Go Back
Book Id: 10030
আল কুরআন: বাংলা অনুবাদ, আবদুস শহীদ নাসিম
Chapter: 76, আল ইনসান বা আদ্-দাহার (মানুষ বা কাল)
মক্কায় মতান্তরে মদিনায় অবতীর্ণ, আয়াত সংখ্যা : ৩১, রুকু সংখ্যা: ০২এই সূরার আলোচ্যসূচি
|
76-1 : মানুষের উপর কি কালের এমন অধ্যায় অতিবাহিত হয়নি, যখন উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিলনা সে? ![]() |
76-2 : আমরা তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি সংমিশ্রিত নোতফা (শুক্র বিন্দু) থেকে, তাকে পরীক্ষা করার জন্যে। আর এ উদ্দেশ্যেই আমরা তাকে অধিকারী করেছি শ্রবণ শক্তি আর দৃষ্টি শক্তির (অর্থাৎ - জ্ঞান বুদ্ধি বিবেকের)। ![]() |
76-3 : আমরা তাকে জীবন যাপনের সঠিক পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে ইচ্ছে করলে আমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলতে পারে, কিংবা হতে পারে অকৃতজ্ঞ। ![]() |
76-4 : অকৃতজ্ঞদের জন্যে আমরা তৈরি করে রেখেছি শিকল, বেড়ি, আর জ্বলন্ত আগুন। ![]() |
76-5 : সৎ - সত্যপন্থী (কৃতজ্ঞ) লোকেরা (জান্নাতে) এমন সব পান পাত্র থেকে (শরাব) পান করবে, যে পানীয় থাকবে (সুগন্ধ) কর্পুর মিশ্রিত। ![]() |
76-6 : তা হবে এমন একটি ঝর্ণা, যা থেকে কেবল আল্লাহর প্রিয় দাসেরাই পান করবে। তারা যেদিকে ইচ্ছা প্রবাহিত করে নেবে এই ঝর্ণা। ![]() |
76-7 : (আল্লাহর এই প্রিয় দাসেরা হলো সেই সব লোক) যারা তাদের মানত (আল্লাহর অনুগত হয়ে থাকার অঙ্গীকার) পূর্ণ করে এবং এমন একটি দিনের ভয়ে ভীত - কম্পিত থাকে, যে দিনটির বিপদ ছড়িয়ে পড়বে সবখানে। ![]() |
76-8 : আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে তারা তাদের খাদ্য দান করে দেয় মিসকিন, এতিম ও বন্দিদেরকে। ![]() |
76-9 : (খাদ্য দান করার সময়) তারা বলে (কিংবা এই মনোভাব পোষণ করে যে), ‘‘আমরা তোমাদের আহার্য দান করছি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে। এর বিনিময়ে আমরা তোমাদের কাছে কোনো প্রকার প্রতিদান কিংবা কৃতজ্ঞতা আশা করিনা। ![]() |
76-10 : আমরা তো আমাদের মালিকের পক্ষ থেকে এক দীর্ঘ ভয়ংকর দিনের আশংকায় ভীত।’’ ![]() |
76-11 : ফলে, আল্লাহ তাদেরকে সেই দিনটির ক্ষতি ও অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন এবং দান করবেন সৌন্দর্য - দীপ্তি (a light of beauty) আর আনন্দ প্রফুল্লতা (joy)। ![]() |
76-12 : তাছাড়া তাদের সবরের (আল্লাহর পথে ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে চলার) বিনিময়ে তিনি তাদের প্রতিদান দেবেন জান্নাত, আর রেশমি পোশাক। ![]() |
76-13 : সেখানে তারা সমাসীন হবে উঁচু উঁচু সুসজ্জিত আসনে। খরতপ্ত সূর্যতাপ কিংবা প্রচন্ড শীতে সেখানে তারা কষ্ট পাবেনা। ![]() |
76-14 : তাদের উপর বিস্তীর্ণ থাকবে জান্নাতের বৃক্ষরাজির ছায়া, আর ফলরাজি থাকবে সব সময়ই তাদের নাগালের মধ্যে। ![]() |
76-15 : তাদের মাঝে (খাদ্য ও পানীয়) পরিবেশন করা হবে রৌপ্য পাত্র আর স্ফটিক - স্বচ্ছ (crystal) পান পাত্রে। ![]() |
76-16 : রজত স্বচ্ছ স্ফটিকের (crystal) পাত্রে পরিবেশনকারীরা পরিবেশন করবে পরিমাণ মতো। ![]() |
76-17 : সেখানে তাদের শরাব পান করতে দেয়া হবে জানজাবিল (ginger) মিশ্রিত। ![]() |
76-18 : আর (জানজাবিল মিশ্রিত) এই শরাব হবে মূলত জান্নাতের একটি ঝর্ণা, যার নাম হলো ‘সালসাবিল’। ![]() |
76-19 : সেখানে তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে এমনসব চিরবালক (boys of everlasting youth), যাদের দেখলে তোমার মনে হবে, ওরা যেনো ছড়ানো মুক্তা! ![]() |
76-20 : সেখানে গিয়ে যখন দেখবে, দেখতে পাবে নিয়ামত আর নিয়ামত (ভোগ বিলাসের সীমাহীন সামগ্রী), আর দেখতে পাবে (তোমাকে দেয়া হয়েছে) এক বিশাল সাম্রাজ্য (a great dominion)। ![]() |
76-21 : তাদের পরিধানে থাকবে সবুজ রঙের সুক্ষ্ম - মিহি রেশমি পোশাক, আর সোনালি কিংখাবের বস্ত্ররাজি। তাদের অলংকৃত করা হবে রৌপ্য নির্মিত ব্রেসলেট দিয়ে আর তাদের প্রভু তাদের পান করাবেন শরাবান তহুরা (অনাবিল পানীয়)। ![]() |
76-22 : (তাদের বলা হবে) এগুলো তোমাদের জন্যে পুরস্কার (reward), কারণ তোমাদের সায়ী (চেষ্টা - সাধনা) কবুল করা হয়েছে। ![]() |
76-23 : আমরাই পর্যায়ক্রমে তোমার প্রতি এ কুরআন নাযিল করছি। ![]() |
76-24 : সুতরাং ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে তোমার প্রভুর নির্দেশ পালন করে যাও। আর তাদের মধ্যকার কোনো পাপিষ্ঠ কিংবা অবিশ্বাসীর আনুগত্য করোনা। ![]() |
76-25 : আর তোমার প্রভুর নাম স্মরণ করো সকাল - সন্ধ্যায়। ![]() |
76-26 : রাত্রি বেলায় তাঁর প্রতি সাজদায় অবনত হও এবং রাতে দীর্ঘ সময় তসবিহ করতে থাকো তাঁর। ![]() |
76-27 : এই (অবিশ্বাসী) লোকেরা তো পছন্দ করে নিয়েছে এ পৃথিবীর জীবনকে, আর উপেক্ষা করছে পরবর্তী (পরকালের) কঠিন দিবসকে। ![]() |
76-28 : আমরাই সৃষ্টি করেছি এদের, তারপর তাদের গঠন করেছি মজবুতভাবে। অতপর আমরা যখন চাইবো তাদের পরিবর্তে নিয়ে আসবো অনুরূপ কোনো জাতিকে। ![]() |
76-29 : এটি (কুরআন) একটি উপদেশ বাণী। অতএব, যার ইচ্ছা সে তার প্রভুর (সন্তুষ্টির) পথ অবলম্বন করতে পারে। ![]() |
76-30 : তোমাদের ইচ্ছায় কিছুই হয়না, যদি আল্লাহ ইচ্ছা না করেন। অবশ্যি আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও প্রজ্ঞাময়। ![]() |
76-31 : তিনি যাকে চান, নিজের অনুগ্রহের অন্তরভুক্ত করে নেন, কিন্তু যালিমদের কথা ভিন্ন। তাদের জন্যে তো তিনি তৈরি করে রেখেছেন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ![]() |