সিরাতুল মুস্তাকিম

সিরাতল মুস্তাকিম

মহান রব্বুল আলামিন মানুষের জন্য মহাগ্রন্থ আল-কিতাব নাযিল করেছেন। শুরুতেই তিনি তাঁর নিকট প্রাচীনকাল থেকে প্রার্থনা করা ‘খোদায়ী বাক্য’ ও ‘পদ্ধতি’ তুলে ধরেছেন। পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে তাঁর কাছ থেকে হেদায়েত বা অনুগ্রহ বা সঠিক পথের প্রার্থনা ছাড়া মানুষের আর কীই-বা চাওয়ার থাকতে পারে। এই সঠিক পথ দেখাতেই যুগে যুগে নবী রসুলগণ এসেছিলেন। কারণ, একমাত্র মহান রবের দেখানো পথেই আছে দুনিয়া ও আখিরাতের চুড়ান্ত কল্যাণ। পথ দেখানোর ওয়াদা আল্লাহ-রব্বুল আলামিন কুর’আনেই উল্লেখ করেছিলেন। যখন তিনি মানুষকে জান্নাত থেকে নামিয়ে দিলেন, তিনি বলেছিলেন 

       ·    তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। অতঃপর যখন আমার হুদা (পথ-নির্দেশ) আসবে, যে কেউ হুদার অনুসরণ করবে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। {২:৩৮}

            ·    তিনি বললেন, তোমরা উভয়ে জান্নাত থেকে নেমে যাও; তোমরা পরস্পরের শত্রু; পরে তোমাদের কাছে আমার সৎপথের নির্দেশ আসলে যে আমার পথ অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না ও দুঃখ-কষ্টে পড়বে না। {২০:১২৩}

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ও সমাজে দুর্ভোগ ও দুর্দশাগ্রস্ত যত মানুষ আছে, তার একমাত্র কারণ, তারা মহান সৃষ্টিকর্তার হুদা অনুসরণ করে নি। 
নিজেকেই প্রশ্ন করুন, আপনি কি দুর্দশাগ্রস্ত কাউকে দেখতে পান?

অথচ, রব্বুল আলামিনের প্রতিশ্রুতি হলো- যে কেউ তাঁর হুদা বা Guidance অনুসরণ করবে, সে নির্ভয়ে থাকবে, দুঃখ-দুর্দশায় পড়বে না, পথভ্রষ্টও হবে না। মহান আল্লাহর প্রতিশ্রুতিই সত্য- মানুষই বরং হুদা অনুসরণ করছে না, পরিণামে সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে বহু দূরে ছিটকে পড়েছে। অথচ বুঝে বা না বুঝে আমরাই নিয়মিত প্রার্থনা করি- 

                                    {১-৬} ٱهْدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ

আমাদেরকে ‘সিরাতল মুস্তাকিম’ প্রদর্শন করুন। {১-৬}

তাহলে শুরুতেই জানা দরকার, সিরাতুল মুস্তাকিম অর্থ কী। এর অর্থ- ‘সহজ-সরল জীবনপথ’
তাহলে, ‘সিরাতল মুস্তাকিম’ কোনটি? তা, একমাত্র মহাগ্রন্থেই তা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। পবিত্র আল-কুর’আনে ‘সিরাতল মুস্তাকিম’ সংক্রান্ত কিছু আয়াত এখানে সংকলিত করা হলো। 
এসব আয়াত থেকে বোঝা যাবে—আমরা সুরা ফাতিহার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে যা চাই, তার জবাবে আল্লাহ কী কী বলেছেন।

সিরাতল মুস্তাকিম বা সহজ-সরল জীবনপথ!

ধারাবাহিকভাবে আয়াতগুলো লক্ষ করা যাক। মহান আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন- যেহেতু তিনি আমাদের রব বা লালন-পালন-রক্ষাকর্তা, সেহেতু তাঁর তাঁর ইবাদতই হলো সিরাতল মুস্তাকিম

{৩-৫১}: إِنَّ ٱللَّهَ رَبِّى وَرَبُّكُمْ فَٱعْبُدُوهُ ۗ هَـٰذَا صِرَٰطٌ مُّسْتَقِيمٌ

নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ আমার রব এবং তোমাদেরও রব, কাজেই তোমরা তাঁরই ইবাদত কর। এটাই সিরাতল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথ। {৩-৫১}

একই সুরায় তিনি নিশ্চিত করছেন এভাবে-

  •  যে ব্যক্তি আল্লাহকে সুদৃঢ়ভাবে গ্রহণ করেনিশ্চয়ই সে সিরাতল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথে পরিচালিত হবে। {৩-১০১}

وَمَنْ يَّعْتَصِمْ بِاللّٰهِ فَقَدْ هُدِيَ اِلٰى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ ࣖ  ( آل عمران: ١٠١ )

         And whoever holds firmly to Allah has [indeed] been guided to a straight  path. 

এরপর সুরা মায়িদাতে সিরাতল মুস্তাকিম সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন আল্লাহ। তিনি বললেন-  

  • ….নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে এসেছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নুর ও সুস্পষ্ট কিতাব  ( نُوْرٌ وَّكِتٰبٌ مُّبِيْنٌۙ )। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে, (يَّهْدِيْ بِهِ) এটা দিয়ে তিনি তাদেরকে শান্তির পথ দেখান এবং তাদেরকে নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আনেন; আর তাদেরকে সিরাতল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথে নিয়ে যান {৫:১৫,১৬}

এই আয়াতে দেখা যাচ্ছে, মহান আল্লাহ নুর নাযিল করেছেন এবং কুর’আন নাযিল করেছেন। নুর দিয়ে তিনি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে আনেন। পাশাপাশি, কুর’আন দিয়ে তিনি সিরাতল মুস্তাকিমে বা সহজ-সরল জীবনপথে নিয়ে যান। তবে, শর্ত হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা বা প্রত্যাশা করতে হবে। তাহলেই আল্লাহ তাকে সিরাতল মুস্তাকিমে নিয়ে যাবেন। 

উপরোক্ত তিনটি আয়াত থেকে যে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়, তা হলো- সিরাতল মুস্তাকিম পাওয়ার জন্য রব্বুল আলামিনের ১. ইবাদত করতে হবে, ২. তাঁকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে হবে ৩. কুর’আনের পথনির্দেশ অনুসরণ করতে হবে।

এখন পর্যন্ত ঠিক স্পষ্ট হলো না– কি সেই ইবাদত? কুর’আনের কোন কোন নির্দেশ বা কাজগুলো করা বা না-করার মাধ্যমে কুর’আন অনুসরণ করা যাবে এবং আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা যাবে। আর সহজ-সরল জীবনপথে উঠলেই কেবল আল্লাহর ওয়াদা অনুযায়ী হুদার অনুসরণের মাধ্যমে প্রশান্তি, নিরাপত্তা, নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে। কিন্তু কী সেটা? কি সেই সিরাতল মুস্তাকিম?

ধারাবাহিক এই কুর’আনিক অগ্রযাত্রায় পরের সুরাতেই যা পাওয়া গেল- তা দেখুন। সুরা আন’আম আয়াত ১৫১-১৫৩।

  • হে নবী! বলো– এসো, তোমাদের প্রভু তোমাদের জন্যে যা হারাম করেছেন তা তোমাদের তিলাওয়াত করে শুনাই। তা হলো, তাঁর সঙ্গে কোনও কিছুই শরিক করো না; পিতা-মাতার প্রতি ইহসান করোদারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না, কারণ আমরাই তাদের ও তোমাদেরও রিযিক দেই, প্রকাশ্যে বা গোপনে জঘন্য অপকর্মের কাছেও যেয়ো না; কোনও নফসকে হত্যা করো না- যা আল্লাহ হারাম করেছেন, তবে যা যথার্থ তা ছাড়া; আল্লাহ তোমাদের এসব নির্দেশ দিচ্ছেন- যাতে তোমরা যৌক্তিক চিন্তা করো। 
  • এতিমদের সম্পদের কাছেও যেয়ো না, তবে বয়োপ্রাপ্ত হওয়ার আগে উত্তম পন্থায় ব্যবস্থাপনা করো; পরিমাণ ও ওজনে ন্যায্যভাবে পূর্ণ করে দাও; আমরা কোনও নফসের ওপর তার সাধ্যাতীত বোঝা দেই না; তোমরা যখন কথা বলো- ন্যায্য বলো, এমনকি সে নিকটজন হলেও। আল্লাহর সঙ্গে অঙ্গীকার পূর্ণ করো; এর মাধ্যমে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন- যাতে তোমরা স্মরণ করো।
  • এবং এটাই আমার সিরাতল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথ, তাই তোমরা এরই অনুসরণ করো; তোমরা অন্য পথ অনুসরণ করো না, সেগুলো তোমাদের তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে; আল্লাহ তোমাদের এসব নির্দেশই দিচ্ছেন- যাতে তোমরা সচেতন হও (লায়াল্লাকুম তাত্তাকুন)। {৬:১৫১-১৫৩} 

ওয়া আন্না হাযা সিরত্বি মুস্তাকিমান ফাত্তাবিয়ু-হু; ওয়া লা তাত্তাবিয়ুস্ সুবুলা ফা-তাফাররকা বিকুম আন সাবিলিহ; যালিকুম ওয়াস্‌স্বকুম বিহি লা’আল্লাকুম তাত্তাকুন। ১৫৩

