27-1 : ত্বা, সীন। এ - সব হচ্ছে কুরআনের তথা সুস্পষ্ট গ্রন্থের বাণীসমূহ, - - ![]() |
27-2 : মুমিনদের জন্য পথ - নির্দেশক এবং সুসংবাদবাহক, - - ![]() |
27-3 : যারা নামায কায়েম করে ও যাকাত প্রদান করে, আর তারা আখেরাত সন্বন্ধে স্বয়ং দৃঢ়বিশ্বাস90 রাখে। ![]() |
27-4 : নিঃসন্দেহ যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তাদের ক্রিয়াকর্মকে আমরা তাদের জন্য চিত্তাকর্যক করেছি, ফলে তারা অন্ধভাবে ঘুরে বেড়ায়। ![]() |
27-5 : এরাই তারা যাদের জন্য রয়েছে এক কষ্টকর শাস্তি, আর পরকালে তারা খোদ হবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত। ![]() |
27-6 : আর অবশ্য তুমি, - - তোমাকেই তো কুরআন পাওয়ানো হয়েছে পরম জ্ঞানী সর্বজ্ঞাতার তরফ থেকে। ![]() |
27-7 : স্মরণ করো! মূসা তাঁর পরিজনকে বললেন - - ''নিঃসন্দেহ আমি আগুনের আভাস পাচ্ছি, আমি এখনি সেখান থেকে তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসছি, অথবা তোমাদের জন্য জ্বলন্ত আঙটা নিয়ে আসছি যাতে তোমরা নিজেদের গরম করতে পার।’’ ![]() |
27-8 : অতঃপর যখন তিনি এর কাছে এলেন তখন আওয়াজ হলো এই বলে - - ''ধন্য সেইজন যে আগুনের ভেতরে এবং যে এর আশেপাশে রয়েছে। আর সকল মহিমা বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহ্র! ![]() |
27-9 : ''হে মূসা! নিঃসন্দেহ এই তো আমি আল্লাহ্ - - মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী। ![]() |
27-10 : ''আর তোমার লাঠি ছুঁড়ে মার।’’ তারপর যখন তিনি এটিকে দেখলেন দৌড়ছে - - যেন এটি একটি সাপ, তিনি তখন পেছন দিকে ছুটলেন আর ঘুরে দেখলেন না। ''হে মূসা, ভয় করো না, নিঃসন্দেহ রসূলগণ আমার সামনে ভয় করে না, ![]() |
27-11 : ''সে ব্যতীত যে অন্যায় করেছে তারপর মন্দ কাজের পরে বদলা করে ভাল কাজ, তাহলে আমি নিশ্চয়ই পরিত্রাণ কারী, অফুরন্ত ফলদাতা। ![]() |
27-12 : ''আর তোমার হাত তোমার পকেটে ঢোকাও, এটি বেরিয়ে আসবে সাদা হয়ে কোনো দোষত্রুটি ছাড়া, - - ফিরআউন ও তার লোকদলের কাছে নয়টি নিদর্শনের অন্তর্গত। নিঃসন্দেহ তারা হচ্ছে সীমালংঘনকারী জাতি।’’ ![]() |
27-13 : তারপর যখন আমাদের নিদর্শনগুলো তাদের কাছে এল দর্শনীয়ভাবে, তারা বললে - - ''এ তো পরিস্কার জাদু।’’ ![]() |
27-14 : আর তারা এসব প্রত্যাখ্যান করল অন্যায়ভাবে ও উদ্ধতভাবে, যদিও তাদের অন্তর এগুলোতে নিঃসংশয় ছিল। অতএব চেয়ে দেখো - - কেমন হয়েছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম। ![]() |
27-15 : আর অবশ্যই ইতিপূর্বে আমরা দাউদ ও সুলাইমানকে জ্ঞান দান করেছিলাম, আর তাঁরা উভয়ে বলেছিলেন - - ''সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য যিনি আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন তাঁর বহুসংখ্যক মুমিন বান্দাদের উপরে।’’ ![]() |
27-16 : আর সুলাইমান দাউদকে উত্তরাধিকার করলেন এবং বললেন - - ''ওহে জনগণ, আমাদের পক্ষি - বিজ্ঞান শেখানো হয়েছে, আর সব জিনিস থেকে আমাদের দেওয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহ এটি - - এ অবশ্যই সুস্পষ্ট অনুগ্রহসামগ্রী।’’ ![]() |
27-17 : আর সুলাইমানের সামনে সমবেত করা হয়েছিল তাঁর বাহিনীকে - - জিন ও মানুষ ও পাখিদের থেকে, আর তাদের কুচকাওয়াজ করানো হলো। ![]() |
27-18 : তারপর যখন তাঁরা নমলদের উপত্যকায় এসেছিলেন তখন একজন নমল বললে - - ''ওহে নমলজাতি! তোমাদের বাড়িঘরে ঢোকে যাও, সুলাইমান ও তাঁর বাহিনী যেন তোমাদের পিষে না ফেলে যদিবা তারা বুঝতে না পারে।’’ ![]() |
27-19 : সুতরাং তিনি তার কথায় বিস্মিত হয়ে মুচকি হাসলেন ও বললেন - - ''আমার প্রভু! তুমি আমাকে অনুমতি দাও যেন তুমি আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি যে নিয়ামত অর্পণ করেছ তোমার সেই আশিসের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে পারি, আর আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি যা তুমি পছন্দ কর, আর তোমার অনুগ্রহ বশতঃ আমাকে তোমার সৎপথাবলন্বী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত করো।’’ ![]() |
27-20 : আর তিনি পাখিদের পর্যবেক্ষণ করলেন, তখন বললেন - - ''একি! হুদহুদকে দেখছি না কেন? সে কি গরহাজিরদের একজন? ![]() |
27-21 : ''আমি অবশ্যই তাকে কঠিন শাস্তি দেব, অথবা আমি নিশ্চয়ই তাকে জবাই করব, অথবা তাকে অবশ্যই আমার কাছে আসতে হবে সুস্পষ্ট অজুহাত নিয়ে।’’ ![]() |
27-22 : তারপর তিনি অনতিবিলন্বকাল অপেক্ষা করলেন তখন সে বললে, ''আমি তার খোঁজ পেয়েছি যে - সন্বন্ধে আপনি অবগত নন, আর আমি সাবা’ থেকে আপনার কাছে আসছি সঠিক বার্তা নিয়ে। ![]() |
27-23 : ''আমি নিশ্চয়ই এক নারীকে দেখতে পেলাম তাদের উপর রাজত্ব করছে, আর তাকে সব - কিছু থেকে দেওয়া হয়েছে, আর তার রয়েছে এক মস্তবড় সিংহাসন। ![]() |
27-24 : ''আর আমি তাকে ও তার লোকদের দেখতে পেলাম তারা আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে সূর্যকে সিজদা করছে, আর শয়তান তাদের জন্য তাদের ক্রিয়াকলাপ চিত্তাকর্ষক করেছে, কাজেই পথ থেকে সে তাদের সরিয়ে রেখেছে, সুতরাং তারা সৎপথ পাচ্ছে না, - - ![]() |
27-25 : ''তাইতো তারা আল্লাহ্কে সিজদা করে না যিনি মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর গুপ্ত বিষয়বস্তু প্রকাশ করে দেন, আর যিনি জানেন যা তোমরা লুকিয়ে রাখ এবং যা প্রকাশ কর। ![]() |
27-26 : ''আল্লাহ্, তিনি ছাড়া অন্য উপাস্য নেই, যিনি মহান আরশের অধিপতি।’’ ![]() |
27-27 : তিনি বললেন - - ''আমরা শীঘ্রই দেখব তুমি কি সত্য বলছ, না তুমি মিথ্যাবাদীদের মধ্যেকার? ![]() |
27-28 : ''আমার এই লিপি নিয়ে যাও আর এটি তাদের কাছে অর্পণ কর, তারপর তাদের থেকে চলে এস, আর দেখ কি তারা ফেরত পাঠায়।’’ ![]() |
27-29 : সে বললে - - ''ওহে প্রধানগণ! নিঃসন্দেহ আমার কাছে এক সম্মানিত লিপি পাঠানো হয়েছে। ![]() |
27-30 : ''এটি আলবৎ সুলাইমানের কাছে থেকে, আর এটি প্রধানতঃ এই - - 'আল্লাহ্র নাম নিয়ে, যিনি রহমান, রহীম, - - ![]() |
27-31 : ''আমার বিরুদ্ধে যেন হামবড়াই কর না, আর আমার কাছে এস মুসলিম হয়ে’।’’ ![]() |
27-32 : সে বললে - - ''ওহে প্রধানগণ! আমার করণীয় সন্বন্ধে আমাকে উপদেশ দাও, আমি কোনো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হই না যে পর্যন্ত না তোমরা আমার সাক্ষাতে থাকো।’’ ![]() |
27-33 : তারা বললে - - ''আমরা শক্তির অধিকারী এবং প্রবল বিক্রমেরও অধিকারী, আর হুকুম আপনারই কাছে, অতএব ভেবে দেখুন কী আপনি হুকুম করবেন।’’ ![]() |
27-34 : সে বললে - - ''নিঃসন্দেহ রাজা - বাদশারা যখন কোনো জনপদে প্রবেশ করে তখন তাকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং তার বাসিন্দাদের শ্রেষ্ঠ মর্যাদাসম্পন্নদের বানিয়ে দেয় চরম লাঞ্ছিত, আর এইভাবেই তারা করে থাকে। ![]() |
27-35 : ''আর আমি অবশ্য তাদের কাছে পাঠাতে যাচ্ছি একটি উপহার, তারপর দেখতে চাই দূতরা কী নিয়ে ফেরে।’’ ![]() |
27-36 : তারপর যখন সুলাইমানের কাছে সে এল তখন তিনি বললেন - - ''কি! তোমরা কি আমাকে মাল - আসবাব দিয়ে মদদ করতে চাও? কিন্ত আল্লাহ্ আমাকে যা দিয়েছেন তা তোমাদের তিনি যা দিয়েছেন তার চাইতে শ্রেষ্ঠ। না, তোমাদের উপহার সন্বন্ধে তোমরাই গর্ববোধ করছ। ![]() |
27-37 : ''তাদের কাছে ফিরে যাও, আমরা অবশ্যই তাদের কাছে আসব সৈন্যবাহিনী নিয়ে যার মোকাবিলা করার ক্ষমতা তাদের নেই, আর আমরা অবশ্যই সেখান থেকে তাদের বহিস্কার করব লাঞ্ছনার সাথে, আর তারা বনবে ছোটলোক।’’ ![]() |
27-38 : তিনি বললেন - - ''ওহে প্রধানগণ! তোমাদের মধ্যে কে আমার কাছে নিয়ে আসবে তার সিংহাসন আমার কাছে মুসলিমরূপে তাদের আসবার পূর্বে?’’ ![]() |
27-39 : জিনদের এক জোয়ান বললে - - ''আমি এটি আপনার কাছে নিয়ে আসব আপনার আসন ছেড়ে ওঠবার আগেই, আর আমি অবশ্যই এ ব্যাপারে বিশেষ ক্ষমতাবান, বিশ্বস্ত।’’ ![]() |
27-40 : যার কাছে ধর্মগ্রন্থের জ্ঞান রয়েছে এমন একজন বললে - - ''আমি এটি আপনার কাছে নিয়ে আসব আপনার দৃষ্টি আপনার কাছে ফিরে আসার আগেই।’’ তারপর যখন তিনি এটি দেখতে পেলেন তাঁর পার্শ্বে স্থাপিত হয়েছে তখন বললেন - - ''এ আমার প্রভুর করুণাভান্ডার থেকে, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা ক’রে দেখতে পারেন আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি, না অকৃতজ্ঞতা পোষণ করি। আর যে কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে অবশ্যই কৃতজ্ঞতা জানায় তার নিজের জন্য, আর যে কেউ অকৃতজ্ঞতা পোষণ করে - - আমার প্রভু নিশ্চয়ই মহাবিত্তবান, মহানুভব।’’ ![]() |
