নবী ও রসুলের তুলনা এবং তাঁদের ভূমিকা
নবী ও রসুলের দায়িত্ব, পদমর্যাদা ও ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুব জরুরি। বিশেষ করে- মৌলিক বিষয়গুলো অজানা থাকায় সম্মানিত এসব ব্যক্তিদের বিকৃত-ভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। তাঁদেরকে মানবীয় বৈশিষ্ট্য থেকে ভিন্ন কোনও কল্পিত বৈশিষ্ট্য দিয়ে “স্রষ্টার কাছাকাছি/পাশাপাশি কিছু” বানানো হয়। ঠিক যেভাবে অন্যান্য ধর্মের মানুষ তাদের নবী ও নেতাদের ‘ছোট খোদা’ বানিয়ে বসেছে।
নবী-রসুলগণ সম্পর্কে জানার একমাত্র মাধ্যম নিঃসন্দেহে মহাগ্রন্থ বা আল-কুর’আন। এই কিতাব তাঁদেরকে আমাদের সামনে ঠিক যেভাবে উপস্থাপন করেছে- সেভাবেই আমাদের জানতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে ও মানতে হবে। কারণ তাঁরা সু-প্রাচীন ও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকা এক ইতিহাসের অংশ!
পবিত্র কুর’আনে দেখা যায়, নবী ও রসুলগণকে সাধারণ মানুষের মতো গুণাবলী-সম্পন্ন মানুষ হিসেবেই উপস্থাপন করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হলো- মহান আল্লাহ তাঁদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতেন এবং তাঁদের কাছে অদৃশ্য জগত থেকে ওহি নাযিল হতো।
প্রিয় রসুলুল্লাহ সা. তাঁর নিজ মুখে বলেছেন যে- তাঁর কাছে যা ওহি করা হয়, তিনি শুধু তারই অনুসরণ করেন। তিনি একজন ‘মানুষ রসুল’ ছাড়া ভিন্ন কিছু নন। আল্লাহপাক তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন, ভুল হলে শুধরে দিয়েছেন। এসব বিষয়াদি কুর’আনেই সংরক্ষিত আছে।
তার মানে অবশ্যই এই নয় যে- নবী-রসুলদের সঠিক বিষয় জানলে বা মানবিক দুর্বলতা থেকে ভুল-ভ্রান্তি করলে তাঁদের মর্যাদা বিন্দুমাত্র কমে যায়! অবশ্যই না! মহাজগতের প্রভু তাঁদের সুউচ্চ মর্যাদা নিজ হাতে উন্নত স্থানে বাঁধাই করে দিয়েছেন। তার বিন্দুমাত্র কমতি হওয়ার সুযোগ নেই।
তাহলে কুর’আনে নবী রসুলগণের নানা বিষয় কেন সংরক্ষণ করা হয়েছে? তার একটা কারণ এই যে- আমরা যাতে মানুষের ছল-চাতুরিতে পড়ে নবী-রসুলগণকে পূর্ববর্তী আহলে কিতাবদের মতো খোদা/স্রষ্টা বা তাঁর অংশীদার, হুকুম-আহকামে শরিক না বানিয়ে ফেলি। যেখানে মহান রব বার বার বলছেন- “হুকুম শুধুই তাঁর”।
এখন কেউ এসে নবী রসুলগণকে ‘নাগালের বাইরে থাকা অতিমানব’ উল্লেখ করে- তাঁর বংশধরদের ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে বা নিষ্পাপ আখ্যা দিয়ে নতুন কোনও ধর্ম-পথ ও মত বানিয়ে না ফেলি। আল্লাহর হুকুমের বাইরে গিয়ে অন্য কাউকে ইসলামের ‘সোল এজেন্ট’ ভেবে না বসি।
সময় থাকতেই সত্য জানার মাধ্যমে নবী ও রসুলদের নামে আমরা যেসব কল্পিত গল্প-কাহিনী বিশ্বাস করে জীবন পরিচালনা করি ও নতুন ধর্ম-কর্ম-চর্চা করি—তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শেষ নবী ও রসুল সা.-এর মতো শুধুমাত্র আল-কিতাব, আল-কুর’আন অনুযায়ী জীবন কাটাতে পারলে সফলতা আসবে। কারণ, যে কেউ আনুগত্য করবে আল্লাহর ও তাঁর রসুলের তাহলে সেসব লোক তাদের সাথী- যাদের ওপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন যেমন- নবীদের, সিদ্দিকদের, শহিদদের ও সলেহিনদের; কত উত্তম সেসব সঙ্গী। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুগ্রহ, আর সর্বজ্ঞ আল্লাহই যথেষ্ট।! {৪:৬৯,৭০}
নবী ও রসুলের মধ্যে তুলনামূলক বিষয়গুলো প্রথমে লক্ষ্য করা যাক।
১. মানবজাতির মধ্যে থেকে নবী ও রসুল বাছাই করেন আল্লাহ। তাঁরা মানবসমাজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্মানিত মানুষ।
২. নবী ও রসুল- উভয়ের কাছেই মহাপ্রভুর বার্তা এসেছে। নবীগণ পেয়েছেন ‘কিতাবিন ওয়া হিকমাতিন’। অন্যদিকে রসুলগণের কাছে এসেছে। আল-কুর’আন, আল-ফুরকান (২:৫৩; ৩:৪; ২৫:১), আল-কিতাব, আয-যবুর, আন-নুর (৬৪:৮; ৩:১৮৪) বাইয়্যিনাত (২৩:২৫), সহিফা (৯৮:২) ও যিকরা (২১:৪৮)
৩. নবী ও রসুলের সমসাময়িক মানুষদের তাঁদের ইত্বয়াত (আনুগত্য) ও ইত্তিবা (অনুসরণ) করতে হয়।
৪. নবী ও রসুলগণ পৃথিবী থেকে চলে গেলে তাঁদের কারও আনুগত্য করার সুযোগ থাকে না। তখন সুস্পষ্ট দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের অনুসরণ করা যায়।
৫. নবীগণ সমাজের নেতা- সমাজ সংশোধন ও সংস্কারে ভূমিকা রাখেন ৭:১৫৭; ৫:৪৪। রসুলগণ আল্লাহর আয়াত পাঠ করেন, শিক্ষকদের মতো কিতাব ও হিকমা শিক্ষা দেন ৬৫:১১; ২:১৫১; ৬২:২ ৯৮:২। তাঁরা উভয়েই মানবজাতির ওপর সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী। ৩৩:৪৫; ২:১৪৩; ৭৩:১৫
৬. আল্লাহর দৃষ্টিতে নবীদের ‘মর্যাদার মধ্যে পার্থক্য’ আছে। কিন্তু, মানুষ তাঁদের মধ্যে কোনও পার্থক্য করতে পারবে না। ৩:৮৪
একইভাবে, কোনও রসুলকে অন্য রসুলের ওপর ‘মর্যাদা দিয়েছেন আল্লাহ’। তবে মানবজাতি তাদের কাউকে পার্থক্য করতে পারবে না। ২:২৫৩; ২:২৮৫; ৪:১৫২
সুস্পষ্ট এই নির্দেশ আল-কিতাবে দেওয়া আছে।
ঠিক যেমন- সন্তানের কাছে বাবা ও মা- উভয়েই মর্যাদাসম্পন্ন। তাদের উভয়ের সঙ্গে সদাচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মহান রব। তবে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাবা ও মায়ের ভূমিকা, দায়িত্বপালনের মধ্যে পার্থক্য থাকে। একইভাবে সব সন্তানই বাবা-মার কাছে প্রিয়। কিন্তু সবগুলো সন্তান কখনোই অভিভাবকের কাছে একই মর্যাদার হয় না। এই পার্থক্য মর্যাদার- স্নেহ ভালোবাসার নয়।
৭. নবী ও রসুলগণ সমসাময়িক লোকদের মধ্যে কিতাব দিয়ে বিচার-ফয়সালা করতেন। ৫:৪৮; ৪:৭৯
এবার আমরা নবী ও রসুলের মধ্যে মৌলিক কিছু পার্থক্য খেয়াল করব।
১. ‘নবী’ হলেন সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ। আর ‘রসুল’ হলো দায়িত্ব; যাঁর কাছে থাকে মানবজাতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার মতো রিসালাহ্ (বার্তা)।
২. ‘নবুওত’ দিয়ে মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি করে তাকে ‘নবী’ বানানো হয়। অন্যদিকে, মহাপ্রভুর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে মানুষ ও ফেরেশতা- উভয়েই রসুল বা বার্তাবাহকের সম্মানজনক খেতাব লাভ করেন। {১৭:৯৩; ১৪:১১} ; {২২:৭৫; ১৭:৯৫; ১৯:১৯}।
৩. নবীগণ মহাজগতের প্রভুর দেওয়া ‘কিতাবিন ওয়া হিকমাতিন’ দিয়ে সমাজ-দেশ শাসন করেছেন, রাজা বা শাসক হয়েছেন। ৩:১৪৬; ২:২৪৭,২৪৮; ৫:২০ ৮:৬৭; ৬৬:৮
আর রসুলগণ মহাপ্রভুর বাণীর সমাহার [আল-কুর’আন, আল-ফুরকান (২:৫৩; ৩:৪; ২৫:১), আল-কিতাব, আয-যবুর, আন-নুর (৬৪:৮; ৩:১৮৪) বাইয়্যিনাত (২৩:২৫), সহিফা (৯৮:২) ও যিকরা (২১:৪৮)] মানবজাতির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
৪. বার্তাবাহক হিসেবে রসুলদের একমাত্র দায়িত্ব মানবজাতির কাছে রিসালা বা বার্তা পৌঁছে দেওয়া; ২৪:৫৪, ২৯:১৮; ৭২:২৩
মানবজাতিকে কোনো কিছু পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নবীদের ছিল না।
৫. রসুল বর্তমান থাকা অবস্থায় তাঁকে অমান্য (আ’ছাও, আ’ছ ইয়া’ছি) করলে গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। কারণ- রসুলকে অগ্রাহ্য করা মানে আল্লাহকে অগ্রাহ্য করা। ৬৫:৮; ৬৯:১০; ৭২:২৩; ৭৩:১৬; ৮:১৩; ৫৮:৫
আর রসুলের আনুগত্য করা হলো আল্লাহরই আনুগত্য। ৪৭:৩৩
মোহাম্মাদ রসুলাল্লাহর জীবদ্দশায় তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের শাস্তি ছিল- মৃত্যুদণ্ড, লাঞ্ছনা ও নির্বাসন ৫:৩৩; ৫৮:২০।
৬. মহাগ্রন্থে খাতামুন নাবিয়্যিন বা শেষ নবী ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু ‘রিসালাত’ শেষ- এমন বলা হয়নি। অর্থাৎ, মহান রবের বার্তা দুনিয়ার বিভিন্ন জাতি ও সমাজে পৌঁছে দেওয়ার বিরাট সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
৭. নবীদের কথা বিকৃত করে মানবজাতিকে বিভ্রান্ত করে জিন-শয়তান ও মানুষ। ৬:১১২
তবে, রসুলদের পৌঁছে দেওয়া বানীতে জিন-শয়তান কোনও প্রভাব ফেলতে পারে না। (৭২:২৭; ২২:৫২)
৮. নবীগণ একটি নির্দিষ্ট সময়ের, নির্দিষ্ট জাতির মানুষদের জন্য প্রেরিত হন। তবে, শেষ নবী ও রসুলের পৌঁছে দেওয়া বার্তা কিয়ামত পর্যন্ত কার্যকর।
### পরিশিষ্ট
এই
অংশ আমরা নবী ও রসুল সংক্রান্ত বিষয়ভিত্তিক কিছু আয়াত তুলে ধরছি। বাংলা ভাষায় প্রচলিত
অনুবাদ থেকে নেওয়া হয়েছে। অনুবাদ, শব্দ, বাক্য চয়ন ও বানানের নানা ভুল-ত্রুটির জন্য islamofquran.com দায়ী নয়।
আমাদের
পাঠকদের অধ্যয়ন সহায়তায় এসব সুরা ও আয়াত নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
নবী সংক্রান্ত আয়াত
নবীর অনুসরণ
৩:৬৮
জেনে রাখো, মানুষের মাঝে ইবরাহিমের নিকটতম লোক হলো তারা,
যারা তার অনুসরণ করেছে এবং এই নবী (মোহাম্মদ), আর যারা ঈমান এনেছে তারা। আল্লাহ্ই মুমিনদের অলি।
৮:৬৪
হে নবী! তোমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট এবং মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ (ইত্তেবা) করে তারা।
৭:১৫৮…. সুতরাং তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর উম্মি নবীর প্রতি, যে ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর বাণীর প্রতি। তোমরা তাঁর অনুসরণ (ইত্তেবা) করো, অবশ্যই সঠিক পথ পাবে।’
মুসলমানদের কর্তব্য ও তাদের প্রতি নির্দেশ:
২:১৩৬
তোমরা বলো, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি। তা ছাড়া আমরা
ঈমান রাখি তার প্রতি, যা নাযিল হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা
নাযিল হয়েছিল ইবরাহিম, ইসমাঈল, ইসহাক
এবং ইয়াকুব ও তার সন্তানদের প্রতি; আর যা নাযিল হয়েছিল
মূসা আর ঈসার প্রতি; আর যা প্রদান করা হয়েছিল অন্যান্য
নবীগণকে তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে।
৩৯:১০
ঘোষণা করো, ‘হে ইবাদি- যারা ঈমান এনেছো, তোমাদের প্রভুকে ভয় করো! যারা এই দুনিয়ায় ভালো কাজ (আহসানু) করে,
তাদের জন্যে রয়েছে কল্যাণ (হাসানাত); এবং
আল্লাহর জমিন তো প্রশস্ত; শুধু ধৈর্যশীলদেরকে তাদের
পূর্ণ-প্রতিদান দেওয়া হবে বেহিসাবে।
৬৬:৮
হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা তওবা করো (অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসো) আল্লাহর দিকে শুদ্ধ
একনিষ্ঠ তওবা। তাহলে অবশ্যই তোমাদের প্রভু তোমাদের থেকে মুছে দেবেন তোমাদের
পাপসমূহ এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার নিচে উৎসারিত
নদ নদী নহর। সেদিন আল্লাহ্ অপমানিত করবেন না তাঁর নবীকে এবং তাঁর সাথে যারা ঈমান
এনেছে তাদেরকে। তাদের নূর সায়ী করবে (দৌড়াবে) তাদের সামনে দিয়ে এবং ডানে দিয়ে।
তারা বলবে, আমাদের প্রভু! আমাদের জন্যে পূর্ণ করে দিন
(জান্নাতে পৌঁছা পর্যন্ত) আমাদের নূর এবং ক্ষমা করে দিন আমাদের। নিশ্চয়ই আপনি
প্রতিটি বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
সুরা: ৪৯ আল হুজুরাত (বাসগৃহসমূহ), আয়াত: ২
হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা নবীর আওয়াযের উপর নিজেদের আওয়াযকে উঁচু করোনা এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উঁচু স্বরে কথা বলো তার সাথে সেভাবে উঁচু স্বরে কথা বলোনা। কারণ, এর ফলে নিষ্ফল হয়ে যাবে তোমাদের আমল, যা তোমরা টেরও পাবেনা।
নবীদের কাছে কিছু পাঠানো হয়?
৪:১৬৩
আমরা তোমার কাছে অহি পাঠিয়েছি, যেমন পাঠিয়েছিলাম নূহের কাছে
এবং তার পরের নবীদের কাছে, ইবরাহিম, ইসমাঈল, ইয়াকুব ও তার বংশধরদের কাছে এবং ঈসা,
আইউব, ইউনুস, হারূণ
ও সুলাইমানের কাছে, আর আমরা দাউদকে দিয়েছিলাম যবুর।
৩:৮৪
বলো- আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি, আমাদের প্রতি যা
নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহিম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব
ও তার বংশধরদের কাছে তার প্রতি, আর যা দেয়া হয়েছে মূসা,
ঈসা ও অন্যান্য নবীদেরকে তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে তার প্রতিও।
আমরা তাদের কারো মধ্যে কোনো প্রকার পার্থক্য করিনা। আমরা আল্লাহর প্রতি
আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)।’’
২:১৩৬ …. আর যা প্রদান করা হয়েছিল অন্যান্য নবীগণকে….।
নবীর/ নবীদের প্রতি নির্দেশ
৬:১৪
হে নবী! বলো: ‘আমাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে আমিই যেনো প্রথম ব্যক্তি হই।’ আমাকে আরো নির্দেশ দেয়া হয়েছে: ‘তুমি
মুশরিকদের মধ্যে শামিল হয়োনা।
৬:১৬১
ঘোষণা করো, নিশ্চয়ই আমরা রব পথ-নির্দেশ করেছেন সিরতিম মুস্তাকিমের দিকে, যা সঠিক
দীন- একনিষ্ঠ ইবরাহিমের মিল্লাত; এবং তিনি মুশরিক ছিলেন না।
৯:৭৩
হে নবী! জিহাদ করো কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে আর কঠোর হও তাদের প্রতি। তাদের
বাসস্থান হবে জাহান্নাম, আর সেটা খুবই নিকৃষ্ট ফিরে যাবার
জায়গা।
১৯:৪১
এই কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী ইবরাহিমের কথা আলোচনা করো। সে ছিলো একজন সিদ্দীক
(সত্যনিষ্ঠ) নবী।
১৯:৫১
এই কিতাবে মূসার কথা আলোচনা করো। সে ছিলো বিশেষভাবে মনোনীত এবং ছিলো একজন রসুল
নবী।
১৯:৫৬
এই কিতাবে আলোচনা করো ইদরিসের কথা। সে ছিলো সিদ্দীক (সত্যনিষ্ঠ) নবী।
সুরা: ৬০ আল মুমতাহানা (পরীক্ষনীয় নারী), আয়াত:
১২
হে
নবী! মুমিন নারীরা তোমার কাছে এসে বাইয়াত করতে চাইলে এসব শর্তে তাদের বাইয়াত গ্রহণ
করে নাও: তারা আল্লাহর সাথে শরিক সাব্যস্ত করবেনা, চুরি করবেনা,
জিনা করবেনা, নিজেদের সন্তানদের হত্যা করবেনা,
জেনেশুনে অপবাদ রচনা করে রটাবেনা এবং ভালো কাজে তোমার নির্দেশ অমান্য
করবেনা। তুমি আল্লাহর কাছে তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরম
ক্ষমাশীল, অতীব দয়াবান।
৬৬: ৯ হে নবী! জিহাদ করো কাফির এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে এবং কঠোর হও তাদের প্রতি। তাদের আশ্রয় হবে জাহান্নাম এবং সেটা কতো যে নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনের জায়গা!
নবীর ভূমিকা:
৭:১৫৭ যারা ইত্তেবা (অনুসরণ) করবে আমার এই রসুল উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা লিপিবদ্ধ পায় তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে, সে তাদেরকে ভালো কাজের আদেশ দেয়, মন্দ কাজ থেকে বারণ করে, তাদের জন্যে সব ভালো জিনিস হালাল করে, সব নোংরা অপবিত্র জিনিস হারাম করে এবং তাদেরকে মুক্ত করে সেইসব গুরুভার ও শৃংখল থেকে, যেগুলো তাদের উপর বোঝা হয়ে চেপেছিল। অতএব যারা তার প্রতি ঈমান আনবে, তাকে সম্মান প্রদর্শন করবে, তাকে সাহায্য করবে এবং সেই নূর-এর ইত্তেবা করবে, যা নাযিল করা হয়েছে তার সাথে, তারাই হবে সফলকাম।
২:২১৩ প্রথমে সব মানুষ ছিলো একই উম্মত (একই আদর্শের অনুসারী)। অতপর আল্লাহ নবীদের পাঠাতে থাকেন সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারী হিসেবে। তাদের সাথে সত্য ও বাস্তবতাসহ কিতাব নাযিল করেন, যাতে করে মানুষের মাঝে ফায়সালা করে দেয়া যায়, যেসব বিষয়ে তারা লিপ্ত হয়েছে এখতেলাফে (মতভেদে)। যাদেরকে তা (কিতাব) দেয়া হয়েছিল তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ – নিদর্শন আসার পর কেবল পারস্পারিক বিদ্বেষ বশতই তারা সে বিষয়ে এখতেলাফ করেছে। তারপর তারা যে বিষয়ে এখতেলাফ (মতভেদ) করতো, সে বিষয়ে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে সঠিক পথ দেখিয়েছেন তাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে। আল্লাহ যাকে চান, সরল – সঠিক পথে পরিচালিত করেন।
৫:৪৪ আমরা তাওরাত নাযিল করেছিলাম, তাতে ছিলো হিদায়াত এবং নূর। নবীরা, যারা ছিলো আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পিত তার ভিত্তিতে ইহুদিদের ফায়সালা দিতো, রাবিব এবং জ্ঞানীরাও তার ভিত্তিতে তাদের ফায়সালা দিতো, কারণ তাদের বানানো হয়েছিল আল্লাহর কিতাবের হিফাযতকারী এবং তার সাক্ষী।
নবীদের মধ্যে পার্থক্য আছে কী
১৭:৫৫ মহাকাশ ও যমিনে যারা আছে- তোমার প্রভু তা ভালোভাবে জানেন। আমরা কিছু নবীকে অন্যদের ওপর মর্যাদা দিয়েছি; এবং আমরা দাউদকে দিয়েছি যাবুর।
মোহাম্মাদ রসুলাল্লাহ কে?
৩৩:৪০
মোহাম্মদ তোমাদের কোনো পুরুষের পিতা নয়, বরং আল্লাহর রসুল
এবং সর্বশেষ নবী। আল্লাহ্ প্রতিটি বিষয়ে জ্ঞাত।
৩৩:৪৫
হে নবী! আমরা তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও
সতর্ককারী হিসেবে
৩৮:৬৫
হে নবী! বলো: আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র। প্রবল প্রতাপশালী আল্লাহ্ ছাড়া কোনো
ইলাহ্ নেই।
৪৮:৮
হে নবী! আমরা তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও
সতর্ককারী হিসেবে।
৫৩:৫৬
এ নবীও একজন সতর্ককারী অতীতের সতর্ককারীদের মতোই।
৭:১৫৮
বলো- হে মানুষ! আমি তোমাদের সবার প্রতি সেই মহান আল্লাহর রসুল, যিনি মহাকাশ এবং এই পৃথিবীর কর্তৃত্বের মালিক।
২:২৫২
এগুলো আল্লাহর আয়াত (বাণী) আমরা তিলাওয়াত করছি যথাযথভাবে তোমার প্রতি এবং অবশ্যই
তুমি রসুলদের একজন।
৩:১৪৪
মোহাম্মদ একজন রসুল ছাড়া আর কিছুই নয়, তার আগেও অনেক রসুল
অতীত হয়েছে।
৪:৭৯ তুমি যা কিছু কল্যাণ লাভ করো তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই, আর তোমার যা কিছু অকল্যাণ হয়, তা হয় তোমার নিজের কারণে। আমরা তোমাকে মানবজাতির জন্যে (লিন্-নাস) পাঠিয়েছি একজন রসুল হিসেবে। আল্লাহই যথেষ্ট সাক্ষী হিসেবে।
তাঁর প্রতি নির্দেশ
৫:৪৮ আর আমরা তোমার প্রতি নাযিল করেছি আল কিতাব (আল কুরআন) বাস্তব সত্য বিধান দিয়ে ইতোপূর্বে নাযিলকৃত কিতাবের সত্যায়নকারী এবং সত্যের সংরক্ষণকারী হিসেবে। অতএব তাদের মাঝে ফায়সালা করো আল্লাহর নাযিল করা বিধান অনুযায়ী। তোমার কাছে যে সত্য বিধান এসেছে তা ত্যাগ করে তাদের ইচ্ছা বাসনার অনুসরণ করোনা। আমরা তোমাদের প্রত্যেকের জন্যে একটি শরিয়ত ও একটি আলোকিত চলার পথ দিয়েছি। আল্লাহ চাইলে তোমাদের সবাইকে একটি উম্মতই বানাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে চান তোমাদেরকে প্রদত্ত বিধানের ভিত্তিতে। সুতরাং কল্যাণের কাজে প্রতিযোগিতা করো। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে। তোমরা যেসব বিষয়ে মতভেদ করছিলে সেখানে তিনি তোমাদের সেগুলো অবহিত করবেন।
৩৯:২ আমরা তোমার কাছে এই কিতাব নাযিল করছি সত্যসহ। অতএব কেবল আল্লাহরই ইবাদত করো নিজের আনুগত্যকে তাঁর জন্যে একনিষ্ঠ করে।
বিশেষ আয়াত
৭:১৫৮
বলো:
‘হে
মানবজাতি, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর রসুল, যিনি
মহাকাশ এবং যমিনসমূহের মালিক। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ্ নেই- যিনি জীবন ও মৃত্যু দেন।
সুতরাং তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর উম্মি নবীর প্রতি, যে ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর বাণীর প্রতি। তোমরা তাঁর অনুসরণ
(ইত্তেবা) করো, অবশ্যই সঠিক পথ পাবে।’
৩৩:১
হে
নবী! আল্লাহকে ভয় করো এবং কাফির আর মুনাফিকদের আনুগত্য (তুত্বিয়ি) করোনা। আল্লাহ্
সর্বজ্ঞানী প্রজ্ঞাবান।
৪০:৫৫
অতএব
(হে নবী!) তুমি সবর করো। আল্লাহর ওয়াদা অবশ্যই সত্য। আর তুমি ক্ষমা প্রার্থনা করো
তোমার ভুলত্রুটির জন্যে। তোমার প্রভুর হামদসহ তসবিহ্ ঘোষণা করো সন্ধ্যায় এবং
সকালে।
৩৩:৫৬
নিশ্চয়ই
আল্লাহ্ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর নবীর প্রতি ইয়ু-সল্লু করেন। হে ঈমানদার লোকেরা!
তোমরাও নবীর প্রতি সল্লু করো এবং তাঁকে যথাযথ-ভাবে সালাম জানাও।
৩:৮১
স্মরণ
করো,
আল্লাহ একথার উপর নবীদের অংগীকার নিয়েছিলেন যে: আমি তোমাদের যে
কিতাব ও হিকমাহ্ দিয়েছি তোমরা তা গ্রহণ করো, তারপর
তোমাদের কাছে একজন রসুল (মোহাম্মদ) আসবে, তোমাদের সাথে যা
আছে তার সত্যায়নকারী হিসেবে, তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি
ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে।’
৩৩:৭
স্মরণ
করো,
যখন আমরা নবীদের কাছ থেকে তাদের অংগীকার নিয়েছিলাম এবং তোমার
থেকেও, নূহের থেকেও, ইবরাহিম,
মূসা এবং ঈসা ইবনে মরিয়ম থেকেও। আমরা তাদের থেকে গ্রহণ করেছিলাম
শক্ত অংগীকার,
৪:৬৯
আর
যে কেউ আনুগত্য করবে আল্লাহর ও রসুলের, তারা সঙ্গি হবে
আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত নবী, সিদ্দিক, শহীদ এবং পুণ্যবানদের। সঙ্গি হিসেবে এরা কতোইনা উত্তম!
৪৩:৬
আগেকার লোকদের কাছে আমরা বহু নবী পাঠিয়েছি।
রসুল–সংক্রান্ত আয়াত
রসুলের ভূমিকা
২:১৫১ এমনিভাবে (তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে) আমি
তোমাদের থেকেই তোমাদের মাঝে একজন রসুল পাঠিয়েছি, যে
তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদের
তাযকিয়া (সংশোধন ও উন্নত) করে, তোমাদের আল কিতাব ও হিকমা
শিক্ষা দেয় এবং তোমরা যা কিছু জানতে না, সেগুলো তোমাদের
শিখায়।
৪-৬৪:
আল্লাহর নির্দেশে তাঁর আনুগত্য করা হবে – এ উদ্দেশ্য ছাড়া আমরা একজন রসুলও
পাঠাইনি। তারা (মুনাফিকরা) নিজেদের প্রতি কোনো যুলুম করার পর যদি এ পন্থা অবলম্বন
করতো যে,
তোমার কাছে ছুটে আসতো, আল্লাহর কাছে
ক্ষমা প্রার্থনা করতো এবং রসুলও তাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতো, তাহলে অবশ্যই তারা আল্লাহকে পরম ক্ষমাশীল ও পরম দায়াবান পেতো।
১৭:৯৩ … তুমি বলো- ত্রুটিমুক্ত পবিত্র মহান আমার প্রভু, আমি কি একজন মানুষ রসুল ছাড়া আর কিছু?
রসুলদের সবার ক্ষেত্রে একই নিয়ম
১৭-৭৭:
আমার রসুলদের মধ্যে আমরা তোমার আগে যাদের পাঠিয়েছিলাম, তাদের ক্ষেত্রেও ছিলো এই একই নিয়ম। তুমি আমাদের নিয়মের মধ্যে কোনো
ব্যতিক্রম পাবেনা।
৫৮-২১: আল্লাহ্ (কাতাবা) রায় দিয়েছেন, অবশ্যই আমি বিজয়ী হবো এবং আমার রসুলরাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।
রসুলের দায়িত্ব
২৪-৫৪:
স্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছে দেয়া ছাড়া আমাদের রসুলের উপর আর কোনো দায়িত্ব নেই।
৭২-২৩:
আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দেয়াই কেবল আমার দায়িত্ব।
৯:৩ মহান হজ্জের দিনে আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা
যাচ্ছে যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুশরিকদের ব্যাপারে দায়মুক্ত
এবং তাঁর রসুলও।
৯:৭০ এদের কাছে কি তাদের পূর্ববর্তী লোকদের খবর পৌঁছেনি? নূহ, আদ ও সামুদ জাতির, ইবরাহিমের কওম, মাদায়েনবাসী আর বিধ্বস্ত জাতির
সংবাদ কি তাদের কাছে আসেনি? তাদের রসুলরা তাদের কাছে
সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ এসেছিল। তাদের প্রতি যুলুম করা আল্লাহর নীতি নয়, বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছিল।
২:১৫১ এমনিভাবে (তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে) আমি
তোমাদের থেকেই তোমাদের মাঝে একজন রসুল পাঠিয়েছি, যে
তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদের
তাযকিয়া (সংশোধন ও উন্নত) করে, তোমাদের আল কিতাব (কুরআন)
ও হিকমা শিক্ষা দেয় এবং তোমরা যা কিছু জানতে না, সেগুলো
তোমাদের শিখায়।
৬১:৯ আল্লাহ্ তো সেই মহান সত্তা, যিনি তাঁর রসুলকে
হিদায়াত এবং সত্য দীন দিয়ে পাঠিয়েছেন, তাকে অন্যসব দীনের উপর
বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে, মুশরিকরা তা অপছন্দ করলেও।
৬২:২ তিনি সেই মহান সত্তা, যিনি উম্মিদের (নিরক্ষরদের)
মাঝে পাঠিয়েছেন একজন রসুল তাদের মধ্য থেকেই, যে তাদের প্রতি
তিলাওয়াত করে তাঁর আয়াত, তাদের পরিশুদ্ধ ও উন্নত করে এবং তাদের
শিক্ষা দেয় আল কিতাব (আল কুরআন) আর হিকমাহ।
৬৪:১২ তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো এই
রসুলের, যদি মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে
জেনে রাখো, আমাদের রসুলের দায়িত্ব কেবল স্পষ্টভাবে বার্তা
পৌঁছে দেয়া।
৬৫:১১ (এবং) একজন রসুল, যে
তিলাওয়াত করে তোমাদের প্রতি আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াত, যারা ঈমান
এনেছে এবং আমলে সালেহ্ করেছে তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনার জন্যে।
৭২:২৩ আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দেয়াই কেবল আমার দায়িত্ব।’’ যে
কেউ আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে অমান্য করবে, তার জন্যে জাহান্নামই
অবধারিত, চিরদিন চিরকাল তারা পড়ে থাকবে সেখানেই।
৯৮:২ (সে হলো) আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক রসুল (মুহাম্মদ), সে তিলাওয়াত করে পবিত্র সহিফা
৯:১০৫ বলো, তোমরা আমল করতে থাকো, আল্লাহ্ তোমাদের আমল দেখছেন আর তাঁর রসুল ও মুমিনরা।
২:১৪৩ এভাবে আমরা তোমাদের বানিয়েছি একটি ‘মধ্যপন্থী
উম্মাহ’ যাতে করে তোমরা বিশ্ববাসীর
জন্যে সাক্ষী হতে পারো এবং রসুল হতে পারে তোমাদের জন্যে সাক্ষী।
৭৩: ১৫ আমরা তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি একজন রসুল তোমাদের জন্যে সাক্ষী হিসেবে, যেমন পাঠিয়েছিলাম ফেরাউনের কাছে একজন রসুল।
রসুলের বিরুদ্ধাচারণ করলে কী হয়?
৬৫:৮ কতো যে জনপদ তাদের প্রভুর এবং তাঁর রসুলের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেছে,
ফলে আমরা তাদের থেকে নিয়েছি কঠোর হিসাব এবং তাদের আযাব দিয়েছি এক
দুঃসহ আযাব।
৬৯:১০ তারা তাদের প্রভুর রসুলকে অমান্য করেছিল। এর ফলে তিনি তাদের পাকড়াও করেন
কঠোর পাকড়াও।
৭২:২৩ …….. যে কেউ আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে অমান্য করবে, তার জন্যে জাহান্নামই অবধারিত, চিরদিন চিরকাল তারা
পড়ে থাকবে সেখানেই।
৭৩:১৬ সে (ফেরাউন) অমান্য করেছিল সেই রসুলকে, ফলে আমরা তাকে পাকড়াও করেছিলাম কঠিন পাকড়াও।
রসুলদের স্ট্যাটাস/ মর্যাদা:
২:৯৮ যে কেউ শত্রু হবে আল্লাহর, তাঁর ফেরেশতাদের,
তাঁর রসুলদের এবং জিবরিল ও মিকালের, অবশ্যই
আল্লাহও হবেন সেই কাফিরদের শত্রু।
৭২:২৭ তবে তাঁর মনোনীত কোনো রসুলকেই তিনি তা অবহিত করেন। সেক্ষেত্রে ঐ রসুলের সামনে এবং পেছনে তিনি প্রহরী নিযুক্ত করেন,
রসুলদের মধ্যে কি কোনও পার্থক্য আছে?
২:২৫৩ সেইসব রসুল, তাদের কিছু রসুলকে অন্য কিছু রসুলের উপর আমরা মর্যাদা দিয়েছি। তাদের মধ্যে এমন (রসুল)ও আছে, যে আল্লাহর সাথে কথা বলেছে, আবার কাউকেও তিনি মর্যাদার দিক থেকে উপরে উঠিয়েছেন। এছাড়া মরিয়মের পুত্র ঈসাকে আমরা প্রদান করেছি সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ এবং তাকে সাহায্য করেছি ‘রুহুল কুদুস’ দিয়ে।
পার্থক্য থাকলেও আমাদের কী দায়িত্ব?
২:২৮৫ ‘আমরা তাঁর রসুলদের মধ্যে কোনো প্রকার তারতম্য (distinction) করিনা।’ তারা আরো বলে: ‘আমরা নির্দেশ শুনি এবং আনুগত্য করি। হে প্রভু! আমরা তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি আর তোমার কাছেই ফিরে যেতে হবে (সবাইকে)।’
মোহাম্মদ রসুলাল্লাহ কী করতেন
২:১৮৫
এই রসুল (মোহাম্মদ) ঈমান এনেছে তাতে, যা নাযিল হয়েছে
তার প্রতি তার প্রভুর পক্ষ থেকে এবং মুমিনরাও (ঈমান এনেছে)। তাদের প্রত্যেকেই ঈমান
এনেছে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর রসুলদের প্রতি।
৪:১৬৪
এ ছাড়া আরও অনেক রসুল। তাদের কথা আমরা আগেই তোমাকে জানিয়েছি; আর অনেক রসুলের কথা
আমরা তোমাকে বলি নি। এ ছাড়া আল্লাহ মুসার সাথে সরাসরি কথা বলেছেন।
৪:১৬৫ তারা ছিলো সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রসুল, যাতে করে রসুল আসার পর আল্লাহর বিরুদ্ধে মানুষের কোনো অভিযোগ করার সুযোগ না থাকে। আর আল্লাহ তো মহাশক্তিমান ও মহাপ্রজ্ঞাবান।
রসুলের সমসাময়িক লোকদের জন্য নির্দেশনা:
৪:১৩৬ হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রসুলের প্রতি, আর সেই কিতাবের প্রতি যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর রসুলের কাছে এবং ঐ কিতাবের প্রতিও যা তিনি নাযিল করেছেন তার পূর্বে। যে কেউ কুফুরি করবে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রসুলদের প্রতি এবং পরকালের প্রতি, সে তো বিপথগামী হয়ে চলে যাবে বহু দূর।
রসুলের সমসাময়িক লোকদের উদ্দেশ্য করে আয়াত:
৪:৫৯
হে লোকেরা যারা ঈমান এনেছো! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, আনুগত্য করো এই রসুলের, আর তোমাদের
(মুসলিমদের) মধ্যকার সেইসব লোকদের যারা দায়িত্বশীল ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত। আর তোমরা যখনই
কোনো বিষয়ে মতভেদ ও মতবিরোধ করবে, তা (ফায়সালার জন্যে)
উপস্থাপন করো আল্লাহ ও রসুলের (কুরআন ও সুন্নাহর) নিকট, যদি
তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখো। এটিই কল্যাণকর পন্থা এবং পরিণতির দিক
থেকেও সর্বোত্তম।
৪:৬৯
আর যে কেউ আনুগত্য করবে আল্লাহর এবং এই রসুলের, তারা সঙ্গি হবে
আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত নবী, সিদ্দিক, শহীদ এবং পুণ্যবানদের। সঙ্গি হিসেবে এরা কতোইনা উত্তম!
৪:৮০
যে রসুলের আনুগত্য করলো, সে আল্লাহরই আনুগত্য করলো। আর যারা
মুখ ফিরিয়ে নেয় আমরা তোমাকে তাদের উপর রক্ষক নিযুক্ত করিনি।
৪:৮১ তারা বলে: ‘আমরা আনুগত্য
করি।’ তারপর তোমার কাছ থেকে চলে
গেলে রাতে তাদের একদল লোক তাদের কথার বিপরীত পরামর্শ করে।
৬১:১১
তাহলো: তোমরা ঈমান রাখবে আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রসুলের প্রতি, আর জিহাদ (চেষ্টা সংগ্রাম) করবে আল্লাহর পথে তোমাদের অর্থ সম্পদ এবং জান
– প্রাণ দিয়ে। তোমাদের জন্যে এটাই কল্যাণকর যদি তোমরা জানো!
ঈমানদার লোকদের ৫:৫৫ ওয়ালি (বন্ধু, অভিভাবক) শুধু আল্লাহ, তাঁর রসুল এবং যারা সালাত কায়েমকারী, যাকাতদানকারী ও বিনম্র/বিনীত- সেসব বিশ্বাসীগণ ৫:৫৬ আর যারা আল্লাহ, তাঁর রসুল এবং বিশ্বাসীগণকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল (হিজবুল্লাহ) এবং তারাই বিজয়ী।
রসুল পরবর্তী সব মানুষের জন্য নির্দেশনা:
৪:১৩৬
হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা ঈমান আনো আল্লাহর প্রতি এবং তাঁর রসুলের প্রতি, আর সেই কিতাবের প্রতি যা তিনি নাযিল করেছেন তাঁর রসুলের কাছে এবং ঐ
কিতাবের প্রতিও যা তিনি নাযিল করেছেন তার পূর্বে। যে কেউ কুফুরি করবে আল্লাহর
প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর
কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রসুলদের প্রতি এবং পরকালের প্রতি,
সে তো বিপথগামী হয়ে চলে যাবে বহু দূর।
৪:১৫২
আর যারা ঈমান আনে আল্লাহর প্রতি, তাঁর রসুলদের প্রতি এবং তাদের
কারো মধ্যে কোনো ফারাক করেনা, অচিরেই এদের তিনি পুরস্কার
দেবেন তাদের প্রাপ্য পুরস্কার, এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল
দয়াময়।
৪:১৭০
হে মানবজাতি! নিঃসন্দেহে রসুল তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে এসেছে মহাসত্য নিয়ে।
সুতরাং বিশ্বাস করা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। কিন্তু তোমরা যদি অস্বীকার করো, তবে জেনে রাখো, মহাকাশ ও যমিনসমূগে যা কিছু
আছে- সবই আল্লাহর। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, মহাপ্রজ্ঞাবান।
৪:১৭৪ হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং আমরা তোমাদের কাছে (আংযালনা) নাযিল করেছি একটি সুস্পষ্ট নূর (নুরান-মুবিনা)। ৪:১৭৫ তাই যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করবে এবং তাঁকেই আঁকড়ে ধরবে (ওয়া-তাসিমু বিহি) তখন তারা তাঁর রহমত ও ক্ষমায় অন্তর্ভুক্ত হবে এবং তাঁর দিকে নিয়ে যাবেন (তিনি) সরাসরি পথে (সিরাতুল মুসতাকিম)।
রসুলগণ আসলে কী করতেন:
৫:১৯ হে আহলে কিতাব! এখন তো তোমাদের কাছে এসে গেছে আমার রসুল (মোহাম্মদ) দীনের সমস্ত বিষয় তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট করার জন্যে দীর্ঘকাল রসুলদের আসা বন্ধ থাকার পর, যাতে করে তোমরা বলতে না পারো যে: ‘আমাদের কাছে তো কোনো সুসংবাদদাতা কিংবা সতর্ককারী আসেনি।’ এখন তো তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা এবং সতর্ককারী এসে গেছে। আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
৫:৩২ তাদের কাছে তো আমাদের রসুলরা স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছিল।
রসুলের আনুগত্য ও বিরুদ্ধাচরণ: জীবিত
৩:৩২
তাদের বলো: ‘তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং
তাঁর রসুলের।’ যদি তারা (এ কথা থেকে) মুখ
ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখো, আল্লাহ
কাফিরদের পছন্দ করেন না।
৩:১৩২
তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং এই রসুলের, অবশ্যই তোমাদের
রহম (অনুকম্পা) করা হবে।
৪-১৩:
এগুলো (ওয়ারিশি বিষয়ে) আল্লাহর নির্ধারিত সীমানা। যে কেউ আল্লাহ এবং তাঁর রসুলের
আনুগত্য করবে, তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতসমূহের মধ্যে,
যেগুলোর নিচে দিয়ে প্রবাহিত রয়েছে নদ – নদী নহর। সেগুলোর মধ্যে
তারা থাকবে চিরকাল। আর এটাই মহাসাফল্য।
৪-১৪: কিন্তু যে কেউ অমান্য করবে আল্লাহ এবং তাঁর রসুলের নির্দেশ এবং লংঘন করবে তাঁর (আল্লাহর নির্ধারিত) সীমানা, তিনি তাকে দাখিল করবেন আগুনে (জাহান্নামে)। সেখানেই সে থাকবে চিরকাল। তা ছাড়া তার জন্যে রয়েছে অপমানকর আযাব।
৪:৫৯ হে লোকেরা যারা ঈমান এনেছো! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, আনুগত্য করো এই রসুলের, আর তোমাদের
(মুসলিমদের) মধ্যকার সেইসব লোকদের যারা দায়িত্বশীল ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত। আর তোমরা যখনই
কোনো বিষয়ে মতভেদ ও মতবিরোধ করবে, তা (ফায়সালার জন্যে)
উপস্থাপন করো আল্লাহ ও রসুলের (কুরআন ও সুন্নাহর) নিকট, যদি
তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখো। এটিই কল্যাণকর পন্থা এবং পরিণতির দিক
থেকেও সর্বোত্তম।
###এই
আয়াতের ব্যাখ্যা (৪-৮৩: যখনই তাদের কাছে শান্তি বা ত্রাসের কোনো সংবাদ আসে, তারা তা প্রচার করে বেড়ায়। তারা যদি (তা না করে) সেটা রসুল বা তাদের
দায়িত্বশীলদের গোচরে আনতো, তবে তাদের মাঝে যারা উদ্ভাবনী
যোগ্যতার অধিকারী তারা এর যথার্থতা অনুধাবন করতে পারতো। )
৪-৮০:
যে রসুলের আনুগত্য করলো, সে আল্লাহরই আনুগত্য করলো। আর যারা
মুখ ফিরিয়ে নেয় আমরা তোমাকে তাদের উপর রক্ষক নিযুক্ত করিনি।
###এই আয়াতের উদ্দেশ্য ৪-৮১: তারা বলে: ‘আমরা
আনুগত্য করি।’ তারপর তোমার কাছ থেকে চলে
গেলে রাতে তাদের একদল লোক তাদের কথার বিপরীত পরামর্শ করে। তারা রাতে যা সলাপরামর্শ
করে আল্লাহ তা লিখে রাখেন। সুতরাং তুমি তাদের উপেক্ষা করো এবং আল্লাহর উপর ভরসা
করো। উকিল হিসেবে আল্লাহই কাফী (যথেষ্ট)।
৫-৩৩:
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে
বেড়ায়,
তাদের এই কাজের জাযা (শাস্তি) হলো: তাদের হত্যা করা হবে, অথবা শূলবিদ্ধ করা হবে, কিংবা বিপরীত দিক থেকে
তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে, নতুবা দেশ থেকে নির্বাসিত
করা হবে। এ হলো তাদের দুনিয়ার লাঞ্ছনা, আর আখিরাতে তাদের
জন্যে রয়েছে বিরাট আযাব।
৫-৫৬:
যারা আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে আর ঈমানদার লোকদেরকে অলি হিসেবে গ্রহণ করে, তারা জেনে রাখুক, আল্লাহর দলই হবে গালিব
(বিজয়ী)।
৮-১:
লোকেরা তোমার কাছে জানতে চাইছে আনফাল সম্পর্কে। তুমি বলো, আনফাল হলো আল্লাহর এবং রসুলের জন্যে। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং
সংশোধন করে নাও তোমাদের অবস্থা। আর আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাঁর রসুলের, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।
৮-১৩:
এর কারণ,
তারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের বিরোধিতা করেছে, আর যে কেউ আল্লাহ এবং তাঁর রসুলের বিরোধিতা করে, সে জেনে রাখুক, আল্লাহ্ কঠোর শাস্তিদাতা।
৮-২০:
হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাঁর রসুলের। আর তোমরা তার থেকে
মুখ ফিরিয়ে নিয়োনা, অথচ তোমরা তার কথা শুনছো।
৮-৪৬:
তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাঁর রসুলের। আর তোমরা নিজেদের মধ্যে বিবাদে লিপ্ত
হয়োনা। তাহলে তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং এর ফলে তোমাদের প্রতিপত্তি বিলুপ্ত হয়ে
যাবে এবং সবর করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবর অবলম্বনকারীদের সাথেই রয়েছেন।
৯-৭১:
মুমিন পুরুষ আর মুমিন নারী পরস্পরের অলি (বন্ধু, অভিভাবক ও
পৃষ্ঠপোষক)। তারা ভালো কাজে আদেশ করে, মন্দ কাজ থেকে
নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত
প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করে। এরাই সেইসব লোক, যাদের প্রতি অচিরেই আল্লাহ রহম করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী
বিজ্ঞানময়।
৯-৯০:
বেদুঈনদের মধ্যে কিছু লোক এসেছিল যেনো তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়, আর যারা পেছনে বসেছিল তারা আল্লাহ ও তাঁর রসুলের প্রতি মিথ্যারোপ
করেছিল। তাদের মধ্যে যারা কুফুরি করেছে, অচিরেই তাদের
স্পর্শ করবে বেদনাদায়ক আযাব।
২৪-৫৪:
হে নবী! বলো: তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর এবং আনুগত্য করো এই রসুলের। যদি মুখ
ফিরিয়ে নাও, তবে তার (রসুলের) প্রতি অর্পিত দায়িত্বের জন্যে
সে – ই দায়ী হবে, আর তোমরা দায়ী হবে তোমাদের উপর অর্পিত
দায়িত্বের জন্যে। তোমরা যদি আনুগত্য করো, তবেই সঠিক পথ
পাবে। স্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছে দেয়া ছাড়া আমাদের রসুলের উপর আর কোনো দায়িত্ব নেই।
২৪-৫২:
যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের ইতায়াত (আনুগত্য) করে, আল্লাহকে
ভয় করে এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকে আত্মরক্ষা করে, তারাই
অর্জন করবে সাফল্য।
৩৩-৩৩:
তোমরা নিজেদের ঘরে অবস্থান করো। তোমরা পূর্বের জাহেলি যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন
করে বেড়াবেনা, সালাত কায়েম করো, যাকাত
প্রদান করো এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করো। আল্লাহ্ চান তোমাদের থেকে
অপবিত্রতা দূর করতে হে আহলে বাইত (নবীর পরিবার) এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পাক
পবিত্র করতে।
৩৩-৩৬:
আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুল কোনো বিষয়ে ফায়সালা দেয়ার পর সে বিষয়ে কোনো মুমিন পুরুষ বা
নারীর ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। যে কেউ আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুলকে
অমান্য করবে, সে হবে সুস্পষ্ট বিপথগামী।
৩৩-৫৭:
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ্
দুনিয়া এবং আখিরাতে তাদের লা’নত
করেন এবং তাদের জন্যে তিনি প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক আযাব।
৩৩-৭১:
(তাহলে) তিনি তোমাদের জন্যে ইসলাহ করে দেবেন তোমাদের আমল এবং ক্ষমা করে দেবেন
তোমাদের অপরাধ। যে কেউ আল্লাহ্ এবং তাঁর রসুলের আনুগত্য করবে, অবশ্যই সে সাফল্য অর্জন করবে মহাসাফল্য।
৪৮-১৭:
অন্ধদের কোনো দোষ হবেনা, পঙ্গুদের কোনো দোষ হবেনা এবং
রোগীদেরও কোনো দোষ হবেনা (যদি তারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে)। যে কেউ আল্লাহর এবং
তাঁর রসুলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে দাখিল করবেন
জান্নাতে, যার নিচে দিয়ে বহমান থাকবে নদ – নদী – নহর। আর
কেউ যদি পিছে হটে যায়, তিনি তাকে …
৫৮-৫:
যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের বিরোধিতা করে, তাদের অপদস্থ করা
হবে, যেমন অপদস্থ করা হয়েছে তাদের আগের লোকদের। আমরা তো
সুস্পষ্ট আয়াত নাযিল করেছি। অমান্যকারীদের জন্যে রয়েছে অপমানকর আযাব।আযাব দেবেন এক
বেদনাদায়ক আযাব।
৫৮-১৩:
তোমরা কি চুপে চুপে কথা বলার আগে হাদিয়া প্রদানকে কষ্টকর মনে করো? যদি তোমরা হাদিয়া না দাও, আল্লাহ্ তোমাদের
ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা সালাত কায়েম করো, যাকাত
প্রদান করো এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করো। তোমরা যা করো, আল্লাহ্ সে বিষয়ে খবর রাখেন।
৫৮-২০:
যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের বিরোধিতা করে, তারাই হবে
লাঞ্ছিতদের অন্তরভুক্ত।
৫৮-২২:
যারা আল্লাহর প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে তুমি তাদের কাউকেও এমন পাবেনা, যে আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের বিরোধিতাকারীর সাথে বন্ধুতা ও ভালোবাসা রাখে,
বিরোধিতাকারীরা তাদের বাবা – মা, ছেলে –
মেয়ে, ভাই – বোন এবং আত্মীয় – স্বজন হলেও।
৫৯-৩:
আল্লাহ্ তাদের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত না দিলেও পৃথিবীতে তাদের অন্য কোনো শাস্তি
দিতেন। আর আখিরাতে তাদের জন্যে রয়েছে আগুনের আযাব।
৫৯-৮:
এই সম্পদ অভাবগ্রস্ত মুহাজিরদের জন্যে যারা নিজেদের ঘরবাড়ি ও অর্থ – সম্পদ থেকে
উৎখাত হয়ে এসেছে। তারা আল্লাহর অনুগ্রহ এবং সন্তুষ্টি কামনা করে, তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলকে সাহায্য করে। তারা সত্যবাদী।
৭২-২৩: আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দেয়াই কেবল আমার দায়িত্ব।’’ যে কেউ আল্লাহকে এবং তাঁর রসুলকে অমান্য করবে, তার জন্যে জাহান্নামই অবধারিত, চিরদিন চিরকাল তারা পড়ে থাকবে সেখানেই।
বিশেষ আয়াত:
৩:৮৬
আল্লাহ কীভাবে তাকে পথ দেখাবেন—যে ঈমান আনার
পর,
সত্য রসুলকে দেখেছে এবং তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর
অস্বীকার (কাফারু) করে? আল্লাহ যালিমদের পথ দেখান না।
৪:১৫০,
১৫১ নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাস করে আল্লাহ ও তাঁর রসুলদের এবং তারা পার্থক্য করে
আল্লাহ ও তাঁর রসুলদের মধ্যে- আর তারা বলে, আমরা তাদের কাউকে
বিশ্বাস করি/ মানি আর অন্যদের মানি না; এবং তারা এর মাঝে
একটা পথ তৈরি করতে চায়। তারাই প্রকৃত কাফির (কাফিরুনা হাক্); এবং আমরা কাফিরদের জন্য অপমানজনক আযাব প্রস্তুত রেখেছি।
১৭:৯৩
কিংবা সোনা দিয়ে নির্মিত তোমার একটি ঘর হবে। অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, আর তোমার আকাশে আরোহণকেও আমরা কখনো মেনে নেবোনা, যতোক্ষণ না তুমি সেখান থেকে আমাদের প্রতি এমন একটি কিতাব নাযিল করবে,
যেটি আমরা পড়বো।’’ হে নবী! তুমি বলো: ‘ত্রুটিমুক্ত
পবিত্র মহান আমার প্রভু, আমি কি একজন মানুষ রসুল ছাড়া আর
কিছু?’ […]
১৭:৯৪
মানুষের কাছে যখন আল হুদা (কিতাব ও নবী) আসে, তখন তাদেরকে ঈমান
আনা থেকে বিরত রাখে তাদের এই বক্তব্য: ‘আল্লাহ্ কি
একজন মানুষকে রসুল বানিয়ে পাঠিয়েছেন?’ […]
১৭:৯৫ বলো: ‘পৃথিবীতে যদি ফেরেশতারা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতো, তবে আমরা অবশ্যই আকাশ থেকে তাদের জন্যে কোনো ফেরেশতাকেই রসুল বানিয়ে পাঠাতাম।’