এসব আয়াতে সুস্পষ্টভাবে মহান আল্লাহ জানিয়ে দিলেন- কোন কোন নির্দেশ মান্য করে তাঁর ইবাদত করতে হবে, তাঁকে দৃঢ়ভাবে ধরে থাকা হবে এবং সিরতল মুস্তাকিমে থাকা যাবে। আর এই সিরাতের অপর প্রান্তে আছে জান্নাত। আল্লাহর এই নির্দেশের অনুসরণই সিরাতল মুস্তাকিমে থাকার পদ্ধতি। এই নির্দেশগুলো কিন্তু শুধুমাত্র মুসলিম জাতিকে নয়। এমনকি এই আয়াতগুলো ওপর থেকে পড়ে আসলে দেখা যায়, সে সময় মুশরিক- যারা আল্লাহকে মানতো এবং আল্লাহর নামে নিজেরা হুকুম-বিধান তৈরি ও পালন করে শিরক করতো। আর তৎকালীন বনী ইসরাইল বা রসুলাল্লাহর সময়ের আরব ইহুদি জাতি- যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করত এবং শিরকও করত। 
সিরাতল মুস্তাকিমের সংজ্ঞা ও পরিধি (আন’আম ১৫১-১৫৩ নং আয়াত):  

  1. মহান আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুই শরিক না-করা
  2. পিতা-মাতার সঙ্গে সর্বদা উত্তম আচরণ করা; খারাপ আচরণ না-করা; 
  3. দারিদ্র্র্যের ভয়ে সন্তানদের হত্যা না-করা;
  4. প্রকাশ্যে ও গোপন জঘন্য অপকর্মের (ফাহিশার) কাছে না-যাওয়া;
  5. বৈধ পদ্ধতি/কারণ ছাড়া মানুষ হত্যা না-করা;
  6. এতিমদের সম্পদ আত্মসাৎ না-করা;
  7. পরিমাণ ও ওজনে ন্যায্যতা বজায় রাখা;
  8. যে কোনও অবস্থায় ন্যায্য কথা বলা;
  9. আল্লাহর কাছে অঙ্গীকার থাকলে তা পূর্ণ করা;

পরিশেষে, আল্লাহ মানবজাতিকে সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন এই পথের অনুসরণ করো এবং অন্যান্য পথ ও মতের অনুসরণ করো না। কারণ, এটাই হলো সিরাতল মুস্তাকিম। এই পথের শেষ প্রান্তে আছে চূড়ান্ত সফলতা।  

তিনটি আয়াতের এসব নির্দেশ বা হুকুমের (Order/ Command) কারণও উল্লেখ করেছেন আল্লাহ। যাতে মানুষ যৌক্তিক চিন্তা-ভাবনা করে; মনে রাখে এবং তাকওয়াবান হয়।

সিরাতল মুস্তাকিমের একমাত্র ঝুঁকি

এ অবস্থায় সিরাতল মুস্তাকিমের অন্যতম এবং একমাত্র ঝুঁকির প্রতি আমাদের যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। মানবজাতিকে কোন জিনিস মানুষকে সিরাতল মুস্তাকিম থেকে সরিয়ে নিতে পারে? তার উত্তর জানিয়ে দিয়েছেন মহান আল্লাহ।

  • তখন সে বললোযেহেতু তুমি আমাকে বিপথগামী করলে, তাই আমি তাদের জন্যে তোমার সিরাতল মুস্তাকিমে ওঁৎ পেতে থাকবো। তারপর আমি আসবো তাদের সামনে থেকে, তাদের পেছন থেকে, তাদের ডানে থেকে এবং তাদের বামে থেকে; ফলে তুমি তাদের অধিকাংশকেই কৃতজ্ঞ পাবে না (شَٰكِرِينَ)। {৭:১৬,১৭}

খেয়াল করার বিষয় হলো– জিন-শয়তান কিন্তু বলেনি যে, সে মানুষকে নামায-কালাম, হজ-যাকাত, ধর্ম-কর্ম ইত্যাদি থেকে দূরে সরাবে। বরং, সে মানুষকে সিরাতল মুস্তাকিম থেকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা নিয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর ৯টি বিধি-বিধান-হুদা-নির্দেশনা থেকে মানুষকে দূরে সরানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। তাহলেই মানুষ আসলে কুর’আন আঁকড়ে ধরেই সিরাতল মুস্তাকিম থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। নানা রকম ধর্ম-কর্ম করেও মানুষ আসলে সিরাতল মুস্তাকিম থেকে ছিটকে পড়বে। মানুষ মনে করবে যে, তারা সঠিক পথে আছে। কিন্তু তারা প্রচলিত পদ্ধতিতে না-বুঝে কুর’আন পড়ে এবং কুর’আন অনুসরণ না-করে, সিরাতল মুস্তাকিম থেকে পিছলে যাবে বহু দূর। যার পরিণতিতে কিয়ামতের পর ইবলিসের সঙ্গে জাহান্নাম- “সায়িরে” দাখিল হয়ে যাবে। 

