতে নামাবে। আমিও তার ভূমির ওপরের মাটির স্তর চেঁচে ফেলে সোরকে একটি নগ্ন পাষাণে পরিণত করব।
26-Ezekiel 26:5 : সোর সমুদ্রের ধারে মাছের জাল বিছাবার জায়গা হবে। আমিই একথা বলেছি!” প্রভু আমার সদাপ্রভু আরও বলেন, “সোর যুদ্ধে লুঠ করা মূল্যবান সামগ্রীর মত হবে।”
26-Ezekiel 26:6 : তারপর তার কন্যারা যারা মাঠে থাকবে তাদের হত্যা করা হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 26:7 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “আমি উত্তর দিক থেকে সোরের বিরুদ্ধে এক শএু আনব। সেই শএু নবূখদ্রিত্‌সর, বাবিলের মহান রাজা! সে তার সঙ্গে আনবে বিরাট সৈন্যবাহিনী আর তাতে অশ্ব, অশ্বারোহী সৈন্য ও অনেক পদাতিক সৈন্য থাকবে! ঐ সৈন্যরা অন্য অনেক জাতি থেকে আসবে।
26-Ezekiel 26:8 : নবূখদ্রিত্‌সর তোমাদের নিকটের (ছোট ছোট শহরগুলি) ধ্বংস করবে। সে শহর আক্রমণ করবার জন্য বহু মিনার গড়বে। তোমাদের আক্রমণ করবার জন্য সে একটি জাঙ্গাল তৈরী করবে। সে তার সৈন্যদলকে ঢাল দিয়ে রক্ষা করবে। সেই জাঙ্গালটি প্রাচীর পর্য়ন্ত যাবে।
26-Ezekiel 26:9 : সে প্রাচীর - ভেদক যন্ত্র নিয়ে আসবে ও তীক্ষ্ণ অস্ত্র দিয়ে তোমাদের মিনারগুলো ভেঙ্গে ফেলবে।
26-Ezekiel 26:10 : তার অশ্বের সংখ্যা এত হবে যে তাদের পায়ের ধূলো তোমায় ঢেকে ফেলবে। বাবিলের রাজা নগরের দ্বারে প্রবেশ করার সময়ে অশ্বারোহী সৈন্যের, শকট ও রথের শব্দে তোমার প্রাচীর কাঁপবে।
26-Ezekiel 26:11 : বাবিলের রাজা ঘোড়ায় চড়ে তোমার শহরের মধ্যে দিয়ে আসবে আর তার ঘোড়াগুলোর শব্দে সমস্ত পথ দলিত হবে। সে তরবারির দ্বারা তোমার লোকদের হত্যা করবে, তোমার শহরের দৃঢ় থামগুলো ভূমিসাত্‌ হবে।
26-Ezekiel 26:12 : নবূখদ্রিত্‌সরের লোকরা তোমাদের ধন দৌলত ছিনিয়ে নিয়ে যাবে। তোমরা যা বিক্রিী করতে চেয়েছিলে তাও তারা নিয়ে যাবে। তারা তোমাদের প্রাচীরগুলো ও মনোরম বাড়িগুলোকে ধ্বংস করবে এবং তোমাদের পাথর, তোমাদের কাঠ এবং তোমাদের মাটি সমুদ্রে ফেলে দেবে।
26-Ezekiel 26:13 : আমি তোমার আনন্দের গান থামিয়ে দেব, লোকে আর তোমার বীণার শব্দ শুনতে পাবে না।
26-Ezekiel 26:14 : আমি তোমায় একটি নগ্ন পাষাণে পরিণত করব। তুমি সমুদ্রের ধারে একটি জাল বিস্তার করবার জায়গার মত হবে! তোমাকে আবার গড়া হবে না! কারণ আমি, প্রভু এই কথা বলছি!” এই কথাগুলি প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেছেন।
26-Ezekiel 26:15 : প্রভু আমার সদাপ্রভু সোরের প্রতি এই কথা বলেন: “ভূমধ্যসাগরের উপকূলের দেশগুলো তোমার পতনের শব্দে কাঁপবে। তোমার মধ্যকার লোকরা আঘাত পেলে ও হত হলেই কি তা ঘটবে না?
26-Ezekiel 26:16 : তখন উপকূলের দেশগুলির নেতারা তাদের সিংহাসন থেকে নেমে এসে দুঃখ প্রকাশ করবে। তারা তাদের সুন্দর রাজকীয় বস্ত্র ত্যাগ করে ‘ত্রাসের বস্ত্র’ পরবে। তারা মাটিতে বসে ভয়ে কাঁপবে। তোমরা কত চট করে ধ্বংস হলে সেই ভেবে তারা চমকে উঠবে।
26-Ezekiel 26:17 : তোমার সম্বন্ধে তারা এই শোকগাথা গাইবে:“‘সোর, তুমি একটি বিখ্যাত শহর ছিলে। তুমি বিখ্যাত ছিলে এখন তুমি সব হারিযেছ! তুমি সমুদ্রে বলবান ছিলে আর তোমার মধ্যে বসবাসকারী লোকরাও তাই ছিল। মূল ভূখণ্ডেবাসকারী সবাই তোমার ভয়ে ভীত ছিল।”
26-Ezekiel 26:18 : এখন তোমার পতনের দিনে উপকূলের দেশগুলো ভয়ে কাঁপবে। তুমি উপকূলে বহু উপনিবেশ স্থাপন করেছিলে। ভীত হবে ঐ লোকরা তোমার পতন হলে!”‘
26-Ezekiel 26:19 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “সোর আমি তোমাকে ধ্বংস করব আর তুমি পুরানো শূন্য শহরে পরিণত হবে। কেউ সেখানে বাস করবে না। আমি সমুদ্রকে তোমার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে দেব, প্রচণ্ড ঢেউ তোমায় আচ্ছাদন করবে।
26-Ezekiel 26:20 : আমি তোমায় গভীরতম গর্তে পাঠাব - যেখানে মৃতেরা রয়েছে। বহু পূর্বে যারা মারা গেছে, তুমি তাদের সঙ্গে যোগ দেবে। আমি তোমায় অধো স্থানের জগতে সেই পুরানো শূন্য শহরে পাঠাব। তুমি অন্য অন্য পাতালগামীদের সাথে যোগ দেবে। তুমি আর কখনও জীবিতদের দেশে ফিরে আসবে না!
26-Ezekiel 26:21 : আমি তোমাকে ধ্বংস করব এবং তুমি চিরতরে বিগত হয়ে যাবে। লোকে তোমাকে খুঁজবে কিন্তু তারা আর কখনও তোমাকে খুঁজে পাবে না!” এই কথা প্রভু আমার সদাপ্রভুই বলেছেন।
26-Ezekiel 27:1 : প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল, তিনি বললেন,
26-Ezekiel 27:2 : “মনুষ্যসন্তান, সোর সম্বন্ধে এই শোকের গান গাও।
26-Ezekiel 27:3 : সোরের সম্বন্ধে এই কথাগুলি বলো:“সোর, তুমি হলে সমুদ্রের দিকে এগিয়ে যাওয়া পথ। সমুদ্রের উপকূল বরাবর বহু উপজাতির জন্য তুমি বণিক। প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন: “‘সোর তুমি নিজেকে খুব সুন্দরী ভাব!
26-Ezekiel 27:4 : ভূমধ্যসাগর তোমার শহরের সীমা। তোমার নির্মাতারা তোমাকে সত্যিই সুন্দরী করে গড়েছিল। সেই জাহাজগুলোর মতন, যারা তোমা হতে পাড়ি দেয়।
26-Ezekiel 27:5 : তোমার নির্মাতারা তক্তা তৈরী করার জন্য সনীর পর্বত থেকে এরস কাঠ এনে ব্যবহার করত। তারা লিবানোনের এরস গাছ ব্যবহার করে তোমার মাসুল তৈরী করত।
26-Ezekiel 27:6 : তারা বৈঠা তৈরী করতে বাশনের ওক কাঠ ব্যবহার করেছিল। জাহাজের কুঠুরী তৈরী করার জন্য সাইপ্রাসের পাইন কাঠ ব্যবহার করেছিল। তারা থাকার জায়গাটা সাজিযেছিল হাতির দাঁতে।
26-Ezekiel 27:7 : তোমার পাল তৈরী করতে ব্যবহৃত হয়েছিল মিশরের তৈরী রঙ্গীন মসিনা। সেই পালই ছিল তোমার পতাকা, তোমার কুঠুরির আচ্ছাদন ছিল নীল ও বেগুনী রঙের। ওসব সাইপ্রাস ইলীশা উপকূল থেকে এসেছিল।
26-Ezekiel 27:8 : সীদোন ও অর্বদের লোকরা তোমার জন্য নৌকা বেয়ে এসেছিল। সোর, তোমার জ্ঞানী লোকরা জাহাজের নাবিক ছিল।
26-Ezekiel 27:9 : গবালের প্রবীণরা ও জ্ঞানবান লোকরা তক্তার মাঝে ছেঁদা মেরামতের জন্য জাহাজে ছিল। সমুদ্রের সব কটি জাহাজ ও তাদের নাবিকরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য এসেছিল।
26-Ezekiel 27:10 : “পারস, লূদ ও পূটের লোকরা তোমার সেনাদলে যোদ্ধা হয়েছিল। তোমার দেওয়ালে তারা তাদের ঢাল ও শিরস্ত্রাণ ঝুলিয়ে রাখত। তারাই সম্মান ও গৌরব এনে তোমার শহরের শোভা বর্ধন করেছিল।
26-Ezekiel 27:11 : অর্বদ ও হেলেখেরলোকরা তোমার শহর ঘিরে যে প্রাচীর, তাকে পাহারা দিত। তোমার চূড়োগুলো ছিল গামাদের অধিকারভুক্ত। তোমার শহরের চারধারের দেওয়ালে তারা তাদের ঢাল ঝুলিয়ে রাখত। তারা তোমার সৌন্দর্য়কে পূর্ণ রূপ দিয়েছিল।
26-Ezekiel 27:12 : “তোমার উত্তম বণিকদের মধ্যে তর্শীশ ছিল একজন। তারা রূপো, লোহা, দস্তা ও সীসা দিয়ে তোমার অপূর্ব জিনিসগুলি কিনত।
26-Ezekiel 27:13 : গ্রীস, তূবল এবং মেশক - এর লোকরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত। তারা এীতদাস ও পিতলের বিনিময়ে তোমার জিনিস কিনত।
26-Ezekiel 27:14 : তোগর্ম জাতির লোকেরা অশ্ব, যুদ্ধের অশ্ব ও গর্ধভ দিয়ে তোমার জিনিস কিনত।
26-Ezekiel 27:15 : দদানের লোকরাও তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত। তোমার জিনিসপত্র তুমি বহু জায়গায় বেচতে। লোকে হাতির দাঁত ও আবলুশ কাঠ দিয়ে তোমার দাম মেটাত।
26-Ezekiel 27:16 : তোমার বহু উত্তম দ্রব্য়ের জন্য অরামও তোমার সাথে ব্যবসা করত। তারা পান্না, বেগুনি কাপড়, বুটি দেওয়া কাপড়, মিহি মসীনা, প্রবাল ও পদ্মরাগ মণি দিয়ে তোমার জিনিস কিনত।
26-Ezekiel 27:17 : “যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরাও তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত। গম, জলপাই, কচি ডুমুর, মধু, তেল ও মলম দিয়ে তারা তোমার জিনিসের দাম মেটাত।
26-Ezekiel 27:18 : দম্মেশক তোমার এক জন ভাল এতো ছিল। তোমার কাছ থেকে বহু চমত্কার জিনিস নিয়ে সে তোমার সঙ্গে ব্যবসা চালাত। ঐসব জিনিসের জন্য তারা হিল্বোন থেকে দ্রাক্ষারস ও সাদা পশম নিয়ে আসত।
26-Ezekiel 27:19 : দম্মেশক এবং উষল থেকে গ্রীসীয লোকরা তোমার কাছ থেকে জিনিষ কিনত। তারা পেটা লোহা, কাশ ও আখ নিয়ে আসত।
26-Ezekiel 27:20 : দদানের জন্য ভাল ব্যবসা হত। তারা তোমার সাথে জিনের নীচের কাপড়ের ব্যবসা করত।
26-Ezekiel 27:21 : আরব ও কেদরের নেতারা মেষশাবক, মেষ ও ছাগল দিয়ে তোমার দ্রব্য কিনত।
26-Ezekiel 27:22 : শিবা ও রামাহার বণিকরা তোমার সাথে ব্যবসা করত। তারা সমস্ত উত্তম মশলা, মূল্যবান পাথর ও সোনা দিয়ে তোমার জিনিস কিনত।
26-Ezekiel 27:23 : হারণ, কন্নী, এদন এবং শিবা, অশূর ও কিল্মদের বনিকরা তোমার সঙ্গে ব্যবসা করত।
26-Ezekiel 27:24 : তারা সুঁচের কাজ করা নীল কাপড়, বহু রঙের গালিচা, শক্ত করে পাকানো দড়ি এবং এরস কাঠের গুড়ি দিয়ে ব্যবসা করত।
26-Ezekiel 27:25 : তোমার বেচে দেওয়া জিনিসগুলি তর্শীশের জাহাজগুলি বয়ে নিয়ে যেত।“সোর তুমি ঐ মালবাহী জাহাজের একটির মত। তুমি সমুদ্রে বহু ধনের ভারে ভারী।
26-Ezekiel 27:26 : তোমার দাঁড়ীরা তোমাকে গভীর সমুদ্রে নিয়ে গেছে। কিন্তু প্রবল পূর্বীয বাযু দ্বারা সমুদ্রেই তোমার জাহাজ ধ্বংস হবে।
26-Ezekiel 27:27 : তোমার ধনসম্পত্তি সব সমুদ্রে ছিটিয়ে যাবে। তোমার ধনসম্পত্তি - যা তুমি বেচো কেনো তা সমুদ্রে ছড়িয়ে যাবে। তোমার নাবিকরা, কর্ণধাররা ও ছিদ্র মেরামতকারীরা সব সমুদ্রে ছিটকে পড়বে। তোমার শহরের বণিকরা ও সৈন্যরা সবাই সমুদ্রে ডুবে যাবে। তোমার ধ্বংসের দিনেই এটা ঘটবে।
26-Ezekiel 27:28 : “তোমার নাবিকদের কান্না শুনে প্রধান ভূখণ্ডটি ভয়ে কেঁপে উঠবে!
26-Ezekiel 27:29 : তোমার জাহাজের সমস্ত কর্মীরা সমুদ্রে ঝাঁপ দেবে। দাঁড়ীরা ও নাবিকরা জাহাজ থেকে ঝাঁপ দিয়ে পাড়ের দিকে সাঁতার কাটবে
26-Ezekiel 27:30 : তারা তোমার সম্বন্ধে দুঃখ করবে। তারা কান্নাকাটি করে তাদের মাথার উপর ধূলো ছিটাবে ও ছাইযে গড়াগড়ি দেবে।
26-Ezekiel 27:31 : তারা তোমার জন্য মাথা কামাবে ও শোক বস্ত্র পরবে। মৃত ব্যক্তির জন্য শোক করার মত তোমাকে নিয়ে শোক করবে।
26-Ezekiel 27:32 : “তাদের সেই ভারী কান্নার মধ্যেও তারা তোমায় নিয়ে এই শোক গাথা গাইবে ও কাঁদবে।“সোরের মত আর কে আছে! তবু সোর হল ধ্বংস সমুদ্র মাঝে!’
26-Ezekiel 27:33 : তোমার ব্যবসাযীরা সমুদ্র পারাপার করল, তোমার বিপুল ধনে ও পণ্যে তুমি বহুলোককে তুষ্ট করলে। পৃথিবীর রাজাদের ধনী করলে!
26-Ezekiel 27:34 : কিন্তু এখন তুমি সমুদ্র ও তার গভীর জলের দ্বারা চূর্ণ হয়েছ। তোমার বানিজ্য়িক পণ্য ও তোমার সমস্ত নাবিকদল তোমার সঙ্গে ডুবে গেছে।
26-Ezekiel 27:35 : উপকূলে বাসকারী সব লোকে তোমার সম্বন্ধে বিস্মিত। তাদের রাজারা ভযানকভাবে ভীত। তাদের মুখ সেই বিস্ময প্রকাশ করে।
26-Ezekiel 27:36 : অন্য দেশের বণিকরা তোমাকে নিয়ে শিস দেয়। কারণ তুমি শেষ হয়ে গেছ, আর কখনও তোমায় পাওয়া যাবে না।”‘
26-Ezekiel 28:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন,
26-Ezekiel 28:2 : “মনুষ্যসন্তান, সোরের শাসককে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:“‘তুমি ভীষণ গর্বিতমনা! বলে থাক, “আমি দেবতা!”‘ আমি সমুদ্রের মাঝে দেবতাদের আসনে বসি।” কিন্তু তুমি ঈশ্বর নও, মানুষ! তুমি কেবল নিজেকে দেবতা ভাব।
26-Ezekiel 28:3 : তুমি নিজেকে দানিয়েলের চেয়েও জ্ঞানী মনে কর! মনে কর সব গুপ্ত বিষয় তুমি বের করতে পার!
26-Ezekiel 28:4 : দর্শন ও জ্ঞান দ্বারা তুমি তোমার ধন উপার্জন করেছ। তোমার ধনভাণ্ডারে সোনা ও রূপো জমা করেছ।
26-Ezekiel 28:5 : তোমার মহা প্রজ্ঞা ও ব্যবসা দ্বারা তুমি ধনসম্পত্তি বাড়িয়েছ। আর এখন ঐসব ধনের জন্য তোমার মন গর্বিত।”
26-Ezekiel 28:6 : “‘তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: সোর তুমি নিজেকে দেবতার মত মনে করতে।
26-Ezekiel 28:7 : আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বিদেশীদের আনব। তারা জাতিগণের মধ্যে বড় ভয়ঙ্কর। তারা খাপ থেকে তরবারি টেনে বের করবে এবং তোমার সুন্দর জিনিসগুলির ওপর, যেগুলি তোমার প্রজ্ঞা থেকে অর্জিত, তার ওপর ব্যবহার করবে। তারা তোমার গৌরবও ধ্বংস করে দেবে।
26-Ezekiel 28:8 : তারা তোমায় টেনে কবরে নামাবে। তুমি সমুদ্রে মারা গেছে এমন নাবিকের মত হবে।
26-Ezekiel 28:9 : সেই ব্যক্তি তোমায় হত্যা করবে। তাও কি তুমি বলবে, “আমি দেবতা?” না! সে তোমাকে তার শক্তির অধীন করবে। তুমি দেখতে পাবে যে তুমি ঈশ্বর নও, - মানুষ!
26-Ezekiel 28:10 : তোমার সঙ্গে বিদেশীদেরমত আচরণ করা হবে এবং তুমি অপরিচিতদের মধ্যে মারা যাবে। এই সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটবে কারণ আমি এরকমই আজ্ঞা দিয়েছিলাম!” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব বলেছেন।
26-Ezekiel 28:11 : প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 28:12 : “মনুষ্যসন্তান, সোরের রাজাকে নিয়ে এই শোকের গানটা গাও। তাকে বল, “প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন:“‘তুমি এক জন আদর্শবান লোক ছিলে, প্রজ্ঞায পূর্ণ ও সর্বাঙ্গ সুন্দর।
26-Ezekiel 28:13 : তুমি ঈশ্বরের উদ্য়ান এদনে ছিলে। তোমার কাছে সব ধরণের মূল্যবান পাথর - চুনি, পীতমনি, হীরে, বৈদুর্য়্য়মণি গোমেদক সূর্য়কান্ত, নীলকান্ত, হরিম্মণি ও মরকত ছিল। প্রতিটি পাথরই স্বর্নখচিত ছিল। তোমার সৃষ্টির দিনে তুমি ঐ সৌন্দর্য়্য়ে ভূষিত হয়েছিলে।
26-Ezekiel 28:14 : আমি বিশেষ ভাবে তোমার জন্যই একজন করূবকে তোমার একজন অভিভাবক হিসেবে নিযুক্ত করেছিলাম। আমি তোমাকে ঈশ্বরের পবিত্র পর্বতের ওপর স্থাপন করেছিলাম। আগুনের মত চকচকে ঐ মণি মানিক্যের মধ্যে দিয়ে তুমি যাতায়াত করতে।
26-Ezekiel 28:15 : তোমাকে যখন সৃষ্টি করেছিলাম তখন তুমি ধার্মিক ও সত্‌ ছিলে। কিন্তু তারপর তোমার মধ্যে দুষ্টতা পাওয়া গেল।
26-Ezekiel 28:16 : তুমি ব্যবসা করে বিরাট ধন লাভ করলে। কিন্তু তা তোমাকে হিংস্র করে তুলল এবং তুমি পাপ করলে। তাই আমি তোমাকে একটি অশুচি বস্তুর মত ব্যবহার করলাম। আমি তোমাকে ঈশ্বরের পর্বত হতে ছুঁড়ে ফেললাম। তুমি করূব দূতদের বিশেষ একজন ছিলে। তোমার ডানা আমার সিংহাসন ঢেকে রাখত। কিন্তু আমি তোমাকে আগুনের মত চক্মক্কারী ঐ মণি মানিক্য থেকে জোর করে বের করে দিলাম।
26-Ezekiel 28:17 : তোমার সৌন্দর্য়্য়ই তোমাকে গর্বিত করেছিল। তোমার গৌরবই তোমার প্রজ্ঞা নষ্ট করল তাই আমি তোমাকে মাটিতে আছাড় মারলাম। এখন অন্য রাজারা তোমার দিকে তাকিযে দেখে।
26-Ezekiel 28:18 : অসাধু ব্যবসাযী হিসাবে তুমি বহু অন্যায় কাজ করেছিলে। এই ভাবে পবিত্রস্থানগুলি অশুচি করলে। তাই আমি তোমার মধ্যে থেকেই আগুন বার করলাম। আর তা তোমাকে বালিয়ে দিল ও তুমি পুড়ে ছাই হলে। আর এখন সবাই তোমার লজ্জা দেখতে পাচ্ছে।
26-Ezekiel 28:19 : তোমার যা অবস্থা হল তা দেখে অন্য জাতির লোকরা বিস্মিত। তুমি লক্ষ্য করেছিলে, ভয় পেয়ে গিয়েছিলে এবং শেষ হয়ে গিয়েছিলে।”‘
26-Ezekiel 28:20 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন,
26-Ezekiel 28:21 : “মনুষ্যসন্তান, সীদোনের দিকে তাকিযে আমার হয়ে সেই স্থানের বিরুদ্ধে কথা বল।
26-Ezekiel 28:22 : বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:“‘সীদোন আমি তোমার বিরুদ্ধে! তোমার লোকেরা আমায় সম্মান করতে শিখবে! আমি সীদোনকে শাস্তি দেব। তখন লোকে জানবে যে আমিই প্রভু, আমিই পবিত্র। আর সেই ভাবে আমার সঙ্গে ব্যবহার করবে।
26-Ezekiel 28:23 : আমি সীদোনে রোগ ও মৃত্যু পাঠাব আর শহরের মধ্যে বহু লোক মারা যাবে। খগ শএু সৈন্য শহরের বাইরের বহু লোককেও হত্যা করবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”‘
26-Ezekiel 28:24 : “‘ইস্রায়েলের চার ধারের দেশগুলো যারা তাদের ঘৃণা করেছিল, তারা ইস্রায়েলকে আঘাত করতে আর জ্বালাজনক হুল বা কাঁটার মত হবে না। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু, তাদের সদাপ্রভু।”‘
26-Ezekiel 28:25 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “আমি ইস্রায়েলের জনগণকে অন্যান্য জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু আমিই আবার তাদের পরিবারকে এংত্র করব। তখন ঐ জাতিরা জানবে যে কেবল আমিই পবিত্র এবং আমার সাথে সেই অনাসারে ব্যবহার করবে। আমি আমার দাস যাকোবকে যে দেশ দিয়েছিলাম, ইস্রায়েলের জনগণ তখন সেই দেশে বাস করবে।
26-Ezekiel 28:26 : তারা সেই দেশে নিরাপদেই বাস করবে, ঘরবাড়ী বানাবে ও দ্রাক্ষা গাছ লাগাবে। চার পাশের যে জাতিরা তাদের ঘৃণা করত, আমি তাদের শাস্তি দেব। তখন ইস্রায়েলবাসী নিরাপদে বাস করবে, আর জানবে যে আমিই তাদের প্রভু ও ঈশ্বর।”
26-Ezekiel 29:1 : নির্বাসনের দশম বছরের দশম মাসের (জানুযারী) দ্বাদশ দিনে প্রভুর, আমার সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 29:2 : “মনুষ্যসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের দিকে তাকিযে তার বিরুদ্ধে ও মিশরের বিরুদ্ধে আমার হয়ে এই কথা বল।
26-Ezekiel 29:3 : বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:“‘মিশরের রাজা ফরৌণ, আমি তোমার বিরুদ্ধে। তুমি নীলনদের মাঝখানে শুয়ে থাকা সেই সামুদ্রিক দানব। তুমি বলে থাক, “এটা আমার নদী! আমিই এর সৃষ্টিকর্তা!”
