Masadir Book

Go Back
Book Id: 10160

বাইবেল- পুরানো ইচ্ছাপত্র

Chapter: 17, এস্থার / Esther

17-Esther 1:1 : মহারাজ অহশ্বেরশের রাজত্বকালে এই ঘটনা ঘটেছিল। অহশ্বেরশ ভারতবর্ষ থেকে কূশ দেশ পর্য়ন্ত বিস্তৃত 127 টি প্রদেশের শাসনকর্তা ছিলেন।
17-Esther 1:2 : তাঁর রাজধানী শূশনের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি সাম্রাজ্য শাসন করতেন।
17-Esther 1:3 : রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের তৃতীয় বছরে তিনি তাঁর আধিকারিক ও নেতাদের জন্য একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন। পারস্য ও মাদিযার সেনাবাহিনীর প্রধান সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও প্রশাসকরা সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
17-Esther 1:4 : এই ভোজসভা একটানা 180 দিন ধরে চলেছিল। সেই সময়, রাজা অহশ্বেরশ সবাইকে তাঁর সাম্রাজ্যের বিপুল সম্পদ, তাঁর রাজপ্রাসাদের রাজকীয সৌন্দর্য় ও ঐশ্বর্য় প্রদর্শন করেছিলেন।
17-Esther 1:5 : এই 180 দিন শেষ হবার পর তিনি তাঁর প্রাসাদের ভেতরের বাগানে সাতদিন ব্যাপী আরো একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন। রাজধানী শূশনের সব চেযে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ লোক সকলকেই সেই ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়।
17-Esther 1:6 : প্রাসাদের ভেতরের বাগানে সাদা ও নীল রঙের দামী লিনেন কাপড়ের চাঁদোযা টাঙ্গানো ছিল। শ্বেতপাথরের স্তম্ভে রূপোর আংটায লিনেনের সাদা ও বেগুনী কাপড়ের দড়ি দিয়ে সেগুলি ঝোলানো হয়। বহুমূল্য পাথর, য়েমন মুক্তো, শ্বেতপাথর এবং অন্যান্য পাথর, খচিত মেঝেতে বসানো ছিল সোনা ও রূপোর তৈরী কেদারা।
17-Esther 1:7 : সোনার পানপাত্রে দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হত। এই পানপাত্রগুলি ছিল বিভিন্ন আকারের। রাজা অহশ্বেরশ খুবই বদান্য ছিলেন বলে সেখানে সুরার প্রাচুর্য় ছিল।
17-Esther 1:8 : অহশ্বেরশ খুবই উদার প্রকৃতির ছিলেন। তিনি দ্রাক্ষারসবাহক ভৃত্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, অতিথিদের য়েন তাদের পছন্দ মতো দ্রাক্ষারস পরিবেশন করা হয়। আর তাঁর পরিবেশকরাও রাজাজ্ঞা অনুযায়ীঅঢেল পরিমাণ দ্রাক্ষারস পরিবেশন করেছিল।
17-Esther 1:9 : একই সময়, রাণী বষ্টীও রাজপ্রাসাদে মহিলাদের জন্য একটি আলাদা ভোজসভার ব্যবস্থা করেছিলেন।
17-Esther 1:10 : ভোজসভার সপ্তম দিনে দ্রাক্ষারস পান করবার পর প্রফুল্ল মনে রাজা অহশ্বেরশ, মহূমন, বিস্থা, হর্বোণা, বিগ্থা, অবগথ, সেথর, কর্ক্কস প্রমুখ সাত জন পরিবেশনকারী নপুংসককে আদেশ করলেন রাণী বষ্টীকে সম্রাজ্ঞীর মুকুট পরিয়ে সেখানে নিয়ে আসতে। তিনি চাইছিলেন সভায় উপস্থিত গণ্যমান্য অতিথিদের রাণী বষ্টী তাঁর সৌন্দর্য় প্রদর্শন করুন। কারণ রানী বষ্টী ছিলেন খুবই সুন্দরী।
17-Esther 1:11 : -
17-Esther 1:12 : কিন্তু রাজার ভৃত্যরা গিয়ে যখন রাণীকে তাঁর আদেশের কথা জানালো, তিনি রাজার সভায় আসতে রাজী হলেন না। এর ফলে রাজা খুবই রুদ্ধ হলেন।
17-Esther 1:13 : প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী, রাজা বিধি ও শাস্তি সম্পর্কে বিচক্ষণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করলেন। কর্শনা, শেথর, অদ্মাখা, তর্শীশ, মেরস, মর্সনা, মমূখন প্রমুখ এই সাত জন পরামর্শদাতা ছিলেন রাজার খুবই ঘনিষ্ঠ এবং পারস্য ও মাদিয়ার সর্বাপেক্ষা উচ্চপদস্থ আধিকারিকবর্গ।
17-Esther 1:14 : -
17-Esther 1:15 : রাজা তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “বিধি অনুযায়ীরাণী বষ্টীকে কি শাস্তি দেওয়া য়েতে পারে? কারণ রাজা অহশ্বেরশের য়ে আদেশ নপুংসক ভৃত্যরা তাঁর কাছে নিয়ে গিয়েছিল তা তিনি পালন করেন নি।”
17-Esther 1:16 : তখন আধিকারিক মমূখন অন্যান্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে রাজাকে বললেন: “রাণী বষ্টী রাজার প্রতি অন্যায় করেছেন এবং রাজা অহশ্বেরশের সাম্রাজ্যের সমস্ত রাজ্যের সকল নেতা ও লোকদের প্রতি অন্যায় করেছেন।
17-Esther 1:17 : “কারণ সাম্রাজ্যের অন্যান্য নারীরা এই ঘটনার কথা জানার পর, তারাও তাদের স্বামীদের নির্দেশ অমান্য করবে। আর তখন রশ্ন করলে তারা সকলেই রাণী বষ্টীর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলবে, ‘রাজা অহশ্বেরশের রানী বষ্টীকে তাঁর সামনে আসতে আদেশ করেছিলেন কিন্তু তিনি তা করতে অস্বীকার করেছিলেন।’
17-Esther 1:18 : “পারস্য ও মাদিযার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের স্ত্রীরা রাণীর এই ব্যবহার স্বচক্ষে দেখলেন। এর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তাঁরাও এবার রাজার আধিকারিকদের সঙ্গে এই একই ব্যবহার করবেন এবং ফলতঃ গৃহবিবাদ ও অশান্তির সূচনা হবে।”
17-Esther 1:19 : “সুতরাং মহারাজ যদি ইচ্ছা করেন তবে আমার পরামর্শ: রাজার নামে এবং পারস্য ও মাদিয়ার রাজার শাসনমতে একথা লেখা হোক, ‘বষ্টী য়েন আর কখনও রাজাকে নিজের মুখ না দেখান।’ বষ্টী য়েন আর কখনও এই প্রাসাদে পা না রাখেন এবং রাজা তাঁর রাণীর পদ কোন য়োগ্যতর নারীকে দেন।
17-Esther 1:20 : রাজার এই আদেশ যখন তাঁর সুবিস্তৃত সাম্রাজ্যে ঘোষণা করা হবে একমাত্র তখনই সবচেযে গণ্যমান্য থেকে একেবারে তুচ্ছ সমস্ত মহিলারা তাদের স্বামীকে শ্রদ্ধা করবে।”
17-Esther 1:21 : রাজা অহশ্বেরশ এবং তাঁর আধিকারিকদের এই উপদেশ পছন্দ হল। তাই রাজা মমূখনের উপদেশ অনুযায়ীই কাজ করলেন।
17-Esther 1:22 : অহশ্বেরশ তাঁর রাজ্যের প্রতিটি অঞ্চলে প্রতিটি ভাষায় চিঠি পাঠালেন য়ে প্রত্যেকটি পুরুষ তার পরিবারের শাসক হবে।
17-Esther 2:1 : পরে রাজা অহশ্বেরশের রাগ কমলে বষ্টী কি কি করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তিনি কি নির্দেশ দিয়েছেন, সে কথা তাঁর মনে পড়লো।
17-Esther 2:2 : রাজার ব্যক্তিগত ভৃত্যরা তখন তাঁর জন্য সুন্দরী কুমারী কন্যা অনুসন্ধানের প্রস্তাব করলো। তারা বলল, “প্রথমে মহারাজ বয়ং তাঁর শাসনাধীন প্রত্যেকটি প্রদেশে এক জন নেতা বেছে নেবেন।
17-Esther 2:3 : এরপর সেই নেতারা তাদের অঞ্চলের সুন্দরী কুমারীদের রাজধানী শূশনে নিয়ে আসবে। তারপর এদের সকলকে রাখা হোক রাজঅন্তঃপুরচারিণীদের সঙ্গে মহিলাদের দায়িত্বে য়ে আছে সেই রাজার নপুংসক হেগয়ের তত্ত্বাবধানে। তারপর তাদের রূপ পরিচর্য়া করা হবে।
17-Esther 2:4 : তারপর রাজা তাদের মধ্যে এক জনকে রাণী বষ্টীর (শূন্য) পদে অভিষিক্ত করবেন।” রাজার এই প্রস্তাব মনে ধরায় তিনি এতে সম্মত হলেন।
17-Esther 2:5 : এসময়ে রাজধানী শূশনে মর্দখয় নামে বিন্যামীনের পরিবারের এক ইহুদী ব্যক্তি বাস করতেন। মর্দখয় ছিলেন যায়ীরের পুত্র ও কীশের পৌত্র।
17-Esther 2:6 : বাবিল - রাজ নবূখদ্নিত্‌সর যিহূদা - রাজ যিহোয়াকিনকে অন্যান্য ইহুদীদের সঙ্গে এবং মর্দখয়ের সঙ্গে জেরুশালেম থেকে বন্দী করে নিয়ে যান।
17-Esther 2:7 : মর্দখয়ের হদসা নামে একটি সম্পর্কিত বোন ছিল। পিতা - মাতা না থাকায় মর্দখয় তাকে নিজের কন্যা স্নেহে প্রতিপালন করেন। এই মিষ্টি, রূপসী, স্বাস্থ্যবতী রমণীর আরেকটি নাম ছিল ইষ্টের।
17-Esther 2:8 : রাজ্যে রাজার আদেশ জারি হবার পর রাজধানী শূশনে হেগযের তত্ত্বাবধানে য়েসব যুবতীদের আনা হয়েছিল তাদের মধ্যে ইষ্টেরও ছিলেন।
17-Esther 2:9 : হেগয় ইষ্টেরকে পছন্দ করতো। এমে সে হেগয়ের বেশ প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠে এবং হেগয় যত্নসহকারে ইষ্টেরের খাবারদাবার ও রূপ পরিচর্য়ার ব্যবস্থা করে। রাজপ্রাসাদ থেকে সাত জন পরিচারিকাকে বেছে নিয়ে হেগয় তাদের ইষ্টেরের পরিচর্য়ায নিয়োগ করে। তারপর হেগয়, ইষ্টের ও তার সাত পরিচারিকাকে সেখানে স্থানান্তরিত করে যেখানে রাজার মহিলারা বাস করত।
17-Esther 2:10 : ইষ্টের য়ে ইহুদী সেকথা ও কাউকে বলেনি। মর্দখয় তাকে তার পারিবারিক বৃত্তান্ত প্রকাশ করতে বারণ করেছিল, সুতরাং সে কারো কাছে কিছু খুলে বলে নি।
17-Esther 2:11 : প্রত্যেক দিন মর্দখয় এসে রাজঅন্তঃপুরচারিণীদের বাসস্থানের আশেপাশে ঘোরাফেরা করতেন। ইষ্টের কেমন আছে আর তার জীবণে কী ঘটছে জানার জন্যই মর্দখয় রোজ আসতেন।
17-Esther 2:12 : রাজা অহশ্বেরশের সামনে উপস্থিত হবার আগে প্রতিটি মেযেকে এক বছর ধরে রূপচর্চা করতে হোত। রূপচর্চার জন্য তাদের ছ’মাস সুগন্ধী তেল মাখতে হত এবং তারপর আরো ছ’মাস অন্য উত্কৃষ্টতম সুগন্ধি মাখতে হত।
17-Esther 2:13 : শুধু মাত্র এভাবেই প্রতিটি যুবতী রাজার সামনে য়েতে পারতো! এসময়ে একটি মেয়ের যা কিছু প্রয়োজন রাজঅন্তঃপুর থেকে তা দেওয়া হতো।
17-Esther 2:14 : সন্ধ্যায় রাজপ্রাসাদে ঢোকার পর, মেযেটিকে পর দিন ভোরে প্রাসাদের আরেকটি অংশে, যেখানে অন্য মহিলারা থাকত সেখানে ফিরে আসতে হতো। এরপর তাকে শাশ্গস নামে আরেকজন নপুংসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হতো। শাশ্গস ছিল রাজার উপপত্নীদের তত্ত্বাবধায়ক। যতক্ষণ পর্য়ন্ত না রাজা সন্তুষ্ট হয়ে বয়ং ঐ মেয়েদের ডেকে পাঠাতেন ততক্ষণ তারা কখনও রাজার কাছে ফিরে য়েতে পারতো না।
17-Esther 2:15 : ইষ্টেরের যখন রাজার কাছে যাবার পালা এলো, ইষ্টের কোন কিছু চাইলেন না। শুধু তিনি নপুংসক হেগয়ের পরামর্শ চাইলেন য়ে, তাঁর সঙ্গে করে কি নিয়ে যাওয়া উচিত্‌। (ইষ্টের ছিলেন মর্দখয়ের পোষ্যপুত্রী, তিনি ছিলেন তার মামা অবীহয়িলের কন্য।) ইষ্টেরকে য়েই দেখতো সেই পছন্দ করতো।
17-Esther 2:16 : অতঃপর রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের সপ্তম বছরের দশম মাসে অর্থাত্‌ টেবেত্‌ মাসে ইষ্টেরকে রাজার সামনে নিয়ে আসা হল।
17-Esther 2:17 : রাজা অন্যান্য মেয়েদের চেয়ে সব চেয়ে বেশি ইষ্টেরকেই ভালবাসলেন এবং তিনি দ্রুত তাঁর প্রিয়তমা হয়ে উঠলেন। এরপর রাজা অহশ্বেরশ ইষ্টেরের মাথায় মুকুট পরিয়ে তাঁকে রাণী বষ্টীর আসনে রাণী হিসেবে অভিষিক্ত করলেন।
17-Esther 2:18 : ইষ্টেরের সম্মানে রাজা তাঁর রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ গণ্যমান্য ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি বড় ভোজসভার আয়োজন করলেন। এছাড়াও প্রত্যেকটি প্রদেশে ছুটি ঘোষণা করা হল ও দাতা রাজা অহশ্বেরশ তাঁর লোকদের অনেক উপহার পাঠালেন।
17-Esther 2:19 : সমস্ত মেয়েরা যখন দ্বিতীয় বারের জন্য এক সঙ্গে জড়ো হল, মর্দখয় তখন রাজদ্বারের কাছেই বসেছিলেন।
17-Esther 2:20 : ইষ্টের য়ে ইহুদী তা ইষ্টের তখনও গোপন রেখেছিলেন। নিজের পরিবারের ইতিহাসও তিনি কাউকে জানান নি, কারণ মর্দখয় তাঁকে সত্য প্রকাশ করতে বারণ করেছিলেন। বরাবরের মতো ইষ্টের মর্দখয়কে মান্য করা অব্যাহত রাখল য়েমনটি সে করত যখন মর্দখয় তার য়ত্ন নিত।
17-Esther 2:21 : মর্দখয় যখন রাজপ্রাসাদের দ্বারের কাছে বসেছিলেন তিনি শুনতে পেলেন বিগ্থন ও তেরশ নামে রাজার দুই আধিকারিক যারা দরজায পাহারায ছিল, রাজার প্রতি রুদ্ধ হয়ে তাঁকে হত্যা করার চএান্ত করছে।
17-Esther 2:22 : মর্দখয় এই চএান্তের কথা শুনতে পেয়ে তা ইষ্টেরকে জানালেন এবং রাণী ইষ্টের একথা জানালেন বয়ং রাজাকে। রাণী ইষ্টের রাজাকে একথাও বললেন য়ে মর্দখয় এই চএান্তের কথা জানতে পেরেছে।
17-Esther 2:23 : অনুসন্ধান করে দেখা গেল, মর্দখয় য়ে খবর জানিয়েছেন তা সঠিক। তখন ঐ দুই দ্বাররক্ষীকে একটি স্তম্ভে ঝুলিয়ে ফাঁসি দেওয়া হল। এই সমস্ত ঘটনা রাজার সামনে রচিত ‘রাজাগনের ইতিহাস’ গ্রন্থে নথিবদ্ধ করা আছে।
17-Esther 3:1 : এসব ঘটনা ঘটার পরে রাজা অগাগীয় হম্মদাথার পুত্র হামন নামে এক ব্যক্তিকে সম্মান জানান। রাজা হামনকে উচ্চপদে উন্নীত করেন এবং তাঁর অন্য সমস্ত আধিকারিকদের থেকে উচ্চতর পদে তাকে নিযুক্ত করেন।
17-Esther 3:2 : রাজা নির্দেশ দিয়েছিলেন য়ে মুখ্যদ্বার দিয়ে ঢোকবার সময় প্রত্যেক ব্যক্তিকে মাথা ঝুঁকিয়ে হামনকে সম্মান জানাতে হবে। তাই রাজার সব নেতারা রাজদ্বারে হামনের কাছে প্রণত হয়ে তাঁকে সম্মান জানাতেন, কিন্তু শুধুমাত্র মর্দখয় তা করতে রাজী হলেন না।
17-Esther 3:3 : তখন অন্যান্য প্রধানরা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “আপনি কেন রাজার নির্দেশ মেনে হামনকে সম্মান দেখান না?”
17-Esther 3:4 : সমস্ত প্রধানরা এবিষয়ে দিনের পর দিন মর্দখয়কে বলা সত্ত্বেও মর্দখয় হামনের সামনে কোন মতেই মাথা নীচু করতে রাজী হলেন না। তখন হামন কি করে তা দেখার জন্য এই সমস্ত নেতারা হামনকে একথা জানালেন। মর্দখয় এই আধিকারিকদের বলেছিলেন য়ে তিনি ইহুদী।
17-Esther 3:5 : হামন যখন দেখলেন সত্যি সত্যিই মর্দখয় তাকে সম্মান দেখাতে অনিচ্ছুক তখন তিনি খুবই রুদ্ধ হলেন।
17-Esther 3:6 : মর্দখয় য়ে ইহুদী হামন সে কথাও জেনেছিলেন। হামনের ইচ্ছা ছিল শুধু মর্দখয় নয়, রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যে বসবাসকারী মর্দখযের জাতির সবাইকে হত্যা করা হোক।
17-Esther 3:7 : অহশ্বেরশের রাজত্বের দ্বাদশ বছরের প্রথম মাসে, নীষণ মাসে হামন অক্ষ নিক্ষেপ করে একটি মাসের একটি বিশেষ দিন বেছে নিলেন। সেই দিনটি ছিল দ্বাদশতম মাস, অদর মাস। (সে সময় অক্ষকে “পূরও” বলা হোত।)
17-Esther 3:8 : তারপর রাজা অহশ্বেরশের কাছে এসে হামন বললেন, “হে রাজন, আপনার রাজ্যের সর্বত্র এক বিশেষ জাতির মানুষরা বাস করছে, যাদের সংস্কৃতি অন্যদের থেকে আলাদা। তারা অন্য কোন জাতির লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করে না, এমন কি আপনার বিধিও মেনে চলে না। এই সমস্ত লোকদের আপনার রাজ্যে বসবাস করতে দেওয়া উচিত্‌ বলে আমি মনে করি না।
17-Esther 3:9 : “রাজার প্রতি আমার বিনীত নিবেদেন: আমার পরামর্শ হল, এই সব লোকদের শেষ করে দেওয়ার জন্য আপনি নির্দেশ দিন। আর আমি রাজ কোষাগারে দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা জমা দেবো।”
17-Esther 3:10 : রাজা তখন তাঁর আঙুল থেকে একটি আংটি বের করে হামনকে দিলেন। হামন ছিলেন ইহুদীদের শএু। তিনি ছিলেন অগাগিয হম্মদাথার পুত্র। রাজা তাঁকে বললেন, “রৌপ্য মুদ্রাগুলি তুমি তোমার জন্য রাখ এবং ইহুদীদের তুমি যা খুশি করতে পারো।”
17-Esther 3:11 : - - - -
17-Esther 3:12 : তখন প্রথম মাসের
17-Esther 3:13 : দিনে রাজার সমস্ত সচিবদের ডেকে পাঠানো হল এবং তারা প্রত্যেক আঞ্চলিক ভাষায় হামনের নির্দেশ লিখে নিলো। তারা সেই নির্দেশ লিখে নিয়ে সমস্ত অঞ্চলের প্রাদেশিক কর্তাকে পাঠিয়ে দিল। এই নির্দেশ বয়ং রাজা অহশ্বেরশের হুকুমে লেখা হল এবং জারি করা হল এবং তাঁর অঙ্গুরীয দিয়ে শীলমোহর করা হল।
17-Esther 3:13 : এই সমস্ত চিঠি নিয়ে বার্তাবাহকরা রাজ্যের সমস্ত অঞ্চলে গেলেন। চিঠিটি একটি নির্দিষ্ট দিনে বযস নির্বিশেষে সমস্ত ইহুদীকে শেষ করবার আদেশ বহন করছিল। দ্বাদশতম মাস, অদর মাসের
17-Esther 3:13 : দিনকে এই হত্যালীলার জন্য বাছা হয়েছিল। এছাড়াও, ইহুদীদের সমস্ত বিষয সম্পত্তি বাজেযাপ্ত করবার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।
17-Esther 3:14 : এই নির্দেশ সম্বলিত চিঠির প্রতিলিপি সমস্ত প্রদেশগুলিতে এবং সব লোকদের কাছে পাঠানো হল। বলা হোল এই আদেশকে বিধি হিসেবে মানতে হবে এবং প্রকাশ্য স্থানে রাখতে হবে যাতে ওই সমস্ত লোকরা সেই দিনের জন্য প্রস্তত হতে পারে।
17-Esther 3:15 : রাজার নির্দেশে বার্তাবাহকরা যেখানে এই আদেশ জারি হয়েছিল, সেই রাজধানী শূশন থেকে তত্ক্ষণাত্‌ রওনা হল। তারপর রাজা ও হামন একসঙ্গে দ্রাক্ষারস পান করতে বসলেন। শূশনের সকলে এ নির্দেশে বিচলিত হল। ভুল বোঝাবুঝি হল। লোকে উদ্বিগ্ন হল।
17-Esther 4:1 : মর্দখয় এসব কথা জানতে পারলেন। তিনি ইহুদীদের বিরুদ্ধে রাজার দেওয়া নির্দেশের কথা জানতে পেরে, নিজের প্রকৃত পোশাক ছিঁড়ে ফেলে শোকের পোশাক পরলেন। তারপর সারা মাথায় ভস্ম মেখে উচ্চস্বরে কাঁদতে কাঁদতে শহরে বেড়ালেন।
17-Esther 4:2 : তিনি এভাবে রাজদ্বার পর্য়ন্ত গেলেন কারণ শোকের পোশাক পরে কাউকে এভাবে দরজার ভেতরে য়েতে দেওয়া হতো না।
17-Esther 4:3 : প্রত্যেকটি প্রদেশে যেখানে যেখানে রাজার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল যেখানে ইহুদী সম্প্রদাযের মধ্যে শোকের ছায়া পড়ে গিয়েছিল। তারা সকলে অভুক্ত থেকে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করছিল। অনেক ইহুদী মাথায় ভস্ম মেখে মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছিল।
17-Esther 4:4 : ইষ্টেরের পরিচারিকা ও নপুংসক পরিচারকরা এসে তাঁকে মর্দখয়ের কথা জানালো। সেকথা শুনে ইষ্টের মর্মাহত ও বিষণ্ন হলেন। তিনি শোকের পোশাক ছেড়ে ফেলতে অনুরোধ জানিয়ে মর্দখয়ের জন্য জামাকাপড় পাঠালেন। কিন্তু মর্দখয় তা পরতে রাজী হলেন না।
17-Esther 4:5 : তখন ইষ্টের হথক নামে রাজার এক নপুংসক পরিচারককে ডেকে পাঠালেন। হথককে রাজা ইষ্টেরের পরিচর্য়ার কাজে নিয়োগ করেছিলেন। তাকে ইষ্টের মর্দখয়ের দুঃখের কারণ অনুসন্ধান করতে বললেন।
17-Esther 4:6 : তখন হথক রাজপ্রাসাদের ফটকের সামনে শহরের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে যেখানে মর্দখয় অপেক্ষা করছিল সেখানে গেল।
17-Esther 4:7 : মর্দখয় হথককে যা যা ঘটেছে সে সব কথাই বললেন। এমনকি ইহুদীদের নিধনের জন্য হামন রাজকোষাগারে য়ে অর্থ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সঠিক পরিমাণও মর্দখয় তাকে জানালেন।
17-Esther 4:8 : মর্দখয় তাকে ইহুদী হত্যার জন্য রাজার দেওয়া নির্দেশ - নামার একটি প্রতিলিপিও দিলেন। এই নির্দেশ - নামাটি শূশনের সর্বত্র পাঠানো হয়েছিল। তিনি হথককে নির্দেশ - নামাটি ইষ্টেরকে দেখিয়ে যা ঘটেছিল তা ব্যাখ্যা করতে বললেন। উপরন্তু তিনি তাকে ইষ্টেরকে রাজার কাছে গিয়ে তাঁর স্বজাতীযদের জন্য ও মর্দখযের জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করার জন্য বলতে বললেন।
17-Esther 4:9 : হথক ফিরে গিয়ে ইষ্টেরকে মর্দখযের সব কথাই জানাল।
17-Esther 4:10 : ইষ্টের তখন হথককে বললেন, মর্দখয়কে জানাতে:
17-Esther 4:11 : “রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দা ও রাজার সমস্ত নেতারাই জানেন, য়ে ডাক না পড়লে পুরুষ বা নারী য়েই হোক না কেন রাজার কাছে য়েতে পারে না। যদি কেউ রাজার কাছে যায় তবে তার মৃত্যুদণ্ড হয়। এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিএম হল: রাজা যদি কারো হাতে তাঁর সোনার রাজদণ্ডটি দেন, তাহলে এক্ষেত্রে সে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে নিষ্কৃতি পায। কিন্তু আমাকে রাজা গত 30 দিনের মধ্যে একবারও ডেকে পাঠান নি।”
17-Esther 4:12 : মর্দখয়কে ইষ্টেরের বার্তা জানানো হলে তিনি ইষ্টেরকে বলে পাঠালেন: “ইষ্টের, এমন ভেবো না য়ে যদিও তুমি রাজপ্রাসাদে বাস করছো, ইহুদী হয়েও নিজে বেঁচে যাবে।
17-Esther 4:13 : -
17-Esther 4:14 : তুমি যদি এখন চুপ করে থাকো, ইহুদীদের জন্য সাহায্যস্বাধীনতা কোথাও না কোথাও থেকে আসবে, কিন্তু তুমি ও তোমার পিতার পরিবারের সকলে মারা যাবে। কে জানে, হয়তো ঠিক এরকম কোন একটা সময়ের জন্যই তোমাকে রাণী করা হয়েছে!”
17-Esther 4:15 : ইষ্টেরের উত্তরে মর্দখয়কে জানালেন: “শূশনের সমস্ত ইহুদীদের সঙ্গে আমার জন্য উপবাস করো। তিন দিন, তিন রাত্রি তোমরা কোন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ কর না। আমি ও আমার পরিচারিকারাও তোমাদের মতোই উপবাস করবো। তারপর আমি রাজার কাছে যাবো। আমি জানি, না ডাকতে রাজার কাছে যাওয়াটা নিয়ম বিরুদ্ধ। কিন্তু আমি তাও যাবো, তাতে যদি আমার মৃত্যুও হয়, তো হবে।”
17-Esther 4:16 : -
17-Esther 4:17 : মর্দখয় তখন গিয়ে ইষ্টের তাঁকে যা যা করতে বলেছিলেন সবই করলেন।
17-Esther 5:1 : তৃতীয় দিন ইষ্টের তাঁর বিশেষ পোশাক পরিধান করে রাজার প্রাসাদের ভেতরে গিয়ে রাজ দরবারের সামনে, রাজা যেখানে দরবার কক্ষের প্রবেশ পথের দিকে মুখ করে তাঁর সিংহাসনে বসতেন, সেখানে গিয়ে দাঁড়ালেন।
17-Esther 5:2 : রাণীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাজা খুবই খুশী হলেন এবং তত্‌ক্ষণাত্‌ তাঁর দিকে নিজের সোনার রাজদণ্ডটি এগিয়ে দিলেন। ইষ্টের তখন সভার ভেতরে রাজার সান্নিধ্যে গিয়ে সুবর্ণ রাজদণ্ডের শেষাংশ স্পর্শ করলেন।
17-Esther 5:3 : তখন রাজা ইষ্টেরকে রশ্ন করলেন, “কি কারণে তোমায় এতো বিমর্ষ দেখাচ্ছে রাণী ইষ্টের? তুমি কি আমায় কিছু জিজ্ঞেস করতে চাও? আমার কাছে যদি তুমি কিছু চাও, এমনকি তুমি যদি রাজ্যের অর্ধেকও চাও তাও আমি তোমায দেবো।”
17-Esther 5:4 : ইষ্টের জবাব দিলেন, “আমি আপনার জন্য ও হামনের জন্য একটি ভোজের আয়োজন করেছি। দয়া করে হামনের সঙ্গে আজ সেই ভোজসভায় আসুন।” রাজা বললেন, “হামনকে শীঘ্রই নিয়ে এসো যাতে ইষ্টের যা বলছে আমরা তাই করতে পারি।” অতএব রাজা ও হামন ইষ্টেরের আযোজিত ভোজসভায় গেলেন। যখন তাঁরা দ্রাক্ষারস পান করছিলেন তখন রাজা আবার ইষ্টেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার অনুরোধটা কি? তুমি যদি আমার রাজ্যের অর্ধেকও চাও তা তোমায় দেওয়া হবে। ইষ্টের উত্তর দিলেন, “আমার অনুরোধ হল, রাজা যদি আমার ওপর খুশী হয়ে থাকেন এবং তিনি যদি আমার ইচ্ছামত জিনিষ আমাকে দিতে পারেন তাহলে আমার ইচ্ছা হল: আমি চাই রাজা এবং হামন দয়া করে আগামীকাল আমার বাড়ীতে আসুন। আমি একটি ভোজসভার আয়োজন করব এবং ঐ সভায় আমার ইচ্ছা প্রকাশ করব।”
17-Esther 5:5 : -
17-Esther 5:6 : -
17-Esther 5:7 : -
17-Esther 5:8 : -
17-Esther 5:9 : হামন সেদিন রাজার বাড়ী থেকে খুবই খুশি মনে ও আনন্দিত চিত্তে আসছিলেন, কিন্তু রাজতোরনের সামনে মর্দখয়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি খুব রেগে গেলেন। তিনি যখন পাশ দিয়ে গেলেন তখন মর্দখয় মাথা নীচু করলেন না বা হামনকে সম্মান দেখালেন না। তিনি হামনকে কখনও ভয় পেতেন না আর এ ব্যপারে হামন খুব রুদ্ধ ছিলেন।
17-Esther 5:10 : যাই হোক কোন মতে রাগ চেপে হামন বাড়ি চলে গেলেন। বাড়ি ফিরে হামন তাঁর বন্ধুদের ও স্ত্রী সেরশকে ডেকে পাঠালেন।
17-Esther 5:11 : তারপর তিনি কত বড়লোক তা নিয়ে, তাঁর পুত্রদের সংখ্যা নিয়ে ও রাজা তাঁকে কি ভাবে খাতির করেন তা নিয়ে বড়াই করতে শুরু করলেন। রাজা য়ে তাঁকে রাজ্যের সর্বোচচ পদটি দিয়েছেন একথাও তিনি জানাতে ভুললেন না।
17-Esther 5:12 : “শুধু এই নয়,” হামন বললেন, “রাণী আগামীকাল রাজার জন্য য়ে ভোজসভার ব্যবস্থা করেছেন তাতে এক মাত্র আমাকেই রাজার সঙ্গে য়েতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
17-Esther 5:13 : কিন্তু এসব সত্ত্বেও আমি খুশি হতে পারছি না। যতক্ষণ ওই ইহুদী মর্দখয়টাকে রাজদ্বারের কাছে বসে থাকতে দেখবো ততক্ষণ আমার পক্ষে খুশী হওয়া সম্ভব নয়।”
17-Esther 5:14 : তখন হামনের স্ত্রী সেরশ ও হামনের বন্ধুরা পরামর্শ দিলেন, “কাউকে দিয়ে একটা বড় 75 ফুট মতো থাম্বা বানিয়ে, রাজাকে বলো সকাল বেলা ওটায মর্দখয়কে ফাঁসি দিতে। আর তারপর খুশি মনে রাজাকে নিয়ে ভোজসভায় য়েও!”এই প্রস্তাবটা হামনের বেশ মনে ধরায, তিনি মর্দখয়কে ফাঁসি দেবার জন্য স্তম্ভ বানাতে হুকুম দিলেন।
17-Esther 6:1 : সেদিন রাতে রাজার চোখে কিছুতেই ঘুম আসছিল না। রাজা তখন তাঁর এক ভৃত্যকে ডেকে রাজাদের ইতিহাস বই থেকে যেখানে রাজাদের রাজত্ব কালের সব ঘটনা নথিভুক্ত করা আছে তা পড়ে শোনাতে বললেন।
17-Esther 6:2 : ভৃত্যটি তখন রাজাকে, রাজার আধিকা - রিকবিগ্থন ও তেরশ যারা প্রবেশপথ পাহারা দিত, তাদের দুষ্ট চএান্তের কথা এবং মর্দখযের কথা, য়ে চএান্তের কথা শুনতে পেয়েছিল এবং প্রাসাদে জানিয়ে দিয়েছিল তা পড়ে শোনালো।
17-Esther 6:3 : রাজা জিজ্ঞেস করলেন, “মর্দখয়কে এর জন্য কি সম্মান এবং পুরস্কার দেওয়া হয়েছে?”ভৃত্যরা রাজাকে জানালো, “মর্দখযের জন্য কিছুই করা হয়নি।”
17-Esther 6:4 : ঠিক সে সময় হামন রাজপ্রাসাদের বহির্দ্বারে প্রবেশ করলেন। হামন, তখন মর্দখয়কে ফাঁসি দেবার জন্য রাজার অনুমোদন নিতে এসেছিলেন। রাজা বাইরে পাযের আওয়াজ পেয়ে জানতে চাইলেন, “এইমাত্র প্রাঙ্গণের ভেতরে কে এলো?”
17-Esther 6:5 : ভৃত্যরা উত্তর দিল, “হামন চাতালে দাঁড়িয়ে আছেন।”রাজা বললেন, “তাকে ভেতরে নিয়ে এসো।”
17-Esther 6:6 : হামন ভেতরে আসার পর রাজা তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, “হামন, রাজা কাউকে সম্মান দিতে চাইলে তা কিভাবে দেওয়া উচিত্‌?”হামন মনে মনে ভাবলো, “আমি ছাড়া সম্মান পাওয়ার আর কে আছে? আমি নিশ্চিত, রাজা নিশ্চয়ই আমাকে সম্মান জানানোর কথা ভাবছেন।”
17-Esther 6:7 : হামন তখন রাজাকে বললেন, “মহারাজ আপনি যদি কাউকে সম্মান দেখাতে চান তাহলে,
17-Esther 6:8 : আপনার ভৃত্যদের আপনার নিজের পরা একটি পোশাক ও আপনার নিজের চড়া একটি ঘোড়া আনতে বলুন। ঘোড়াটির মাথায় ভৃত্যরা একটি রাজমুকুট পরিয়ে দিক।
17-Esther 6:9 : এরপর আপনার কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে এই রাজপোশাকটি, মহারাজ য়ে ব্যক্তিকে সম্মান জানাতে চান তাকে পরতে সাহায্য করতে বলুন এবং সেই নেতাকে বলুন ঐ ব্যক্তিকে সেই ঘোড়ার ওপর বসিযে সারা শহরের রাস্তায় এই বলে ঘুরে বেড়াতে, ‘রাজা য়াঁকে সম্মান দেখাতে চান তাঁর জন্য এটা করা হল।”‘
17-Esther 6:10 : রাজা তখন হামনকে আদেশ দিলেন, “তাড়াতাড়ি গিয়ে ঐ ইহুদী মর্দখযের জন্য একটি ঘোড়া ও পোশাকের ব্যবস্থা কর। যাও, মর্দখয় প্রাসাদের প্রবেশ পথের কাছে অপেক্ষা করে আছে। তুমি য়ে ভাবে বলেছো, সে ভাবে তাঁকে সম্মান দেখাও।”
17-Esther 6:11 : হামন গিয়ে রাজার পোশাক ও ঘোড়া নিয়ে এলেন। তারপর মর্দখয়কে নিজে সেই পোশাক পরিয়ে, ঘোড়ায় চড়িযে, শহরের প্রতিটি রাস্তায় য়েতে য়েতে বলতে লাগলেন, “রাজা য়াঁকে সম্মান দেখাতে চান এভাবেই দেখান!”
17-Esther 6:12 : এরপর মর্দখয় আবার রাজদ্বারেই ফিরে গেলেন কিন্তু অপমানিত হামন লজ্জায বাড়ি ফিরে এলেন। বাড়ি ফিরে এসে লজ্জায ও অপমানে মুখ ঢাকলেন।
17-Esther 6:13 : তিনি তাঁর স্ত্রী ও বন্ধুদের সব কথা খুলে বললেন। হামনের স্ত্রী ও বন্ধুরা হামনকে বললো, “মর্দখয় যদি ইহুদী হয় তাহলে তোমার পক্ষে জয়লাভ করা অসম্ভব। তোমার পতন শুরু হয়েছে এবং এভাবে তুমি নিশ্চিত শেষ হয়ে যাবে।”
17-Esther 6:14 : সকলে মিলে যখন হামনকে এসব কথা বলছে তখন রাজার নপুংসক পরিচারকরা এসে ইষ্টেরের ভোজসভার জন্য হামনকে তাড়াতাড়ি আসতে বললেন।
17-Esther 7:1 : অতঃপর রাজা ও হামন রাণী ইষ্টেরের ভোজসভায় এলেন।
17-Esther 7:2 : ভোজসভার দ্বিতীয দিনে দ্রাক্ষারস পান করতে করতে রাজা আবার ইষ্টেরকে রশ্ন করলেন, “রাণী তুমি আমার কাছে কি য়েন চাইবে বলেছিলে? তুমি বলো তোমার কি প্রয়োজন, অবশ্যই তা তোমায় দেওয়া হবে। আমি তোমায় সব কিছু, এমনকি রাজ্যের অর্ধেকও দিতে রাজি!”
17-Esther 7:3 : তখন রাণী ইষ্টের উত্তর দিলেন, “হে রাজন, যদি সত্যিই আপনি আমাকে ভালবেসে থাকেন এবং আমি যা চাই তা দিয়ে সন্তুষ্ট হতে চান, তবে আমার বিনীত প্রার্থনা আপনি অনুগ্রহ করে আমায় জীবন ভিক্ষা দিন। আমায় বাঁচতে দিন আর আমার স্বজাতিদেরও বাঁচতে দিন। এটুকুই শুধু আমি চাই।
17-Esther 7:4 : একথা বলছি কারণ আমাকে ও আমার স্বজাতিদের বিনাশ, হত্যা ও পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করবার জন্য বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। যদি আমাদের নিছক এীতদাস হিসেবে বিক্রি করা হতো তাহলে আমি চুপ করেই থাকতাম কারণ আমি জানি য়ে তা রাজা মহারাজাদের উত্যক্ত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কোন ঘটনা নয়।”
17-Esther 7:5 : রাজা অহশ্বেরশ তখন রাণীকে জিজ্ঞেস করলেন, “এ কাজ তোমার সঙ্গে কে করেছে? কে সেই ব্যক্তি যার এতো বড়ো স্পর্ধা য়ে তোমার লোকদের সঙ্গে এমন করে?”
17-Esther 7:6 : ইষ্টের বললেন, “আমাদের সেই শএু হল এই পাপাত্মা হামন।”একথা শুনে রাজা ও রাণীর সামনে তখন হামন ভয়ে কেঁপে উঠলো।
17-Esther 7:7 : রাজা ভীষণ রুদ্ধ হয়ে পানপাত্র পরিত্যাগ করে বাগানে চলে গেলেন। কিন্তু হামন রাণী ইষ্টেরের কাছে প্রাণ ভিক্ষা করার জন্য থেকে গেলেন। হামন প্রাণ ভিক্ষা করছিলেন কারণ তিনি জানতেন, রাজা নিশ্চয়ই ইতিমধ্যেই তাঁকে হত্যা করার কথা ঠিক করে ফেলেছেন।
17-Esther 7:8 : রাজা যখন বাগান থেকে আবার সভাগৃহে ঢুকছেন, ঠিক তখনই তিনি দেখতে পেলেন, রাণী ইষ্টের কেদারায বিশ্রাম নিচ্ছেন এবং হামন রাণীর সামনে আছড়ে পড়লেন। রাজা তখন চিত্কার করে তাকে বললেন, “আমি এখনো রাণীর বাড়িতে আছি, আর আমার উপস্থিতিতেই তুমি রাণীকে আক্রমণ করছো?”একথা বলার প্রায সঙ্গে সঙ্গেই রাজভৃত্যরা এসে হামনকে হত্যা করল।
17-Esther 7:9 : হর্বোণা নামে রাজার এক নপুংসক ভৃত্য বলল, “হামনের বাড়ির কাছে প্রায 75 ফুট দীর্ঘ একটি ফাঁসিকাঠ বানানো হয়েছে। মর্দখয়কে এর ওপরে ফাঁসি দেবার জন্য হামন এটা বানিয়েছে। মর্দখয় হল সেই ব্যক্তি য়ে রাজাকে হত্যা করার কুচক্রান্ত ফাঁস করে দিয়ে রাজাকে বাঁচিয়েছিল।”রাজা বললেন, “ওই কাঠে হামনকেই ফাঁসি দেওয়া হোক।”
17-Esther 7:10 : তখন মর্দখযের জন্য হামনের নিজের হাতে বানানো ফাঁসিকাঠে (ভৃত্যরা) সকলে মিলে হামনকে ঝুলিয়ে দিল এবং এই ভাবে রাজার রাগ পড়লো।
17-Esther 8:1 : সেদিনই রাজা অহশ্বেরশ রাণী ইষ্টেরকে হামনের যাবতীয় সম্পত্তি দিয়ে দিলেন। ইষ্টের রাজাকে জানালেন য়ে মর্দখয় সম্পর্কে তাঁর ভাই হয়। তারপর মর্দখয় রাজার সঙ্গে দেখা করতে এলেন।
17-Esther 8:2 : রাজা হামনের থেকে য়ে আংটিটা ইতিমধ্যে ফেরত নিয়ে নিয়েছিলেন সেটি নিজের আঙুল থেকে খুলে এবার মর্দখয়কে দিলেন। এরপর ইষ্টের মর্দখয়কে হামনের যাবতীয় সম্পত্তির দায়িত্ব অর্পণ করলেন।
17-Esther 8:3 : ইষ্টের এবার রাজার সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁর পদতলে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে হামনের ইহুদীদের হত্যা করার নিষ্ঠুর পরিকল্পনা তাঁকে পরিত্যাগ করতে বললেন। ইহুদীদের ক্ষতি সাধনের জন্যই হামন এই পরিকল্পনা করেছিলেন।
17-Esther 8:4 : রাজা তখন তাঁর সামনে সোনার রাজদণ্ডটি বাড়িয়ে দিলে, ইষ্টের উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
17-Esther 8:5 : “হে রাজন, যদি আপনি আমায় পছন্দ করে থাকেন এবং যদি খুশী হ’ন, তাহলে দয়া করে আমার জন্য এইটুকু করুন। আপনার যদি মনে হয়, আমি যা বলছি তা সঠিক এবং আপনি যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তাহলে আগের নির্দেশটি খণ্ডন করার জন্য একটি নতুন নির্দেশ লিখে দিন। হামন, ইহুদীদের হত্যার নির্দেশ দিয়ে এর আগে প্রতিটি প্রদেশে খবর পাঠিয়েছে।
17-Esther 8:6 : কিন্তু আমার পক্ষে আমার স্বজাতিদের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখা সম্ভব নয় বলেই আমি মহারাজের কাছে এই একান্ত মিনতি করছি।”
17-Esther 8:7 : রাজা অহশ্বেরশ তখন রাণী ইষ্টের ও মর্দখয়কে উত্তর দিলেন, “য়েহেতু হামন ইহুদী বিদ্বেষী ছিল সেহেতু আমি ওর সমস্ত সম্পত্তি ইষ্টেরকে দিয়েছি। আমার সেনারা হামনকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিয়েছে।
17-Esther 8:8 : এখন রাজার বকলমে, তোমাদের মতে ইহুদীদের সবচেযে বেশি সাহায্য হবে এমন ভাবে একটি নির্দেশ (তোমরা) লেখো।” তারপর রাজার আংটিটি দিয়ে সেটাতে শীলমোহর দাও। রাজার বকলমে লেখা এবং রাজার আংটিটি দিয়ে সীলমোহর করা আদেশ কখনো বাতিল করা যায় না।”
17-Esther 8:9 : দ্রুত রাজার সমস্ত সচিবকে ডেকে পাঠানো হল। তৃতীয় মাসে অর্থাত্‌ সীবন মাসের 23 দিনে একাজ করা হল। এই সমস্ত সচিবরা তখন ইহুদীদের জন্য দেওয়া মর্দখয়ের নির্দেশগুলো লিখে নিল। সেই নির্দেশ ভারতবর্ষ থেকে কূশ দেশ পর্য়ন্ত বিস্তৃত 127 টি প্রদেশের প্রশাসক ও নেতা সকলকে পাঠানো হল। প্রত্যেকটি প্রাদেশিক ভাষায় ও সর্বজনবোধ্য ভাষায় নির্দেশগুলি লেখা হয়েছিল যাতে সবাই সহজে বুঝতে পারে। ইহুদীদের জন্য এই নির্দেশ তাদের নিজেদের ভাষায়, নিজস্ব বর্ণমালায লেখা হয়েছিল।
17-Esther 8:10 : মর্দখয় বয়ং রাজা অহশ্বেরশের বকলমে এই নির্দেশগুলি লিখে, চিঠিগুলি রাজার আংটি দিয়ে সীলমোহর করে বন্ধ করলেন এবং দ্রুতগামী অশ্বারোহী বার্তাবাহকদের দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হল। এই সমস্ত ঘোড়াগুলোকে রাজার নিজের ব্যবহারের জন্যই বিশেষভাবে তৈরী করা হতো।
17-Esther 8:11 : এই সমস্ত চিঠিতে, রাজা অহশ্বেরশের নির্দেশ বলা হল:প্রতিটি শহরে ইহুদীদের সমবেত ভাবে তাদের নিজেদের রক্ষা করার অধিকার দেওয়া হল। তাদের বা তাদের নারী ও শিশুদের যদি কোন দল আক্রমণ করে তাহলে তারা সেই শএুদের দলকে হত্যা ও ধ্বংস করতে পারবে এবং ইহুদীদের তাদের শএুদের সম্পদ লুঠ করার অধিকারও দেওয়া হল।
17-Esther 8:12 : ইহুদীদের এই অধিকার দেওয়া হল দ্বাদশ মাস অর্থাত্‌ অদর মাসের
17-Esther 8:13 : দিনে। রাজা অহশ্বেরশের সাম্রাজ্যের সমস্ত প্রদেশেই ইহুদীদের এই অধিকার দেওয়া হল। 13 এই চিঠির একটি প্রতিলিপি পাঠিয়ে প্রত্যেকটি রাজ্যে প্রত্যেকটি প্রদেশে একটি বিধি জারি করা হল। রাজ্যের সর্বত্র সবাইকে এই বিধির কথা জানিয়ে দেওয়া হল। যাতে ইহুদীরা সকলে ওই বিশেষ দিনটিতে তাদের সমস্ত শএুদের মোকাবিলা করার জন্য এবং প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে।
17-Esther 8:14 : বার্তাবাহকরা রাজার নির্দেশে রাজার ঘোড়ায় চড়ে দ্রুত যাত্রা করল কারণ রাজা তাদের তাড়াতাড়ি যাবার জন্য আদেশ দিলেন। নির্দেশটি রাজধানীতেও টাঙিযে দেওয়া হল।
17-Esther 8:15 : মর্দখয় রাজার কাছ থেকে চলে গেলেন। তিনি রাজার উপহার দেওয়া নীল ও সাদা রঙের একটি বিশেষ পোশাক ও সোনার বড় একটি মুকুট এবং বেগুনী লিনেন কাপড়ের আলখাল্লাও পরেছিলেন।
17-Esther 8:16 : ইহুদীদের জন্য এটি ছিল একটি বিশেষ উত্সবের দিন। সকলেই খুব খুশী ও আনন্দিত ছিল এবং শূশনে আনন্দ ও খুশীর মধ্যে দিয়ে দিনটি উদ্য়াপন করা হল।
17-Esther 8:17 : প্রত্যেকটি প্রদেশ, প্রতিটি নগরে রাজার নির্দেশ পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি ইহুদী পরিবার খুশী হয়ে উঠল। তারা উত্সব ও ভোজসভার তোড়জোড় শুরু করে দিল। ইহুদীদের ভয়ে অন্য অনেকে ইহুদী হয়ে গেল।
17-Esther 9:1 : রাজার আগের দেওয়া আদেশ অনুযায়ী, দ্বাদশ মাসের অর্থাত্‌ অদর মাসের 13 দিনে ইহুদীরা তাদের শএুদের দ্বারা আএান্ত হবে বলে ঠিক হয়েছিল। ঐ দিনে ইহুদীদের শএুরা তাদের হারিয়ে দেবার আশা করেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পালেট গেল। য়ে সমস্ত শএু তাদের ঘৃণা করতো, ইহুদীরা তাদের চেযে অনেক বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল।
17-Esther 9:2 : রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের সমস্ত প্রদেশে সর্বত্র ইহুদীরা তাদের শএুদের আক্রমণ করার জন্য তাদের শহরে মিলিত হল। এই সম্মিলিত আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আর কোন দলের না থাকায়, সকলে ইহুদীদের ভয় পেতে শুরু করলো।
17-Esther 9:3 : প্রত্যেকটি প্রদেশের রাজকর্মচারী, প্রশাসক ও নেতারা ইহুদীদের সাহায্য করতে লাগলো। এই সব গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মর্দখযের ভয়ে ইহুদীদের সাহায্য করছিল,
17-Esther 9:4 : কারণ মর্দখয় ইতিমধ্যে রাজপ্রাসাদের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। প্রত্যেকটি প্রদেশে সকলে মর্দখযের নাম ও তাঁর ক্ষমতার কথা জানতো। এবং মর্দখযের ক্ষমতা এমশঃ বেড়েই চলছিল।
17-Esther 9:5 : ইহুদীরা তাদের সমস্ত শএুদের পরাজিত করলো। য়েসব লোকেরা তাদের ঘৃণা করতো তারা তাদের সঙ্গে যা খুশি তাই করলো। অনেককে তলোয়ার দিয়ে হত্যাও করলো।
17-Esther 9:6 : শুধু রাজধানী শূশনেই ইহুদীরা 500 ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল।
17-Esther 9:7 : ইহুদীরা হত্যা করেছিল পর্শন্দাথ, দল্ফোন, অস্পাথ,
17-Esther 9:8 : পোরাথ, অদলিয়, অরীদাথ, পর্মস্ত, অরীষয়, অরীদয় এবং বযিষাথকে।
17-Esther 9:9 : এরা হল হামনের দশ পুত্র।
17-Esther 9:10 : হামন ছিল হম্মদাথার পুত্র। সে ছিল ইহুদীদের শএু। ইহুদীরা তার ছেলেদের হত্যা করেছিল কিন্তু তাদের সম্পত্তিতে হাত দেযনি।
17-Esther 9:11 : রাজা যখন সেদিন রাজধানী শূশনে কত জনকে হত্যা করা হয়েছে জানতে পারলেন
17-Esther 9:12 : তখন তিনি রাণী ইষ্টেরকে বললেন, “হামনের 10 পুত্র সহ 500 জনকে ইহুদীরা শূশনে হত্যা করেছে। এবার বলো রাজ্যের অন্যান্য প্রদেশে তুমি কি চাও? তুমি আমাকে যা বলবে আমি তাই করবো।”
17-Esther 9:13 : ইষ্টের তখন রাজাকে বললেন, “যদি রাজা চান, তাহলে শূশনে ইহুদীরা আজ যা করেছে, আগামীকালও আবার তা করবার অনুমতি দিন। প্রতিশোধ নেবার জন্য ইহুদীদের আরও একদিন অনুমতি দিন। হামনের10জন পুত্রের দেহ ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া হোক।”
17-Esther 9:14 : তখন রাজা শূশনে এই নির্দেশের মেয়াদ একদিন বাড়িয়ে দিলেন এবং হামনের 10 পুত্রের মৃতদেহও কথা মতো ঝুলিয়ে দেওয়া হল।
17-Esther 9:15 : পরের দিন অর্থাত্‌ অদর মাসের 14 দিনের দিন ইহুদীরা শূশনে আরো 300 জনকে হত্যা করলো, তবে তাদের সম্পত্তি লুঠ করেনি।
17-Esther 9:16 : একই সময়ে, অন্যান্য প্রদেশের ইহুদীরা তাদের নিজেদের রক্ষার জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে একজোট হল। আক্রমণের সময় ইহুদীরা তাদের 75ণ000 জন শএুকে হত্যা করল। কিন্তু তারা তাদের শএুদের কোন কিছু লুঠ করেনি।
17-Esther 9:17 : অন্যান্য প্রদেশগুলিতে এ ঘটনা ঘটেছিল অদর মাসের 13 দিনে। 14 দিনে ইহুদীরা সকলে খুশি মনে বিশ্রাম নিল এবং ঐ দিনটিকে একটি খুশির ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো।
17-Esther 9:18 : শূশনের ইহুদীরা অদর মাসের 13 ও 14 তারিখ একত্রিত হবার পর অদর মাসের15 তারিখ দিনটিকে খুশির ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো।
17-Esther 9:19 : গ্রামেগঞ্জে ইহুদীরা অদর মাসের 14 তারিখে তারা পূরীম উত্সব উদযাপন করলো এবং দিনটিকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করলো। ওই দিন তারা একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিল এবং একে অপরকে উপহার দিয়েছিল।
17-Esther 9:20 : মর্দখয় এসব ঘনা লিখে রাখলো। তারপর রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের কাছে ও দূরের সবকটি রাজ্যের সমস্ত ইহুদীদের মর্দখয় একটি চিঠি লিখলেন।
17-Esther 9:21 : প্রতি বছর অদর মাসের 14 ও 15 তারিখ পূরীম উত্সব উদ্য়াপন করার অনুরোধ জানিয়ে মর্দখয় ইহুদীদের চিঠি লিখলেন।
17-Esther 9:22 : ইহুদীদের ওই দিন দুটি পালন করতে বলা হল কারণ ওই দিনে ইহুদীরা তাদের শএুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। তাছাড়াও, ওই মাসটি ছিল উত্সব পালনের এংটি বিশেষ মাস, য়েহেতু তাদের দুঃখ ও বিষাদ, আনন্দ ও খুশির উত্সবে পরিণত হয়েছিল। মর্দখয় ওই দুটি দিত্থকে সর্বসাধারণ ছুটির দিন হিসেবে ভোজসভার মাধ্যমে পালন করতে এবং একে অপরকে ও দীন - দাঃখীকে উপহার দিয়ে পালন করতে লিখেছিলেন।
17-Esther 9:23 : মর্দখয় যা লিখেছিলেন ইহুদীরা সকলেই তাতে সম্মত হল এবং য়ে আনন্দ উত্সব তারা শুরু করেছিল তা চালিযে যাবে বলে কথা দিল।
17-Esther 9:24 : সমস্ত ইহুদীদের শএু অগাগীয হম্মদাথার পাত্র হামন ইহুদীদের ধ্বংস করার জন্য এংটি দিন বেছেছিলেন। তিনি ইহুদী নিধনের জন্য দিনটি বেছে ছিলেন ঘুঁটি চেলে। (সে সময়ে ‘ঘুঁটি’ কে বলা হোত ‘পূর’ তাই ছুটির দিনটির নাম দেওয়া হয়েছিল “পূরীম।”)
17-Esther 9:25 : হামন এসব চএান্ত করেছিলেন কিন্তু রাণী ইষ্টের গিয়ে রাজার সঙ্গে কথা বলার পর রাজা নতুন নির্দেশ দিলেন। যার ফলে শুধু য়ে হামনের পরিকল্পিত চএান্ত নষ্ট হল তাই নয়, তার পরিবারেও অমঙ্গলের ছায়া নেমে এলো। হামন ও তার সন্তানদের ফাঁসি হল।
17-Esther 9:26 : এসময়ে অক্ষকে বলা হত “পূরীম।” তাই এই ছুটির দিনটিকে বলা হোত “পূরীম।” সে কারণেই মর্দখযের নির্দেশ মেনে সেই থেকে ইহুদীরা প্রতি বছর এই দুটি দিন উদ্য়াপন করত।
17-Esther 9:27 : -
17-Esther 9:28 : তারা, তাদের প্রতি কি ঘতে দেখেছিল তা মনে রাখার জন্যই এই উত্সব পালন করা শুরু করলো। ইহুদীরা এবং য়ে সমস্ত লোকরা তাদের দলে মিশে গিয়েছিল, তারা সবাই প্রতিবছর সঠিক সময়ে, সঠিক ভাবে এই ছুটির দিন পালন করত। প্রত্যেক প্রজন্মের, প্রতিটি পরিবারই এই দুটি দিনের কথা মনে রাখে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে, প্রতিটি নগরে এই উত্সব পালিত হত। ইহুদীরা কখনোই পূরীমের উত্সব উদ্য়াপন করা বন্ধ করবে না এবং তাদের উত্তরপুরুষরাও এই বিশেষ ছুটির দিনগুলিকে সব সময় মনে রাখবে।
17-Esther 9:29 : অবীহযিলের কন্যা রাণী ইষ্টের ও মর্দখয় দুজনে মিলে পূরীম সম্পর্কে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র রচনা করেন। এই দ্বিতীয চিঠির বৈধতা বোঝানোর জন্যই তাঁরা এই চিঠিতে রাজার সম্পূর্ণ অধিকার ব্যবহার করেন।
17-Esther 9:30 : এরপর মর্দখয় চিঠিটি রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের 127 টি প্রদেশের সমস্ত ইহুদীদের পাঠিয়ে দেন। মর্দখয় লোকদের বলেন, ছুটির দিনটি শান্তি আনবে এবং লোকদের একে অপরকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করবে।
17-Esther 9:31 : মর্দখয় এই চিঠিগুলি লোকদের নির্দিষ্ট সময়ে পূরীম দিনগুলি চালু করতে বলার জন্য লিখেছিলেন। মর্দখয় ও রাণী ইষ্টের তাদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদের এই পূরীম উত্সব উদ্য়াপনের জন্যই নির্দেশটি দিয়েছিলেন। অভিপ্রায় ছিল, ইহুদীদের অন্যান্য উত্সবের ও ছুটির দিনের মতো এই দিন দুটিকেও লোকে মনে রাখুক এবং অন্যান্য ছুটির দিন তারা য়েমন উপবাস করে, যা কিছু খারাপ ঘষ্টনা ঘটেছে তার জন্য়ে চোখের জল ফেলে, এই দিন দুটিও ঠিক সে ভাবে পালন করুক।
17-Esther 9:32 : ইষ্টেরের চিঠির মাধ্যমে পূরীম উত্সবের রীতি - নীতিগুলিকে সরকারী মর্য়াদা দেওয়া হয় এবং এই ঘনাগুলি বইতে নথিভুক্ত করা হয়।
17-Esther 10:1 : রাজা অহশ্বেরশের সময় রাজত্বের সবাইকে, এমন কি যারা দূরে বা সমুদ্রতীরে বসবাস করতো সবাইকেই কর দিতে হতো।
17-Esther 10:2 : রাজা অহশ্বেরশের সমস্ত বিখ্যাত কীর্তিগুলি মাদিযা ও পারস্যের রাজাদের ইতিহাস বইগুলিতে পাওয়া যায়। রাজা মর্দখযের জন্য যা যা করেছিলেন সে সমস্ত ব্বিরণও এই সব ইতিহাস বইতে লেখা আছে। রাজা মর্দখয়কে এক জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত করেন।
17-Esther 10:3 : মহারাজ অহশ্বেরশের পরেই গুরুত্বের দিক দিয়ে ছিল মর্দখযের স্থান। অন্যান্য ইহুদীরাও সকলে মর্দখয়কে খুবই সম্মান করতো। তারা মর্দখয়কে শ্রদ্ধা করতো কারণ মর্দখয় ইহুদীদের উন্নতির জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিলেন এবং সমস্ত ইহুদীদের জন্য শান্তি এনেছিলেন।