কুর’আনের আয়াতগুলো চিন্তাভাবনা করলে দেখা যায়, এসব নির্দেশ হলো সামাজিক বিধি-বিধান। সামাজের সবচেয়ে উন্নত মানুষের বৈশিষ্ট্য এসব। কোনোভাবেই তা প্রচলিত প্রার্থনা-পদ্ধতির সঙ্গে জড়িত বিষয় নয়।এসব বিষয় সবসময় মনে রাখা ও অনুসরণ করার মাধ্যমে মানুষ তাত্তাকুন/ মুত্তাকি/ তাকওয়াবান হতে পারে। যা মূলত আল-কিতাব নাযিলের মূল উদ্দেশ্য।

  • ذٰلِكَ الْكِتٰبُ لَا رَيْبَ ۛ فِيْهِ ۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَۙ  البقرة: ٢ )
  • এটি সেই কিতাব, এতে কোনও সন্দেহ নেই, মুত্তাকিনদের হুদা বা পথ-নির্দেশ। {২:২}

যার জন্য প্রার্থনা করেছিল মানুষ এবং জবাবে মানুষকে এই হুদা বা পথ-নির্দেশ দেওয়ার ওয়াদা করেছিলেন আল্লাহ।
ধারাবাহিক এই প্রক্রিয়ায় আমরা দেখতে পাই মহান রব্বুল আলামিন “সিরাতুল মুস্তাকিম” উল্লেখ করে বেশ কিছু উদাহরণ দিয়েছেন। কে বা কারা সিরাতুল মুস্তাকিম পেয়েছিল…

তিনি (ইবরাহীম) ছিলেন আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞআল্লাহ্‌ তাঁকে মনোনীত করেছেন এবং তাঁকে পরিচালিত করেছিলেন সিরাতুল মুস্তাকিমে/সহজ-সরল জীবনপথে{১৬-১২১}

 [He was] grateful for His favors. He [i.e., Allah] chose him and guided him to a straight path— Saheeh International  

(ইসা বললেন) আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার রব ও তোমাদের রব; কাজেই তাঁর ইবাদাত করএটাই সিরাতুল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথ {১৯-৩৬} 

মহান আল্লাহ সিরাতল মুস্তাকিমে পরিচালিত হতে কাউকে বাধ্য করেন নি!

        অবশ্যই আমরা সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেছি, আর আল্লাহ্‌ যাকে যোগ্য মনে করেন, তাকে সহজ-সরল জীবনপথে পরিচালিত করেন। {২৪:৪৬}

চুড়ান্ত-ভাবে মহান রব আবারও নিশ্চিত করছেন যে-

{৩৬-৬১} وَأَنِ ٱعْبُدُونِى ۚ هَـٰذَا صِرَٰطٌمُّسْتَقِيمٌ

আর আমারই ইবাদত কর, এটাই সিরাতুল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথ {৩৬-৬১}

সুরা আন’আমের ১৫১-১৫৩ আয়াতের বিশ্লেষণে আবারও নিশ্চিন্তে বলা যায়, সিরাতুল মুস্তাকিম/সহজ-সরল জীবনপথ হলো সেই পথ বা ব্যবস্থা- যা মানুষের জন্য জীবনযাপনের মৌলিক হুদা বা পথ-নির্দেশ। এর অনুসরণ করা ও প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমেই পৃথিবীতে শান্তি, সমৃদ্ধি, মর্যাদা ও প্রশান্তি লাভ করা যায় এবং পরিশেষে জান্নাত পাওয়া যায়।

এর বাইরে যে কোনও পথ ও মতবাদের অনুসরণ নিশ্চিত ধ্বংস ডেকে আনে।নবী মোহাম্মদ রসুলাল্লাহকেও আল্লাহ নির্দেশনা দিয়ে বলছেন-

ۚ وَٱللَّهُ يَهْدِى مَن يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ 

অতএব তোমার প্রতি যা ওহি করা হয়েছে তাকে তুমি সুদৃঢ়ভাবে ধারণ কর। নিশ্চয় তুমি সিরাতুল মুস্তাকিমে/সহজ-সরল জীবনপথে আছো। {৪৩:৪৩}

অতএব, আমাদেরকেও ওহি বা আল-কিতাব আঁকড়ে ধরতে হবে। এটাই একমাত্র পথের দিশা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *