আল-কিতাবের সাক্ষাৎকার

আল-কিতাবের সাক্ষাৎকার

ভূমিকা:
আল-কিতাব যা মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নামে পরিচিত। তবে, আল্লাহর বাণী অনুযায়ী এটি কিতাব- দ্য বুক বাংলা ভাষায় মহাগ্রন্থ বলা যেতে পারে। 
আল্লাহর কিতাবের বেশ কয়েকটি অংশ রয়েছে। যেমন- যিকর, হিকমা, কুরআন ইত্যাদি। মহান রব সুস্পষ্টভাবে বলেছেন-

  • নিশ্চয়ই আমরা তোমাকে দিয়েছি ৭টি পুনরাবৃত্তি থেকে এবং মহান কুরআন। {১৫:৮৭}

    And We have certainly given you, seven of the often repeated and the great Qur’an.

তিনি নাযিল করেছেন ফুরকান- যা মহাগ্রন্থের একটি অংশ।

  • বড়ই বরকতময় তিনি- যিনি নাযিল করেছেন আল ফুরকান তাঁর দাসের প্রতি……।{২৫:১}
  • ইতোপূর্বে মানবজাতিকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি আল-ফুরকান নাযিল করেছিলেন….{৩:৪}
  • এর আগেও তিনি মুসা আ.-কে তাওরাতের পাশাপাশি দিয়েছিলেন আল-ফুরকান {২:৫৩}
  • আমরা মুসা এবং হারুনকে দিয়েছিলাম আল-ফুরকান, জ্যোতি ও যিকির- মুত্তাকিদের জন্যে {২১:৪৮}

সুরা নিসায় আল্লাহ মহাগ্রন্থের অংশ হিকমা’ সম্পর্কে বলেন-

  • আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমা নাযিল করেছেন… {৩:১৬৪}
  • স্মরণ করো, আল্লাহ একথার উপর নবীদের অংগীকার নিয়েছিলেন যে: আমি তোমাদের যে কিতাব ও হিকমাহ্ দিয়েছি তোমরা তা গ্রহণ করো…{৩:৮১}
  • এভাবে আমি তোমাদের থেকেই তোমাদের মাঝে একজন রসূল পাঠিয়েছিযে তোমাদের কাছে আমার আয়াত পাঠ করে, ইউঝাক্কিকুম (সংশোধন ও উন্নত) করে, কিতাব ও হিকমা শিক্ষা দেয়যা কিছু জানতে নাতাও শেখায়। {২: ১২৭-১২৯}

এ ছাড়া আল-কিতাব বা মহাগ্রন্থে আছে আয্‌-যিকরা (ٱلذِّكۡرَ) / the Reminder। যা মহাগ্রন্থের আরেকটি অংশ।

  • নিশ্চয়ই আমরা নাযিল করেছি আয্‌-যিকরা এবং অবশ্যই আমরাই তার সংরক্ষক। {১৫:৯}

আরও দেখুন: নহল: ১৬:৪৪; ফুরকান ২৫:১৮; ইয়াসিন ৩৬:১১; যুখরুফ ৪৩:৫; ক্বালাম ৬৮:৫১

একইভাবে মহান আল্লাহর আল-কিতাব বা মহাগ্রন্থের একটি অংশ হলো আল-কুরআন।

কুরআন শব্দটির উৎপত্তি (রুট ওয়ার্ড)    ق ر أ


প্রশ্নমালা:

১.
কুর
আন কি?
২.
কুর
আন কেন?
৩.
কুর
আন কাদের জন্য?
৪.
কুর
আন কে নাযিল করেছেন?
৫.
কুর
আন কখন নাযিল হয়েছে?
৬.
কুর
আন কে তৈরি করেছেন? কুরআনে কোনও চ্যালেঞ্জ আছে কি?
৭. কে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন?
৮.
কুর
আন কীভাবে পড়তে হবে?
৯.
কুর
আন কি মানুষের জন্য সম্পূর্ণ, বিস্তারিত ও যথেষ্ট
তথ্য দিয়েছে?
১০.
কুর
আন কী দাবি করে?
১১.
কুর
আনের বৈশিষ্ট্য কী কী?
১২.
কুর
আন সম্পর্কে কীভাবে প্রশ্ন করতে হবে?
১৩.
কুর
আন কার কাছে এসেছে ও কেন এসেছে?

১৪.
কুর
আনের প্রতি কীভাবে মনোযোগ দিতে হবে?
১৫.
কুর
আনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কী? কুরআন অস্বীকার করলে কী হবে?
১৬.
কুর
আন কোন ভাষায় ও কীভাবে অবতীর্ণ হয়েছে?
১৭.
কুর
আনে কী কী বলা হয়েছে? কী ওয়াদা রয়েছে?
১৮.
কুর
আন কি অন্য কারও কাছে এসেছিল?
১৯.
কুর
আন কী করে?
২০.
কোন কোন সময় কুর
আন পড়া উত্তম?
২১. কিয়ামতের
ময়দানে মোহাম্মদ রসুলাল্লাহ কুর
আন ও তাঁর
উম্মত সম্পর্কে কী বলবেন?
২২.
কুর
আন অস্বীকার-কারীরা কী বলে?
২৩.
কুর
আন দিয়ে কী করা হয়?
২৪.
মোহাম্মদ রসুলাল্লাহ কীভাবে কুর
আন পড়তেন?

প্রশ্ন-উত্তর:

এবার প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। আমরা শুধু আল-কুরআন নিয়েই প্রশ্ন করব। উত্তর দেবেন স্বয়ং আল-কিতাব বা রব্বুল আলামিনের মহাগ্রন্থ।

১. কুরআন কি?

২:১৮৫ ….কুরআন মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।
২৭:১,, তোয়া সিন। এগুলো আয়াত আল কুরআন ও সুস্পষ্ট কিতাবের; হিদায়াত ও সুসংবাদ সেইসব মুমিনদের জন্যে; যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আখিরাতের বিশ্বাসী।
৪১:৪৪… হে নবী! বলো: এ কুরআন মুমিনদের জন্যে জীবন পদ্ধতির দিশারি এবং নিরাময়।….

২. কুরআন কেন?

৪৭:২৪ তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করে না? নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ
২০:১১৩ এভাবেই আমরা নাযিল করেছি কুরআন আরবি ভাষায় এবং আমরা বর্ণনা করেছি সতর্ক-বার্তা, যাতে তারা সতর্ক হয় অথবা এতে তাদের স্মরণ হবে।

৩.
কুর
আন কাদের জন্য?

৪১:৩ এই কিতাব- যার আয়াতগুলো বিশদ- আরবি ভাষার কোরআন- যারা জানে তাদের জন্য। 
৪৬:২৯ যখন আমরা একদল জিনকে তোমার প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম। তারা কুরআন শুনছিল। যখন তারা সেখানে হাজির হয়েছিলতারা বলেছিল- নীরব থাকো, শোনো। যখন কুরআন পাঠ শেষ হলো, তখন তারা ফিরে গেলো তাদের কওমের কাছে সতর্ককারী হিসেবে।

৪.
কুর
আন কে নাযিল করেছেন?

২৬:১৯২ নিশ্চয়ই এ কুরআন রাব্বুল আলামিনের নাযিলকৃত। 
৭৬:২৩ আমরাই পর্যায়ক্রমে তোমার প্রতি এ কুরআন নাযিল করছি। 
২৭:২৬ তোমাকে এই কুরআন দেয়া হচ্ছে প্রজ্ঞাবান সর্বজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে। 
১৫:৮৭ নিশ্চয়ই আমরা তোমাকে দিয়েছি ৭টি পুনরাবৃত্তি থেকে এবং মহান কুরআন। 
২০:২ তোমাকে দুর্ভোগে ফেলার জন্য আমরা এই কুরআন নাযিল করিনি।

৫.
কুর
আন কখন নাযিল হয়েছে?

২:১৮৫ শাহরু রামাদানে নাযিল হয়েছে কুরআন…..।

Image by Firas Alkaheel from Pixabay

৬. কুরআন কে তৈরি করেছেন? কুরআনে কোনও চ্যালেঞ্জ আছে কি?

১০: ৩৭ আর কুরআন সে জিনিস নয় যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ তা বানাবে…। 
১১:১৪  …..ففَاعْلَمُوا أَنَّمَا أُنْزِلَ بِعِلْمِ اللَّهِ َ……. know that it has been sent down by Allah’s knowledge
এটি (কুরআন) আল্লাহর ইলমের ভিত্তিতে নাযিল করা হয়েছে….

১৭:৮৮ বলো, যদি সব মানুষ ও জিন মিলে এই কুরআনের মতো বানাতে চায়তারা এমন বানাতে পারবে না, এমনকি তাদের কেউ পরস্পরকে সাহায্য করে (তবুও নয়)।

৭. কে কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন?

৫৫:১,২-  তিনি রহমান; শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন।

৮. কুরআন কীভাবে পড়তে হবে?

৭৩:৪ ….কুরআন আবৃত্তি করো সুবিন্যাস/ধারাবাহিক-ভাবে (তারতিলা)।
৭৩:২০ ….কাজেই কুরআনের যতটুকু আবৃত্তি করা তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি করো…।

৯. কুরআন কি মানুষকে সম্পূর্ণ, বিস্তারিত ও যথেষ্ট তথ্য দিয়েছে?

৪১:৩ এই কিতাব- আয়াতসমূহ বিশদভাবে বিবৃত– আরবি কোরআন……। 
১৭:৮৯ এবং আমরা এই কুরআনে সব উদাহরণ ব্যাখ্যা করেছি, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ প্রত্যাখ্যান করে- যা কুফর (এই প্রত্যাখ্যান শুধুই কুফরি আচরণ/ ..refused except disbelief
১৮:৫৪ এবং নিশ্চিতভাবে এই কুরআনে আমরা মানবজাতির জন্য সব উদাহরণ ব্যাখ্যা/বর্ণনা করেছি; অথচ মানুষ বেশিরভাগ বিষয়ে বিতর্কপ্রিয়। 
৩৯:২৭ এবং নিশ্চয়ই এই কুরআনে আমরা মানুষের জন্যে সব উদাহরণ দিয়েছি- যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। 
৩০:৫৮ আমরা মানুষের জন্যে এ কুরআনে সব ধরনের দৃষ্টান্ত দিয়েছি…..। 
৪১:৩ এই কিতাব- যার আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণিত- আরবি ভাষার কুরআন…।

১০. কুরআন কী দাবি করে?

৪:৮২ এরা কি লক্ষ্য করে না কুরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতে অবশ্যই বহু বৈপরীত্য দেখতে পেত! 
১০:৩৭…অবশ্যই এটি (কুরআন) পূর্ববর্তী কালামের সত্যায়ন করে এবং সেসব বিষয়ে বিশ্লেষণ দেয়- যা তোমাকে দেওয়া হয়েছে; যাতে কোন সন্দেহ নেই– তোমার রবের পক্ষ থেকে।

১১. কুরআনের বৈশিষ্ট্য কী কী?

১৫:১ আলিফ-লাম-রা। এগুলো কিতাবের আয়াত এবং সুস্পষ্ট কুরআন। 
৩৯:২৮ আরবি ভাষার এ কুরআন সম্পূর্ণ বক্রতামুক্ত…। 
৩৬:২ শপথ বিজ্ঞানময় কুরআনের! 
৩৬:৬৯ আমি রসূলকে কবিতা শিক্ষা দেইনি এবং তা তার জন্যে শোভনীয়ও নয়। এটা তো এক উপদেশ ও প্রকাশ্য কুরআন। 
৩৮:১ সোয়াদ; উপদেশে পরিপূর্ণ আল-কুরআনের শপথ।  
৫০:১ কাফ; কুরআনমজিদের শপথ। 
৫৬:৭৭ বস্তুত, এটি নিঃসন্দেহে মহিমান্বিত কুরআন। 
৮৫:২১ কারণ, এটি মহিমান্বিত কুরআন। 

১২. কুরআন সম্পর্কে কীভাবে প্রশ্ন করতে হবে?

৫:১০১ হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা এমন সব বিষয়ে প্রশ্ন করো নাযা তোমাদের কাছে প্রকাশ হলে সেগুলো তোমাদের কষ্ট দেবে। কুরআন নাযিল হবার সময়কালেই যদি তোমরা ঐসব প্রশ্ন করো, তবে সেগুলো তোমাদের কাছে প্রকাশ করে দেয়া হবে। আল্লাহ সেগুলো ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ তোপরম ক্ষমাশীল পরম সহনশীল।

১৩. কুরআন কার প্রতি এসেছে ও কেন এসেছে?

৬:১৯ আমার প্রতি এ কুরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে-যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কুরআন পৌঁছাবে– সবাইকে সতর্ক করি। 
১৭:৮২ আমরা নাযিল করছি আল-কুরআন, যা মুমিনদের জন্যে শিফা (নিরাময়) ও রহমত। এটি যালিমদের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বাড়ায় না। 

১৪. কুরআনের প্রতি কীভাবে মনোযোগ দিতে হবে?

১৬:৯৮ তুমি যখন কুরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে নেবে। 
৭:২০৪ আর যখন কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তা শোনো এবং চুপ থাকো– যাতে তোমরা রহমত পাও। 
২০:১১৪ আল্লাহ্ অতীব মহান, প্রকৃত সম্রাট তিনিই। তোমার প্রতি অহি সম্পূর্ণ হবার আগেই তুমি তাড়াহুড়ো করে কুরআন পাঠ কোরো না। তুমি বলো- আমার প্রভু! আমাকে জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।
৪৬:২৯ …(জিনরা) বলেছিল: নীরব থাকো, শোনো।…..
৮৪:২১ এবং যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করা হয়, তখন তা মেনে নেয় না! / সাজদা করেনা?

১৫. কুরআনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কী? কুরআন অস্বীকার করলে কী হবে?

১০:৬১ তুমি যে অবস্থায়ই থাকো এবং কুরআন থেকে যা-ই তিলাওয়াত করো না-কেন; আর (হে মানুষ!) তোমরা যা-ই করো না-কেন, আমরা তোমাদের উপর সাক্ষী থাকি যখন তোমরা তাতে আত্মনিয়োগ করো। মহাকাশ এবং পৃথিবীতে একটি অণু পরিমাণ কিছুও তাঁর অগোচরে নেই এবং তার চাইতে ক্ষুদ্রতর বা বৃহত্তর সব কিছু সুস্পষ্ট কিতাবে লেখা আছে।

১১:১৭ তারা কি ঐ লোকদের সমতুল্য হতে পারে, যারা তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে এক সুস্পষ্ট প্রমাণের (কুরআনের) উপর প্রতিষ্ঠিত, যা তিলাওয়াত করে তাঁর প্রেরিত সাক্ষী এবং যার আগে এসেছিল মুসার উপর অবতীর্ণ কিতাব পথ প্রদর্শক ও রহমত হিসাবে? তারা এর প্রতি ঈমান রাখে। মানব দলসমূহের যারাই এটিকে অস্বীকার করে আগুনই হবে তাদের প্রতিশ্রুত স্থান। সুতরাং তুমি এটির সম্পর্কে কোনো প্রকার সন্দেহে থেকোনা। এটি তো তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে এক মহাসত্য; তবে অধিকাংশ লোকই বিশ্বাস করেনা।

১৬. কুরআন কোন ভাষায় ও কীভাবে অবতীর্ণ হয়েছে?

৪১:৩ এই কিতাবের আয়াতগুলো বিস্তারিত- আরবি ভাষার কুরআন….। 
১২:২ বস্তুত আমরা কুরআন নাযিল করেছি আরবিতে, যাতে তোমরা বোঝ। 
৩৯:২৮ আরবি ভাষার এ কুরআন সম্পূর্ণ বক্রতামুক্ত, যাতে করে তারা সতর্কতা অবলম্বন করে।১৭:১০৬ আমরা কুরআন ভাগ করেছিযাতে তুমি মানুষের কাছে পাঠ করতে পারো- বিরতি দিয়ে; এবং আমরা এটা নাযিল করেছি পর্যায়ক্রমে। 
২০:১১৩ এভাবেই, আমরা এটিকে নাযিল করেছি একটি আরবি কুরআন হিসেবে….। 
২৫:৩২ কাফিররা বলে: সমগ্র কুরআন তার কাছে একবারে নাযিল করা হলো না কেন? (আমরা) এভাবেই করে থাকি এর মাধ্যমে তোমার অন্তরকে মজবুত করার জন্যেআর এ কারণেই আমরা কুরআন পাঠ করেছি পর্যায়ক্রমে (তারতিলান)। 
৪৩:৩ আমরা এই কুরআন আরবি ভাষায় করেছি যেনো তোমরা বুঝতে পারো। 
৪২:৭ এভাবেই আমি তোমার প্রতি আরবি ভাষায় একটি কুরআন অবতীর্ণ করেছিযাতে করে তুমি সতর্ক করে দিতে পারো মানববসতির কেন্দ্র ও তার চারপাশের লোকদের। যাতে তুমি সমবেত হবার দিন সম্পর্কে সতর্ক করো- যাতে কোনও সন্দেহ নেই (অবধারিত)। সেদিন একদল যাবে জান্নাতে, আরেক দল যাবে প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকুণ্ডে।

Image by Ahmad Ardity from Pixabay

১৭.
কুর
আনে কী কী বলা হয়েছে? কী ওয়াদা রয়েছে?

১২:৩ আমি তোমার নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করেছি, যেভাবে আমি এ কুরআন তোমার নিকট অবতীর্ণ করেছি। তুমি এর আগে অবশ্যই এ ব্যাপারে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। 
১৭:৬০ যখন আমরা তোমাকে বলেছিলাম- নিশ্চয়ই তোমার প্রভু মানুষকে পরিবেষ্টন করে আছেন। আমরা তোমাকে যেসব দৃশ্য দেখিয়েছি, সেগুলো ও কুরআনে বর্ণিত অভিশপ্ত গাছটি শুধুই মানুষের পরীক্ষার জন্যে। আমরা তাদের ভয় দেখালেও তা কেবল তাদের অবাধ্যতাই বাড়িয়ে দেয়। 
২৭:৭৬ বনি ইসরাঈল যেসব বিষয়ে মতভেদ করে, তার অধিকাংশই এ কুরআন তাদের বলে দেয়। 
২৭:৯২ আমাকে আরো নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আমি যেনো তিলাওয়াত করি আল কুরআন। অত:পর যে কেউ সঠিক পথে চলবে, সে সঠিক পথে চলবে নিজেরই কল্যাণে। আর যে কেউ ভুল পথ অবলম্বন করবেতুমি তার ব্যাপারে বলবে- আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র। 
২৮:৮৫ যিনি তোমার প্রতি কুরআনের বিধান দিয়েছেন, তিনি অবশ্যি তোমাকে ফিরিয়ে নেবেন- যেখান থেকে এসেছিলে। বলো- আমার প্রভুই ভালো জানেন- কে সঠিক পথে আছে, আর কে সুস্পষ্ট বিপথগামী।


১৮.
কুর
আন কি অন্য কারও কাছে এসেছিল?

১৫:৮৯-৯২ এবং বলো- আমি এক সুস্পষ্ট সতর্ককারী। যেভাবে আমরা নাযিল করেছিলাম সেইসব বিভক্তকারীদের উপর; যারা কুরআনকে টুকরা টুকরা করেছিল! অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, আমরা অবশ্যই তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করব!

১৯. কুরআন কী করে?

১৭:৯ এই কুরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সবচেয়ে সরল; এবং মুমিনদেরসুসংবাদ দেয়– যারা সৎকর্ম করে- তাদের জন্যে রয়েছে মহা-পুরস্কার। 
১৭:৪১ আমি এই কুরআনে বিশ্লেষণ করেছি, যাতে তারা চিন্তা করে। অথচ এতে তাদের শুধু বিমুখতাই বৃদ্ধি পায়। 
১৭:৪৫ তুমি যখন কুরআন পাঠ করো, তখন আমরা তোমার এবং যারা আখিরাতের বিশ্বাস করে না, তাদের মধ্যে অদৃশ্য বাধা স্থাপন করি। 
১৭:৪৬ আমরা তাদের কলবের উপর আবরণ সৃষ্টি করে দিয়েছি যেনো তারা তা উপলব্ধি করতে না পারে, আর তাদের কানে সৃষ্টি করে দিয়েছি বধিরতা। তুমি যখন কুরআনে তোমার একমাত্র প্রভুর কথা স্মরণ করো: তখন তারা পেছনে ফিরে পালাতে থাকে।

২০. কোন সময় কুরআন পড়া উত্তম?

১৭:৭৮ সালাত কায়েম করো সূর্য ক্ষয় থেকে শুরু করে রাতের অন্ধকার ঘনীভূত হওয়া পর্যন্ত এবং ফজরে কুরআন; নিশ্চয়ই ফজরের কুরআন সাক্ষ্যদাতা।

 ২১. কিয়ামতের দিন মোহাম্মদ রসুলাল্লাহ কুরআন বিষয়ে তাঁর উম্মত সম্পর্কে কী বলবেন?

২৫:৩০ আর রসুল বলবেন- হে প্রভু! আমার লোকেরাই এই কুরআনকে পরিত্যাগ করেছিল।

২২. কুরআন অস্বীকারকারীরা কী বলে?

৩৪:৩১ কাফেররা বলে, আমরা কখনও এ কুরআনে বিশ্বাস করব না এবং এর পূর্ববর্তী কিতাবেও নয়…। 
৩০:৫৮…তুমি যদি তাদের সামনে কোনো নিদর্শন হাজিরও করো, কাফিররা বলবে- তোমরা মিথ্যা-বাতিল নিয়ে এসেছো।’ 
৪১:২৬ কাফিররা বলে: তোমরা এ কুরআন শুনবে না এবং যেখানেই তা পাঠ করা হবে, হৈ হট্টগোল করবে, যাতে করে তোমরা জয়ী হতে পারো।’ 
৪১:৪৪ আমরা যদি বিদেশি ভাষায় কুরআন পাঠাতাম, তারা অবশ্যই বলতো- এর আয়াতগুলো (আমাদের ভাষায়) কেন ব্যাখ্যা করা হয়নি! এটা কেমন ব্যাপার, কিতাব হলো অনারবি আর রসুল হলো আরব? হে নবী! বলো: এ কুরআন মুমিনদের জন্যে জীবন পদ্ধতির দিশারি ও নিরাময়। আর যারা ঈমান আনে না, তারা বধির এবং এটি তাদের জন্য অন্ধত্ব। তাদের যেন ডাকা হবে বহু দূর থেকে!’ 
৪৩:৩১ এবং তারা বলে- দুটি মহান শহরের এক ব্যক্তির ওপর কেন কুরআন নাযিল হলো না
১৩:৩১ যদি এমন কোনো কুরআন হতো যার স্পর্শে পর্বতমালা চলতো, কিংবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেতো, অথবা তাতে মৃতদের সাথে কথা বলা যেতো (তবু তারা সেই কুরআনের প্রতি ঈমান আনতো না)।

২৩. কুরআন দিয়ে কী করা হয়?

৫০:৪৫ তারা কী বলে, তা আমরা জানি। তুমি তাদের উপর শক্তি প্রয়োগকারী নও। যারা আমার শাস্তিকে ভয় করে তাদের উপদেশ দিয়ে যাও এই কুরআন দিয়ে। 
৫৪:১৭, ২২, ৩২, ৪০আমরা কুরআনকে বোঝার ও উপদেশ নেওয়ার জন্যে সহজ করেছি, অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি
৫৯:২১ আমরা যদি এ কুরআনকে কোনো পাহাড়ের উপর নাযিল করতামতবে তুমি সেটাকে দেখতে- আল্লাহর ভয়ে বিনীত ও বিদীর্ণ হয়ে পড়ছে। আমরা এসব দৃষ্টান্ত প্রদান করি মানুষের জন্যে যাতে করে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। 
৭২:১, হে নবী! বলো- আমার কাছে অহি করা হয়েছে যেএকদল জিন মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। তারপর তারা বলেছে: আমরা শুনে এসেছি এক বিস্ময়কর কুরআন! সেটি সঠিক পথের হিদায়াত! তাই আমরা তার প্রতি ঈমান এনেছি। আমরা কখনো আমাদের প্রভুর সঙ্গে শরিক করবো না।

২৪. মোহাম্মদ রসুলাল্লাহ কীভাবে কুরআন পড়তেন?

৭৫:১৬,১৭, ১৮- তুমি বারবার জিহ্বা নাড়বে না তাড়াহুড়ো করে অহি আয়ত্ত করার জন্যে। এর সংরক্ষণ করা ও পড়ানোর (وَقُرْآنَهُ) দায়িত্ব আমাদের। সুতরাং আমরা যখন তা পাঠ করি, তুমি তখন সেই পাঠের (قُرْآنَهُ) অনুসরণ করো।
৭৩:৪…কুরআন আবৃত্তি করো সুবিন্যাস/ধারাবাহিক-ভাবে (তারতিলা)। 
৭৩:২০…কাজেই কুরআনের যতটুকু আবৃত্তি করা তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি করো…।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *