মুসলমানদের যেভাবে পথভ্রষ্ট করা হয়েছে

মুসলমানদের যেভাবে পথভ্রষ্ট করা হয়েছে

১. পথ কি? কোন পথ সঠিক পথ?

– পথ একটাই। তা হলো সিরাতুল মুস্তাকিম সরল সঠিক পথ। যা একমাত্র কুরআন নির্ধারিত পথ। এই কুরআন আঁকড়ে ধরে থাকলেই সঠিক পথে টিকে থেকে আল্লাহর অনুগ্রহে জান্নাত লাভ করা যাবে।

২. মানবজাতিকে পথভ্রষ্ট করার জন্য কী করা হয়েছে?

– প্রথমেই সিরাতুল মুস্তাকিম বা কুরআনের রজ্জু থেকে মুসলমানদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে, মানবজাতির কাছে কুরআনের বাণী সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারছে না মুসলিমরা। তারা নিজেরাও গোলকধাঁধার মধ্যে আছে।


. কীভাবে কুরআন থেকে মুসলিমদের দূরে সরানো যেতে পারে?
– মহাগ্রন্থ আল-কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ। শেষ নবী মোহাম্মদ রসুলাল্লাহ সুষ্ঠুভাবে তাঁর দায়িত্ব সম্পন্ন করেছেন- অর্থাৎ কুরআন আমাদের হাতে পৌঁছে দিয়ে গেছেন। এ অবস্থায় একজন মুসলিমের হাত থেকে কুরআনকে কেড়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। তা হলো-
         ·  কুরআনকে মুসলিমদের ব্যবহারের উপকরণ থেকে পরিবর্তন করে সম্মানজনক (কিছুটা ভয়ের) ও সৌন্দর্য বর্ধনের উপরকরণে (শো-পিস) পরিণত করা হয়েছে।
           · কুরআনের বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দিয়ে তার সঙ্গে রসুলাল্লাহর নামে নতুন বিশ্বাস যুক্ত করা হয়েছে। যেমন- ওয়াল কদরি খয়রিহি ওয়া শাররিহি মিনাল্লাহি তাআলা…(তকদিরের ভালোমন্দ আল্লাহর পূর্ব-নির্ধারিত)। এতে মুসলিম জাতি চিন্তা-চেতনায় ও কর্মকাণ্ডে পঙ্গুত্ব বরণ করে।
            · নতুন ধারণা ও বিশ্বাসকে মজবুত করার জন্য কুরআনের ইসলামের পাশাপাশি একটি সমান্তরাল ধর্ম বা প্যারালেল রিলিজিয়ন তৈরি করা হয়েছে। যার ভিত্তি হলো শেষ নবী মোহাম্মদ ও তাঁর নামে রচিত সুন্নাহ।
             · একে আরও মজবুত করার জন্য নবী মোহাম্মদ রসুলাল্লাহকে ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে থাকা- ওহি দ্বারা পরিচালিত মহামানব, মহানবী- নবীকূলের শিরোমণি ও শ্রেষ্ঠতম রসুল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হলো।
            · এই বিশ্বাসকে মন ও মগজে গেঁথে দিতে উসউয়াতুন হাসানা বা উত্তম আদর্শের কুরআনিক চেতনাকে যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হলো।
         · আল্লাহর আনুগত্য ও রসুলের আনুগত্য নির্দেশকে নবী মোহাম্মদের আনুগত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হলো। পাশাপাশি, নবী ও রসুলের পার্থক্য ও ভূমিকা সম্পূর্ণভাবে গোপন করা হলো।
           ·   কুরআনের কিছু আরবি শব্দকে যথাযথ অনুবাদ না করে- আক্ষরিক অনুবাদ এবং টার্ম (বিশেষ্য পদ) বিশেষ শব্দ হিসেবে জগৎজুড়ে প্রচার করা হলো। যেমন- মুসলিম, ইবাদত, রুকু, সিজদা, সালাত ইত্যাদি। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলীকে শব্দের ফ্রেমে বেঁধে তাকে দৃশ্যমান ধর্মীয় কাঠামোতে পরিণত করা হলো।
           ·   কুরআন অধ্যয়নের চেয়ে সুর করে গান গাওয়া; অর্থ অনুধাবনের চেয়ে শুদ্ধতম আরবি উচ্চারণ ও শব্দে শব্দে সওয়াবের ধারণা তৈরি করা হলো এবং কুরআনের বিধান বাস্তবায়নের চেয়ে আয়াত মুখস্থ করা/ হিফজ্ করাকে নিয়ম ও সংস্কৃতিতে পরিণত করা হলো। কর্মের চেয়ে কর্মহীনতাকেই পুণ্যের কাজ হিসেবে গণ্য করা হলো।
পরিণামে মুসলিম জাতি কুরআন আঁকড়ে ধরে থেকেই কুরআন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *