হজ কী, কেন ও কীভাবে?

হজ কী, কেন ও কীভাবে? (১ম পর্ব)

আল-কিতাবে দুইজন সম্মানিত রসুলের জীবন থেকে হজের সংজ্ঞা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জানা যায়। তাঁরা হলেন- নবী ও রসুল হজরত ইবরাহিম আ. এবং শেষ নবী মোহাম্মদ রসুলুল্লাহ সা.।

১. 
ইবরাহিম রসুলুল্লাহ কী করেছিলেন?

সুরা হজের ২৬-৩৪ পর্যন্ত পড়লে জানা যায়- আল্লাহর রসুল হজরত ইবরাহিম গোটা মানবজাতিকে তাঁর দিকে হজের জন্য ডেকেছিলেন। মুসলিম বা বিশ্বাসীদেরকে নয়!

সেই ডাকে সারা দিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁর কাছে মানুষ এসেছিল। তিনি যেখানেই থাকবেন, তাঁর কাছে যাওয়াই ছিল লক্ষ্য, নির্ধারিত কোনো জায়গা নয়- তাঁর কাছে

মানুষজন এলে তাদের জন্য পশু জবাই করেছিলেন ও খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করেছিলেন।

এরপর হলো মূল কাজ। তিনি তাদেরকে আল্লাহর বাণী বা রিসালা পৌঁছে দিয়েছিলেন।

মনে রাখতে হবে- তিনি ছিলেন আল্লাহর শক্তিশালী রসুল

তিনি মক্কার অমুসলিমদের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়া শুরু করেন। এই অভিযোগে তাঁকে জন্মস্থান থেকে বের করে দেওয়া হয়! অনেক সংগ্রামের পর তিনি ঘরে ফিরে আসেন। তারপর? যে মিশন তিনি শুরু করেছিলেন, সেই মিশন সম্পন্ন করলেন- অমুসলিমদের কাছে মহান আল্লাহর বাণী পৌঁছানোর কাজ সম্পন্ন করলেন। এটাই হজ।

তিনি অমুসলিমদের জন্য পশু জবেহ করলেন, খাবারের ব্যবস্থা করলেন (২:১৯৬) এবং তিনি চূড়ান্তভাবে তাদের কাছে কিতাব পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করলেন।

রসুলুল্লাহর কাছে থাকা মহাজগতের পরাক্রমশালী প্রভুর বাণী অমুসলিম জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেওয়াই ছিল মূল লক্ষ্য। আপনার-আমার পূর্বপুরুষদের কাছেও তা পৌঁছে গিয়েছিল।

সে সময় হজ ছিল অবধারিতভাবে রসুল ও তাঁর বাণীর সঙ্গে জড়িত। হজের সঙ্গে কোনও বিশেষ স্থানের সম্পর্ক নাই। আল্লাহর রসুল থাকে যেদিকে, হজ হয় সেদিকে। হজ’ মুসলিমদের জন্য নয়, বরং যারা আল্লাহর বাণীর নাগাল পায়নি, তাদের জন্য রসুলের পক্ষ থেকে আল্লাহ তাআলার বাণী পৌঁছানোর পদ্ধতি। 

২. 
প্রচলিত হজের আইন ও বিধান !

যে আয়াতের ভিত্তিতে হজকে বিধান বানিয়ে ফরজ করা হলো, সেই আয়াত দেখুন। যদিও সেখানে বিধান’ বা ফরজ’ এমন কোনও শব্দও নাই!

৩:৯৬ নিশ্চয়ই প্রথম বাইত স্থাপন হয়েছিল মানবজাতির জন্য বাক্কাতে- কল্যাণকর ও পথ-নির্দেশনা বিশ্বজগতের জন্য ।

কোনও ভবন বা ঘর কি বিশ্বজগতের জন্য বরকতময় (مُبَارَكًا) ও গাইডেন্স (هُدً) হতে পারে? নিশ্চয়ই না। তাহলে, বাইত অর্থ দেয়াল দেওয়া ঘর নয়; বরং এটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা বা যুক্তি-বোধ-বিশ্বাসের ঘর; যার উপর দীন ইসলাম কায়েম থাকে।

ধারাবাহিক আয়াতের পরের অংশ দেখুন।

৩:৯৭ তাতে সুস্পষ্ট নিদর্শন মাকামু ইবরাহিমা (ইবরাহিমের ন্যায়-নিষ্ঠা- মর্যাদা); আর যে তাতে প্রবেশ করবে সেই নিরাপদ; আল্লাহর জন্য মানুষের ওপর বাইতে হজ– তার পথের দিকে; আর কেউ অস্বীকার করলে (কাফারু)- আল্লাহ জগদ্বাসীর অমুখাপেক্ষী।

ইমরানের ৯৭নং আয়াতের অনুবাদ বিকৃত করে হজকে ফরজ বানানো হয়েছে। পাশাপাশি, রাসুলুল্লাহর নামে উমাইয়্যা ও আব্বাসীয় রাজবংশের ধর্মগুরুরা বিভিন্ন হাদিস বানিয়ে হজকে ফরজ করেছে। স্ক্রিনশট দ্রষ্টব্য। (দেখুন- যা ফরজ করেছেন আল্লাহ)

  • ·   যেখানে প্রচলিত হজের অস্তিত্বই নেই, সেখানে প্রচলিত কুরবানির প্রশ্নই তো ভিত্তিহীন!
  • ·    সুনির্দিষ্ট অর্থে হজ হলো- স্রষ্টার হুকুম আহকাম প্রচারস্থলের দিকে মানুষের গমন।

✅ কিন্তু মহান আল্লাহর নামে, তাঁর হুকুম-আহকামের পাশাপাশি নতুন হুকুম-বিধান তৈরি করা ও পালন করা সুস্পষ্ট শিরক।

তাই শিরক সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। প্রচলিত ভ্রান্ত ধর্ম-বিশ্বাস থেকে দূরে থাকা কর্তব্য। মুসা নবীর অনুসারীরা ইসলামকে পরিবর্তন করে ইহুদি হয়েছে; ঈসা নবীর অনুসারীরা ইসলামকে বিকৃত করে খ্রিস্টান হয়েছে। পৃথিবীর ৭৫০ কোটি মানুষের মধ্যে তাদের সংখ্যাই বেশি। ২০০ কোটি বংশগত মুসলিম একইভাবে কুরআনের ইসলামকে বিকৃত করে নতুন ধর্ম বানিয়ে মহা উৎসাহে তা পালন করে চলেছে।