27-41 : তিনি বললেন - - ''তার সিংহাসনখানা তারজন্য বদলে দাও, আমরা দেখতে চাই সে সৎপথ অবলন্বন করে, না সে তাদের দলের হয় যারা সৎপথে চলে না।’’ ![]() |
27-42 : তারপর যখন সে এল তখন বলা হ’ল - - ''তোমার সিংহাসন কি এই রকমের?’’ সে বললে, ''এটিই যেন তাই।’’ ''আর আমাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে তার আগে, আর আমরা মুসলিম ছিলাম।’’ ![]() |
27-43 : আর আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে সে যার পূজা করত তাই তাকে নিবৃত্ত করেছিল, নিঃসন্দেহ সে ছিল অবিশ্বাসী লোকদের মধ্যেকার। ![]() |
27-44 : তাকে বলা হ’ল - - ''দরবার - ঘরে প্রবেশ করো।’’ কিন্ত যখন সে তা দেখল সে এটিকে মনে করল এক বিশাল জলাশয়, আর সে তার কাপড় টেনে তুললো। তিনি বললেন - - ''এটিই দরবার ঘর, মসৃণ করা হয়েছে কাচ দিয়ে ।’’ সে বললে - - ''আমার প্রভু! আমি নিঃসন্দেহ আমার আত্মার প্রতি অন্যায় করেছি, আর আমি সুলাইমানের সঙ্গে বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহ্র প্রতি আত্নসমর্পণ করছি।’’ ![]() |
27-45 : আর আমরা অবশ্যই ছামূদ জাতির কাছে তাদের ভাই সালিহ্কে পাঠিয়েছিলাম এই বলে - - ''তোমরা আল্লাহ্র এবাদত কর।’’ কিন্তু দেখো! তারা দুই দল হয়ে গেল - - পরস্পরে বিবাদ করতে লাগল। ![]() |
27-46 : তিনি বললেন - - ''হে আমার স্বজাতি, তোমরা কেন মন্দকে ত্বরান্বিত করতে চাইছ ভালর আগে? কেন তোমরা আল্লাহর পরিত্রাণ খোঁজো না যাতে তোমাদের করুণা করা হয়?’’ ![]() |
27-47 : তারা বললে - - ''তোমাকে ও তোমার সঙ্গে যারা আছে তাদের আমরা অমঙ্গলময় মনে করি।’’ তিনি বললেন - - তোমাদের অমঙ্গল - কামনা আল্লাহ্র এখতিয়ারে, বস্তুতঃ তোমরা হচ্ছ এক গোষ্ঠী যাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ ![]() |
27-48 : আর সে শহরে ছিল নয়জন লোক যারা দেশে গন্ডগোল সৃষ্টি করত, আর তারা শান্তি স্থাপন করত না। ![]() |
27-49 : তারা বললে - - ''আল্লাহ্র নামে তোমরা কসম খাও যে আমরা অবশ্যই তাকে ও তার পরিজনবর্গকে রাত্রিকালে আক্রমণ করব, তারপর তার দাবিদারকে আমরা আলবৎ বলব - - 'আমরা তার পরিজনবর্গের হত্যাকান্ড দেখতে পাই নি, আর আমরা তো নিঃসন্দেহ সত্যবাদী।’’ ![]() |
27-50 : আর তারা এক ষড়যন্ত্রের চক্রান্ত করেছিল, আর আমারও এক পরিকল্পনা উদ্ভাবন করেছিলাম, কিন্ত তারা বুঝতেও পারে নি। ![]() |
27-51 : অতএব চেয়ে দেখো, তাদের ষড়যন্ত্রের পরিণাম কী হয়েছিল, - - নিঃসন্দেহ আমরা তাদের এবং তাদের স্বজাতিকে সাকল্যে ধ্বংস করেছিলাম। ![]() |
27-52 : সুতরাং এই তো তাদের ঘরবাড়িসব - - ভেঙেচুরে রয়েছে যেহেতু তারা অন্যায়াচরণ করেছিল। নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে সেই লোকদের জন্য যারা জানে। ![]() |
27-53 : আর আমরা উদ্ধার করেছিলাম তাদের যারা ঈমান এনেছিল ও ভয়ভক্তি করে চলত। ![]() |
27-54 : আর লূত, স্মরণ কর! তিনি তাঁর জাতিকে বলেছিলেন - - ''তোমরা কি অশ্লীলতা করতেই থাকবে, অথচ তোমরা দেখতে পাচ্ছ? ![]() |
27-55 : ''তোমরা কি নারীদের বাদ দিয়ে কামতৃপ্তির জন্য পুরুষেই উপগত হবে? না, তোমরা একটি সম্প্রদায় যারা মূর্খামি করছ।’’ ![]() |
27-56 : কিন্ত তাঁর লোকদের জবাব আর কিছু ছিল না এই ভিন্ন যে তারা বললে - - ''তোমাদের জনপদ থেকে লূতের পরিজনবর্গকে বের করে দাও, এরা তো এমন লোক যারা পবিত্র সাজতে চায়!’’ ![]() |
27-57 : আমরা তখন তাঁকে ও তাঁর পরিজনবর্গকে উদ্ধার করেছিলাম তাঁর স্ত্রী ব্যতীত, আমরা তাকে ধার্য করেছিলাম পেছনে রয়ে যাওয়াদের অন্তর্ভুক্ত। ![]() |
27-58 : আর তাদের উপরে আমরা বর্ষণ করেছিলাম এক বৃষ্টি, অতএব বড় মন্দ ছিল সতর্কীকৃতদের বর্ষণ! ![]() |
27-59 : বলো - - ''সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র, আর শান্তি তাঁর বান্দাদের উপরে যাদের তিনি মনোনীত করেছেন। আল্লাহ্ শ্রেষ্ঠ, না যাদের তারা শরিক করেছে? ![]() |
27-60 : আচ্ছা! কে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর তোমাদের জন্য আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন? তারপর আমরা তা দিয়ে উৎপন্ন করি শোভাময় বাগানসমূহ, - - তোমাদের পক্ষে এটি সম্ভবপর নয় যে তোমরা এগুলোর গাছপালা বাড়িয়ে তুলবে। আল্লাহ্র সঙ্গে কি অন্য উপাস্য আছে? তবুও তারা সত্য ত্যাগ করে এমন এক জাতি। ![]() |
27-61 : আচ্ছা! কে পৃথিবীটাকে আবাসস্থল করেছেন, আর এর ফাঁক - চিড়গুলোকে বানিয়েছেন নদীনালা, আর এর জন্য দাঁড় করিয়েছেন পাহাড় - পর্বত, আর দুটি সমুদ্রের মধ্যখানে তৈরি করেছেন এক ব্যবধান? আল্লাহ্র সঙ্গে কি অন্য উপাস্য আছে? তবুও তাদের অধিকাংশই জানে না। ![]() |
27-62 : আচ্ছা! কে সাড়া দেন বিপদগ্রস্তের প্রতি যখন সে তাঁকে ডাকে আর বিপদ - আপদ দূর করে দেন, আর তোমাদের বানিয়েছেন পৃথিবীতে প্রতিনিধি? আল্লাহ্র সঙ্গে কি অন্য উপাস্য আছে? অল্পই যা তোমরা মনোনিবেশ কর। ![]() |
27-63 : আচ্ছা! কে তোমাদের পথ দেখিয়ে দেন স্থলদেশের ও সমুদ্রের অন্ধকারে, আর কে পাঠিয়ে থাকেন বায়ুপ্রবাহ তাঁর করুণা - বিজড়িত সুসংবাদদাতারূপে? আল্লাহ্র সঙ্গে কি অন্য উপাস্য আছে? তারা যে - সব অংশী দাঁড় করায় তা থেকে আল্লাহ্ বহু ঊর্ধ্বে! ![]() |
27-64 : আচ্ছা! কে সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তার পুনরাবর্তন ঘটান, আর কে তোমাদের আকাশ ও পৃথিবী থেকে রিযেক দান করেন? আল্লাহ্র সঙ্গে কি অন্য উপাস্য আছে? বলো - - ''নিয়ে এস তোমাদের দলিল - দস্তাবেজ যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’ ![]() |
27-65 : বলো - - ''মহাকাশমন্ডলীর ও পৃথিবীর কেউই গায়েব সন্বন্ধে জানে না আল্লাহ্ ছাড়া।’’ আর তারা জানে না কখন তাদের পুনরুত্থিত করা হবে। ![]() |
27-66 : বস্তুতঃ তাদের জ্ঞান পরলোকে সীমিত হয়ে গেছে, বরং তারা এ বিষয়ে সন্দেহে রয়েছে, বস্তুতঃ এ সন্বন্ধে তারা অন্ধ। ![]() |
27-67 : আর যারা অবিশ্বাস করে তারা বলে - - ''যখন আমরা ধূলো - মাটি হয়ে যাব এবং আমাদের পিতৃপুরুষরাও, - - আমরা কি তখন ঠিকঠিকই বহির্গত হব? ![]() |
27-68 : ''অবশ্যই ইতিপূর্বে এটি আমাদের ওয়াদা করা হয়েছিল - - আমাদের আর আগেরকালে আমাদের পিতৃপুরুষদেরও, নিঃসন্দেহ এটি সেকালের উপকথা বৈ তো নয়!’’ ![]() |
27-69 : বলো - - ''পৃথিবীতে পরিভ্রমণ করো, তারপর দেখো কেমন হয়েছিল অপরাধীদের পরিণাম!’’ ![]() |
27-70 : আর তাদের কারণে তুমি দুঃখ করো না, আর তারা যা ষড়যন্ত্র করছে সেজন্য তুমি মনঃক্ষুন্ন হয়ো না। ![]() |
27-71 : আর তারা বলে - - ''কখন এই ওয়াদা হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?’’ ![]() |
27-72 : তুমি বলো - - ''হতে পারে তোমরা যার জন্য তাড়াতাড়ি করছ তার কতকটা তোমাদের নিকটেই এসে গেছে।’’ ![]() |
27-73 : আর তোমার প্রভু নিশ্চয়ই তো মানুষের প্রতি করুণাসিন্ধুর মালিক, কিন্ত তথাপি তাদের অধিকাংশই কৃতজ্ঞতা জানায় না। ![]() |
27-74 : আর নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু অবশ্যই জানেন তাদের বুক যা লুকিয়ে রাখে আর যা তারা প্রকাশ করে। ![]() |
27-75 : আর মহাকাশে ও পৃথিবীতে কোনো গুপ্ত বিষয় নেই যা সুস্পষ্ট গ্রন্থে নয়। ![]() |
27-76 : নিঃসন্দেহ এই কুরআন ইসরাইলের বংশধরদের কাছে যে - সব বিষয়ে তারা মতভেদ করে তার অধিকাংশই বিবৃত করে দিয়েছে। ![]() |
27-77 : আর এটি আলবৎ মুমিনদের জন্য এক পথনির্দেশ ও করুণা। ![]() |
27-78 : নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু তাঁর হুকুম মোতাবেক তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবেন, আর তিনিই মহাশক্তিশালী, সর্বজ্ঞাতা। ![]() |
27-79 : সুতরাং তুমি আল্লাহ্র উপরে নির্ভর কর। নিঃসন্দেহ তুমিই হচ্ছ সুস্পষ্ট সত্যের উপরে। ![]() |
27-80 : তুমি নিশ্চয়ই মৃতকে শোনাতে পারবে না আর বধিরকেও আহ্বান শোনাতে পারবে না, যখন তারা ফিরে যায় পিছু হটে। ![]() |
27-81 : আর অন্ধদের তাদের পথভ্রষ্টতা থেকে তুমি পথ - প্রদর্শক হতে পারবে না। তুমি তো শোনাতে পার শুধু তাকে যে আমাদের বাণীসমূহ বিশ্বাস করে, ফলে তারা মুসলিম হয়। ![]() |
27-82 : আর যখন তাদের উপরে উক্তিটি বর্তাবে তখন তাদের জন্য আমরা বের ক’রে আনব মাটির কীট যেটি তাদের সঙ্গে বাক্যালাপ করবে, কেননা মানুষগুলো আমাদের নির্দেশাবলীতে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে নি। ![]() |
27-83 : আর সেইদিন - - প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে আমরা এক একটি ফৌজকে সমবেত করব যারা আমাদের নির্দেশসমূহ প্রত্যাখ্যান করত, তারপর তাদের শ্রেণীবদ্ধ করা হবে। ![]() |
27-84 : তারপর যখন তারা এসে পেছঁবে তখন তিনি বলবেন - - ''তোমরা কি আমার নির্দেশসমূহ প্রত্যাখ্যান করেছিলে যখন তোমরা জ্ঞানে তার ধারণা করতে পার নি? অথবা কী তা যা তোমরা করে চলেছিলে?’’ ![]() |
27-85 : আর তাদের উপরে উক্তিটি বর্তাবে যেহেতু তারা অন্যায়াচরণ করেছিল। তখন তারা বাদানুবাদ করতে পারবে না। ![]() |
27-86 : তারা কি দেখে না যে আমরা অবশ্যই রাতকে সৃষ্টি করেছি যেন তারা এতে বিশ্রাম করে, আর দিনকে দৃশ্যমান? নিশ্চয় এতে তো এক নিদর্শন রয়েছে সেই জাতির জন্য যারা বিশ্বাস করে। ![]() |
27-87 : আর যেদিন শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে তখন যে কেউ আছে মহাকাশমন্ডলে ও যে কেউ আছে পৃথিবীতে তারা ভীতিগ্রস্ত হবে সে ব্যতীত যাকে আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন। আর সবাই তাঁর কাছে আসবে বিনত অবস্থায়। ![]() |
27-88 : আর তুমি পাহাড়গুলোকে দেখছ, তাদের ভাবছ অচল - অনড়, কিন্ত তারা চলে যাবে মেঘমালার চলে যাবার ন্যায়। এ আল্লাহরই হাতের কাজ যিনি সব কিছুই সুনিপুণভাবে করেছেন। তোমরা যা কর সে - সন্বন্ধে নিঃসন্দেহ তিনি পূর্ণ - ওয়াকিফহাল। ![]() |
27-89 : যে কেউ একটি সৎকাজ নিয়ে আসে, তার জন্য তবে থাকবে এর চেয়েও ভাল, আর তারা সেই দিনের ভীতি থেকে নিরাপদ থাকবে। ![]() |
27-90 : আর যে কেউ একটি মন্দ কাজ নিয়ে আসে, তাদের তবে তাদের মুখের উপরে নিক্ষেপ করা হবে আগুনের মধ্যে। ''তোমরা যা করে চলেছিলে তা ছাড়া অন্য কিছু কি তোমাদের প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে?’’ ![]() |
27-91 : ''আমাকে অবশ্য আদেশ করা হয়েছে যে আমি উপাসনা করব এই শহরের প্রভুকে যেটিকে তিনি পবিত্র করেছেন, আর তাঁরই হচ্ছে সব - কিছু। আর আমাকে আদেশ করা হয়েছে যে আমি মুসলিমদেরই একজন হব, - - ![]() |
27-92 : ''আর যেন আমি কুরআন পাঠ করতে পারি।’’ সুতরাং যে কেউ সৎপথ অনুসরণ করে, সে তবে নিঃসন্দেহ সৎপথে চলে তার নিজেরই জন্যে, আর যে কেউ বিপথে যায় তবে বলো - - ''আমি তো কেবল সতর্ককারীদেরই একজন।’’ ![]() |
27-93 : আর বলো - - ''সকল প্রশংসা আল্লাহ্র, তিনি শীঘ্রই তোমাদের দেখাবেন তাঁর নিদর্শনসমূহ, তখন তোমরা সে - সব চিনতে পারবে।’’ আর তোমার প্রভু অমনোযোগী নন তোমরা যা কর সে - সন্বন্ধে। ![]() |