26-Ezekiel 29:4 : কিন্তু আমি তোমার চোযালে বঁড়শি দিয়ে বিঁধিযে দেব। নীলনদের মাছরা তোমার অাঁশে ধরা পড়বে।
26-Ezekiel 29:5 : “‘আমি তোমাকে মাছশুদ্ধ নদী থেকে ডাঙ্গায তুলে আনব। আমি তোমাকে সবেগে নির্জন প্রান্তরে ছুঁড়ে ফেলে দেব। তুমি মাটিতে পড়ে থাকবে, কেউ তোমায় তুলে কবর দেবে না। আমি তোমাকে খাদ্যস্বরূপ বন্য পশু ও পাখিদের কাছে দেব।
26-Ezekiel 29:6 : তখন মিশরে বসবাসকারী সবাই জানবে যে আমিই প্রভু। “‘আমি কেন এসব করব? কারণ ইস্রায়েলের লোকরা সাহায্যের জন্য মিশরের ওপর নির্ভর করেছিল। কিন্তু মিশর হচ্ছে একটি পাতলা খাগের লাঠির মত।
26-Ezekiel 29:7 : যখন ইস্রায়েল তোমার সঙ্গে লেগে রইল, তখন তুমি ভেঙ্গে পড়লে এবং সে তোমার ঘাড় মটকে দিল। যখন ইস্রায়েল তোমার ওপর হেলান দিল, তুমি ভেঙ্গে পড়লে আর ওদের ফেলে দিলে। কিন্তু মিশর কেবল তাদের হাত ও কাঁধ বিদ্ধ করেছে। তারা সাহায্যের জন্য তোমার ওপর ভার দিয়েছিল, কিন্তু তুমি তার কাঁধ মুচড়ে ভেঙ্গে দিয়েছ।”‘
26-Ezekiel 29:8 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “আমি তোমার বিরুদ্ধে তরবারি আনব, এবং তোমার সমস্ত লোকজন ও পশুপাখি ধ্বংস করব।
26-Ezekiel 29:9 : মিশর শূন্য ও ধ্বংস হবে, তখন তারা জানবে আমিই প্রভু।”ঈশ্বর বললেন, “কেন আমি এসব কাজ করব? কারণ তুমি বলেছ, ‘এই নদী আমার, আমিই এর নির্মাতা।’
26-Ezekiel 29:10 : তাই আমি (ঈশ্বর) তোমার বিরুদ্ধে। আমি তোমার নীলনদের বহু শাখা - প্রশাখাগুলিরও বিরুদ্ধে। আমি মিশরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব। মিগ্দোল থেকে আসওযান পর্য়ন্ত এমনকি কূশ দেশের সীমানা পর্য়ন্ত শহরগুলি শূন্য হবে।
26-Ezekiel 29:11 : কোন লোক এমনকি পশুও মিশরের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করবে না। 40 বছর ধরে কেউ তার মধ্যে দিয়ে যাবেও না, বসবাসও করবে না। 40 বছর ধরে শহরগুলি ধ্বংসস্তুপ হয়ে পড়ে থাকবে
26-Ezekiel 29:12 : আমি মিশর ধ্বংস করব। শহরগুলো 40 বছর ধরে ধ্বংসের মধ্যে পড়ে থাকবে। আমি জাতিগণের মধ্যে মিশরীয়দের ছড়িয়ে দেব, বিদেশে তাদের আগন্তুকের মত করব।”
26-Ezekiel 29:13 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশরের লোকদের বহু জাতির মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করব। কিন্তু 40 বছর পর আমি ঐ লোকদের আবার সংগ্রহ করব।
26-Ezekiel 29:14 : আমি মিশরীয়দের বন্দী দশা ফেরাব, তাদের জন্মভূমি পথ্রোষে ফিরিয়ে আনব কিন্তু তাদের রাজ্যও তার গুরুত্ব হারাবে।
26-Ezekiel 29:15 : অন্যান্য রাজ্যের থেকে সেই রাজ্য সব চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে। সেটা আর কখনও অন্যান্য জাতির উপরে নিজেকে উন্নত করবে না। আমি তাদের এমন ন্য়ূন করব যে তারা আর জাতিগণের উপরে কর্তৃত্ব করবে না।
26-Ezekiel 29:16 : ইস্রায়েল পরিবার আর কখনও মিশরের উপরে নির্ভর করবে না। ইস্রায়েলীয়রা তাদের পাপ স্মরণ করবে - তারা স্মরণ করবে যে তারা মিশরের দিকে সাহায্যের জন্য ফিরেছিল (ঈশ্বরের দিকে নয়)। আর তারা জানবে যে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু।”
26-Ezekiel 29:17 : নির্বাসনের সাতাশতম বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 29:18 : “মনুষ্যসন্তান, নবূখদ্রিত্‌সর বাবিলের রাজা সোরের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে তার সৈন্যদের দিয়ে যুদ্ধ করিযেছিলেন। তারা প্রত্যেক সৈন্যের মাথা কামিয়েছিল। ভারী মাল বহন করা কালীন ঘর্ষন দ্বারা প্রত্যেক সৈন্য নগ্ন হয়েছিল। নবূখদ্রিত্‌সর ও তার সেনাদল সোরকে পরাজিত করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিল কিন্তু তারা সেই সব কঠোর পরিশ্রম দ্বারা কিছুই লাভ করেনি।”
26-Ezekiel 29:19 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশর দেশ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে দেব আর সে মিশরের লোকদের বহন করে নিয়ে যাবে। সেটাই হবে নবূখদ্রিত্‌সরের সেনাদলের বেতন।
26-Ezekiel 29:20 : আমি নবূখদ্রিত্‌সরকে তার কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার হিসাবে মিশর দেশ দিয়েছি। কারণ তারা আমার জন্য কাজ করেছে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এসব কথা বলেছেন!
26-Ezekiel 29:21 : সেই দিন আমি ইস্রায়েল পরিবারকে শক্তিশালী করব, তখন হে যিহিষ্কেল আমি তোমাকে তাদের কাছে কথা বলতে দেব আর তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 30:1 : প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল, তিনি বললেন,
26-Ezekiel 30:2 : “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ভাব্বাণী করে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলো বলেন:“‘চিত্কার করে বল, “সেই ভয়ঙ্কর দিন আসছে।”
26-Ezekiel 30:3 : সেই দিন নিকট! হ্যাঁ, প্রভুর সেই বিচারের দিন নিকটেই। সেই দিন হবে মেঘাচ্ছন্ন এক দিন, সেটা হবে জাতিগণের বিচারের দিন!
26-Ezekiel 30:4 : মিশরের বিরুদ্ধে একটি তরবারি আসবে এবং তার পতন হবে! তাই দেখে, কূশ দেশের লোকরা ভয়ে কাঁপবে। বাবিলের সৈন্যরা মিশরের লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবে। মিশরকে তার ভিত্তি থেকে উত্‌পাটন করা হবে!
26-Ezekiel 30:5 : “‘বহু লোক মিশরের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল, যেমন কূশ, পূট, লূদ - এর লোকরা, আরবীয়রা সবাই, এবং লিবিযার লোকরা। কিন্তু তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এবং যারা চুক্তি করেছিল সেই সমস্ত লোকরাওধ্বংসপ্রাপ্ত হবে!
26-Ezekiel 30:6 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন: “যারা মিশরের স্তম্ভের মত তারা পতিত হবে। তার পরাক্রমের যে গর্ব তার শেষ হবে। মিগ্দোল থেকে সিবেনী পর্য়ন্ত মিশরের লোকে যুদ্ধে হত হবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন!
26-Ezekiel 30:7 : যে সব দেশ ধ্বংস হয়েছিল মিশর তাদের সঙ্গে যোগ দেবে। মিশরের শহরগুলো ঐ শূন্য শহরগুলোর মধ্যে থাকবে।
26-Ezekiel 30:8 : আমি মিশরে এক আগুন লাগাব, আর তার সমস্ত সাহায্যকারীরা ধ্বংস হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!
26-Ezekiel 30:9 : “‘সেই সময় আমি বার্তাবাহক পাঠাব, যারা জাহাজে করে সেই দুঃসংবাদ নিয়ে কূশ দেশে যাবে। কূশ এখন নিজেকে নিরাপদ ভাবে কিন্তু মিশরকে শাস্তি পেতে দেখে কূশ ভয়ে কাঁপবে। সেই দিন আসছে!”
26-Ezekiel 30:10 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “আমি মিশর ধ্বংস করার জন্য বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরকে ব্যবহার করব।
26-Ezekiel 30:11 : নবূখদ্রিত্‌সর ও তার লোকরা সমস্ত জাতির মধ্যে ভযাবহ। আমি মিশর ধ্বংস করার জন্য তাদের আনব। তারা মিশরের বিরুদ্ধে তাদের খগ বের করে দেশ শবে পূর্ণ করবে।
26-Ezekiel 30:12 : আমি নীল নদকে শুষ্ক ভূমিতে পরিণত করব। তারপর সেই শুষ্ক ভূমি আমি দুষ্ট লোকদের কাছে বেচে দেব। আমি সেই দেশ শূন্য করতে বিদেশীদের ব্যবহার করব। আমিই প্রভু এই কথা বলেছি!”
26-Ezekiel 30:13 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “আমি মিশরের মূর্ত্তিদেরও ধ্বংস করব। আমি নোফ থেকেও মূর্ত্তিগুলো দূর করব। মিশরে কোন নেতা থাকবে না আর আমি মিশর দেশে ভয় সৃষ্টি করব।
26-Ezekiel 30:14 : আমি পথ্রেষকে শূন্য করে দেব। আমি সোযনে আগুন লাগাব। আমি থিব্স্কে শাস্তি দেব।
26-Ezekiel 30:15 : এবং আমি মিশরের দুর্গ বেষ্টিত শহর সীনের বিরুদ্ধে আমার রোধ ঢেলে দেব। আমি থিব্স্ - এর লোকদের ধ্বংস করব!
26-Ezekiel 30:16 : আমি মিশরে আগুন লাগাব। সীন শহর ভয়ে ছটফট করবে। সৈন্যরা থিব্স্এ প্রবেশ করবে আর প্রতিদিন নোফে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেবে।
26-Ezekiel 30:17 : আবেন ও পী - বেশতের যুবকরা যুদ্ধে মারা পড়বে। আর স্ত্রীলোকদের বন্দী করা হবে।
26-Ezekiel 30:18 : সেই দিন, দিনের বেলায় তফন্হেষে অন্ধকার নেমে আসবে। কারণ আমি সেই স্থানে মিশরের ক্ষমতা ভেঙ্গে দেব। মিশরের নির্ভিকতার গর্ব শেষ হবে। একটা মেঘ মিশরকে ঢেকে দেবে আর তার কন্যাদের বন্দী করা হবে।
26-Ezekiel 30:19 : সুতরাং আমি মিশরকে শাস্তি দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”‘
26-Ezekiel 30:20 : নির্বাসনের এগারোতম বছরের প্রথম মাসের সপ্তম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন,
26-Ezekiel 30:21 : “মনুষ্যসন্তান, আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বাহু ভগ্ন করেছি। পটি দিয়ে কেউ তার সেই হাত বেঁধে দেবে না। তা আরোগ্যও হবে না তাই সেই হাত তরবারিও ধরতে পারবে না।”
26-Ezekiel 30:22 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বিরুদ্ধে। আমি তার দুটো হাতই ভেঙ্গে ফেলব, শক্ত হাতটা আর যে হাতটা ইতিমধ্যেই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে সেটাকেও। আমি তার হাত থেকে খগ ফেলে দেব।
26-Ezekiel 30:23 : আমি মিশরীয়দের জাতিগণের মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করে দেব। আমি তাদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেব।
26-Ezekiel 30:24 : আমি বাবিলের রাজার হাত শক্ত করে তার হাতে আমার তরবারি দেব। কিন্তু আমি ফরৌণের হাত ভেঙ্গে দেব। তখন ফরৌণ ব্যথায চিত্কার করে কাঁদবে যেমন এক জন মৃত্যু পথযাত্রী আহত মানুষ কাঁদে।
26-Ezekiel 30:25 : তাই আমি বাবিলের রাজার হাত দৃঢ় করব কিন্তু ফরৌণের বাহু খসে পড়বে এবং তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।“আমি বাবিলের রাজার হাতে খগ দেব আর সে মিশর দেশের বিরুদ্ধে তা ব্যবহার করবে।
26-Ezekiel 30:26 : আমি মিশরীয়দের জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেব এবং তাদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
26-Ezekiel 31:1 : নির্বাসনের এগারোতম বছরের তৃতীয় মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 31:2 : “মনুষ্যসন্তান, এই কথাগুলি মিশরের রাজা ফরৌণ ও তার প্রজাদের গিয়ে বল।“‘তুমি এত মহান! তোমার সঙ্গে আমি কার তুলনা করব?
26-Ezekiel 31:3 : অশূরীয় হল লিবানোনের একটি এরস বৃক্ষের মত।তার শাখাসকল সুন্দর, ঘন ছায়া বিশিষ্ট আর দৈর্য়্ঘে বেশ লম্বা হওয়ায তার মাথা ছিল মেঘের মধ্যে!
26-Ezekiel 31:4 : জলে সেই গাছের বৃদ্ধি হত। গভীর নদী সেই বৃক্ষকে আরো লম্বা করেছিল। যেখানে বৃক্ষটি রোপণ করা হয়েছিল সেই জায়গারই কাছাকাছি নদীটি বয়ে যেত। এবং নদীটির সেই ভাগ থেকে ছোট ছোট জলধারা ঐ জমির অন্যান্য গাছগুলির কাছে বয়ে যেত।
26-Ezekiel 31:5 : তাই সেই বৃক্ষ ক্ষেত্রের অন্যান্য বৃক্ষের চেয়ে উচ্চতায় লম্বা ছিল। আর তাতে অনেক শাখাও জন্মাল। অনেক জলও ছিল তাই গাছের শাখাগুলি ছড়িয়ে গেল।
26-Ezekiel 31:6 : আকাশের সমস্ত পাখি সেই গাছের ডালে বাসা বাঁধল। আর মাঠের সমস্ত পশু সেই শাখার তলায় সন্তান প্রসব করল। সমস্ত মহান জাতি সেই গাছের ছায়ায় বাস করল।
26-Ezekiel 31:7 : সেই বৃক্ষ অতি সুন্দর, অতি বৃহত্‌ ও লম্বা ডাল যুক্ত ছিল। তার মূলগুলি প্রচুর জলও পেত!
26-Ezekiel 31:8 : এমনকি ঈশ্বরের বাগানের এরস বৃক্ষও এত বড় ছিল না। দেবদারু গাছেরও এতগুলো শাখা ছিল না। এমনকি অম্মোন বৃক্ষেরও এত শাখা ছিল না। ঈশ্বরের বাগানের কোন বৃক্ষই এত সুন্দর ছিল না।
26-Ezekiel 31:9 : আমি তাকে অনেক শাখা বিশিষ্ট ও সুন্দর করলাম। এই দেখে, এদনের বৃক্ষগুলি, যেগুলি ঈশ্বরের বাগানে ছিল, ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠল।”‘
26-Ezekiel 31:10 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “সেই গাছ বড় হল, তার মাথা মেঘ ছুঁলো আর তা এত উঁচু বলে তার মনে গর্ব হল!
26-Ezekiel 31:11 : সেই জন্য আমি একজন শক্তিশালী রাজার হাতে সেই বৃক্ষের ওপর নিয়ন্ত্রণভার দিলাম। সেই শাসক তার মন্দ কাজের জন্য সেই বৃক্ষকে শাস্তি দিল। আমি সেই বৃক্ষকে আমার উদ্য়ান থেকে তুলে ফেললাম।
26-Ezekiel 31:12 : বিদেশীরা পৃথিবীর ভয়ঙ্কর লোকরা তা কেটে তার শাখাগুলি পাহাড়ে ও উপত্যকায় ছড়িয়ে দিল। তার ভাঙ্গা ডালগুলি সেই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী ভাসিযে নিয়ে গেল। সেই গাছের তলায় আর ছায়া না থাকায় লোকে তাকে পরিত্যাগ করল।
26-Ezekiel 31:13 : এখন সেই পতিত বৃক্ষে পাখিরা বাস করে; বন্য পশুরা তার পতিত শাখাগুলি মাড়িয়ে যায়।
26-Ezekiel 31:14 : “এখন, জলের ধারের আর কোন গাছ ঐরকম বড়াই করবে না। তারা আর মেঘ পর্য়ন্ত পৌঁছাতে চাইবে না। যেসব বৃক্ষ জল পান করে, তাদের কেউ আর লম্বা বলে বড়াই করবে না। কারণ তারা সবাই মৃত্যুর জন্য নিরূপিত। তারা সবাই শিওলে চলে যাবে। অন্যরা, যারা মৃত্যুর পরে অগাধ গর্তে নেমেছে তাদের সঙ্গে তারা যোগ দেবে।”
26-Ezekiel 31:15 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “সেই দিন যখন সেই বৃক্ষ শিওলে গেল, আমি লোকদের কাঁদিয়েছিলাম। আমি তাকে গভীর সমুদ্র দ্বারা ঢেকে ফেললাম, নদীগুলির প্রবাহ বন্ধ করে দিলাম যাতে জল আর প্রবাহিত হতে না পারে। আমি লিবানোনকে তার জন্য শোক করালাম, অন্য সব গাছগুলো বড় গাছটির জন্য দুঃখে অসুস্থ হয়ে পড়ল।
26-Ezekiel 31:16 : আমি সেই বৃক্ষের পতন ঘটালাম আর জাতিগণ তার পতনের শব্দে ভয়ে কেঁপে উঠল। আমি সেই বৃক্ষকে মৃত্যুর স্থানে পাঠালাম যেন তা গিয়ে, যারা পাতালে প্রবেশ করেছে এমন সব লোকের সঙ্গে যোগ দিতে পারে। অতীতে, এদনের সব গাছ, লিবানোনের সর্বোত্‌কৃষ্টরা সেই জল পান করত। সেই সমস্ত বৃক্ষ অগাধ গহবরে শান্তি পেয়েছিল।
26-Ezekiel 31:17 : হ্যাঁ, বড় বৃক্ষটির সঙ্গে ঐ বৃক্ষরাও মৃত্যুর স্থানে নেমে গেল। তারা যুদ্ধে নিহত লোকেদের সাথে যোগ দিল। সেই বড় বৃক্ষটি অন্য বৃক্ষদের বলবান করল। ঐ বৃক্ষগুলি জাতিগণের মধ্যে বড় বৃক্ষের ছায়ায় বাস করেছিল।
26-Ezekiel 31:18 : “হে মিশর, এদনে অনেক বড় ও বলবান বৃক্ষ ছিল। তার মধ্যে কোন বৃক্ষটির সঙ্গে আমি তোমার তুলনা করব? তারা সবাই অতল গহবরে চলে গেছে এবং তুমিও পাতালে ঐ বিদেশীদেরসঙ্গে যোগ দেবে। তুমিও সেখানে যুদ্ধে হত লোকদের মধ্যে পড়ে থাকবে।“হ্যাঁ, ফরৌণের প্রতি এটা ঘটবে আর তা ঘটবে তার সঙ্গে থাকা লোকের ওপর!” প্রভু, আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 32:1 : দ্বাদশতম বছরের নির্বাসনের দ্বাদশতম মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন:
26-Ezekiel 32:2 : “হে মনুষ্যসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের সম্বন্ধে শোকের এই গান গেযে তাকে বল:“‘তুমি নিজেকে উপজাতির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়া যুব সিংহের মত মনে করতে। কিন্তু আসলে তুমি হৃদের দানবের মত। তুমি জলস্রোতের মধ্যে পথ করে নিয়ে এগিয়ে যেতে, তোমার পা দিয়ে তুমি জল কাদাময় করে তুলতে। তুমিই নদীগুলিকে আলোড়িত করে দিতে।”‘
26-Ezekiel 32:3 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:“আমি বহু লোক জন একত্র করেছি। এবার আমি তোমার উপরে আমার জাল ছুঁড়ব। তারপর লোকে তোমায় টেনে তুলবে।
26-Ezekiel 32:4 : তারপর আমি তোমায় মাটিতে ফেলে দেব। আমি তোমায় মাঠে ছুঁড়ে ফেলব। আকাশের সমস্ত পাখী যাতে তোমার ওপর বিশ্রাম করে সেই ব্যবস্থাই আমি করব। সমস্ত বন্য পশুরা এসে তৃপ্ত না হওয়া পর্য়ন্ত যাতে তোমাকে খেয়ে নেয তার ব্যবস্থা আমি করব।
26-Ezekiel 32:5 : আমি তোমার দেহ পর্বতের উপরে ছড়িয়ে দেব। উপত্যকাগুলি আমি তোমার মৃতদেহে পূর্ণ করে দেব।
26-Ezekiel 32:6 : আমি তোমার রক্ত পর্বতের উপর ঢেলে মাটি ভিজিয়ে ফেলব। নদীগুলি তোমার দ্বারা পূর্ণ হবে।
26-Ezekiel 32:7 : আমি তোমাকে অদৃশ্য করে দেব। আমি আকাশ ঢেকে ফেলে তারাগুলিকে অন্ধকারময় করব। আমি সূর্য়কে মেঘের পেছনে লুকিয়ে রাখব। আমি তোমার সমস্ত আলোকে অন্ধকার করে দেব।
26-Ezekiel 32:8 : কয়েকটি আলো আছে যা আকাশকে আলোকিত করে, কিন্তু তোমার কাছে সেগুলো যাতে অন্ধকার দেখায় আমি তার ব্যবস্থা করব। আমি তোমার সমস্ত দেশগুলিকে অন্ধকারময় করে দেব।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 32:9 : “আমি যখন তোমাদের বন্দী হিসেবে যে দেশ তোমরা জান না এমন এক দেশে পাঠাব তখন বহু লোক দুঃখিত ও চিন্তাগ্রস্ত হবে।
26-Ezekiel 32:10 : উপজাতি তোমায় দেখে অবাক হয়ে যাবে। আমি যখন আমার তরবারিটি তাদের সামনে দোলাব তখন তারা তোমার দরুণ ভয়ে কাঁপবে। তোমার পতনের দিনে, প্রতি মুহুর্তে রাজারা ভয়ে কাঁপবে, প্রত্যেকে তার নিজের জীবনের জন্য ভীত হবে।”
26-Ezekiel 32:11 : কারণ প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেছেন: “যে বাবিলের রাজার তরবারি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে।
26-Ezekiel 32:12 : আমি তোমার লোকদের হত্যা করার জন্য ঐসব সৈন্যদের ব্যবহার করব। ঐ সৈন্যরা ভয়ঙ্কর জাতির লোক; মিশর যা নিয়ে গর্ব করে তা তারা ধ্বংস করবে। মিশরের লোক জনও ধ্বংস হবে।
26-Ezekiel 32:13 : মিশরের নদীর ধারে যত পশু আছে আমি তাদের সব ধ্বংস করব। ফলে লোকরা তাদের পায়ে পায়ে আর জল ঘোলা করবে না, পশুদের ক্ষুরের দ্বারাও জল আর ঘোলা হবে না।
26-Ezekiel 32:14 : অর্থাত্‌ আমি মিশরের জল শান্ত করব। তাদের নদীগুলো আস্তে আস্তে তেলের মত বইবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 32:15 : “আমি মিশরকে একটি শূন্য স্থানে পরিণত করব। দেশটি সব কিছুই হারাবে। মিশরে বাসকারী সমস্ত লোককেই আমি শাস্তি দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 32:16 : “অন্য জাতির লোকরা ও কন্যারা এই শোকের গান গাইবে। মিশর ও মিশরের লোকেদের সম্বন্ধে তার শোকের এই গান গাইবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই সব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 32:17 : নির্বাসনের দ্বাদশতম বছরের প্রথম মাসের পঞ্চদশ দিনে প্রভুর এই বার্তা আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 32:18 : “মনুষ্যসন্তান, মিশরের লোকদের জন্য কাঁদ। মিশর এবং সেই শক্তিশালী জাতিদের কবরের দিকে পরিচালিত কর; তাদের পাতালের দিকে পরিচালিত কর। যেখানে তারা অন্যান্য গর্তগামীদের কাছে যাবে।
26-Ezekiel 32:19 : “মিশর তুমি অন্য কারও চেয়ে উত্কৃষ্ট নও! মৃত্যুর স্থানে যাও, ঐ সমস্ত বিদেশীদের সঙ্গে গিয়ে শোও।
26-Ezekiel 32:20 : “যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছিল মিশর তাদের কাছে যাবে। যুদ্ধে মিশর নিজেই নিহত হয়েছিল। শএুরা তাকে এবং তার সমস্ত লোককে টেনে নিয়েছে।
26-Ezekiel 32:21 : “বলবান ও শক্তিশালী লোক যুদ্ধে হত হয়েছিল। ঐসব বিদেশী লোকরা মৃত্যুর স্থানে নেমে গিয়েছিল। ঐ স্থানে যারা হত হয়েছিল তারা মিশর এবং তার সাহায্যকারীর সাথে কথা বলবে।
26-Ezekiel 32:22 : “মৃত্যুর সেই স্থানে অশূর ও তার সমস্ত সৈন্যরা রয়েছে; তাদের কবর রয়েছে সেই গভীরতম গর্তে। ঐসব অশূরীয় সৈন্যরা যুদ্ধে হত হয়েছিল আর তাদের কবরগুলি তার ঐ কবরের পাশেই রয়েছে। জীবিত কালে তারা লোকদের ভীত করত কিন্তু এখন তারা সবাই শান্ত তারা সবাই যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
26-Ezekiel 32:23 : -
26-Ezekiel 32:24 : “এলম সেখানে রয়েছে; তার সৈন্যরা তার কবরের চারপাশে রয়েছে; তাদের সবাই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। ঐ বিদেশীরা গভীরতম গর্তে গিয়েছে। জীবিত কালে তারা লোকদের ভীত করত কিন্তু তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীর গর্তে গিয়েছে।
26-Ezekiel 32:25 : যুদ্ধে নিহত সমস্ত সৈন্য ও এলমের জন্য তারা বিছানা পেতেছে। এলমের সৈন্যরা তার কবরের চারপাশে রয়েছে। ঐসব বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। জীবিত কালে তারা লোকেদের সন্ত্রস্ত করত কিন্তু তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীর গর্তে গিয়েছে। তারা নিহত অন্যসব লোকেদের সঙ্গে রয়েছে।
26-Ezekiel 32:26 : “মেশক, তূবল এবং তাদের সব সেনারা ঐখানে রয়েছে; তাদের কবরও তারই পাশে। ঐসব বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল এরাই জীবিত কালে লোকদের ভীত করত।
26-Ezekiel 32:27 : এখন তারা বহু পূর্বে যে সব শক্তিশালী লোকরা মারা গিয়েছিল তাদের সাথে শায়িত। তারা তাদের যুদ্ধের অস্ত্র সমেত কবরস্থ। তাদের অস্ত্রগুলি তাদের মাথার নীচে কিন্তু পাপ তাদের হাড়ের মধ্যে কারণ তাদের জীবন কালে তারা লোকদের ভীত করেছিল।
26-Ezekiel 32:28 : “মিশর, তুমিও ধ্বংস হবে এবং ঐসব বিদেশীদের পাশে শয়ন করবে। তুমি ঐসব অন্য সৈন্যরা, যারা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তাদের সাথে শয়ন করবে।
26-Ezekiel 32:29 : “ইদোমও সেখানে রয়েছে; তার রাজারা অন্য নেতাদের সঙ্গে সেখানে রয়েছে। তারাও শক্তিশালী সৈন্য ছিল কিন্তু এখন তারা যুদ্ধে হত অন্যান্য লোকদের সঙ্গে শায়িত। তারা ঐখানে ঐ বিদেশীদের পাশে শায়িত। গভীরতম গর্তে যারা গেছে তাদের সাথে তারা সেখানে রয়েছে।
26-Ezekiel 32:30 : “উত্তরের শাসকরা সবাই সেখানে রয়েছে। সীদোনের সব সৈন্যরা সেখানে রয়েছে। তাদের শক্তি লোকেদের সন্ত্রস্ত করেছিল কিন্তু এখন তারা সবাই লজ্জিত। ঐ বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত অন্য লোকদের সাথে শায়িত। তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীরতম গর্তে গিয়েছে।
26-Ezekiel 32:31 : “যারা মৃত্যুর স্থানে গিয়েছে ফরৌণ তাদের দেখবে। ফরৌণ ও তার লোকরা দেখে সান্তনা লাভ করবে। হ্যাঁ, তার সমস্ত সৈন্য যুদ্ধে নিহত হবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 32:32 : “ফরৌণ তার জীবদ্দশায় লোকদের ভয় দেখিয়েছিল। কিন্তু এখন সে ঐ বিদেশীদের সঙ্গে শয়ন করবে। ফরৌণ ও তার সৈন্যবাহিনী যুদ্ধে নিহত অন্য সৈন্যদের সঙ্গে শয়ন করবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 33:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন,
26-Ezekiel 33:2 : “মনুষ্যসন্তান, তোমার লোকদের কাছে এই কথা বল, ‘আমি এই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শএুসেনা আনলে লোকে প্রহরী হিসাবে এক জনকে মনোনীত করবে।
26-Ezekiel 33:3 : শএু আসতে দেখলে সেই প্রহরী শিঙা বাজিযে লোকদের সাবধান করবে।
26-Ezekiel 33:4 : কিন্তু সেই সাবধান বাণী শুনে যদি কেউ তা অগ্রাহ্য করে তবে সৈন্যরা তাদের বন্দী করে নিয়ে যাবে আর সেই মানুষটি নিজে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী হবে।
26-Ezekiel 33:5 : সে শিঙ্গার আওয়াজ শুনেও তা উপেক্ষা করেছিল তাই তার মৃত্যুর জন্য তাকেই দায়ী করা হবে। কিন্তু সে যদি সেই সাবধান বাণীর দিকে মনোযোগ দিত তবে তার জীবন বাঁচাতে পারত।
26-Ezekiel 33:6 : “‘কিন্তু এও হতে পারে যে প্রহরীটি শএু সৈন্য দেখেও শিঙা বাজাযনি। সেই প্রহরীটি লোকেদের সাবধান করে দেয় নি। সৈন্যরা যদি লোকদের বন্দী করে নিয়ে যায় তাহলে সেটা তাদের পাপের কারণেই হবে কিন্তু সেক্ষেত্রে তাদের মৃত্যুর জন্য প্রহরী দায়ী হবে।’
26-Ezekiel 33:7 : “এখন হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারের জন্য প্রহরী হিসাবে আমি তোমাকেই মনোনীত করছি। তুমি যদি আমার মুখ থেকে কোন বার্তা শোন, তবে আমার হয়ে লোকদের সতর্ক করো।
26-Ezekiel 33:8 : আমি হয়ত তোমায় বলব, ‘এই মন্দ লোকরা মরবে।’ তখন তুমি অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে সাবধান করবে। যদি তুমি সেই দুষ্ট ব্যক্তিকে সাবধান না কর ও তার জীবনধারার পরিবর্ত্তন করতে না বল তবে সেই দুষ্ট লোক তার পাপেই মারা যাবে; কিন্তু আমি তোমাকে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করব।
26-Ezekiel 33:9 : কিন্তু তুমি যদি সেই দুষ্ট লোককে সাবধান করে এবং জীবনধারা পরিবর্ত্তন করতে ও পাপ হতে বিরত হতে বললেও যদি সেই দুষ্ট লোক পাপ করতে থাকে, তবে সে তার পাপেই মরবে কিন্তু তুমি তোমার প্রাণ রক্ষা করবে।”
26-Ezekiel 33:10 : “সুতরাং হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ইস্রায়েলের পরিবারের কাছে কথা বল। ঐ লোকেরা হয়তো বলবে, ‘আমরা পাপ করেছি ও বিধি অমান্য করেছি। আমাদের পাপ বহনের পক্ষে অত্যন্ত ভারী। ঐ পাপের জন্য আমরা ক্ষয় পাচ্ছি। বাঁচতে হলে আমরা কি করব?’
26-Ezekiel 33:11 : “তুমি তাদের বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: ‘আমার জীবনের দিব্য, কোন লোকের মৃত্যুতে আমি কোন আনন্দ অনুভব করি না; এমনকি এক জন দুষ্ট লোকের মৃত্যুতেও নয়। আমি চাই না যে তারা মারা যাক্। আমি চাই যেন ঐ দুষ্ট লোকেরা ফিরে আসে। আমি চাই যে তারা তাদের জীবন ধারার পরিবর্ত্তন করুক এবং একটি সত্যিকারের জীবনযাপন করুক! তাই আমার কাছে ফিরে এস! মন্দ কাজ করা থেকে বিরত হও! ওহে ইস্রায়েলের পরিবার, তোমরা কেন মরবে?’
26-Ezekiel 33:12 : “মনুষ্যসন্তান, তোমার লোকদের বল: ‘অতীতে কোন মানুষ যদি ভাল কাজ করে থাকে তবে পরে সে মন্দ হলেও পাপ করতে শুরু করলেও অতীতের সেই ভাল কাজ তাকে রক্ষা করবে না। কিন্তু যদি কোন মানুষ মন্দ হতে ফেরে তবে অতীতের করা মন্দ কাজ তাকে ধ্বংস করবে না। সুতরাং মনে রেখো পাপ করতে শুরু করলে অতীতের কৃত ভাল কাজ কাউকে রক্ষা করবে না।’
26-Ezekiel 33:13 : “আমি যদি কোন ধার্মিক লোককে বলি যে সে বাঁচবে কিন্তু যদি সেই ব্যক্তি মনে করে অতীতের কৃত ভাল কাজ তাকে রক্ষা করবে আর মন্দ কাজ করতে শুরু করে তবে আমি তার অতীতে করা ভাল কাজ স্মরণ করব না। সে মন্দ কাজ করতে শুরু করেছে বলে মরবে!
26-Ezekiel 33:14 : “অথবা আমি এক মন্দ লোককে বলতে পারি যে সে মরবে কিন্তু সে তার জীবন পরিবর্ত্তন করতে পারে। সে পাপ করা থেকে বিরত হয়ে সঠিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে এবং ধার্মিক ও ন্যায়পরায়ণ হতে পারে।
26-Ezekiel 33:15 : টাকা ধার করার সময় যে জিনিস বন্ধক রেখেছিল তা ফিরিয়ে দিতে পারে। সে চুরি করা জিনিসের মূল্য ফেরত্‌ দিতে পারে। যে আজ্ঞা জীবন দেয়, তা পালন করতে পারে। এইসব মন্দ কাজ থেকে বিরত হতে পারে সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি অবশ্যই বাঁচবে, সে মরবে না।
26-Ezekiel 33:16 : অতীতে সে যে মন্দ কাজ করেছিল তা আমি মনে রাখব না। সে বেঁচে থাকবে কারণ সে এখন সঠিক পথে চলছে ও ন্যায্য কাজ করছে!
26-Ezekiel 33:17 : “কিন্তু তোমার লোকেরা বলে, ‘ওটা করা ঠিক হয়নি। আমাদের প্রভু কখনই এমন হতে পারেন না!’“কিন্তু ঐ লোকরা ন্যায্য আচরণ করছে না।
26-Ezekiel 33:18 : যদি এক জন ধার্মিক লোক ভাল কাজ করা বন্ধ করে পাপ করতে শুরু করে তবে সে নিজের পাপেই মরবে।
26-Ezekiel 33:19 : আর যদি এক মন্দ লোক মন্দ কাজ করা থেকে বিরত হয়ে সত্‌ ও ন্যায়পরায়ণভাবে জীবনযাপন করে, তবে সে বাঁচবে!
26-Ezekiel 33:20 : কিন্তু তোমরা তবু বল যে আমার পথ ন্যায্য নয় কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি , হে ইস্রায়েল পরিবার প্রত্যেক লোক তার কৃত কর্মের দ্বারা বিচারিত হবে!”
26-Ezekiel 33:21 : নির্বাসনের দ্বাদশতম বছরের দশম মাসের পঞ্চম দিনে জেরুশালেম থেকে এক জন লোক আমার কাছে এল। সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে সেখানে এসেছিল। সে বলল, “শহরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে!”
26-Ezekiel 33:22 : সেই লোকটি আমার কাছে আসার পূর্বেই বিকেল বেলা প্রভু আমার সদাপ্রভুর শক্তি আমার ওপর এল। ঈশ্বর আমায় বোবার মত করলেন যে সময় সেই ব্যক্তি আমার কাছে এল সে সময় প্রভু আমার মুখ খুলে দিয়ে আবার কথা বলতে দিলেন।
26-Ezekiel 33:23 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন:
26-Ezekiel 33:24 : “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের ধ্বংসিত শহরে কিছু ইস্রায়েলীয় বাস করছে। সেই লোকেরা বলছে, ‘অব্রাহাম কেবল সেই একজন যাকে ঈশ্বর সমস্ত দেশ দিয়েছিলেন। এখন আমরা বহুজন, সুতরাং নিশ্চয়ভাবে এই দেশ আমাদের!’
26-Ezekiel 33:25 : “তুমি অবশ্যই তাদের বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তোমরা রক্ত শুদ্ধ মাংস খেয়ে ফেল, সাহায্যের জন্য মূর্ত্তির দিকে চেয়ে থাক ও হত্যা করে থাক, সুতরাং আমি কেন তোমাদের সেই দেশ দেব?
26-Ezekiel 33:26 : তোমরা তোমাদের তরবারির উপর নির্ভর কর। প্রত্যেকে ভযানক কাজ করে, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারজাতীয পাপ কাজ করে, সুতরাং তোমরা দেশটির অধিকার পাবে না।’
26-Ezekiel 33:27 : “‘তোমরা অবশ্যই তাদের বলবে যে প্রভুসদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমার জীবনের দিব্য দিয়ে আমি প্রতিজ্ঞা করে বলছি যে ঐ লোকরা তরবারি দ্বারাই ঐ ধ্বংসিত নগরের মধ্যে হত হবে! যদি কেউ নগর থেকে মাঠে যায় তবে আমি পশুদের দ্বারা তাকে হত্যা করব আর তারা তাকে খাবে। যদি কেউ দুর্গের বা গুহার মধ্যে লুকায তবে সেখানে সে রোগে অসুস্থ হয়ে মারা যাবে।
26-Ezekiel 33:28 : আমি সেই দেশকে শূন্য ও নষ্ট করব। দেশ তার সমস্ত গর্ব করার বিষয় হারাবে। ইস্রায়েলের পর্বতগুলি শূন্য হয়ে যাবে। সেই জায়গা দিয়ে আর কেউ যাবে না।
26-Ezekiel 33:29 : ঐ লোকরা বহু ভযানক কাজ করেছে। সেই জন্য আমি সেই দেশকে শূন্য ও আবর্জনা স্বরূপ করব। তখন এই লোকরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 33:30 : “এখন হে মনুষ্যসন্তান তোমার বিষয়ে। তোমার লোকরা দেওয়ালে হেলান দিয়ে থাকে আর দরজায দাঁড়িয়ে তোমার সম্বন্ধে কথা বলে। তারা একে অপরকে বলে, “চল গিয়ে শুনি প্রভু কি বলছেন।”
26-Ezekiel 33:31 : তারা তোমার কাছে এমনভাবে আসে আর তোমার সামনে এমনভাবে বসে মনে হয় যেন তারা আমারই প্রজা। তারা তোমার কথা শোনে কিন্তু তুমি যা বলছ তারা তা পালন করবে না। তারা কেবল তাদের যেটা ভাল বোধ হয় সেটাই করে। তারা কেবল লোক ঠকিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চায়।
26-Ezekiel 33:32 : “এই লোকদের কাছে তুমি ভালবাসার গান গাইয়ে ছাড়া আর কিছুই নও। তাদের কাছে তোমার গলা ভাল, তুমি ভাল বাজনাদার। তারা তোমার কথা শুনবে কিন্তু তুমি যা বলছ তা তারা করবে না।
26-Ezekiel 33:33 : কিন্তু তুমি যে সব বিষয়ের কথা বলছ তা প্রকৃতই ঘটবে। আর লোকে মেনে নেবে যে সত্যিই তুমি এক জন ভাব্বাদী।”‘
26-Ezekiel 34:1 : প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
26-Ezekiel 34:2 : “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ইস্রায়েলের মেষপালকদের বিরুদ্ধে এই কথা বল। প্রভু, আমার সদাপ্রভু যা বলেন তা হল এই: ‘তোমরা, ইস্রায়েলের মেষপালকরা কেবল নিজেদের পেটই ভরাচ্ছ; এটা তোমাদের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ হবে। তোমরা মেষপালকরা মেষদের কেন খাওয়াচ্ছ না?
26-Ezekiel 34:3 : তোমরা হৃষ্টপুষ্ট মেষগুলি ভোজন কর আর তাদের পশম দিয়ে নিজেদের জন্য কাপড় তৈরী কর। তোমরা হৃষ্টপুষ্ট মেষগুলিকে মেরে ফেল কিন্তু মেষের পালকে খাওয়াও না।
26-Ezekiel 34:4 : তোমরা দুর্বলদের সবল কর নি, অসুস্থদের যত্ন নাও নি, আঘাত প্রাপ্তদের ক্ষতস্থান বেঁধে দাওনি। মেষদের মধ্যে কেউ কেউ পথভ্রষ্ট হলে তোমরা তাদের ফিরিয়ে আনোনি। তোমরা হারিযে যাওয়া মেষদের খুঁজতে যাওনি। না, তোমরা নিষ্ঠুর ও কড়া মনোভাব দেখিয়েছ - সেই ভাবেই তোমরা মেষদের পরিচালনা করতে চেয়েছ!
26-Ezekiel 34:5 : “‘আর এখন মেষেরা ছিন্ন ভিন্ন কারণ কোন মেষপালক নেই। তারা সব রকমের বন্য পশুর খাদ্যে পরিণত হয়েছে, তারা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে।
26-Ezekiel 34:6 : আমার মেষপালরা সমস্ত পর্বত ও উপপর্বতে ঘুরে বেড়িযেছে, তারা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে গিয়েছে; তাদের খোঁজ করার ও তত্ত্বাবধান করার জন্য কেউ নেই।”‘
26-Ezekiel 34:7 : তাই হে মেষপালকরা, প্রভুর এই বাক্য শোন, প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন,
26-Ezekiel 34:8 : “আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমার কাছে এই প্রতিশ্রুতি করছি। বন্য পশুরা আমার মেষ ধরে নিয়ে গেছে। হ্যাঁ, আমার মেষপাল বন্য পশুর খাদ্য হয়েছে কারণ তাদের প্রকৃত মেষপালক নেই। আমার মেষপালকরা মেষপালের যত্ন নেযনি। না, তারা কেবল ঐ মেষদের মেরে খেয়েছে। তারা আমার মেষের পালকে চরাতে নিয়ে যায়নি।”
26-Ezekiel 34:9 : এই জন্য ওহে মেষপালকরা, তোমরা প্রভুর বাক্য শোন!
26-Ezekiel 34:10 : প্রভু, আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “দেখ, আমি মেষপালকদের বিরুদ্ধে, আমি তাদের হাত থেকে আমার মেষদের সংগ্রহ করব আর তাদের পালকের কাজ থেকে সরিয়ে দেব। তখন ঐ মেষপালকরা নিজেরা আর খেতে পাবে না। আমি মেষদের তাদের মুখ থেকে বাঁচাব; আমি তাদের আর ঐ মেষপালকদের খাদ্য হতে দেব না।”
26-Ezekiel 34:11 : প্রভু আমার সদাপ্রভু একথা বলেন, “আমি নিজে তাদের মেষপালক হব। আমিই আমার মেষদের খুঁজে তাদের দেখব।
26-Ezekiel 34:12 : কোন মেষপালকের মেষরা পথভ্রষ্ট হলে সে যেমন তাদের খুঁজে বেড়ায, সেই একই ভাবে আমিও আমার মেষদের খুঁজে বেড়াব। আমি আমার মেষদের রক্ষা করব। অন্ধকার ও মেঘলা দিনে তারা হারিযে গিয়ে যেখানে যেখানে ছড়িয়ে গিয়েছিল, আমি সেই খান থেকেই তাদের ফেরত আনব।
26-Ezekiel 34:13 : আমি তাদের জাতিগণের মধ্য থেকে ফিরিয়ে আনব। ঐ দেশগুলি থেকে আমি তাদের সংগ্রহ করে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত আনব। আর আমি তাদের ইস্রায়েলের পাহাড়, নদী ও যেখানে জনবসতি আছে সেখানেই চরাব।
26-Ezekiel 34:14 : আমি তাদের ঘাসে ভরা মাঠে নিয়ে যাব। তারা ইস্রায়েলের উঁচু পর্বতের উপর উঠে সেখানকার উত্তম ভূমিতে শোবে ও ঘাস খাবে। তারা ইস্রায়েলের পর্বতে সবুজ ঘাসে ভরা মাঠে চরবে।
26-Ezekiel 34:15 : হ্যাঁ, আমি আমার মেষপালদের চরাব ও তাদের বিশ্রামের স্থানে নিয়ে যাব।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 34:16 : “আমি হারিযে যাওয়া মেষদের খুঁজব। যে মেষরা ছড়িয়ে গিয়েছিল তাদের ফিরিয়ে আনব। যে মেষেরা আঘাত পেয়েছিল তাদের আঘাতের স্থান বেঁধে দেব। কিন্তু ঐ হৃষ্টপুষ্ট বলবানদের মেষপালকদের ধ্বংস করব। তারা যে শাস্তির য়োগ্য তাই দিয়ে তাদের পেট ভরাব।”
26-Ezekiel 34:17 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “আর এই যে আমার মেষপালরা, আমি মেষের মধ্যে বিচার করব। আমি মেষ ও ছাগের মধ্যে বিচার করব।
26-Ezekiel 34:18 : তোমরা ভাল জমিতে যে ঘাস হয়েছে তা খেতে পাচ্ছ, তবু কেন অন্য মেষেরা যে ঘাস খায় তা দলছ? তোমরা প্রচুর পরিষ্কার জল পান করতে সুযোগ পাও, তবে কেন অন্য মেষের পান করার জল ঘোলা করছ?
26-Ezekiel 34:19 : আমার মেষপালদের তোমাদের পায়ে দলানো ঘাস খেতে ও ঘোলা জল পান করতে হয়।”
26-Ezekiel 34:20 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের উদ্দেশ্যে বলেন: “আমি নিজে মোটা ও রোগা মেষদের মধ্যে বিচার করব!
26-Ezekiel 34:21 : তোমরা তোমাদের শরীরের পাশ ও কাঁধ দিয়ে ঢুঁ মারছ। তোমরা সমস্ত দুর্বল মেষদের তোমাদের শিং দিয়ে ঢুঁ মেরে ফেলে দিচ্ছ। তাদের জোর করে বের করে না দেওয়া পর্য়ন্ত তোমরা তাদের ঠেলছ।
26-Ezekiel 34:22 : তাই আমি আমার মেষদের রক্ষা করব। বন্য জন্তুরা আর তাদের ধরে নিয়ে যাবে না। আমি এক মেষের সাথে অন্য মেষের বিচার করব।
26-Ezekiel 34:23 : তারপর আমি তাদের জন্য এক জন মেষপালককে নিযুক্ত করব; সে আমার দাস দাযূদ। সে তাদের খাওয়াবে ও তাদের মেষপালক হবে।
26-Ezekiel 34:24 : তখন আমি, প্রভু তাদের ঈশ্বর হব আর আমার দাস দাযূদ শাসক হয়ে তাদের মধ্যে বাস করবে। আমি, প্রভু এই কথা বলেছি।
26-Ezekiel 34:25 : “এবং আমি আমার মেষদের সঙ্গে একটি চুক্তি করব এবং তাদের মধ্যে শান্তি নিয়ে আসব। আমি দেশ থেকে হিংস্র পশুদের তাড়িয়ে দেব। তাহলে মেষরা প্রান্তরে নিরাপদে থাকবে ও বনের মধ্যে ঘুমোতে পারবে।
26-Ezekiel 34:26 : আমি আমার মেষদের ও আমার পর্বতের জেরুশালেমের চারপাশের স্থান আশীর্বাদ যুক্ত করব। আমি ঠিক সময়ে বৃষ্টি আনব। তাদের উপরে আশীর্বাদের ধারা নেমে আসবে।
26-Ezekiel 34:27 : মাঠের গাছগুলো ফল উত্পন্ন করবে। পৃথিবী ফসল উত্পন্ন করবে। তাই মাঠের মেষরা নিরাপদে থাকবে। আমি তাদের য়োযাল ভেঙ্গে ফেলব। যে লোকরা তাদের এীতদাস বানিয়ে রেখেছিল আমি তাদের শক্তি খর্ব করব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 34:28 : জাতিগণ আর কখনও তাদের আএমন করবে না। ঐ পশুরা আর তাদের ভক্ষণ করবে না। তারা নিরাপদে বাস করবে; কেউ তাদের ভীত করবে না।
26-Ezekiel 34:29 : আমি তাদের সুন্দর বাগানের জন্য কিছু জমি দেব আর তারা সেই দেশে ক্ষুধায কষ্ট পাবে না। তারা জাতিগণের দ্বারা অপমানে অপমানিতও হবে না।
26-Ezekiel 34:30 : তখন তারা জানবে যে আমিই তাদের প্রভু ও ঈশ্বর আর তারা এও জানবে যে আমি তাদের সাথে আছি। আর ইস্রায়েলের পরিবার জানবে যে তারা আমার প্রজা।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 34:31 : “তোমরা আমার মেষ, আমার চরণভূমির মেষ। তোমরা মানুষ মাত্র, আমিই তোমাদের ঈশ্বর।” এই কথা আমার প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
26-Ezekiel 35:1 : প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন,
26-Ezekiel 35:2 : “মনুষ্যসন্তান, সেযীর পর্বতের দিকে তাকাও এবং আমার হয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বল।
26-Ezekiel 35:3 : তাকে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন:“‘সেযীর পর্বত, আমি তোমার বিরুদ্ধে! আমি তোমাকে শাস্তি দেব; তোমাকে একটি শূন্য অকর্মণ্য ভূমি করে দেব।
26-Ezekiel 35:4 : আমি তোমার শহর সকল ধ্বংস করব। আর তুমি শূন্য হবে। তখন তুমি জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 35:5 : কারণ তুমি সব সময় আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে। ইস্রায়েলের সঙ্কটের সময় তুমি তাদের বিরুদ্ধে খগ ব্যবহার করেছ, এমনকি তাদের চরম শাস্তির সময়ে তা ব্যবহার করেছ।”‘
26-Ezekiel 35:6 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেব। মৃত্যু তোমাকে তাড়া করে বেড়াবে। তোমরা হত্যা করা ঘৃণা করোনি তাই মৃত্যু তোমাদের পিছনে তাড়া করতে থাকবে।
26-Ezekiel 35:7 : আর আমি সেযীর পর্বতকে শূন্য ও ধ্বংস স্থানে পরিণত করব। সেই শহর থেকে যারাই বেরিয়ে আসবে ও যারা শহরে যেতে চাইবে তাদের প্রত্যেককেই আমি হত্যা করব।
26-Ezekiel 35:8 : আমি তার পর্বতগুলি শবে পূর্ণ করব আর সেই মৃতদেহগুলি তোমাদের পর্বত, উপত্যকা ও নদ - নদীর চারধারে ছড়িয়ে পড়ে থাকবে।
26-Ezekiel 35:9 : আমি তোমায় চির কালের জন্য শূন্য করব। তোমার শহরে আর কেউ বাস করবে না; তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 35:10 : তোমরা বলেছিলে, “ঐ দুই জাতি ও দেশ ইস্রায়েল ও যিহূদা আমাদের হবে, তা আমাদের নিজস্ব অধিকারে থাকবে।”কিন্তু প্রভু সেখানে রয়েছেন!
26-Ezekiel 35:11 : এবং প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তোমরা আমার প্রজাদের প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিলে। তোমরা তাদের প্রতি রোধ ও আমার প্রতি ঘৃণার মনোভাব দেখিয়েছিলে, তাই আমার জীবনের দিব্য দিয়ে আমি প্রতিশ্রুতি করে বলছি - তুমি যেমনভাবে তাদের আঘাত করেছ, তেমন ভাবেই আমি তোমাদের শাস্তি দেব। আমি তোমাদের শাস্তি দিলে আমার প্রজারা জানবে যে আমি তাদের সাথে আছি।
26-Ezekiel 35:12 : আর তোমরা এও জানবে যে আমি তোমাদের সব নিন্দা শুনেছি। তোমরা জেরুশালেমের পর্বতের বিরুদ্ধে বহু মন্দ কথা বলেছিলে; বলেছিলে, ‘ইস্রায়েল ধ্বংস হয়েছে! আমরা তাদের খাদ্যের মত চিবিয়ে খাব!’
26-Ezekiel 35:13 : তোমরা গর্বিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলে। তোমরা বহুবার বক্ বক্ করেছ আর আমি তোমাদের প্রত্যেকটা কথা শুনেছি। হ্যাঁ, আমি তোমাদের কথা শুনেছি।”
26-Ezekiel 35:14 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যখন আমি তোমাদের ধ্বংস করব তখন সমস্ত পৃথিবী আনন্দিত হবে।”
26-Ezekiel 35:15 : ইস্রায়েল দেশ ধ্বংস হবার সময় তুমি আনন্দিত হয়েছিলে। আমি তোমাদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করব। সেযীর পর্বত ও সমস্ত ইদোম দেশ ধ্বংস হবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 36:1 : “হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ইস্রায়েলের পর্বতগণের কাছে এই কথা বল। ইস্রায়েলের পর্বতগণকে প্রভুর বাক্য শুনতে বল!
26-Ezekiel 36:2 : তাদের কাছে বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘শএু তোমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলেছে। তারা বলেছে, বাহ! এখন প্রাচীন পর্বতগুলো আমাদের হবে!’
26-Ezekiel 36:3 : “তাই আমার হয়ে ইস্রায়েলের পর্বতগণের কাছে কথা বল। তাদের বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, শএু তোমার শহর ধ্বংস করেছিল এবং সব দিক থেকে তোমায় আক্রমণ করেছিল যেন তুমি অন্য জাতির হও। লোকে তোমার সম্বন্ধে ফিস্ ফিস্ করে কথা বলেছে।”‘
26-Ezekiel 36:4 : তাই হে ইস্রায়েলের পর্বতগণ, প্রভু, আমার সদাপ্রভুর এই বাক্যগুলি শোন: প্রভু আমার সদাপ্রভু এই বাক্য পর্বতগণের, জলস্রোত সকলের ও উপত্যকাগুলির, শূন্য ধ্বংসস্থান ও পরিত্যক্ত শহরগুলির - যেখানে লুঠ করা হয়েছে এবং যাদের নিয়ে তার চারপাশের জাতিগুলি হাসাহাসি করে, তাদের উদ্দেশ্যে বলেন।
26-Ezekiel 36:5 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি প্রতিশ্রুতি করছি, আমি আমার অন্তর্জ্বালায কথা বলব। দেখব যেন ইদোম ও অন্য জাতিরা আমার রোধ অনুভব করতে পারে। ঐ জাতিগণ তাদের নিজেদের স্বার্থে আমার দেশ হস্তগত করেছে। এই দেশের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করার দিনগুলো তাদের ভালোই কেটেছে। সেই দেশ তারা কেবল ধ্বংস করার জন্যই অধিকার করেছিল!”
26-Ezekiel 36:6 : “তাই, ইস্রায়েল দেশ সম্বন্ধে এই কথাগুলি বল। এই কথাগুলি পাহাড়, পর্বত, জলস্রোত ও উপত্যকাগুলিকে বল। তাদের বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি আমার অন্তর্জ্বালা নিয়ে কথা বলব। কারণ ঐসব জাতির অপমান তোমাদের সহ্য করতে হয়েছে।”‘
26-Ezekiel 36:7 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমিই সেই যে প্রতিশ্রুতি করেছ, আমি দিব্য দিয়ে বলছি, তোমার চারধারের জাতিকে ঐসব অপমানের জন্য দুঃখ ভোগ করতে হবে।
26-Ezekiel 36:8 : “কিন্তু ইস্রায়েলের পর্বতরা, তোমরা নতুন গাছের জন্ম দেবে আর আমার ইস্রায়েলীয় প্রজাদের জন্য ফল উত্পন্ন করবে। আমার প্রজারা শীঘ্রই ফিরে আসবে।
26-Ezekiel 36:9 : আমি তোমার সঙ্গে। আমি তোমায় সাহায্য করব। লোকে তোমার ভূমিতে চাষ ও বীজ বপন করবে।
26-Ezekiel 36:10 : তোমার মধ্যে বহু লোক বাস করবে। সমস্ত ইস্রায়েল পরিবার ও তাদের সবাই সেখানে বাস করবে। শহরগুলির মধ্যে লোকজন বাস করবে আর ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানগুলি নতুন করে গড়ে তোলা হবে।
26-Ezekiel 36:11 : আমি তোমাদের মধ্যে বহু লোক ও পশুকে বাস করতে দেব। তারা বৃদ্ধি পাবে, তাদের অনেক সন্তানসন্ততি হবে। অতীতের মত তোমাতে বাস করার জন্য আমি বহু লোক আনব। আমি তা অতীতের থেকেও উত্তম করব। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 36:12 : হ্যাঁ, আমি বহু লোককে পরিচালিত করব, আমার প্রজা ইস্রায়েলকে তোমার দেশে পরিচালিত করব। তুমি তাদের সম্পত্তি হবে আর তাদের সন্তানদের কেড়ে নেবে না।”
26-Ezekiel 36:13 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “হে ইস্রায়েল দেশ, লোকে তোমার সম্বন্ধে মন্দ কথা বলে। তারা বলে তুমি তোমার প্রজাদের ধ্বংস করেছিলে। তারা বলে তুমি তোমার প্রজাদের সন্তানদের তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে গিয়েছিলে।
26-Ezekiel 36:14 : কিন্তু তুমি আর প্রজাদের ধ্বংস করবে না। তাদের সন্তানদের আর নিয়ে যাবে না।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 36:15 : “ঐসব জাতি যে তোমাকে অপমান করে তা আমি আর হতে দেব না। ঐসব লোকদের দ্বারা তুমি আর আঘাতপ্রাপ্ত হবে না। তুমি আর তোমার লোকদের সন্তানদের নিয়ে যাবে না।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 36:16 : তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন,
26-Ezekiel 36:17 : “হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবার তাদের নিজের দেশে বাস করাকালীন মন্দ কাজের দ্বারা সেই দেশ অশুচি করত। আমার দৃষ্টিতে তারা মাসিকের দরুণ অশুচি স্ত্রীলোকের মত হল।
26-Ezekiel 36:18 : সেই দেশের প্রজাদের হত্যা করে তারা মাটিতে তাদের রক্ত ছিটিয়ে দিত। তারা তাদের মূর্ত্তি দ্বারা সেই দেশ অশুচি করত। তাই আমি তাদের প্রতি আমার রোধ প্রকাশ করলাম।
26-Ezekiel 36:19 : আমি তাদের জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি এবং দেশ সমূহের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি। তাদের মন্দ কাজের জন্য আমি তাদের য়োগ্য শাস্তি দিয়েছি।
26-Ezekiel 36:20 : কিন্তু ঐসব বিভিন্ন জাতির মধ্যেও তারা আমার সুনাম নষ্ট করেছে। কি ভাবে? এই সব জাতিরা বলে, ‘তারা প্রভুর লোক, কিন্তু তারা তাদের দেশ পরিত্যাগ করেছে এবং তাদের ঈশ্বরকেও!’
26-Ezekiel 36:21 : “ইস্রায়েলীয়রা যেখানেই গেছে সেখানেই আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করে। তাই আমি আমার সুনাম রক্ষা করতে যাচ্ছি।
26-Ezekiel 36:22 : তাই ইস্রায়েল পরিবারকে বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘হে ইস্রায়েল পরিবার, তোমরা যেখানেই গিয়েছ সেখানেই আমার পবিত্র নাম অপবিত্র করেছ। আমি এটা বন্ধ করার ব্যবস্থা করছি। ইস্রায়েল আমি তা তোমাদের জন্য নয় কিন্তু নিজ পবিত্র নামের জন্য করব।
26-Ezekiel 36:23 : আমি ঐ জাতিগণকে দেখাব যে আমার মহত্‌ নাম সত্যই পবিত্র। ঐসব জাতির মধ্যে তোমরা আমার উত্তম নাম নষ্ট করেছ। কিন্তু আমি দেখাব যে আমি কত পবিত্র। আমার নামকে তোমাদের সম্মান করতে শেখাব আর তখন ঐসব জাতি জানবে যে আমিই প্রভু।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 36:24 : ঈশ্বর বলেছেন, “আমি তোমাকে ঐসব জাতিগণের কাছ থেকে বের করে এনে এক স্থানে জড়ো করে তোমাদের দেশে ফিরিয়ে আনব।
26-Ezekiel 36:25 : তারপর আমি তোমাদের পরিস্কার করবার জন্য ও মূর্ত্তিসমূহ পূজা করে তোমরা যে অশুদ্ধতা পেয়েছিলে সেটা ধুয়ে ফেলবার জন্য আমি তোমাদের ওপর পবিত্র জল ছেটাব।”
26-Ezekiel 36:26 : ঈশ্বর বলেন, “আমি তোমাদের এক নতুন আত্মা দেব এবং তোমাদের চিন্তাধারা পালেট দেব। আমি তোমাদের দেহ হতে পাথরের হৃদয় বের করে সেখানে নরম মানুষের হৃদয় স্থাপন করব।”
26-Ezekiel 36:27 : এবং আমার আত্মা তোমাদের মধ্যে স্থাপন করব। এক বার আমি তোমাদের হৃদয় পরিবর্ত্তন করলেই তোমরা আমার বিধিগুলি পালন করবে। সযত্নে আমার বিধি মেনে চলবে।
26-Ezekiel 36:28 : তখন আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দিয়েছি সেখানে তোমরা বাস করবে। তোমরা আমার লোক হবে এবং আমি তোমাদের ঈশ্বর হব।”
26-Ezekiel 36:29 : ঈশ্বর বললেন, “এছাড়াও আমি তোমাদের পরিত্রাণ করব এবং অশুচি হওয়া থেকে রক্ষা করব। আমি আজ্ঞা করব যেন শস্য ফলে আর তোমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ আনব না।
26-Ezekiel 36:30 : আমি তোমাদের প্রচুর শস্য, ফল ও ক্ষেত ভরা ফসল দেব যেন বিদেশে তোমরা ক্ষুধার জন্য লজ্জায না পড়।
26-Ezekiel 36:31 : তোমরা তোমাদের কৃত মন্দ কাজগুলি স্মরণ করবে এবং বুঝবে যে সেসব ভাল করনি। তখন তোমাদের পাপ ও তোমাদের কৃত ভয়ঙ্কর কাজের জন্য তোমরা নিজেরাই নিজেদের ঘৃণা করবে।”
26-Ezekiel 36:32 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “এ কাজ আমি আমার নিজের মঙ্গলের জন্য করছি, তোমাদের জন্য নয় - এ কথাটা তোমরা মনে রাখো এট আমি চাই। হে ইস্রায়েল, তোমরা যে ভাবে জীবনযাপন করেছ তার জন্য তোমাদের লজ্জিত ও বিষণ্ন হওয়া উচিত!”
26-Ezekiel 36:33 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেন, “যেদিন আমি তোমার পাপ ধোব, সে দিন আমি আবার লোকদের শহরে ফিরিয়ে আনব। সেই সব ধ্বংসিত শহর আবার গড়া হবে।
26-Ezekiel 36:34 : লোকরা আবার সেই জনবসতিহীন শূন্য জমি কর্ষণ করবে। তাই অন্যরা পাশ দিয়ে গেলে ধ্বংসস্তূপ দেখতে পাবে না।
26-Ezekiel 36:35 : তারা বলবে, ‘অতীতে এই দেশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল কিন্তু এখন তা এদোন উদ্য়ানের মত। শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। সেগুলো ধ্বংসস্থান ও শূন্য হয়ে গিয়েছিল কিন্তু এখন তা সুরক্ষিত এবং লোকে সেখানে বাস করছে।”‘
26-Ezekiel 36:36 : ঈশ্বর বললেন, “তখন যে জাতিরা এখনও তোমাদের চারধারে রয়েছে তারা জানবে যে আমিই প্রভু এবং আমিই ঐসব ধ্বংসস্থান আবার গেঁথেছি, ফাঁকা দেশে আবার রোপণ করেছি। আমি প্রভুই বলছি এবং আমিই এসব ঘটাব!”
26-Ezekiel 36:37 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই সব কথাগুলি বলেন, “আমি ইস্রায়েল পরিবারকে আমার কাছে আসতে দেব এবং এসব বিষয়ের জন্য তাদের আমার কাছে অনুরোধ করতে দেব। আমি তাদের বহুসংখ্যক করে দেব আর তারা একটি মেষের পালের মত হবে।
26-Ezekiel 36:38 : পবিত্র উত্সবগুলির সময় জেরুশালেম যেমন মেষপালে ও ছাগপালে পূর্ণ হয়ে যায়, সেই একই ভাবে শহরগুলো ও ধ্বংসস্তূপগুলো লোকজনে ভরে যাবে; তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
26-Ezekiel 37:1 : প্রভুর পরাক্রম আমার উপর এল আর তা আমাকে বহন করে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে উপত্যকার মাঝখানে এনে দাঁড় করাল। সেই উপত্যকা মৃতের অস্থিতে পূর্ণ ছিল।
26-Ezekiel 37:2 : সেই উপত্যকার মাটিতে অনেক অস্থি পড়েছিল। প্রভু সেই অস্থির চারপাশে আমাকে হাঁটালেন। আমি দেখলাম অস্থিগুলো অত্যন্ত শুকনো।
26-Ezekiel 37:3 : তখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, এই অস্থিগুলি কি জীবন পেতে পারে?”আমি উত্তর দিলাম, “প্রভু আমার সদাপ্রভু, এই প্রশ্োনর উত্তর কেবল আপনিই দিতে পারেন।”
26-Ezekiel 37:4 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বললেন, “আমার হয়ে ঐসব অস্থির কাছে কথা বল। বল, ‘ওহে শুকনো হাড়গোড়, প্রভুর এই বাক্য শোন!
26-Ezekiel 37:5 : প্রভু আমার সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন: ‘দেখ আমি তোমাদের মধ্যে জীবনের শ্বাসপ্রশ্বাস পুনরায় স্থাপন করছি!
26-Ezekiel 37:6 : আমি তোমাদের শিরা ও পেশী দিয়ে গড়ব ও তোমাদের চামড়া দিয়ে ঢেকে দেব। তারপর আমি তোমাদের নিঃশ্বাস বাযু দেব আর তোমরা জীবন ফিরে পাবে; তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু।”
26-Ezekiel 37:7 : সেই জন্য আমি প্রভুর হয়ে তার বাক্য়ানুসারে অস্থিগুলোর কাছে কথা বললাম। আমি যখন কথা বলছিলাম সেই সময় খুব জোরালো একটা শব্দ শুনলাম। অস্থিগুলো খট্খট্ শব্দ করে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করল।
26-Ezekiel 37:8 : সেই খানে আমার চোখের সামনে, শিরা ও পেশী অস্থিগুলোকে ঢেকে দিল, পরে চামড়াও সেগুলো ঢেকে দিল। কিন্তু তারা নিঃশ্বাস নিতে শুরু করল না।
26-Ezekiel 37:9 : তখন প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে বাতাসকে বল, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘হে বাযু চারিদিক থেকে এসে এই মৃতদেহগুলির মধ্যে প্রবেশ কর। তাদের মধ্যে প্রবেশ করলে তাদের জীবন ফিরে আসবে!”‘
26-Ezekiel 37:10 : তাই প্রভু যেমনটি বলেছিলেন, তাঁর হয়ে আমি বাতাসের সাথে সেই ভাবেই কথা বললাম আর সেই মৃতদেহগুলির মধ্যে আত্মা এল। তারা জীবনে ফিরে এসে উঠে দাঁড়াল - সে এক বিশাল সেনাদল!
26-Ezekiel 37:11 : তখন প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, এই অস্থিগুলো সমস্ত ইস্রায়েল পরিবারের মত। ইস্রায়েলের লোকরা বলে, ‘আমাদের অস্থিগুলো শুকিয়ে গেছে। আমাদের আশা শেষ হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছি!’
26-Ezekiel 37:12 : তাই, তাদের বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমার স্বপক্ষে একটি ভাব্বানী। তাদের বল, ‘ওহে আমার লোকরা, আমি তোমাদের কবরগুলো খুলে দেব এবং তোমাদের বের করে আনব! তারপর আমি তোমাদের ইস্রায়েলে ফিরিয়ে আনব।
26-Ezekiel 37:13 : হে আমার প্রজারা, আমি তোমাদের কবর খুলে বের করে আনলে তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 37:14 : আমি তোমাদের মধ্যে আমার আত্মা স্থাপন করব আর তোমরা আবার জীবন ফিরে পাবে। তখন আমি তোমাদের আবার নিজের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাব আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। তোমরা জানবে যে আমি যা যা বলেছিলাম, তা - ই ঘটিযেছি।”‘ প্রভুই ঐসব কথা বলেছিলেন।
26-Ezekiel 37:15 : প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল,
26-Ezekiel 37:16 : “হে মনুষ্যসন্তান, একটা লাঠি নিয়ে তার উপরে এই বার্তা লেখ: ‘এই লাঠি যিহূদা ও ইস্রায়েলীয়দের অধিকারভুক্ত।’ তারপর আরেকটা লাঠি নিয়ে তাতে লেখ: ‘ইফ্রযিমের এই লাঠি যোষেফ ও তার বন্ধু ইস্রায়েলীয়দের।’
26-Ezekiel 37:17 : তারপর ঐ দুই লাঠি পুড়বে; তোমার হাতে সে দুটো যেন একটা লাঠিতে পরিণত হয়।
26-Ezekiel 37:18 : “তোমার লোকরা এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে
26-Ezekiel 37:19 : তাদের বলো যে প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি যোষেফের লাঠিটি নেব যেটি ইফ্রযিম এবং তার বন্ধু ইস্রায়েলীয়দের হাতে আছে; তারপর সেই লাঠির সাথে আমি যিহূদার লাঠিটা জুড়ে দিয়ে একটা লাঠিতে পরিণত করব। আমার হাতে তারা একটা লাঠিতে পরিণত হবে!’
26-Ezekiel 37:20 : “যে লাঠি দুটিতে নামগুলো লিখেছিলে সেগুলো তুমি তোমার হাতে নাও এবং তাদের সামনে ধরো।
26-Ezekiel 37:21 : লোকদের বলো, প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘ইস্রায়েলের লোকে যে যে জাতির মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে আমি তাদের সেখান থেকে আনব। আমি তাদের চারদিক থেকে জড়ো করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে আনব।
26-Ezekiel 37:22 : ইস্রায়েলের পর্বতময় দেশে আমি তাদের এক জাতিতে পরিণত করব। তাদের সবার এক রাজা হবে। তারা আর দুটি জাতি হয়ে থাকবে না আর দুই রাজ্যে বিভক্ত হয়ে থাকবে না।
26-Ezekiel 37:23 : তারা তাদের ভ্রান্ত দেবদেবী, ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিগুলি ও অপরাধ দ্বারা নিজেদের অবমাননা করবে না। কিন্তু আমি তাদের সেই সমস্ত স্থান থেকে রক্ষা করব যেখানে তারা পাপ করত। আমি তাদের ধুয়ে শুচি শুদ্ধ করব। তারা আমার লোক হবে এবং আমি তাদের ঈশ্বর হব।
26-Ezekiel 37:24 : “‘আমার দাস দাযূদ তাদের রাজা হবে। তাদের সকলের একটি মাত্র মেষপালক আছে। তারা আমার নিয়ম মেনে চলবে ও বিধি পালন করবে এবং আমার কথা অনুসারে কাজ করবে।
26-Ezekiel 37:25 : আমি আমার দাস যাকোবকে যে দেশ দিয়েছিলাম সেই দেশে তারা বাস করবে। তোমাদের পূর্বপুরুষরা যে দেশে বাস করতেন, আমার লোকরা সেখানেই বাস করবে। সেখানে তারা, তাদের সন্তানরা ও তাদের পৌত্র - পৌত্রীরা এবং তাদের ভবিষ্যতের সমস্ত প্রজন্ম বাস করবে আর আমার দাস দাযূদ হবে তাদের চির কালের নেতা।
26-Ezekiel 37:26 : আর আমি তাদের সঙ্গে একটি শান্তির চুক্তি করব। সেই চুক্তি হবে চিরকালীন চুক্তি। আমি তাদের আশীর্বাদ করব আর তারা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে এবং আমার পবিত্র স্থান চির কাল তাদের মধ্যে থাকবে।
26-Ezekiel 37:27 : আমার পবিত্র তাঁবু তাদের সাথেই থাকবে। হ্যাঁ, আমি তাদের ঈশ্বর হব আর তারা আমার লোক হবে।
26-Ezekiel 37:28 : অন্য জাতিরা জানবে যে আমিই প্রভু আর এও জানবে যে আমার পবিত্র - স্থান চির কালের জন্য ইস্রায়েলের মধ্যে রেখে আমি সেই জাতিকে আমার বিশেষ লোক করে তুলেছি।”‘
26-Ezekiel 38:1 : প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল,
26-Ezekiel 38:2 : “হে মনুষ্যসন্তান, মাগোগ দেশে গোগের দিকে দেখ। সে মেশক ও তূবল জাতির বিখ্যাত নেতা। আমার হয়ে গোগের বিরুদ্ধে কথা বল।
26-Ezekiel 38:3 : তাকে বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘গোগ তুমি মেশক ও তূবলের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিন্তু আমি তোমার বিরুদ্ধে।
26-Ezekiel 38:4 : আমি তোমায় বন্দী করে ফিরিয়ে আনব। তোমার সেনাদলের সমস্ত লোক জনকেও ফিরিয়ে আনব। আমি তোমার অশ্ব ও অশ্ব সৈন্য ফিরিয়ে আনব। আমি তোমার মুখে বঁড়শি বিঁধে তোমায় ফিরিয়ে আনব। সমস্ত সেনারা সাজ পোশাক পরা অবস্থায় তাদের ঢাল, তরবারি সমেত ফিরে আসবে।
26-Ezekiel 38:5 : পারস্য, কূশ এবং পূটের সৈন্যরা বর্ম ও শিরস্ত্রাণ পরে তাদের সঙ্গে থাকবে।
26-Ezekiel 38:6 : সেখানে গোমর তার সেনাদলের সাথে থাকবে। সুদূর উত্তরের তোগর্ম্মের কুল ও তার সেনাদলও থাকবে। সেই বন্দীদলের কুচকাওযাজ করা লোকরা সংখ্যায় বহু।
26-Ezekiel 38:7 : “‘তৈরী থাক, হ্যাঁ নিজেকে এবং তোমার সাথে যে সেনাদল যোগ দিয়েছে তাদের তৈরী রাখ। তোমার অবশ্যই নজর রাখা ও প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন।
26-Ezekiel 38:8 : বহু দিন পরে তোমাকে কাজে ডাকা হবে। পরের বছরগুলিতে তুমি সেই দেশে ফিরে আসবে, যে দেশ যুদ্ধের ক্ষত থেকে অসুস্থ হয়েছে। সেই দেশের লোকদের বহু জাতি থেকে জড়ো করে ইস্রায়েল পর্বতে আনা হয়েছিল। অতীতে ইস্রায়েলের পর্বত বারে বারে ধ্বংস করা হলেও অন্য জাতির মধ্য থেকে ফিরে আসা ঐ লোকরা সবাই নির্ভয়ে বাস করবে।
26-Ezekiel 38:9 : কিন্তু তুমি তাকে আক্রমণ করতে আসবে। সমস্ত দেশকে মেঘের ঘন কালো আকাশে ঢেকে ফেলার মত ঢেকে ফেলে, তুমি ঝড়ের মত আসবে। তুমি এবং তোমার সৈন্যরা যারা বিভিন্ন দেশ থেকে একত্র হয়েছিল তাদের আক্রমণ করবে।”‘
26-Ezekiel 38:10 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: “সেই সময় তোমার মনে এক চিন্তা আসবে, তুমি দুষ্ট পরিকল্পনা করতে শুরু করবে।”
26-Ezekiel 38:11 : তুমি বলবে, ‘আমরা গিয়ে সেই প্রাচীরহীন শহর আক্রমণ করব। ঐ লোকেরা শান্তিতে বাস করে, নিজেদের নিরাপদ মনে করে। তাদের রক্ষার জন্য শহর প্রাচীরে ঘেরা নয়। তাদের দরজায তালার ব্যবস্থা নেই, এমনকি, কপাট বলতেও কিছু নেই।
26-Ezekiel 38:12 : তোমার অভিপ্রায় এই। আমি ঐ লোকদের পরাজিত করব ও তাদের মূল্যবান জিনিস কেড়ে নেব। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল কিন্তু পুনরায় লোক জন দ্বারা অধিকৃত অঞ্চলগুলির বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ করব। আমি ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব যারা বিভিন্ন জাতি থেকে এসে একত্র হয়েছিল। ঐ লোকদের গোপাল ও অন্যান্য ধনসম্পদ রয়েছে। তারা পৃথিবীর কেন্দ্র বাস করে। বলবান জাতিদের অন্য শক্তিশালী দেশে যাবার জন্য ঐ স্থান দিয়ে ভ্রমণ করতে হয়।’
26-Ezekiel 38:13 : “শিবা, দদান, তর্শীশের সমস্ত ব্যবসাযীরা এবং আর যে নগরের সাথেই তারা ব্যবসা করে তারা এসে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা কি মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী লুঠ করতে এসেছ? তোমরা কি তোমাদের সেনাদল নিয়ে ঐসব উত্তম জিনিস ছিনিয়ে নেবার জন্য ও সোনা, রূপা, গরু, মোষ ও সম্পত্তি লুঠ করতে এসেছ? তোমরা কি সমস্ত মূল্যবান জিনিস নিয়ে নিতে এসেছ?”‘
26-Ezekiel 38:14 : ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে গোগের সাথে কথা বল। তাকে বল প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘আমার প্রজারা যে সময় শান্তিতে ও নিরাপদে রয়েছে সে সময় তোমরা আমার প্রজাদের আক্রমণ করতে আসবে।”
26-Ezekiel 38:15 : তুমি তোমার সুদূর উত্তরের নিবাস থেকে বহুজনকে সাথে করে আনবে। তারা সবাই ঘোড়ায় চড়ে আসবে। তুমি এক বিশাল ও বলবান সেনাদল হবে।
26-Ezekiel 38:16 : তোমরা ইস্রায়েল, আমার লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে। তোমরা ঝঞ্ঝার মেঘের মত সেই দেশ ঢেকে ফেলার জন্য আসবে। যখন সময় হবে, আমি তোমাদের আমার দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য আনব। তখন সমস্ত জাতি জানবে যে আমি কত শক্তিশালী! তারা আমাকে সম্মান করতে শিখবে এবং জানবে যে আমি কত পবিত্র। তোমার প্রতি আমি যা করব তা তারা দেখবে!”‘
26-Ezekiel 38:17 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “সেই সময়, লোকে স্মরণ করবে যে আমি অতীতে তোমার সম্বন্ধে বলেছিলাম। তারা এও স্মরণ করবে যে আমি আমার দাসসমূহ, ভাব্বাদীদের ব্যবহার করেছিলাম। তারা স্মরণ করবে যে অতীতে ইস্রায়েলের ভাব্বাদীরা বলেছিল যে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে তোমাকে নিয়ে আসব।”
26-Ezekiel 38:18 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “সেই সময়ে গোগ ইস্রায়েল দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে আর তখন আমি আমার রোধ প্রকাশ করব।
26-Ezekiel 38:19 : আমার রোধ ও অন্তর্জালায আমি এই প্রতিশ্রুতি করছি: ইস্রায়েলে এক প্রচণ্ড ভূমিকম্প হবে।
26-Ezekiel 38:20 : সেই সময়, সমস্ত জীবজন্তু ভয়ে কাঁপবে। সমুদ্রের মাছ, আকাশের পাখি, মাঠের পশুরা এবং সমস্ত সরীসৃপ ভয়ে কাঁপবে। পর্বতগুলি পড়ে যাবে, চূড়োগুলো ধ্বংস হবে আর প্রাচীরগুলো মাটিতে ভেঙ্গে পড়বে!”
26-Ezekiel 38:21 : প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আর ইস্রায়েলের পর্বতে আমি গোগের বিরুদ্ধে সব রকমের আতঙ্ক আনব। তার সৈন্যরা এত ভীত হবে যে একে অপরকে আক্রমণ করে হত্যা করবে।”
26-Ezekiel 38:22 : আমি রোগ ও মৃত্যু দ্বারা গোগকে শাস্তি দেব। আমি শিলাবৃষ্টি, অগ্নি এবং গন্ধক গোগের প্রতি ও বহুজাতি থেকে সংগৃহীত তার সেনাদলের প্রতি বর্ষাব।
26-Ezekiel 38:23 : তখন আমি আমার মহত্ব ও পবিত্রতার প্রমাণ দেব। তখন অনেক জাতি আমার পরিচয পেয়ে আমাকেই প্রভু বলে জানবে।”
26-Ezekiel 39:1 : “মনুষ্যসন্তান আমার হয়ে গোগের বিরুদ্ধে এই কথা বল। বল প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘হে গোগ, তুমি মেশক ও তূবলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিন্তু আমি তোমার বিরুদ্ধে।”
26-Ezekiel 39:2 : আমি তোমাকে বন্দী করে ফেরত আনব। আমি তোমায় সুদূর উত্তর থেকে ইস্রায়েলের পর্বতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আনব।
26-Ezekiel 39:3 : কিন্তু আমি তোমার বাম হাত থেকে ধনুক সরিয়ে দেব আর ডান হাত থেকে তোমার তীরগুলি খসিযে দেব।
26-Ezekiel 39:4 : তুমি ইস্রায়েলের পর্বতে নিহত হবে। তুমি, তোমার সেনাদল এবং তোমার সঙ্গের সমস্ত লোকজন যুদ্ধে নিহত হবে। আমি তোমাকে সব রকমের পাখি ও বন্য পশুদের খাদ্য হিসাবে দেব।
26-Ezekiel 39:5 : তুমি শহরে প্রবেশ করবে না। তোমাকে খোলা মাঠে হত্যা করা হবে। একথা আমিই বলেছি।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 39:6 : ঈশ্বর বলেছেন, “আমি মাগোগ ও সমুদ্রের উপকূলে বসবাসকারী সমস্ত লোকদের উপরে আগুন পাঠাব। তারা মনে করে যে তারা নিরাপদে আছে কিন্তু তারা জানবে যে আমিই প্রভু।
26-Ezekiel 39:7 : আমি আমার পবিত্র নাম ইস্রায়েলে জ্ঞাত করব, আমি তাদের দ্বারা আমার নাম আর অপবিত্র হতে দেব না। জাতিগণ জানবে যে আমিই প্রভু, আমিই ইস্রায়েলের পবিত্র একজন।
26-Ezekiel 39:8 : দেখ, সেই সময় আসছে যখন তা সিদ্ধ হবে! প্রভুই এইসব কথা বলেছেন। সেই দিনের কথাই আমি বলছি।
26-Ezekiel 39:9 : “সেই সময় ইস্রায়েলের শহরে বসবাসকারীরা বাইরে মাঠে যাবে। তারা শএুদের ঢাল, ধনুক, তীর, লাঠি ও বর্শা এই সমস্ত অস্ত্র সংগ্রহ করে তা পুড়িয়ে ফেলবে। তারা সাত বছর ধরে সেই সমস্ত কাঠ জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করবে।
26-Ezekiel 39:10 : তাদের আর মাঠ থেকে কাঠ কুড়াতে বা বন থেকে কাঠ কেটে আনতে হবে না কারণ তারা অস্ত্র - শস্ত্রই জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করবে। তারা লুঠ করতে আসা সৈন্যদের কাছ থেকে তাদের মূল্যবান দ্রব্যই কেড়ে নেবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 39:11 : ঈশ্বর বলেন “সেই সময়, আমি গোগকে কবর দেবার জন্য ইস্রায়েলে একটি স্থান বেছে নেব। পথিকদের উপত্যকায়, যে স্থান মৃত সাগরের পূর্ব দিকে অবস্থিত সেখানে তাকে কবর দেওয়া হবে। তা পথিকদের পথ অবরোধ করবে। কারণ গোগ ও তার সেনাদল সেইস্থানে কবরস্থ হবে। লোকে সেই স্থানকে ‘গোগ এর সৈন্যদের উপত্যকা হিসেবেও অভিহিত করবে।’
26-Ezekiel 39:12 : দেশ শুচি করার জন্য ইস্রায়েলের পরিবার সাত মাস ধরে তাদের কবরে দেবে।
26-Ezekiel 39:13 : দেশের সাধারণ লোক ঐসব শএু সেনাদের কবর দেবে। আমি যেদিন নিজেকে গৌরবান্বিত করব সেদিন ঐ লোকেরা বিখ্যাত হয়ে উঠবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 39:14 : ঈশ্বর বলেন, “কর্মীরা সমস্ত দিন ধরে ঐ মৃত সৈন্যদের কবরস্থ করবে যাতে দেশ শুচি হয়। ঐ কর্মীরা সাত মাস ধরে পরিশ্রম করবে। পরে মৃত দেহের জন্য এদিকে ওদিকে অনুসন্ধান করবে।”
26-Ezekiel 39:15 : সেই সব কর্মীরা খুঁজতে খুঁজতে এধারে ওধারে যাবে। তাদের মধ্যে যদি কেউ এক টুকরো অস্থি দেখে তবে তার ধারে চিহ্ন দিয়ে রাখবে। যতক্ষণ পর্য়ন্ত না কবর খোঁড়ার লোক এসে গোগ সেনাদের উপত্যকায় তা কবর না দেয় সেই পর্য়ন্ত সেই চিহ্ন দেওয়া থাকবে।
26-Ezekiel 39:16 : মৃত লোকদের নগরের নাম হবে হামোনা। এই ভাবে তারা সেই দেশ শুদ্ধ করবে।”
26-Ezekiel 39:17 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “হে মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে সমস্ত পাখি ও বন্য পশুর সাথে কথা বল। তাদের বল, ‘এখানে এস! এখানে এস! এসে চারধারে জড়ো হও। তোমাদের জন্য আমি যে বলি প্রস্তুত করেছি তা ভক্ষণ কর। ইস্রায়েলের পর্বতে এক মহায়জ্ঞ হবে। এস মাংস খাও, রক্ত পান কর।
26-Ezekiel 39:18 : তোমরা বলবান সৈন্যের দেহ হতে মাংস খাবে ও পৃথিবীর নেতাদের রক্ত পান করবে। তারা সকলে বাশনের পাঁঠা, মেষশাবক, ছাগল ও মোটা সোটা ষাঁড়।
26-Ezekiel 39:19 : তোমরা যতটা চাও ততটাই মেদ খেতে পারো, পূর্ণ না হওয়া পর্য়ন্ত রক্ত পান করতে পারো। আমি তোমাদের জন্য যে বলি হনন করেছি তা তোমরা খাবে ও পান করবে।
26-Ezekiel 39:20 : আমার টেবিল থেকে খাবার জন্য তোমাদের জন্য প্রচুর মাংস থাকবে। থাকবে অশ্ব, রথচালকগণ, বলবান সৈন্যরা এবং অন্য সব যোদ্ধারা।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐ কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 39:21 : ঈশ্বর বললেন, “আমি অন্য জাতিদের আমার কাজ দেখাব আর তারা আমায় সম্মান করতে শুরু করবে! শএুদের বিপক্ষে আমি যে শক্তি ব্যবহার করেছি তাও তারা দেখবে।
26-Ezekiel 39:22 : সেই দিন থেকেই ইস্রায়েল পরিবার জানবে যে আমিই তাদের প্রভু ও ঈশ্বর।
26-Ezekiel 39:23 : জাতিগণ জানবে কেন ইস্রায়েল পরিবারকে বন্দী করে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারা জানবে আমার লোকরা আমার বিরুদ্ধে উঠেছিল বলেই আমি তাদের থেকে ঘুরে দূরে গিয়েছিলাম। আমি তাদের শএু দ্বারা পরাজিত হতে দিলাম বলেই আমার লোকরা যুদ্ধে নিহত হল।
26-Ezekiel 39:24 : তারা পাপে নিজেদের অশুচি করল, তাই তাদের কাজের জন্য আমি শাস্তি দিলাম। আমি তাদের থেকে দূরে গেলাম ও তাদের সাহায্য করতে অস্বীকার করলাম।”
26-Ezekiel 39:25 : তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “এখন আমি যাকোবের পরিবারকে বন্দীত্ব থেকে নিয়ে আসব। আমি সমস্ত ইস্রায়েল পরিবারের প্রতি দয়া করব। আমি আমার পবিত্র নামের পক্ষে উদ্য়োগী হব।
26-Ezekiel 39:26 : তারা সবসময় যে আমার বিরুদ্ধাচরণ করত এই লজ্জা লোকরা ভুলে যাবে। তারা নিজেদের দেশে নিরাপদে থাকবে কেউ তাদের ভয় দেখাবে না।
26-Ezekiel 39:27 : আমি অন্য দেশ থেকে আমার প্রজাদের ফিরিয়ে আনব। আমি শএুদের দেশ থেকে তাদের সংগ্রহ করব, তখন বহু জাতি দেখতে পাবে যে আমি কত পবিত্র।
26-Ezekiel 39:28 : তারা জানবে যে আমিই প্রভু, তাদের ঈশ্বর, কারণ আমিই তাদের ঘর বাড়ী ছেড়ে অন্য দেশে বন্দী হিসেবে যেতে বাধ্য করেছিলাম। আর আমিই তাদের আবার একত্র করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে এনেছি। তাদের এক জনও পেছনে পড়ে থাকবে না।
26-Ezekiel 39:29 : আমি ইস্রায়েল পরিবারের উপর আমার আত্মা ঢেলে দেব আর সেই সময়ের পরে আর কখনও আমার প্রজাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেব না।” প্রভু আমার সদাপ্র ভুই এই সব কথা বলেন।
26-Ezekiel 40:1 : নির্বাসনে যাবার পঁচিশতম বছরের শুরুতে অর্থাত্‌ মাসের দশম দিনে প্রভুর শক্তি আমার উপর এল। এ হল বাবিলীযরা জেরুশালেম অধিকার করার চৌদ্দ বছর পরের কথা। সেই দিন প্রভু দর্শনে আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন।
26-Ezekiel 40:2 : একটি দর্শনে, ঈশ্বর আমাকে ইস্রায়েল দেশে বহন করে নিয়ে গিয়ে এক উঁচু পর্বতের কাছে নামিয়ে দিলেন। সেই পর্বতের ওপর আমার চোখের সামনে শহরের মত দেখতে একটি অট্টালিকা ছিল।
26-Ezekiel 40:3 : প্রভু আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। সেখানে, ঘসা মাজা পিতলের মত চক্চক্ করছে এমন এক জন পুরুষকে দেখলাম। সেই লোকটির হাতে মাপার জন্য ফিতে ও লাঠি ছিল। তিনি ফটকের ধারেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
26-Ezekiel 40:4 : সেই পুরুষ আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, তোমার চোখ ও কান ব্যবহার কর। ঐসব জিনিসের দিকে দেখ ও আমার কথা শোন। আমি তোমায় যা দেখাই তাতে মন দাও হ্কারণ তোমাকে ঐসব দেখাবার জন্যই এখানে আনা হয়েছে। তুমি যা দেখবে তা অবশ্যই ইস্রায়েল পরিবারকে জানিও।”
26-Ezekiel 40:5 : আমি একটা দেওয়াল দেখলাম যা মন্দিরের বাইরে মন্দিরকে চারধারে ঘিরে ছিল। সেই পুরুষটির হাতে ছিল মাপার মাপকাঠি। লম্বা হাতের মাপ অনুসারে তা ছিল
26-Ezekiel 40:6 : হাত লম্বা। পুরুষটি যখন দেওয়ালের প্রস্থ মাপলো তা এক মাপকাঠির সমান হল আর প্রাচীরের উচ্চতাও এক মাপকাঠির সমান হল। 6 তারপর সেই পুরুষটি পূর্ব দিকের দরজার কাছে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে সেই দরজার মুখের চওড়াটা মাপল, তা মাপে এক মাপকাঠি হল।
26-Ezekiel 40:7 : রক্ষীদের ঘরগুলি ছিল মাপে লম্বায় এক মাপকাঠি ও চওড়ায় এক মাপকাঠি। ঘরগুলির মধ্যের দেওয়াল চওড়ায় 5 হাত ছিল। প্রবেশ পথের বারান্দার দিকের মুখটি যেটি মন্দিরের দিকে মুখ করে ছিল তাও প্রস্থে এক মাপ কাঠি।
26-Ezekiel 40:8 : তারপর সেই পুরুষটি বারান্দাটি মাপলেন।
26-Ezekiel 40:9 : তা লম্বায়8 হাত হল। পুরুষটি দরজার দুধারের দেওয়ালও মাপল। প্রত্যেক পাশের দেওয়াল চওড়ায় 2 হাত হল। বারান্দাটি মন্দিরের দিকে মুখ করে প্রবেশ পথের শেষে ছিল।
26-Ezekiel 40:10 : প্রবেশ পথের দুইধারে তিনটি করে ছোট ছোট ঘর ছিল। প্রত্যেকটা ঘরের মাপ এক এবং তাদের পাশের দেওয়ালগুলোও মাপে এক ছিল।
26-Ezekiel 40:11 : পুরুষটি প্রবেশ পথের মুখটি মাপল। সেটা ছিল প্রস্থে 10 হাত এবং লম্বায় 13 হাত।
26-Ezekiel 40:12 : প্রত্যেকটি ঘরের সামনে একটি নীচু প্রাচীর ছিল; সেই প্রাচীর দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থেথ ছিল 1 হাত। ঘরগুলো ছিল বর্গাকৃতি। প্রতিটি দেওয়াল ছিল 6 হাত।
26-Ezekiel 40:13 : পুরুষটি একটি ঘরের ছাদের কোণ থেকে অপর ঘরের ছাদের কোণ পর্য়ন্ত প্রবেশপথটি মাপলে তা মাপে 25 হাত হল। প্রত্যেকটি দরজা অপর দরজার বিপরীত ছিল।
26-Ezekiel 40:14 : পুরুষটি পাশের দেওয়ালগুলির প্রত্যেকটি পাশ, এমনকি গাড়ী - বারান্দার দুই ধারের দেওয়ালগুলিও মাপল। সর্বসমেত মাপ ছিল 60 হাত।
26-Ezekiel 40:15 : বাইরের দরজার ভিতরের ধার থেকে দূরের বারান্দার প্রান্তটি ছিল 50 হাত।
26-Ezekiel 40:16 : সব কটি রক্ষীদের ঘরের ওপরে পাশের দিকে দেওয়ালে ও অলিন্দে ছোট ছোট জানালা ছিল। জানালাগুলির চওড়া দিকটা রাস্তার দিকে মুখ করে ছিল। পাশের দিকের দেওয়ালগুলোতে এবং ঝুল বারান্দায খেজুর গাছের ছবি খোদাই করে অাঁকা ছিল।
26-Ezekiel 40:17 : তারপর পুরুষটি আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেল। আমি সেই প্রাঙ্গণের চারধারে ত্রিশটি ঘর ও পাথরে বাঁধানো ভূমি দেখতে পেলাম। ঘরগুলি দেওয়ালের ধারে ও প্রস্তরে বাঁধানো ভূমির দিকে মুখ করে ছিল।
26-Ezekiel 40:18 : দরজাটি লম্বায় যতখানি, প্রস্তরে বাঁধানো ভূমিটি প্রস্থে ততখানিই ছিল। পাথরে বাঁধা ভূমিটি প্রবেশ পথের ভেতরের দিকের শেষ পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল। এটা ছিল নীচের শান বাঁধানো জায়গা।
26-Ezekiel 40:19 : পুরুষটি নীচের প্রবেশ পথের ভেতরের দিক থেকে ভেতরের প্রাঙ্গনের বাইরেটা পর্য়ন্ত মাপলে তা মাপে পূর্বদিকে ও উত্তরে 100 হাত হল।
26-Ezekiel 40:20 : তারপর, সেই পুরুষটি বাইরের প্রাঙ্গন ঘিরে যে দেওয়াল, সেই দেওয়ালের উত্তর দিকে যে ফটক ছিল তা দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থেথ মাপল।
26-Ezekiel 40:21 : এই প্রবেশ পথ তার দুপাশের তিনটে করে ঘর এবং তার বারান্দা সবই মেপে প্রথম দরজাটার মত হল। প্রবেশ পথটি দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থে 25 হাত হল।
26-Ezekiel 40:22 : এর জানালাগুলি, বারান্দা এবং খোদিত খেজুর গাছের চিত্রের মাপজোক সব আগের দরজার মতই ছিল। বাইরের দিক থেকে সাতটি ধাপ সেই দরজার কাছে পৌঁছে দিত এবং এর বারান্দা ছিল প্রবেশ পথের ভিতরের দিকটার শেষ পর্য়ন্ত।
26-Ezekiel 40:23 : প্রাঙ্গণের উত্তর দিকের দরজা বরাবর ভিতরের প্রাঙ্গণে খাবার জন্য একটি দরজা ছিল। এ দরজা পূর্বের দিকের দরজার মতই ছিল। পুরুষটি ভেতরের দিকের দেওয়ালের দরজা থেকে বাইরের দিকের দেওয়ালের দরজা মাপল। দরজা থেকে দরজার মাপ ছিল 100 হাত।
26-Ezekiel 40:24 : তারপর পুরুষটি আমাকে দক্ষিণের দিকের দেওয়ালে নিয়ে গেল। সেখানে আর একটি ফটক ছিল। পুরুষটি সেটার পাশের দেওয়ালগুলির ও বারান্দার মাপ নিল। এদের মাপ অন্য দরজাগুলির মাপের সমান হল।
26-Ezekiel 40:25 : প্রবেশ পথে ও তার বারান্দায অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির মত জানালা ছিল। প্রবেশ পথটির মাপ দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থেথ 25 হাত।
26-Ezekiel 40:26 : এই প্রবেশ দ্বারটির সামনে সাতটি ধাপ ছিল। এর বারান্দাটি ছিল প্রবেশ পথের ভেতরের দিক থেকে শেষ পর্য়ন্ত। দরজার পথের দুই ধারের দেওয়ালে খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল।
26-Ezekiel 40:27 : ভেতরের প্রাঙ্গণের দক্ষিণ দিকে একটি প্রবেশদ্বার ছিল। সেই পুরুষটি ভেতরের দিকের দেওয়ালের দরজা থেকে বাইরের দিকের দেওয়ালের দরজা পর্য়ন্ত মাপলে তা দরজা থেকে দরজা পর্য়ন্ত 10 0 হাত হল।
26-Ezekiel 40:28 : তারপর সেই পুরুষটি দক্ষিণ দিকের প্রবেশদ্বার দিয়ে আমায় ভিতরের প্রাঙ্গণে আনল। সে এই প্রবেশ পথটি মাপলে তা ভিতরের প্রাঙ্গণের আসার অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির সমান হল।
26-Ezekiel 40:29 : এর লাগোযা ঘরগুলি, পাশের দেওয়াল এবং বারান্দার মাপ ও অন্য দরজাগুলির সমান হল। প্রবেশ পথের ও বারান্দার চারদিকেই জানালা ছিল। প্রবেশ পথটি দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থেথ 25 হাত ছিল।
26-Ezekiel 40:30 : বারান্দাটি প্রস্থে 25 হাত ও দৈর্য়্ঘে 5 হাত ছিল।
26-Ezekiel 40:31 : এবং এর বারান্দা ছিল দরজার পথের শেষে বাইরের প্রাঙ্গণের গায়ে। প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে খেজুর গাছের চিত্র খোদাই করা ছিল। আটটা সিঁড়ির ধাপ পার হলেই সেই দরজা।
26-Ezekiel 40:32 : তখন সেই পুরুষটি আমাকে পূর্ব দিকের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে চলল। সে প্রবেশ দ্বারটি মাপলে তা অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির সমান হল।
26-Ezekiel 40:33 : এর ঘরগুলি, পাশের প্রাচীর ও বারান্দার মাপগুলি অন্য প্রবেশ দ্বারের সমান ছিল। প্রবেশ পথের ও বারান্দার চারদিকে অনেক জানালা ছিল। প্রবেশ পথটি লম্বায় 50 হাত ও চওড়ায় 25 হাত ছিল।
26-Ezekiel 40:34 : এবং প্রবেশ পথের শেষে ভিতরের প্রাঙ্গণেই ছিল এর বারান্দা। প্রবেশ পথের দুই পাশেই ছিল খোদাই করা খেজুর গাছের আকৃতি। আটটি ধাপ পার হলেই সেই দরজায পৌঁছানো যেত।
26-Ezekiel 40:35 : তখন সেই পুরুষটি আমায় উত্তর দিকের প্রবেশদ্বারের দিকে নিয়ে চলল। সেটা মাপা হলে তার মাপ অন্য দ্বারগুলির সমান হল।
26-Ezekiel 40:36 : এর ঘরগুলি, পাশের দেওয়াল ও বারান্দার মাপগুলিও অন্য দ্বারগুলির সমান হল। প্রবেশ পথের ও তার বারান্দার চারধারে অনেক জানালা ছিল। প্রবেশ পথটি মাপে দৈর্য়্ঘে 50 হাত ও প্রস্থেথ 25 হাত।
26-Ezekiel 40:37 : এবং এর বারান্দাটি ছিল প্রবেশ পথের শেষে বাইরের প্রাঙ্গণের গায়ে। প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল। আটটি ধাপ পার হলেই সেই ফটক।
26-Ezekiel 40:38 : সেখানে একটি ঘর ছিল যার দরজা খুললে এই ফটকের বারান্দায এসে পড়ে। এই হল সেই জায়গা যেখানে যাজকরা হোমবলির জন্য পশু ধোয।
26-Ezekiel 40:39 : এই বারান্দার দুই দিকে দরজার দুইধারে দুটি টেবিল ছিল। হোমবলি, পাপমোচন নৈবেদ্য, এবং অপরাধ মোচন নৈবেদ্য়ের জন্য পশুদের এই টেবিলেই হত্যা করা হত।
26-Ezekiel 40:40 : এই বারান্দার বাইরে দরজার প্রতি পাশে দুটি করে টেবিল ছিল।
26-Ezekiel 40:41 : সুতরাং ভিতরের দেওয়ালের দিকে চারটি টেবিল এবং বাইরের দেওয়ালের দিকে চারটে টেবিল - মোট আটটি টেবিল যাজকরা নৈবেদ্য়ের নিমিত্তে পশু বলি দেবার জন্য ব্যবহার করত।
26-Ezekiel 40:42 : হোমবলির জন্যও পাথর কেটে তৈরী করা চারটি টেবিল ছিল। এই টেবিলগুলি মাপে 1.5 হাত লম্বা, 1.5 হাত চওড়া ও 1 হাত উঁচু। এই টেবিলের উপরে হোমবলি ও অন্যান্য নৈবেদ্য নিমিত্ত পশু বলি দেবার যন্ত্রপাতিও রাখা হত।
26-Ezekiel 40:43 : এই জায়গায় দেওয়ালের গায়ে মাংস ঝোলাবার জন্য তিন ইঞ্চি লম্বা আংটাসমূহ ছিল। উত্সর্গের মাংস টেবিলগুলির ওপর রাখা হত।
26-Ezekiel 40:44 : ভিতরের প্রাঙ্গণে যাজকদের জন্য দুটি ঘর ছিল।একটি উত্তর দিকের ফটকের পাশে দক্ষিণ দিকে মুখ করে। অন্যটি দক্ষিণ দিকে ফটকের পাশে উত্তর দিকে মুখ করে।
26-Ezekiel 40:45 : সেই পুরুষটি আমায় বলল, “দক্ষিণ দিকে মুখ করে যে ঘরটি সেটি মন্দিরের চত্বরে সেবায রত যাজকদের জন্য।”
26-Ezekiel 40:46 : কিন্তু উত্তর দিকে মুখ করা ঘরটি সেই সব যাজকদের জন্য যারা বেদীতে পরিচর্য়ার কাজ করে। যাজকরা লেবী পরিবারগোষ্ঠীর কিন্তু যাজকদের এই দ্বিতীয় দল সদোকের উত্তরপুরুষ। তারাই একমাত্র যারা প্রভুর সেবার্থে বলি বেদীতে বয়ে নিয়ে যেতে পারে।
26-Ezekiel 40:47 : পুরুষটি ভিতরের প্রাঙ্গণটি মাপলে দেখা গেল তা এক প্রকৃত বর্গক্ষেত্র। দৈর্য়্ঘে তা 100 হাত এবং প্রস্থেথও তা 100 হাত ছিল। বেদীটি মন্দিরের সামনে অবস্থিত ছিল।
26-Ezekiel 40:48 : তারপর সেই ব্যক্তিটি আমায় মন্দিরের দক্ষিণ গাড়ী বারান্দায নিয়ে গিয়ে দুই ধারের দেওয়াল মাপল। প্রতি পাশের দেওয়াল ছিল 5 হাত পুরু ও 3 হাত চওড়া। এবং তাদের মধ্যকার ব্যবধানের মাপ ছিল 14 হাত।
26-Ezekiel 40:49 : বারান্দাটি প্রস্থেথ 20 হাত ও দৈর্য়্ঘে 12 হাত, দশ ধাপ সিঁড়ি উঠে গিয়েছিল বারান্দা পর্য়্য়ন্ত। বারান্দার দুই পাশের দেওয়ালগুলির জন্য প্রতি দেওয়ালে একটি করে, মোট দুটি থাম ছিল।
26-Ezekiel 41:1 : এরপর সেই পুরুষটি আমায় পবিত্রস্থানের দিকে নিয়ে চলল। সে সেই ঘরের দুই ধারের দেওয়াল মাপল। প্রতি পাশের দেওয়ালগুলি 6 হাত পুরু ছিল।
26-Ezekiel 41:2 : দরজাটি প্রস্থে 10 হাত এবং দরজার সম্মুখের পথটির ধারগুলির প্রতি পাশে 5 হাত ছিল। পুরুষটি সেই ঘরটির মাপ নিলে তা লম্বায় 40 হাত এবং চওড়ায় 20 হাত পাওয়া গেল।
26-Ezekiel 41:3 : তারপর সেই পুরুষটি শেষের ঘরে গেল এবং দরজার পথটির দুই ধারের দেওয়ালের মাপ নিল। প্রত্যেক পাশের দেওয়াল 2 হাত পুরু ও প্রস্থে 7 হাত পাওয়া গেল। দরজার দিকের রাস্তাটি প্রস্থে 6 হাত ছিল।
26-Ezekiel 41:4 : তারপর পুরুষটি সেই ঘরটির দৈর্য়্ঘ মাপলো এবং তা ছিল লম্বায় ও চওড়ায় 20 হাত মাপের। সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এইটি সর্বাপেক্ষা পবিত্র স্থান।”
26-Ezekiel 41:5 : তারপর সেই পুরুষটি মন্দিরের দেওয়ালের মাপ নিলে তা হাত পুরু পাওয়া গেল। মন্দিরের চারধারে পাশে পাশে অনেক কামরা ছিল যারা প্রস্থে 4 হাত ছিল।
26-Ezekiel 41:6 : পার্শ্ব কামরাগুলি ছিল একটার ওপরে আরেকটা এবং এই ভাবে তিনটি বিভিন্ন তলে ছিল। প্রতিটি তলায় টি করে ঘর ছিল। মন্দিরের দেওয়ালটি এমন ভাবে গড়া যে তাতে সঙ্কীর্ণ তাক ছিল। এই সঙ্কীর্ণ তাকের উপরেই পাশের কামরাগুলি তৈরী করা হয়েছিল, কিন্তু মন্দিরের দেওয়ালের সঙ্গে তাদের কোন যোগ ছিল না।
26-Ezekiel 41:7 : মন্দিরের চারধারের পার্শ্ব কামরাগুলির প্রতিটির মেঝে তার নীচের তলার মেঝের থেকে চওড়া ছিল। মন্দিরের চারধারের কামরাগুলির দেওয়ালগুলি উপরের দিকে যতই উঠল ততই সরু হতে থাকল ফলে উপরের তলার কামরাগুলি চওড়া ছিল। নীচের তলা থেকে উপর তলা পর্য়ন্ত মাঝের তলা দিয়ে একটা সিঁড়ি উঠে গেছিল।
26-Ezekiel 41:8 : আমি এও দেখলাম যে মন্দিরের মেঝের চারদিক উঁচু। এটা ছিল পাশের কামরাগুলির ভিত, এবং উচ্চতায়হাত।
26-Ezekiel 41:9 : পাশের কামরাগুলির বাইরের দেওয়ালগুলো ছিল5 হাত পুরু। এক খোলা জায়গা মন্দিরের পাশের কামরাগুলির ও
26-Ezekiel 41:10 : যাজকদের কামরার মাঝে ছিল। এটা প্রস্থেথ 20 হাত এবং মন্দিরের চারধারে বিস্তৃত ছিল।
26-Ezekiel 41:11 : পাশের কামরার দরজাগুলি ঐ উঁচু জমিতে খুলত। উত্তর দিক দিয়ে ও দক্ষিণের দিক দিয়ে প্রবেশ পথ ছিল। উঁচু জমিটি চার ধারে চওড়ায় 5 কিউবিট ছিল।
26-Ezekiel 41:12 : মন্দিরের পশ্চিম দিকে, এই সীমাবদ্ধ স্থানটিতেএকটি অট্টালিকা ছিল। অট্টালিকাটি প্রস্থেথ 70 হাত ও দৈর্য়্ঘে 90 হাত মাপের ছিল। প্রাঙ্গণের দেওয়াল চার ধারেই 5 হাত করে পুরু ছিল।
26-Ezekiel 41:13 : তারপর পুরুষটি সেই মন্দিরটি মাপল। মন্দিরটি মাপে 100 হাত লম্বা হল। দালান ও দেওয়াল সমেত জায়গাটিও লম্বায় 10 0 হাত হল।
26-Ezekiel 41:14 : মন্দিরের সামনে পূর্ব দিকের সীমাবদ্ধ জায়গাটি লম্বায় 100 হাত ছিল।
26-Ezekiel 41:15 : পুরুষটি পশ্চিমদিকে, সীমাবদ্ধ স্থানটি অট্টালিকাটির মাপ নিল। এক দেওয়াল থেকে অপর দেওয়াল পর্য়ন্ত তা মাপে 100 হাত হল।সর্বাপেক্ষা পবিত্র স্থান, পবিত্র স্থান ও গাড়ী বারান্দাটার যে দিকটা ভেতরের প্রাঙ্গণের দিকে মুখ করে ছিল
26-Ezekiel 41:16 : তার দেওয়ালে কাঠের তক্তা সমূহ ছিল। সমস্ত জানালা ও দরজার ধারে সরু করে কাঠ লাগানো ছিল। দরজা পথে মন্দিরের মেঝে থেকে জানালা পর্য়ন্ত এবং দেওয়ালের অংশ পর্য়ন্ত দরজা পথের ওপরে কাঠের তক্তা ছিল।
26-Ezekiel 41:17 : মন্দিরের ভিতরের ও বাইরের কামরাগুলির দেওয়ালে করূব দূত এবং খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল।
26-Ezekiel 41:18 : করূব দূতগুলির মাঝে ছিল খেজুর গাছ। প্রতিটি করূব দূতের দুটি করে মুখ ছিল।
26-Ezekiel 41:19 : করূব দূতের একটি মুখ ছিল মানুষের মত যা খেজুর গাছের দিকে মুখ করে ছিল। অন্য মুখটি সিংহের মত যা অপর দিকের খেজুর গাছের দিকে মুখ করে ছিল। এসব আকৃতি মন্দিরের চারধারে খোদাই করা ছিল।
26-Ezekiel 41:20 : মেজ থেকে দরজার উপর পর্য়ন্ত পবিত্র - স্থানের সমস্ত দেওয়ালে করূব দূত ও খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল।
26-Ezekiel 41:21 : পবিত্র স্থানের দুই ধারের দেওয়ালগুলো ছিল বর্গাকৃতি। পবিত্রতম স্থানের সামনে একটি জিনিষ ছিল যা দেখতে
26-Ezekiel 41:22 : অনেকটা কাঠের তৈরী একটি বেদীর মত যা উচ্চতায় 3 হাত ও লম্বায় 2 হাত এবং চওড়ায় 2 হাত। এর ধারগুলি এবং ভিত্তি কাঠের তৈরী ছিল। পুরুষটি আমায় বললেন, “এইটি সেই টেবিল যা প্রভুর সামনে রয়েছে।”
26-Ezekiel 41:23 : পবিত্র স্থানে ও সর্বাপেক্ষা পবিত্র স্থানে জোড়া দরজা ছিল।
26-Ezekiel 41:24 : প্রতিটি ছোট দরজা নিজের থেকে খুলে যেতে পারত। প্রতিটি দরজায প্রকৃতপক্ষে দুটি চএাকারে আবর্ত্তনশীল দরজার হাতল ছিল।
26-Ezekiel 41:25 : এছাড়াও পবিত্র স্থানের দরজাগুলিতে করূব দূত ও খেজুর গাছ খোদাই করা ছিল। এগুলি দেওয়ালে খোদিত আকৃতির মত ছিল। গাড়ী বারান্দার সামনে ছিল কাঠের ছাদ।
26-Ezekiel 41:26 : সেখানকার জানালাগুলির চার ধারে কাঠামো ছিল এবং বারান্দার উভয় পাশের দেওয়ালে বারান্দার ছাদে ও মন্দিরের চার ধারের ঘরগুলিতে খেজুর গাছের আকৃতি ছিল।
26-Ezekiel 42:1 : তারপর সেই পুরুষটি উত্তর দিকের প্রবেশ দ্বারের মধ্যে দিয়ে আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে নিয়ে এল। সে আমাকে পশ্চিম দিকের অনেক কামরা রয়েছে এমন এক প্রাঙ্গণে নিয়ে চলল যেটি নিষিদ্ধ জায়গার পশ্চিমে এবং উত্তরের প্রাঙ্গণের দিকে ছিল।
26-Ezekiel 42:2 : পাথরের তৈরী বাড়ীটি লম্বায় 100 হাত ও চওড়ায় 50 হাত ছিল। লোক জন প্রাঙ্গণের উত্তর দিক দিয়ে এতে প্রবেশ করত।
26-Ezekiel 42:3 : পাথরের তৈরী বাড়ীটি ছিল তিনতলা উঁচু এবং তাতে ঝুল বারান্দা ছিল। 20 হাত মাপের ভিতরের প্রাঙ্গণটি ছিল ঐ বাড়ী ও মন্দিরের মধ্যস্থানে। অন্য দিকের কামরাগুলি বাইরের প্রাঙ্গণের শান বাঁধান জায়গাটির দিকে মুখ করে ছিল।
26-Ezekiel 42:4 : প্রবেশ পথটি উত্তর দিকে থাকা সত্ত্বেও, প্রস্থে 10 হাত ও দৈর্য়্ঘে 100 হাত একটি রাস্তা প্রাঙ্গণটির দক্ষিণ পাশ বরাবর চলে গিয়েছিল।
26-Ezekiel 42:5 : যেহেতু দালানটির উচ্চতায় তিনতল বিশিষ্ট ছিল এবং তাতে বাইরের প্রাঙ্গণের মত থাম ছিল না তাই উপরের কামরাগুলি মধ্যের ও তলার কামরাগুলির থেকে পিছনের দিকে ছিল। উপরের তল প্রস্থেথ মধ্যের তলের চেয়ে এবং মধ্যের তল প্রস্থে নীচের তলের চেয়ে সরু ছিল কারণ সেই স্থানে ঝুল বারান্দা ছিল।
26-Ezekiel 42:6 : -
26-Ezekiel 42:7 : তার বাইরে ছিল এক দেওয়াল, যা কামরাগুলির সাথে সমান্তরাল ভাবে বাইরের প্রাঙ্গণে বরাবর গিয়েছিল। কামরাগুলির সামনে তা 50 হাত পর্য়ন্ত বিস্তৃত ছিল।
26-Ezekiel 42:8 : যে কামরাগুলি বাইরের প্রাঙ্গন বরাবর ছিল তারা দৈর্য়্ঘে 50 হাত যদিও মন্দিরের দিকের দালানটি সম্পূর্ণ দৈর্য়্ঘে 100 হাত ছিল।
26-Ezekiel 42:9 : দালানটির পূর্ব দিকে এই কামরাগুলির তলায় ছিল প্রবেশপথ আর তাই লোকে বাইরের প্রাঙ্গণ থেকে এতে প্রবেশ করতে পারত।
26-Ezekiel 42:10 : প্রবেশ পথটি ছিল প্রাঙ্গণের গায়ে দেওয়ালের আরম্ভে।দক্ষিণ দিকেও, খোলা চত্বরে কয়েকটি ঘর ছিল এবং কয়েকটি ছিল এই ঘরগুলির সামনে।
26-Ezekiel 42:11 : এই কামরাগুলির সামনে একটি সরু রাস্তা ছিল। দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে সমান ছিল এবং একই অবস্থানে একই রকম দরজা ছিল এইগুলিতে।
26-Ezekiel 42:12 : বাড়িটির পূর্বদিকে দক্ষিণের ঘরগুলো প্রবেশের বিভিন্ন পথছিল যাতে লোকরা দেওয়ালের ধারে খোলা চত্বরের সরু রাস্তা দিয়ে এখানে প্রবেশ করতে পারে।
26-Ezekiel 42:13 : সেই পুরুষটি আমায় বলল, “সীমাবদ্ধ স্থানের এপাশের এবং ওপাশের উত্তরের ও দক্ষিণের কামরাগুলি পবিত্র। এই কামরাগুলি সেই সব যাজকদের জন্য যারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য উত্সর্গ করে। সেই স্থানেই যাজকরা পবিত্র নৈবেদ্য ভোজন করে এবং সেই স্থানেই তারা পবিত্র নৈবেদ্যগুলি রাখে কারণ এই স্থান পবিত্র। পবিত্রতম নৈবেদ্যগুলি হল: শস্য নৈবেদ্য, পাপমোচন নৈবেদ্য এবং অপরাধ খণ্ডন নৈবেদ্য।
26-Ezekiel 42:14 : যে যাজকরা পবিত্র - স্থানে প্রবেশ করে তাদের অবশ্য বাইরের প্রাঙ্গনে যাবার আগে পবিত্রস্থানে সেবার কাপড় খুলে রাখতে হবে। যাজকগণ যদি মন্দিরের অন্য অংশে, যেখানে অন্য যাজকরা রয়েছে সেখানে যেতে চায়, তবে তাকে এই ঘরে গিয়ে অন্য পোষাক পরতে হবে।” তাদের এই রকম অবশ্যই করতে হবে কারণ তাদের সেবা বস্ত্র হছে পবিত্র।
26-Ezekiel 42:15 : সেই পুরুষটি মন্দিরের ভিতরের অংশের মাপ নেওয়া শেষ করে আমাকে পূর্বের দিকের দরজার কাছে এনে সেই সমস্ত জায়গা মাপল।
26-Ezekiel 42:16 : সে পূর্বের দিক একটা মাপকাঠির সাহায্যে মাপলে তা লম্বায় 500 হাত পাওয়া গেল।
26-Ezekiel 42:17 : তিনি উত্তর দিক মাপলে তাও দৈর্য়্ঘে 500 হাত হল।
26-Ezekiel 42:18 : দক্ষিণ দিক মাপলে তাও লম্বায় 500 হাত হল।
26-Ezekiel 42:19 : পশ্চিম দিকটাও লম্বায় 500 হাত হল।
26-Ezekiel 42:20 : তারপর তিনি মন্দিরের চারধারের চারটি দেওয়াল মাপল। দেওয়ালটি লম্বায় 500 হাত এবং চওড়ায় 50 0 হাত ছিল। এটি পবিত্র স্থানটিকে সাধারণ স্থানের থেকে আলাদা করে রেখেছিল।
26-Ezekiel 43:1 : সেই পুরুষটি আমাকে পূর্বের দিকের প্রবেশ দ্বারের দিকে নিয়ে চলল।
26-Ezekiel 43:2 : সেখানে পূর্ব দিক থেকে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা এসে উপস্থিত হল। ঈশ্বরের রব সমুদ্রের গর্জনের মত মনে হল এবং তাঁর মহিমার আলোয ভূমি আলোকিত হল।
26-Ezekiel 43:3 : এই দর্শনটি ছিল সেটির মত যখন আমি দেখেছিলাম তিনি জেরুশালেম শহর ধ্বংস করতে এসেছিলেন এবং কবার নদীর ধারে আমি যে দর্শন দেখেছিলাম সেটার মত।
26-Ezekiel 43:4 : পূর্ব দিকের দরজা থেকে প্রভুর মহিমা মন্দিরের মধ্যে এল।
26-Ezekiel 43:5 : তারপর আত্মা আমায় তুলে নিয়ে ভেতরের প্রাঙ্গণের মধ্যে নিয়ে এল। প্রভুর মহিমা মন্দির পরিপূর্ণ হল।
26-Ezekiel 43:6 : আমি কাউকে মন্দিরের ভেতর থেকে আমার সাথে কথা বলতে শুনলাম। সেই মানুষটি তখনও আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল।
26-Ezekiel 43:7 : মন্দিরের ভেতর থেকে আসা সেই রব আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, আমার সিংহাসন ও পাদদেশ সমেত এই আমার স্থান। আমি এই স্থানে ইস্রায়েলের লোক জনের মাঝে চির কালের জন্য বাস করি। ইস্রায়েল পরিবার আমার নাম পুনরায় কলঙ্কিত করবে না। রাজারা ও তাদের প্রজারা মূর্ত্তি পূজা করবে না অথবা এই স্থানে তাদের রাজাদের মৃতদেহ কবরস্থ করে আমার নামকে লজ্জিত করবে না।
26-Ezekiel 43:8 : তারা আমার চৌকাঠের পাশে তাদের চৌকাঠ এবং আমার দরজায খুঁটির পাশে তাদের দরজার খুঁটি লাগিয়ে আমার নামকে লজ্জিত করবে না। অতীতে কেবল একটি দেওয়াল তাদের আমার কাছ থেকে পৃথক করত। তাই প্রত্যেকবার পাপ কাজ করে ও ভয়ঙ্কর ঐসব কাজ করে তারা আমার নামকে অপবিত্র করেছে। সেই জন্য আমি রুদ্ধ হয়ে তাদের ধ্বংস করেছিলাম।
26-Ezekiel 43:9 : এখন তারা তাদের য়ৌন পাপতাদের রাজাদের মৃতদেহ আমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাক্, তাহলে আমি চির কাল তাদের সঙ্গে বাস করব।
26-Ezekiel 43:10 : “এখন হে মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েল পরিবারকে ঐ মন্দিরের সম্বন্ধে বল। তাহলে যখন তারা সেই মন্দিরের পরিকল্পনার সম্বন্ধে জানবে তখন তারা তাদের পাপ সম্বন্ধে লজ্জিত হবে।
26-Ezekiel 43:11 : আর তাদের কৃত সমস্ত মন্দ কাজের জন্য তারা লজ্জিত হবে। তারা সেই মন্দিরের নক্শা সম্বন্ধে জানুক। জানুক কিভাবে তা গড়া যাবে, প্রবেশ দ্বার ও প্রস্থানদ্বার কোথায় সে সব এবং মন্দিরের সমস্ত নকশাটাই জানুক। তার বিষয়ে যে বিধি ও নিয়ম রয়েছে, তাও তাদের শিখিযে দিও। এবং প্রত্যেকে যেন দেখতে পায় এবং মন্দিরের বিধিসমূহ পালন করে সেই জন্য এগুলি প্রত্যেকের জন্য লেখ।
26-Ezekiel 43:12 : মন্দির সম্বন্ধে এই হল বিধি: এই সীমানার মধ্যবর্তী যে পাহাড়, তার চূড়োর সমস্ত জায়গাটাও অতি পবিত্র। মন্দির সম্বন্ধে বিধিগুলি এই:
26-Ezekiel 43:13 : “লম্বা মাপকাঠি ব্যবহার করে হাত বেদীর মাপ এইরকম। বেদীর গোড়ায চারদিকে যে গর্ত খোঁড়া রয়েছিল তার গভীরতা
26-Ezekiel 43:1 : হাত, প্রস্থেথ প্রতি ধারে
26-Ezekiel 43:1 : হাত। তার ধারের কানা বুড়ো আঙ্গুল থেকে কড়ে আঙ্গুলের যে দূরত্ব তার সমান। আর বেদীটি উচ্চতায় এই রকম -
26-Ezekiel 43:14 : মাটি থেকে তলার প্রান্ত পর্য়ন্ত গোড়ার মাপ
26-Ezekiel 43:2 : হাত, প্রস্থে
26-Ezekiel 43:1 : হাত এবং ছোট ধার থেকে বড় ধার মাপে
26-Ezekiel 43:4 : হাত, প্রস্থে
26-Ezekiel 43:2 : হাত।
26-Ezekiel 43:15 : বেদীতে পবিত্র আগুনের জায়গাটা উচ্চতায়
26-Ezekiel 43:4 : হাত। চার কোণ শিংযের আকারের।
26-Ezekiel 43:16 : বেদীতে আগুনের যে জায়গাটা তা মাপে দৈর্য়্ঘে
26-Ezekiel 43:12 : হাত এবং প্রস্থে
26-Ezekiel 43:12 : হাত, আকারে একেবারে বর্গক্ষেত্র।
26-Ezekiel 43:17 : গা থেকে বের হওয়া সরু তাকটিও আকারে বর্গক্ষেত্র, মাপে লম্বায়
26-Ezekiel 43:14 : হাত ও প্রস্থে
26-Ezekiel 43:14 : হাত। এর ধারটি প্রস্থে 1,2 হাত। (এর ভিত্তি যা একে ঘিরে রয়েছে তা হল প্রস্থে
26-Ezekiel 43:2 : হাত।) বেদী পর্য়ন্ত যে সিঁড়ি চলে গেছে তা পূর্ব দিকে।”
26-Ezekiel 43:18 : তখন সেই পুরুষটি আমায় বলল, “হে মনুষ্যসন্তান, প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন: ‘বেদীর জন্য এই হল আইন, যে সময় তুমি বেদী নির্মাণ করবে সে সময় হোমবলি উত্সর্গ ও রক্ত ছিটানো এই অনুসারে কোর।”
26-Ezekiel 43:19 : তুমি সাদোক পরিবারের জন্য পাপার্থক বলি হিসাবে একটি যুব ষাঁড় দেবে। এই লোকরা লেবী পরিবারগোষ্ঠীর যাজক। এই লোকরা আমার কাছে উত্সর্গ এনে আমার সেবা করবে।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 43:20 : “ষাঁড়ের কিছুটা রক্ত নিয়ে তা বেদীর চার কোণের চারটি সিং - এ লাগাবে এবং তার চারদিকের ধারেও লাগাবে। এইভাবে তুমি অবশ্য বেদী টিকে শুচি করবে এবং তাকে গ্রহণয়োগ্য করে তোল।
26-Ezekiel 43:21 : তারপর পাপার্থক বলির জন্য সেই ষাঁড় নিয়ে তা মন্দিরের বাইরের চত্বরের উপযুক্ত জায়গায় পোড়াবে।
26-Ezekiel 43:22 : দ্বিতীয় দিনে তুমি এক নির্দোষ পুং ছাগ উত্সর্গ করবে। তা হবে পাপার্থক বলি। যেভাবে যাজক ষাঁড় ব্যবহার করে বেদী শুচি করেছিল সেই ভাবেই তারা এটা দিয়ে বেদী শুচি করবে।
26-Ezekiel 43:23 : যখন বেদী শুচিকরণের কাজ শেষ হবে তখন তুমি নির্দোষ এক যুব ষাঁড় ও তার সাথে এক নির্দোষ পুং মেষ এনে তা উত্সর্গ করবে।
26-Ezekiel 43:24 : তারপর তুমি তা প্রভুর সামনে উত্সর্গ করবে। যাজকরা তার উপরে নুন ছিটাবে। তারপর যাজকরা সেই ষাঁড় ও পুং মেষকে হোমবলি হিসেবে প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করবে।
26-Ezekiel 43:25 : সাত দিনের প্রত্যেক দিনের পাপার্থক বলির জন্য তুমি ছাগ উত্সর্গ করবে। এছাড়াও তুমি একটি যুব ষাঁড় ও পালের পুং মেষ তৈরী করে রাখবে। এই সব পশুরা যেন নির্দোষ হয়।
26-Ezekiel 43:26 : সাতদিন ধরে যাজকরা বেদীটিকে শুচি করবে যাতে ঈশ্বরের উপাসনার জন্য তা প্রস্তুত হয়।
26-Ezekiel 43:27 : সাত দিনের পর অষ্টম দিনে যাজক অবশ্যই হোমবলি ও সহভাগীতার বলি বেদীতে উত্সর্গ করবে। তখন আমি তোমায় গ্রহণ করব।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 44:1 : তারপর সেই পুরুষটি আমাকে মন্দিরের চত্বরের পূর্বদিকের দরজায ফিরিয়ে আনল। আমরা দরজায ছিলাম ও দরজা বন্ধ ছিল।
26-Ezekiel 44:2 : প্রভু আমায় বললেন, “এই দরজা বন্ধ থাকবে এবং এটা খোলা হবে না। কেউ এর মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করবে না কারণ প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর। এর মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করেছেন এবং সেই জন্যই তা বন্ধ রাখতে হবে।
26-Ezekiel 44:3 : কেবল শাসকরা প্রভুর সামনে ভোজ খাবার সময় তার দরজায বসতে পারে। সে অবশ্যই প্রবেশ পথের বারান্দা দিয়ে প্রবেশ করবে এবং সেই পথ দিয়েই বাইরে যাবে।”
26-Ezekiel 44:4 : তারপর সেই পুরুষ আমাকে উত্তর দিকের দরজা দিয়ে মন্দিরের সামনে আনল। আমি দেখলাম প্রভুর মহিমায মন্দির ভরে উঠেছে, আমি উপুড় হয়ে মাটিতে প্রণাম করলাম।
26-Ezekiel 44:5 : প্রভু আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, যত্ন সহকারে দেখ! তোমার চোখ ও কান ব্যবহার কর। এই বিষয়গুলি দেখ এবং প্রভুর মন্দিরের নিয়ম ও বিধি সম্বন্ধে আমি যা বলি তা মনোযোগ দিয়ে শোন। মন্দিরে কে প্রবেশ করতে পারবে এবং কে পারবে না সে সম্বন্ধে নিয়মগুলি সয়ন্ত মনোযোগ দিয়ে শোন।
26-Ezekiel 44:6 : তারপর ইস্রায়েলের সমস্ত অবাধ্য এবং আমার বিধি অবজ্ঞাকারী লোকদের এই বার্তা বল। তাদের বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: হে ইস্রায়েল পরিবার, তোমরা পূর্বে যে সমস্ত নোংরা জিনিষ করেছে সেগুলি তোমাদের বন্ধ করতে হবে!
26-Ezekiel 44:7 : তোমরা বিদেশীদের আমার মন্দিরে এনেছ আর সেই লোকরা প্রকৃতভাবে সুন্নত ছিল না - তারা নিজেদের সম্পূর্ণভাবে আমাকে দেয়নি। এই ভাবে তোমরা আমার মন্দির অপবিত্র করেছ। তোমরা চুক্তি ভেঙ্গে জঘন্য কাজ করেছ আর তারপর রুটি, চর্বি ও রক্তে নৈবেদ্য আমাকে দিয়েছ।
26-Ezekiel 44:8 : তোমরা আমার পবিত্র বিষয়গুলির পবিত্রতা রক্ষা করনি। না, তোমরা বিদেশীদের উপরে আমার পবিত্র স্থানের দায়িত্ব দিয়েছ।
26-Ezekiel 44:9 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যে বিদেশী প্রকৃত অর্থে সুন্নত নয়, সে আমার মন্দিরে আসবে না - এমনকি ইস্রায়েলের মধ্যে স্থায়ীভাবে বাসকারী কোন বিদেশীও নয়। তাকে অবশ্যই সুন্নত হতে হবে এবং মন্দিরে আসার আগে সে যেন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আমার হাতে দেয়।
26-Ezekiel 44:10 : অতীতে ইস্রায়েল আমাকে ছেড়ে বিপথে গেলে লেবীয়রাও আমাকে পরিত্যাগ করেছিল। ইস্রায়েল তাদের মূর্ত্তিদের অনুসরণ করার জন্য আমায় ত্যাগ করেছিল। লেবীয়রা তাদের সেই পাপের শাস্তি পাবে।
26-Ezekiel 44:11 : আমার পবিত্র স্থানের পরিচর্য়া করার জন্য লেবীয়দের মনোনীত করা হয়েছিল। তারা মন্দিরের প্রবেশের দরজাগুলি পাহারা দিত, মন্দিরে সেবা করত। তারা উত্সর্গের জন্যে পশুবলি দিত এবং প্রজাদের জন্য হোমবলি উত্সর্গ করত। প্রজাদের সাহায্য ও সেবা করার জন্য তাদের বেছে নেওয়া হয়েছিল।
26-Ezekiel 44:12 : কিন্তু ঐ লেবীয়রা প্রজাদের আমার বিরুদ্ধে পাপ করতে সাহায্য করেছিল। তারা লোকদের মূর্ত্তি পূজোয সাহায্য করেছিল! তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে এই প্রতিশ্রুতি করছি: ‘তাদের পাপের জন্য তারা শাস্তি ভোগ করবে।”‘ প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 44:13 : “তাই আমার উদ্দেশ্যে যাজকীয কাজ করার জন্য লেবীয়রা আমার কাছে নৈবেদ্য নিয়ে আসবে না। তারা আমার পবিত্র কোন কিছুরই কাছে আসবে না। তারা তাদের জঘন্য কাজকর্মগুলির লজ্জা বহন করবে।
26-Ezekiel 44:14 : কিন্তু আমি তাদের আমার মন্দিরের যত্ন নিতে দেব। তারা মন্দিরের যেখানে যা করা কর্তব্য তাই করবে।
26-Ezekiel 44:15 : “যাজকরা সবাই লেবী পরিবারগোষ্ঠীর হলেও ইস্রায়েলের প্রজারা আমার থেকে তাদের মুখ ফিরিয়ে নিলে কেবল সাদোক পরিবারের যাজকরাই আমার পবিত্র স্থানের যত্ন নিত। তাই কেবল সাদোকের উত্তর পুরুষরাই আমার জন্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে। তারা মেদ ও রক্ত উত্সর্গ করতে আমার সামনে দাঁড়াবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন!
26-Ezekiel 44:16 : “তারা আমার পবিত্র স্থানে প্রবেশ করবে আর আমাকে সেবা করবার জন্য আমার টেবিলের কাছে আসবে। আমি তাদের হাতে যা দিয়েছি তারা তা রক্ষা করবে।
26-Ezekiel 44:17 : প্রাঙ্গণের দরজা দিয়ে ভেতরে ও মন্দিরে প্রবেশ করার সময় তারা যেন মসীনার কাপড় পরে এবং ভিতরের প্রাঙ্গণের দরজায ও মন্দিরে সেবা করার সময় তারা যেন পশমের তৈরী কোন কিছু না পরে।
26-Ezekiel 44:18 : তারা মাথায় মসীনার পাগড়ী বাঁধবে ও মসীনার জাঙ্গিযা পরবে এবং এমন কিছু পরবে না যাতে ঘাম হয়।
26-Ezekiel 44:19 : বাইরের প্রাঙ্গণে লোকদের কাছে যাবার সময় পরিচর্য়া করাকালীন যে কাপড় পরতে হয় তা ছেড়ে ফেলবে। ঐ কাপড়গুলি পবিত্র ঘরেই রেখে আসবে এবং অন্য কাপড় পরবে। এই ভাবে তারা লোকদের পবিত্র কাপড়গুলির স্পর্শ লাভ করতে দেবে না।
26-Ezekiel 44:20 : “এই যাজকরা তাদের মাথা কামিয়ে ফেলবে না অথবা চুলও লম্বা করবে না। তা করলে মনে হবে তারা দুঃখিত, প্রভুকে সেবা করার সুযোগ পেয়ে তারা আনন্দিত নয়। যাজকরা কেবল চুল কাটতে পারবে।
26-Ezekiel 44:21 : কোন যাজকই ভেতরের প্রাঙ্গণে আসার সময় দ্রাক্ষারস পান করবে না।
26-Ezekiel 44:22 : যাজকরা কখনই বিধ্বা বা ত্যাগপত্র দেওয়া হয়েছে এমন কোন মহিলাকে বিয়ে করবে না। তারা কেবল ইস্রায়েল পরিবারেরই কোন কুমারীকে বিয়ে করতে পারে অথবা এমন কোন বিধ্বাকে যার মৃত স্বামী যাজক ছিলেন।
26-Ezekiel 44:23 : “যাজকরা অবশ্যই আমার লোকদের পবিত্র ও সধারণ জিনিসের মধ্যে প্রভেদ কি তা শিক্ষা দেবে। কোনটি শুচি, কোনটি অশুচি তা জানতেও তারা অবশ্য লোকদের সাহায্য করবে।
26-Ezekiel 44:24 : যাজকরা বিচারসভায বিচারক হবে; প্রজাদের বিচার করার সময় আমার বিধি অনুসরণ করবে। তারা আমার সমস্ত পর্বে আমার বিধি নিয়মগুলি পালন করবে। তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিনকে সম্মান করবে ও তা পবিত্রভাবে যাপন করবে।
26-Ezekiel 44:25 : তারা কোন মৃত ব্যক্তির কাছে গিয়ে নিজেদের অশুচি করবে না। কিন্তু মৃত ব্যক্তি যদি তাদের বাবা, মা, পুত্র, কন্যা, ভাই অথবা অব্বিাহিত বোন হয় তবে তারা অশুচি হতে পারে।
26-Ezekiel 44:26 : শুচি হলে পরে যাজকদের সাত দিন অপেক্ষা করতে হবে।
26-Ezekiel 44:27 : তারপর সে সেই পবিত্রস্থানে ফিরে যেতে পারে কিন্তু যেদিন সে পবিত্রস্থানের পরিচর্য়া করতে ভেতরের প্রাঙ্গণে যাবে, সেই দিন তাকে নিজের জন্য পাপার্থক বলি উত্সর্গ করতে হবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
26-Ezekiel 44:28 : “লেবীয়দের অধিকারে যে জমি আছে তার সম্বন্ধে: আমিই তাদের সম্পত্তি; তুমি ইস্রায়েলের লেবীয়দের কোন সম্পত্তি দেবে না। ইস্রায়েলে আমিই তাদের আধিকার।
26-Ezekiel 44:29 : তারা শস্য নৈবেদ্য, পাপার্থক নৈবেদ্য ও দোষার্থক নৈবেদ্য খাবার জন্য পাবে। ইস্রায়েলের লোকে প্রভুকে যা কিছুই দেয় তা তাদেরই হবে।
26-Ezekiel 44:30 : ফসল তোলার পর, সমস্ত রকম শষ্যের প্রথম অংশ যাজকদের হয়। তোমরা ও তোমাদের প্রথম শষ্যের ভাগ যাজকদের দেবে। একাজ তোমাদের গৃহে আশীর্বাদ আনবে।
26-Ezekiel 44:31 : স্বাভাবিক ভাবে মারা গেছে বা বন্য পশুতে কামড়ে ছিঁড়েছে এমন কোন পাখি বা পশুর মাংস যাজকরা অবশ্য খাবে না।
26-Ezekiel 45:1 : “ইস্রায়েল পরিবারের জন্য তোমার জমি বণ্ট্ন করা উচিত্‌।সেই সময়, জমির একটি অংশ পৃথক করে রাখবে যা প্রভুর জন্য পবিত্র হবে। সেই জমির মাপ দৈর্য়্ঘে পঁচিশ হাজার হাত ও প্রস্থেথ 20 ,000 হাত হবে: জমির সবটাই হবে পবিত্র।
26-Ezekiel 45:2 : দৈর্য়্ঘে ও প্রস্থে 500 হাত করে একটি চারকোণা জায়গা মন্দিরের জন্য ব্যবহার করা হবে। মন্দিরের চারধারে 50 হাত চওড়া একটি খোলা জায়গা থাকবে।
26-Ezekiel 45:3 : সেই পবিত্র জায়গার মধ্যে তুমি একটি পঁচিশ হাজার হাত দীর্ঘ ও দশ হাজার হাত প্রস্থের জমি মাপবে - মন্দিরটা এই জায়গাতেই হবে। মন্দিরের এই জায়গাটি হবে পবিত্রতম স্থান।
26-Ezekiel 45:4 : পবিত্র স্থানের এই অংশটি যাজক ও মন্দিরের ভৃত্যদের জন্য; যারা প্রভুর সেবা করার জন্য এগিয়ে আসে। সেটা যাজকদের ঘরের জন্য ও মন্দিরের জন্য।
26-Ezekiel 45:5 : আরেকটি স্থান যা মাপে পঁচিশ হাজার হাত দীর্ঘ ও দশ হাজার হাত চওড়া তা হবে লেবীয়দের জন্য, যারা মন্দিরে সেবা করে। সেই জমি লেবীয়দের অধিকারে থাকবে এবং বাস করবার জন্য তাদের শহর হবে।
26-Ezekiel 45:6 : “সেই শহরকে তুমি পঁচিশ হাজার হাত লম্বা ও পাঁচ হাজার হাত চওড়া একটি ক্ষেত্র দেবে। এটা হবে সমস্ত ইস্রায়েল পরিবারের জন্য।
26-Ezekiel 45:7 : পবিত্র স্থানের উভয় পার্শ্বে এবং শহরটির জমির একটি ভাগে শাসকের অংশ থাকবে। সেই স্থানটি হবে পবিত্রস্থানের পাশে ও পূর্ব ও পশ্চিম শহরের সীমানা। ইস্রায়েলের কোন পরিবারগোষ্ঠীর অধিকারের জমি যত চওড়া, এ জমিও ঠিক ততটাই চওড়া হবে। তা পশ্চিম সীমা থেকে পূর্ব সীমা পর্য়ন্ত বিস্তৃত হবে।
26-Ezekiel 45:8 : এই জমি হবে ইস্রায়েলের শাসকদের সম্পত্তি। সেই জন্য শাসকদের আমার প্রজাদের জীবন কষ্টকর করে তোলার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু তারা সেই জমি ইস্রায়েলকে তাদের পরিবারগোষ্ঠীর জন্য দেবে।”
26-Ezekiel 45:9 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন, “ইস্রায়েলের শাসকরা, যথেষ্ট হয়েছে আর আমার লোক জনের প্রতি হিংস্র হোযো না! ইস্রায়েলকে তাদের পরিবার গোষ্ঠীগুলির জমি দাও।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
26-Ezekiel 45:10 : “লোক ঠকানো বন্ধ কর। সঠিক পাল্লা ও মাপ ব্যবহার কর।
26-Ezekiel 45:11 : ঐফার (শুকনো জিনিস মাপার জন্য পাত্র) ও বাত (তরল জিনিস মাপার পাত্র) এর মাপ যেন এক হয়। বাত ও ঐফা যেন উভয়েই যেন 1/10 হোমার হয়। ঐ মাপগুলি যেন হোসরের মাপ অনুসারেই হয়।
26-Ezekiel 45:12 : এক শেকল 20 গেরার সমান। এক মিনা 60 শেকলের সমান, তা অবশ্যই 20 শেকল যোগ 25 শেকল যোগ 15 শেকলের সমান হয়।
26-Ezekiel 45:13 : “এই বিশেষ নৈবেদ্যগুলি তোমরা অবশ্যই দেবে:প্রত্যেক হোসর গম থেকে 1/6 ঐফা গম দাও। প্রত্যেক হোসর বার্লি থেকে 1/6 ঐফা বার্লি দাও।
26-Ezekiel 45:14 : প্রতি কোর ওলিভ তেলের জন্য 1/10 বাত পরিমাণ ওলিভ তেল। মনে রেখো: দশ বাতে এং হোসর হয়। দশ বাতে এং কোর হয়।
26-Ezekiel 45:15 : ইস্রায়েলের চারণ ভূমিতে চরে এমন প্রতিটি 200 মেষ থেকে একটি করে মেষ।“এই বিশেষ নৈবেদ্যগুলি শস্য নৈবেদ্য, হোমবলির নৈবেদ্য ও সহভাগীতার নৈবেদ্যর জন্য। এইসব নৈবেদ্য লোকদের শুচি করবার জন্য।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 45:16 : “নগরের প্রত্যেকে এই উপহার দেবার জন্য ইস্রায়েলের শাসকের সঙ্গে যোগ দেবে।
26-Ezekiel 45:17 : কিন্তু বিশেষ পবিত্র দিনের জন্য যা প্রযোজন তা অবশ্যই শাসক দেবে। শাসক অবশ্যই উত্সবের দিনগুলির জন্য, অমাবস্যা ও নিস্তারপর্বের জন্য, এবং ইস্রায়েলের পরিবারের সমস্ত বিশেষ উত্সবের জন্য হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং পেয নৈবেদ্যর য়োগান দেবে। ইস্রায়েল পরিবারকে পবিত্র করার জন্য যে পাপার্থক নৈবেদ্য, শস্য নৈবেদ্য, হোমবলি ও সহভাগীতার নৈবেদ্যর প্রয়োজন তা অবশ্যই য়োগাবে।”
26-Ezekiel 45:18 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “প্রথম মাসের প্রথম দিনে তুমি এংটি নিখুঁত ষাঁড় নেবে; মন্দির পবিত্র করতে তা ব্যবহার কর।”
26-Ezekiel 45:19 : যাজক পাপার্থক বলি থেকে কিছুটা রক্ত নিয়ে তা মন্দিরের চৌকাঠে, বেদীর চার কোণে এবং ভেতরের প্লাঙ্গনের দরজার চৌকাঠে লাগাবে।
26-Ezekiel 45:20 : সেই মাসের সপ্তম দিনেও তুমি অজ্ঞাতে যে ব্যক্তি পাপ করেছে ও যে অবোধ তার জন্য ঐ একই কাজ করবে। এই ভাবে তুমি সেই মন্দির শুচি করবে।
26-Ezekiel 45:21 : “প্রথম মাসের 14 তম দিনে তুমি নিস্তারপর্ব পালন করবে। খামিরবিহীন রুটির ভোজের পর্বও সেই সময় শুরু হয় আর সাত দিন ধরে চলে।
26-Ezekiel 45:22 : সেই সময় শাসক নিজের জন্য ও ইস্রায়েলের লোকদের জন্য পাপমোচন নৈবেদ্য হিসাবে এংটি ষাঁড় উত্সর্গ করবে।
26-Ezekiel 45:23 : উত্সবের সাত দিনের প্রত্যেকদিন শাসক নিখুঁত সাতটি ষাঁড় ও একটি পুং মেষ সরবরাহ করবে। সেই গুলি প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি রূপে উত্সর্গ করা হবে। এছাড়াও, প্রত্যেকদিন তাকে একটি করে পুং ছাগও অবশ্যই উত্সর্গ করবার জন্য দিতে হবে।
26-Ezekiel 45:24 : শাসক প্রত্যেক ষাঁড়ের সাথে শস্য নৈবেদ্য হিসাবে এক ঐফা বার্লি এবং প্রতি মেষের সাথে এক ঐফা পরিমাণ বার্লি দেবে। শাসক প্রত্যেক ঐফার শস্যের সাথে এক হিন পরিমাণ তেলও দেবে।
26-Ezekiel 45:25 : নিস্তারপর্বের সাত দিনই শাসক ঐ একই কাজ করবে। সপ্তম মাসের 15 তম দিনে ঐ উত্সব শুরু হয়। এই নৈবেদ্যগুলি হবে পাপার্থক নৈবেদ্য, হোমবলির নৈবেদ্য, শস্য নৈবেদ্য ও তেল উত্সর্গ।”
26-Ezekiel 46:1 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “ভিতরের প্রাঙ্গণের পূর্বের দিকের দরজা সপ্তাহে কাজ করার ছয় দিন বন্ধ থাকবে কিন্তু নিস্তারপর্বের দিন ও অমাবস্যায তা খুলে দেওয়া হবে।
26-Ezekiel 46:2 : শাসক সেই দরজার অলিন্দ দিয়ে গিয়ে চৌকাঠে দাঁড়াবে। যাজক তখন শাসকের সেই হোমবলি ও সহভাগীতার নৈবেদ্য উত্সর্গ করবে। শাসক কিন্তু দরজার মুখে উপাসনা করবে এবং তারপর বাইরে যাবে। সূর্য়্য়াস্ত পর্য়ন্ত সেই দরজা বন্ধ করা হবে না।
26-Ezekiel 46:3 : সাধারণ লোকরাও নিস্তারপর্বের দিনে ও অমাবস্যার দিনে সেই দরজায দাঁড়িয়ে প্রভুর উপাসনা করবে।
26-Ezekiel 46:4 : “শাসক নিস্তারপর্বের দিন প্রভুকে উত্সর্গ করার জন্য অবশ্যই ছটি নির্দোষ মেষশাবক ও নিখুঁত পুং মেষের য়োগান দেবে।
26-Ezekiel 46:5 : নৈবেদ্য হিসাবে মেষের সাথে তাকে এক ঐফা শস্য দিতে হবে তবে মেষশাবকের সাথে দেওয়া শস্য নৈবেদ্যর পরিমাণ শাসকের ইচ্ছানুসারেই হবে। কিন্তু প্রতি ঐফা শস্যের সাথে তিনি অবশ্যই এক হিন পরিমাণ তেল দেবেন।
26-Ezekiel 46:6 : “অমাবস্যার দিন তাকে এক নির্দোষ যুব ষাঁড়, ছটি মেষশাবক ও একটি পুং মেষ উত্সর্গ করতে হবে।
26-Ezekiel 46:7 : শাসক প্রতি ষাঁড়ের সাথে ও প্রতি পুং মেষের সঙ্গে এক এক ঐফা শস্য আনবে। মেষশাবকের সাথে যে শস্য নৈবেদ্য দিতে হবে তার পরিমাণ শাসকের ইচ্ছানুযাযী হতে পারে কিন্তু প্রতি ঐফা শস্যের সঙ্গে তাকে অবশ্যই এক হিন পরিমাণ তেল দিতে হবে।
26-Ezekiel 46:8 : “ঢোকার সময় শাসক অবশ্যই পূর্ব দিকের দরজার বারান্দায প্রবেশ করবে এবং সেই দিক দিয়েই বেরিয়ে আসবে।
26-Ezekiel 46:9 : “বিশেষ পর্বের সময় সাধারণ মানুষ যখন প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাত্‌ করতে আসে, তখন যে ব্যক্তি উপাসনা করার জন্য উত্তরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সে দক্ষিণের দরজা দিয়ে বাইরে যাবে আর যে ব্যক্তি দক্ষিণের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সে উত্তরের দরজা দিয়ে বাইরে যাবে। যে পথে প্রবেশ করা হয়েছে সেই পথ দিয়ে কেউ যেন বাইরে না যায়। প্রত্যেক ব্যক্তি যেন সোজা পথ চলে বাইরে বার হয়।
26-Ezekiel 46:10 : শাসক লোকদের মধ্যে থাকবে। লোকেরা ভেতরে প্রবেশ করলে শাসকও প্রবেশ করবে এবং তারা বার হলে সেও বার হবে।
26-Ezekiel 46:11 : “পর্বের সময় এবং বিশেষ বিশেষ সমাবেশের সময় প্রতিটি বৃষ - বতসের সঙ্গে এক ঐফা শস্য নৈবেদ্য এবং প্রতি পুং মেষের সঙ্গেও এক ঐফা করে শস্য নৈবেদ্য উত্সর্গ করতে হবে। মেষশাবকের সাথে শস্য নৈবেদ্যর পরিমাণ যে ব্যক্তি ঐটি উত্সর্গ করছে তার ইচ্ছানুযাযী হতে পারে কিন্তু তাকে প্রতি ঐফা শস্যের সঙ্গে অবশ্যই যেন এক হিন পরিমাণ তেল দিতে হবে।
26-Ezekiel 46:12 : “শাসক যখন প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজের ইচ্ছানুসারে উপহার আনে তখন তা হোমবলি, সহভাগীতার বলি বা মনের ইচ্ছানুযাযী উত্সর্গ হতে পারে - এর জন্য পূর্ব দিকের দরজা খোলা থাকবে। শাসক নিস্তারপর্বের মত তার হোমবলি ও সহভাগীতার বলি উত্সর্গ করবে এবং সে চলে গেলে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
26-Ezekiel 46:13 : “প্রতিদিন তুমি একটি নির্দোষ এক বত্সর বযস্ক মেষশাবকের য়োগান দেবে। তা প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি রূপে উত্সর্গ করা হবে। প্রতি সকালে তার য়োগান দেবে।
26-Ezekiel 46:14 : তাছাড়া প্রতি দিন সকাল বেলা মেষশাবকের সঙ্গে শস্য নৈবেদ্যও উত্সর্গ করবে। গম ভেজাবার জন্য প্রতি 1/6 ঐফা গমের সঙ্গে 1/3 হিন পরিমান তেলও তোমাকে দিতে হবে। এ হবে প্রভুর উদ্দেশ্যে প্রতি দিনের জন্য উত্সর্গীকৃত শস্য নৈবেদ্য।
26-Ezekiel 46:15 : তারা চিরকাল প্রতি সকাল বেলা মেষশাবক, শস্য নৈবেদ্য, ও তেল হোমবলি উত্সর্গ করার জন্য দেবে।”
26-Ezekiel 46:16 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “যদি শাসক তার জমির কোন অংশ তার পুত্রকে দেয়, তবে সেই অংশ পুত্রদের সম্পত্তি হবে।”
26-Ezekiel 46:17 : কিন্তু শাসক যদি সেই জমির অংশ উপহার হিসাবে তার কোন এক দাসকে দেয় তবে তা কেবল মুক্তির বছরপর্য়ন্ত সেই দাসের অধিকারে থাকবে তারপর তা শাসকের কাছে ফেরত যাবে। কেবল শাসকের পুত্ররাই উপহারের স্থায়ী অধিকারী হতে পারে।
26-Ezekiel 46:18 : শাসক লোকদের কোন জমি নেবে না বা তাদের জোরপূর্বক জমি ছেড়ে যেতে বাধ্য করবে না। শাসক কেবল মাত্র তার নিজের জমির কিছু অংশ তার পুত্রদের দেবে এবং এই ভাবে আমার লোকরা তাদের জমি ছাড়তে বাধ্য হবে না।”
26-Ezekiel 46:19 : সেই পুরুষ আমায় দরজার পাশের প্রবেশ পথে চালিত করে উত্তর দিকে যাজকদের জন্য যে পবিত্র ঘরগুলি আছে সেইখানে নিয়ে গেলেন। সেখানে পশ্চিম প্রান্তের সরু রাস্তাটিতে আমি একটা স্থান দেখলাম।
26-Ezekiel 46:20 : সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এইস্থানে যাজকদের দোষমোচনের বলি ও পাপমোচনের বলি অবশ্য সেদ্ধ করতে হবে। তারা শস্য নৈবেদ্য পোড়াবে, তাই তাদের এইসব নৈবেদ্য প্রাঙ্গণে নিয়ে আসার দরকার হবে না। তারা এইসব পবিত্র জিনিষ বাইরে আনবে না যেখানে লোকেরা থাকে।”
26-Ezekiel 46:21 : তখন সেই পুরুষটি আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে এনে প্রাঙ্গণের চারধারে চালিত করল। আমি বড় প্রাঙ্গণটির চার কোণে ছোট ছোট প্রাঙ্গণ দেখতে পেলাম।
26-Ezekiel 46:22 : প্রতি প্রাঙ্গণের কোণে একটি করে ছোট ঘেরা জায়গা ছিল। প্রতিটি ছোট প্রাঙ্গণ লম্বায় 40 হাত ও চওড়ায় 30 হাত করে ছিল। চারটি স্থানেরই মাপ এক।
26-Ezekiel 46:23 : প্রতিটি ছোট চার বারান্দার চারধার ইঁটের দেওয়ালে ঘেরা ছিল। ইঁটের দেওয়ালে স্থানে স্থানে রান্নার জায়গা ছিল।
26-Ezekiel 46:24 : সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এই রান্না ঘরগুলিতেই, মন্দিরের সেবকরা লোকরা যে সব উত্সর্গগুলি আনবে সেগুলি সেদ্ধ করবে।”
26-Ezekiel 47:1 : সেই পুরুষটি আমায় আবার মন্দিরের প্রবেশস্থানে নিয়ে এল। আমি মন্দিরের পূর্বের দরজার নীচে দিয়ে জল বয়ে আসতে দেখলাম। (মন্দিরের সম্মুখভাগ পূর্ব দিকে মুখ করা।) জলের ধারা মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে বয়ে বেদীর দক্ষিণ দিক পর্য়ন্ত যাচ্ছিল।
26-Ezekiel 47:2 : সেই পুরুষটি আমায় উত্তর দিকের দরজা দিয়ে নিয়ে গিয়ে পূর্ব দিকের বাইরের দরজার বাইরে চারধার দেখালেন। জল দরজার দক্ষিণ দিক থেকে বইছিল।
26-Ezekiel 47:3 : সেই পুরুষটি একটি মাপার ফিতে নিয়ে পূর্ব দিকে হাঁটল। তারপর
26-Ezekiel 47:10 : 00 হাত দূরত্ব মেপে আমাকে জলের মধ্যে দিয়ে সেই স্থানে হেঁটে যেতে বলল। সেখানকার জলের গভীরতা গোড়ালি পর্য়ন্ত ছিল।
26-Ezekiel 47:4 : সেই পুরুষটি আরও
26-Ezekiel 47:10 : 00 হাত মেপে আমাকে সেই স্থানে জলের মধ্যে হেঁটে যেতে বলল; সেখানে জল আমার হাঁটু পর্য়ন্ত উঠল। তারপর সে আরও
26-Ezekiel 47:10 : 00 হাত মেপে সেই স্থানে আমাকে জলের মধ্যে হেঁটে যেতে বলল। সেখানে জল আমার কোমর পর্য়ন্ত উঠল।
26-Ezekiel 47:5 : তারপর সেই পুরুষটি আরও
26-Ezekiel 47:10 : 00 হাত মাপল, কিন্তু সেখানকার জল পার হয়ে যাবার পক্ষে খুব গভীর ছিল। জল সেখানে নদীর মত বয়ে যাচ্ছিল, সাঁতরে যাবার পক্ষে যথেষ্ট গভীর, কিন্তু পার হয়ে যাবার পক্ষে খুব বেশী গভীর।
26-Ezekiel 47:6 : তখন সেই পুরুষটি আমায় বলল, “হে মনুষ্যসন্তান, তুমি যা দেখলে তা কি মনোযোগ সহকারে দেখেছ?”তারপর সেই পুরুষটি আমায় নদীর ধারে নিয়ে গেল।
26-Ezekiel 47:7 : আমি সেই নদীর ধার দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে সেই জলের দুধারে অনেক গাছ দেখতে পেলাম।
26-Ezekiel 47:8 : সেই পুরুষটি আমায় বলল, “এই জলে পূর্ব দিকে অরাবা তলভূমি পর্য়ন্ত বয়ে যাচ্ছে।
26-Ezekiel 47:9 : এই জল মৃতসাগরে বয়ে যাচ্ছে এবং সেটি সেই সমুদ্রের জলকে পরিষ্কার ও সতেজ করে তুলবে। এই জলে অনেক মাছ থাকবে এবং নদীটি যে সমস্ত জায়গা দিয়ে বয়ে গেছে সেখানে সব রকমের জীবজন্তু বাস করে।
26-Ezekiel 47:10 : তুমি ঐন্ - গদী থেকে ঐন্ - ইগ্লযিম পর্য়ন্ত নদীর দুধারে জেলেদের দেখতে পাবে। তুমি তাদের জাল ফেলে বিভিন্ন রকমের মাছ ধরতেও দেখবে। ভূমধ্যসাগরের মতোই মৃত সাগরেও বহু প্রকারের মাছ থাকবে।
26-Ezekiel 47:11 : কিন্তু পাঁকের জায়গা ও ছোট ছোট জলাভূমিগুলি পরিষ্কার হবে না, তা নোনতা হয়ে ওঠার জন্য ছেড়ে দেওয়া আছে।
26-Ezekiel 47:12 : নদীর দুধারে সব রকমের ফলের গাছ জন্মাবে। তাদের পাতা কখনও খসে পড়বে না। ঐ গাছগুলি ফল দেওয়াও বন্ধ করবে না। গাছগুলিতে প্রতি মাসেই ফল ধরবে কারণ গাছগুলির জন্য যে জল প্রয়োজন তা মন্দির থেকে আসে। গাছগুলির ফল খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবং তাদের পাতাগুলো রোগ আরোগ্য করবার জন্য ব্যবহৃত হবে।”
26-Ezekiel 47:13 : প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “তুমি ইস্রায়েলের বারো পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে এই সীমা অনুসারে জমি ভাগ করবে। যোষেফের জন্য দুই অংশ থাকবে।”
26-Ezekiel 47:14 : তুমি জমি সমান ভাগে ভাগ করবে। আমি এই জমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেব বলে প্রতিশ্রতি দিয়েছিলাম বলেই তা তোমাদের দিচ্ছি।
26-Ezekiel 47:15 : “জমির সীমানা এইরকম: উত্তর দিকে তা হিত্‌লোনের পথে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যাবে যেখানে রাস্তা ঘুরে গেছে হমাত্‌, সদাদ,
26-Ezekiel 47:16 : বরোথা, সিব্রযিম (যা দম্মেশক ও হম্মাতের সীমার মধ্যে অবস্থিত) এবং হত্‌সর - হত্তীকোন, যেটা হৌরণের সীমানায অবস্থিত।
26-Ezekiel 47:17 : সুতরাং সেই সীমানা সমুদ্র থেকে দম্মেশকের সীমানার উত্তরদিকে অবস্থিত হত্‌সোর ঐনন পর্য়ন্ত যাবে। আর হমাতের সীমা হচ্ছে ঐ উত্তর প্রান্ত।
26-Ezekiel 47:18 : “পূর্ব দিকের সেই সীমা হত্‌সোর ঐনন অর্থাত্‌ হৌরণ ও দম্মেশকের মধ্য থেকে গিলিয়দ ও ইস্রায়েল দেশের মধ্যে য়র্দন নদীর ধার বরাবর পূর্ব সমুদ্রের দিকে একদম তামর পর্য়ন্ত। এ হবে পূর্ব সীমা।
26-Ezekiel 47:19 : দক্ষিণ দিকে, সীমা হবে তামর থেকে মরীবা কাদেশের হ্রদ পর্য়ন্ত। তারপর তা মিশরের নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যাবে। এটা হবে দক্ষিণ দিকের সীমা।
26-Ezekiel 47:20 : “আর পশ্চিম পাড়ে ভূমধ্যসাগর একেবারে লীবো হমাতের সামনে পর্য়ন্ত সীমাস্বরূপ। এটা হবে পশ্চিমের সীমানা।
26-Ezekiel 47:21 : “এইভাবে তোমরা ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর জন্য তোমাদের মধ্যে জমি ভাগ করে দেবে।
26-Ezekiel 47:22 : তোমাদের সম্পত্তি হিসাবে এটা তোমরা তোমাদের মধ্যে এবং তোমাদের মধ্যে যে বিদেশীরা বাস করে যাদের সন্তান - সন্ততি আছে তাদের মধ্যে বণ্ট্ন করে দেবে। এই বিদেশীরা সেখানকার বাসিন্দা তাদের ইস্রায়েলীয় বলে গন্য হবে। ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে তাদের তুমি কিছু জমি ভাগ করে দেবে।
26-Ezekiel 47:23 : সেই বাসিন্দারা যেখানে বাস করে, সেখানকার পরিবারগোষ্ঠী তাদের কিছু জমি দেবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন।
26-Ezekiel 48:1 : “উত্তর দিকের সীমা পূর্বদিকে ভূমধ্যসাগর হতে হিত্‌লোন ও হমাতের পথে এবং শেষে হত্‌সর ঐনন পর্য়ন্ত গেছে। এটা দম্মেশক ও হমাতের মধ্যবর্তী সীমাতে। এই দলের পরিবারগোষ্ঠীর জমি এই সীমার পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্য়ন্ত যাবে। উত্তর থেকে দক্ষিণে এখানকার পরিবারগোষ্ঠীরা হল: দান, আশের, নপ্তালি, মনঃশি, ইফ্রযিম, রূবেণ ও যিহূদা।
26-Ezekiel 48:2 : -
26-Ezekiel 48:3 : -
26-Ezekiel 48:4 : -
26-Ezekiel 48:5 : -
26-Ezekiel 48:6 : -
26-Ezekiel 48:7 : -
26-Ezekiel 48:8 : “জমির পরবর্তী অংশ বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহার জন্য রয়েছে। এই জমি যিহূদার দক্ষিণে অবস্থিত। এর ক্ষেত্র উত্তর থেকে দক্ষিণে লম্বায় পঁচিশ হাজার হাত এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে এর চওড়া ততটাই যতটা জমি অন্য পরিবারগোষ্ঠীর অধিকারে। এই জমির মধ্যভাগে মন্দিরটি রয়েছে।
26-Ezekiel 48:9 : তোমরা এই জমি প্রভুর উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করবে। এর মাপ লম্বায় পঁচিশ হাজার হাত এবং চওড়ায় 20,000 হাত।
26-Ezekiel 48:10 : জমির এই বিশেষ অংশ যাজক গন ও লেবীয়দের মধ্যে বণ্ট্ন করে দেওয়া হবে।“যাজকরা এই জমির এক অংশ পাবে। সেই জমি উত্তরে লম্বায় হবে পঁচিশ হাজার হাত, চওড়ায় পশ্চিমে দশ হাজার হাত, পূর্বদিকে চওড়ায় পঁচিশ হাজার হাত এবং দক্ষিণে লম্বায় পঁচিশ হাজার হাত। এই জমির মধ্যেই প্রভুর মন্দিরটি হবে।
26-Ezekiel 48:11 : এই জমি সাদোকের উত্তরপুরুষদের জন্য। এই লোকরা আমার পবিত্র যাজক হিসাবে মনোনীত কারণ তারা যেসময় ইস্রায়েলীয়রা আমায় পরিত্যাগ করে, সে সময়েও তারা আমায় সেবায রত ছিল। লেবী পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের মত সাদোকের পরিবার আমায় পরিত্যাগ করে যায়নি।
26-Ezekiel 48:12 : জমির পবিত্র অংশের এই ভাগ বিশেষভাবে এই যাজকদের জন্য। এ জমির অবস্থান লেবীদের জমির পাশেই।
26-Ezekiel 48:13 : “যাজকদের পরেই লেবীদের জন্য জমির যে ভাগ থাকবে তা লম্বায় পঁচিশ হাজার হাত এবং চওড়ায় দশ হাজার হাত। তারা মাপে সবটাই পাবে - অর্থাত্‌ দৈর্য়্ঘে পঁচিশ হাজার হাত ও প্রস্থে 20,000 হাত।
26-Ezekiel 48:14 : লেবীয়রা এই জমির কোন অংশ বিক্রি বা তা নিয়ে ব্যবসা করবে না। এই জমি তারা বিক্রি করতে পারবে না এবং দেশের এই অংশকে টুকরো করতে পারবে না। কারণ এই জমি প্রভুর - এটার বিশেষ মূল্য রয়েছে, তা দেশের উত্তর অংশে অবস্থিত।
26-Ezekiel 48:15 : “যাজক ও লেবীয়দের দেবার পর পঁচিশ হাজার হাত দৈর্য়্ঘের ও পাঁচ হাজার হাত প্রস্থেথর মাপের জমি অবশিষ্ট থাকবে। এই জমি শহরের জন্য বা পশুদের তৃণভূমি বা ঘরবাড়ি বানানোর জন্য থাকবে। সাধারণ লোকে এই জমি ব্যবহার করতে পারে। শহরটা এর মাঝখানে হবে।
26-Ezekiel 48:16 : শহরের মাপগুলি এই: উত্তরদিকে তা হবে 4,500 হাত, দক্ষিণে 4,500 হাত, পূর্বে 4,500 হাত এবং পশ্চিমে 4,500 হাত।
26-Ezekiel 48:17 : শহরে তৃণভূমি থাকবে আর তা হবেউত্তরে ও দক্ষিণে 250 হাত, পূর্ব ও পশ্চিমে 250 হাত।
26-Ezekiel 48:18 : পবিত্র স্থানের ধারে পূর্বে ও পশ্চিমে দশ হাজার হাত করে যে জায়গা পড়ে থাকবে তা শহরের কর্মীদের জন্য খাদ্যের য়োগান দেবে।
26-Ezekiel 48:19 : শহরের কর্মীরা এই জমি চাষ করবে। কর্মীরা ইস্রায়েলের যে কোন পরিবারগোষ্ঠীরই হতে পারে।
26-Ezekiel 48:20 : “জমির এই বিশেষ অংশ হবে একটি বর্গক্ষেত্র যেটি লম্বায় ও চওড়ায় পঁচিশ হাজার হাত হবে। পবিত্র অংশটি এবং শহরের অন্য অংশটি এই জমির অন্তর্ভূক্ত হবে।
26-Ezekiel 48:21 : “সেই বিশেষ জমির কিছু অংশ শহরের শাসকের জন্য থাকবে। জমির বিশেষ অংশটি বর্গক্ষেত্র লম্বায় ও চওড়ায় পঁচিশ হাজার হাত। জমির কিছু অংশ যাজকদের, কিছুটা লেবীয়দের এবং কিছুটা মন্দিরের জন্য। এই জমির মধ্যে মন্দির থাকবে। জমির বাকিটা দেশের শাসকের। বিন্যামীন ও যিহূদার জমির মধ্যে যে জায়গা তা শাসক পাবে।
26-Ezekiel 48:22 : -
26-Ezekiel 48:23 : “এই পূর্ব্বোল্লিখ জাতিগুলি মতই অবশিষ্ট জাতিরা সেই একই পূর্ব ও পশ্চিমের সীমা পাবে। উত্তর থেকে দক্ষিণে এই পরিবারগোষ্ঠীগুলি হল: বিন্যামীন, শিমিয়োন, ইষাখর, সবূলূন ও গাদ।
26-Ezekiel 48:24 : -
26-Ezekiel 48:25 : -
26-Ezekiel 48:26 : -
26-Ezekiel 48:27 : -
26-Ezekiel 48:28 : “গাদের জমির দক্ষিণ সীমা তামোর থেকে মরীবা কাদেশের জলাশয় এবং তারপর মিশরের স্রোত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্য়ন্ত যাবে।
26-Ezekiel 48:29 : এবং এই জমিই তুমি ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেবে। সেটাই প্রত্যেক দল পাবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
26-Ezekiel 48:30 : “শহরের এই ফটকগুলির নাম ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর নামানুসারে রাখা হবে। শহরের ফটকগুলি হবে এখানে বর্নিত ফটকগুলির মতই।“শহর উত্তর দিকে লম্বায় হবে 4,500 হাত
26-Ezekiel 48:31 : ফটকের সংখ্যা হবে তিনটি: রূবেণের ফটক, যিহূদার ফটক ও লেবীর ফটক।
26-Ezekiel 48:32 : “শহরের পূর্ব দিক লম্বায় হবে 4,500 হাত। সেখানকার তিনটি দ্বারের নাম হবে যোষেফের দ্বার, বিন্যামীনের দ্বার এবং দানের দ্বার।
26-Ezekiel 48:33 : শহরের দক্ষিণ দিক লম্বায় হবে 4,500 হাত এবং তার তিনটি দরজার নাম হবে: শিমিয়োনের দ্বার, ইষাখরের দ্বার এবং সবূলূনের দ্বার।
26-Ezekiel 48:34 : “শহরের পশ্চিম দিক লম্বায় হবে 4,500 হাত।সেখানেও তিনটি দ্বার থাকবে। তাদের নাম হবে: গাদের দ্বার, আশেরের দ্বার ও নপ্তালির দ্বার।
26-Ezekiel 48:35 : “শহরের চারধারে দূরত্ব হবে 18,000 হাত আর এখন থেকে শহরের নাম হবে: ‘প্রভু তত্র’।”