জিন-সমগ্র (সপ্তম পর্ব)
৭. জিনের শেষ পরিণতি ও এলিয়েন সমাচার
পুনরুত্থান দিবসে জিনদের কাজকর্মের বিচার হবে। তাদের মধ্যে শয়তান-জিনদের জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে; বিশেষ করে সায়িরে (আল-সায়ির السَّعِيرِ)।
- নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু, তাই তাকে শত্রু হিসেবেই গ্রহণ করো; সে শুধু তার দলকে আহ্বান করে যাতে তারা আল-সায়িরের অধিবাসী হয়। {৩৫:৬}
অন্যদিকে সৎকর্মশীল জিন, যারা আল-কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে মহান রব্বুল আলামিনের সঙ্গে শিরক করা বন্ধ করে দিলো এবং একত্ববাদে বিশ্বাস করলো, তাদেরকে কোন পুরস্কার দেওয়া হবে? সে কথা বলা হয় নি। তারা জান্নাতে যাবে- এমন কথাও সুস্পষ্টভাবে বলা হয় নি।
তবে, মহাগ্রন্থে যে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতে ২টি ধারণা লাভ করি আমরা।
প্রথম ধারণা:
অ্যান্টিম্যাটারের তৈরি জিনের উত্তম বা উৎকৃষ্ট বাসস্থান হলো এই মহাবিশ্ব। তারা এই মহাবিশ্বে মানুষের জন্য যা রূঢ় পরিবেশ, জিনদের জন্য তা আরামদায়ক বাসস্থান। এখানকার বিপুল স্থানে রয়েছে অফুরান শক্তিভাণ্ডার। যা থেকে শক্তি নিয়ে সন্তরণ করে বেড়ায় জিন জাতি। তাই, তাদেরকে কিয়ামতের পর নতুন করে গড়ে ওঠা নিখুঁত মহাবিশ্বে অর্থাৎ এই সামাওয়াতে থাকতে দেওয়া হবে। পুরস্কার হিসেবে তাদের যা যা চাহিদা আছে (যেমন পানি) সবই সঙ্গে দেওয়া হতে পারে।
আর, দুষ্টু জিনদের ও মানুষদের এই মহাবিশ্বের জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে (বিভিন্ন জাহান্নামে) সাজা দেওয়া হবে। সে শাস্তির কথা বহুবার বলেছেন রব্বুল আলামিন।
তবে, জিনদের শাস্তি বা পুরস্কার— কোনটাই মানুষের মতো বেশি হবে না বলেই মনে হয়। কারণ, জিনরা আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি নয়। প্রতিনিধির কাজের শাস্তি ও পুরস্কার- দুটিই বেশি। এজন্য মানুষের ক্ষেত্রে বার বার জান্নাতের সুসংবাদ এবং জাহান্নামের শাস্তির কথা আল-কিতাবে বলা হয়েছে। কিন্তু জিনদের জন্য সবসময় গুরুত্ব দিয়ে সব কথা বলেন-নি মহাজগতের প্রভু। অথচ, এই কুর’আন জিন ও মানুষ- উভয়ের জন্যই পথপ্রদর্শক। সে সাক্ষীও জিনরা দিয়েছিল। জাহান্নামে জিনদেরকেও জিজ্ঞেস করা হবে- রসুলদের ব্যাপারে। তারা কি তোমাদের বার্তা পৌঁছে দেয় নি?
কিন্তু কোনও জিন-রসুলের কথা কোথাও নেই। বোঝা যাচ্ছে, এটা হলো মানুষ রসুল। সব যুগের সব রসুলের বার্তাই সব জিন পেয়েছে। কারণ তারা মানুষকে দেখে, শোনে ও চিন্তা করে। এমনকি শেষ নবী মোহাম্মদ রসুলুল্লাহর আগমনের আগ্ পর্যন্ত তারা ঊর্ধ্ব জগৎ বা আপার ডাইমেনশনের খবরাখবর গোপনে সংগ্রহ করত!
জিনরা নিজেরাই সাক্ষ্য দিয়েছে যে-
- …আমরা শুনেছি এক বিস্ময়কর কুর’আন, যা সঠিক পথ দেখায়, আমরা তা বিশ্বাস করেছি; এবং আমরা কখনও আমাদের প্রভুর সঙ্গে কাউকে শরিক করবো না। {৭২:১,২}
এরাই হলো সেই সলেহিন বা সৎকর্মশীল জিন। যারা প্রিয় নবী মোহাম্মদ রসুলুল্লাহকে কুর’আন পাঠ করতে শুনেছে। তারা এর প্রতি (১) বিশ্বাস স্থাপন করেছে। এরপর তারা (২) মহান প্রভুর সঙ্গে শরিক বা শিরক্ করা বন্ধ করে দিয়েছে। এটাই ছিল তাদের সালেহিন বা সৎকর্মশীল হবার কারণ। এটাই হলো ইবাদত। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে- কোনও অবস্থাতেই শিরক্ করবে না।
মহাগ্রন্থ আল-কুর’আন যেহেতু জিন ও মানুষ- উভয়ের জন্যই সুস্পষ্ট সুসংবাদ ও সতর্কতা; তাই এর ঘোষণা ও নির্দেশগুলো জিনদের জন্যও পথ দেখায়। যেসব কাজ তাদের জন্য প্রযোজ্য সেই অংশটুকু। যেমন-
- নিঃসন্দেহে যারা বলে- আমাদের রব (লালন-পালন-রক্ষাকর্তা) হলেন আল্লাহ, তারপর এ কথার ওপর অটল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা পাঠানো হয়; ভয় পেওনা দুশ্চিন্তা কোরো না; আর জান্নাতের সুসংবাদ শোনো যা তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। {৪১:৩০}
জান্নাতের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাসী মানুষকে দিয়েছেন আল্লাহ। আর এখানকার ঘোষণা তো সৎকর্মশীল কিছু জিন অনুসরণ করেছে। একটু আগেই তার উল্লেখ করা হলো। তাহলে তাদের কী হবে? তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানো হবে।
পাশাপাশি এখানেই আসে দ্বিতীয় ধারণা।
দ্বিতীয় ধারণা:
নিচের আয়াত দু’টি লক্ষ্য করুন।
- সেখানে থাকবে আনত/ বিনীত নয়নের সঙ্গী, কখনও তাদের স্পর্শ করেনি (يَطۡمِثۡهُنَّ ইয়াতমিছহুন্না) কোনও মানুষ অথবা জিন। {৫৫:৫৬}
- হুর অবস্থান করবে তাঁবুতে; অতএব তোমাদের প্রভুর কোন নিয়ামত অস্বীকার করবে তোমরা (জিন ও মানব)? এর আগে তাদের স্পর্শ করেনি (يَطۡمِثۡهُنَّ ইয়াতমিছহুন্না) কোনও মানুষ ও কোনও জিন। {৫৫:৭৪}
আরবি يَطۡمِثۡهُنَّ ইয়াতমিছহুন্না শব্দের অর্থ, প্রথমবার স্পর্শ করা, একসঙ্গে শোয়া ও সম্ভোগ। উল্লেখ্য যে, এই বর্ণনাগুলো রব্বুল আলামিনের কোনও উপমা নয়। তিনি মহাগ্রন্থে কোনও উপমা দিলে- বলে দিয়েছেন যে, এটি একটি উপমা। এখানে তিনি ইঙ্গিত করছেন এমন একটি দিক যা হয়নি কিন্তু হবে। জান্নাতি মানুষ এই উপহার পাবে। তাহলে সৎকর্মশীল জিনরা কেন নয়??? তাতে নিশ্চয়ই কারও কোনও সমস্যা নেই।
যে পুরস্কার অসম্ভব, সেই পুরস্কারের কথা উল্লেখ করে মহান রব বলছেন- তাহলে আমার কোন নিয়ামত মানুষ ও জিন অস্বীকার করবে? এমন প্রশ্ন রব্বুল-ইজ্জত করতে পারেন না! বরং মহাগ্রন্থজুড়ে সেসব কথাই তিনি বলেছেন- সম্ভব, যা বাস্তবসম্মত, যা বাস্তবায়ন হয়েছে ও হবে। তিনি সেই সব রূপক ও উপমা ব্যবহার করেছেন- যা সত্য ও সম্ভবপর বিষয়।
তাহলে জিনরাও কি জান্নাতে ‘হুর’-এর নিয়ামত লাভ করবে? তা অসম্ভব কীভাবে? আর জান্নাতেও রয়েছে অফুরন্ত পানি, যা জিনদের চাহিদার সামগ্রী।
উপরের দুটি ধারণাই কুর’আন সমর্থিত। তাই আত্মসমর্পণকারী হিসেবে এই দু’টি ধারণার প্রতিই আমরা বিশ্বাস করি।
ফিরে দেখা:
দ্বিতীয় পর্বে আমরা উল্লেখ করেছিলাম- মানুষের নফস ও দৃশ্যমান ম্যাটারের তৈরি মানবদেহ তাদের প্রয়োজন। কিন্তু তারা মানুষকে প্রভুর খলিফা হিসেবে চায় না। এজন্য, মানুষের সঙ্গে তাদের চিরন্তন শত্রুতা। আল্লাহর প্রতিনিধিকে পথভ্রষ্ট না করলে, তাদের দলভুক্ত করা যায় না। আর, যে মানুষটি পথভ্রষ্ট হবে, তাকে খলিফার মর্যাদা থেকে প্রত্যাহার করা হবে–এমন কথা আল্লাহ বলেন নি। তবে, সে জাহান্নামে জিনদের সঙ্গে থাকবে, যাকে ‘ভুলে থাকবেন রব্বুল আলামিন‘।
- তাদের মধ্যে তুমি যাকে পার পথভ্রষ্ট করো তোমার কথা দিয়ে, তোমার অশ্বারোহী আর পদাতিক বাহিনী দিয়ে তুমি চড়াও হও; আর তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানাদিতে ভাগ বসিয়ে দাও; আর তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দাও; শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনা ছাড়া আর কিছুই নয়। {১৭:৬৪}
সুরা ইসরা‘র ৬৪ আয়াতে দেখা যায়, ইবলিস শয়তান তার বাহিনীসহ মানবজাতির ওপর হামলা চালানোর অধিকার পেয়েছে। সে মানুষের সম্পদ ও সন্তানের শরিক হওয়া বা ভাগ বসানোর একটা সুযোগও পেয়েছে। কীভাবে জিন এটা করবে?
জিন শুধুমাত্র মানুষের নফসে প্রভাব ফেলে বা আসর করে। কিন্তু, পথভ্রষ্ট মানুষটির জীবন, সম্পদ, স্ত্রী, সন্তানে কীভাবে ভাগ বসাবে (شَارِكْهُمْ)?
পথ একটিই তা হলো, যে মানুষের নফসে জিন-শয়তান তার জায়গা করে নেয়, সেই মানুষটির সুখ, সম্ভোগে ভাগ বসাতে পারে জিন। অর্থাৎ, ওই মানুষটি স্বামী বা স্ত্রী সম্ভোগ করলে- জিন তা উপভোগ করে, ওই মানুষটি ভালো খাবার খেলে তার আত্মা তৃপ্ত হয়–তখন নফসে ভরকারী জিনও তৃপ্ত হয়। ওই মানুষটি যখন সন্তান লাভ করে, তখন সেই সন্তানেও শয়তান জিনের এক ধরনের অধিকার জন্মায়। এভাবেই সে বংশ পরম্পরায়- প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের নফসে প্রভাব ফেলে এবং ধারাবাহিক-ভাবে উপভোগ করতে থাকে জিন-শয়তান।
তবে, জন্মগতভাবে মানুষের স্বাধীনতা রয়েছে। তাকে জিন নিয়ন্ত্রণ করে না। মানুষটি যখনই একমাত্র রবের আশ্রয় প্রার্থনা করে, তখনই সে জিনের প্রভাবমুক্ত হয়ে যায়। কিন্তু, মানুষ যাতে রবের কাছে একনিষ্ঠ-ভাবে আত্মসমর্পণ করতে না-পারে, জিন সেই চেষ্টাই করে।
জিনের লক্ষ্য হলো, মানুষটিকে ‘শিরকে‘ নিমজ্জিত রাখা। যারা মুসলিম তারা সবসময় আল্লাহর পথে থাকবে। তাদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য আল্লাহর হুকুমের পাশাপাশি, নানা রকম হুকুম-বিধান (লাহওয়াল হাদিস) অন্য মানুষের মাধ্যমে হাজির করে জিন। সেসব কাজকে আকর্ষণীয় করে দেখায় জিন। এভাবে অধিকাংশ মানুষ আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং তার সঙ্গে শিরকও করে {১২: ১০৬}। আর এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম কাটিয়ে দেয় মানুষ। তারা সবাই জিন-শয়তানের উপভোগের পাত্রে পরিণত হয়। জিন এসব মানুষের মাধ্যমে পৃথিবীর নানা সৌন্দর্য উপভোগ করে। পথভ্রষ্ট মানুষটি যাই উপভোগ করে- জিন শয়তানও তাই উপভোগ করে। ক্ষুদ্র এই পৃথিবী যেন জান্নাতের অতীব ক্ষুদ্র একটি টুকরা। উপভোগের নানা সামগ্রী এখানে রয়েছে। সবকিছুই বস্তুগত পদার্থ বা দৃশ্যমান পদার্থের তৈরি। মহা-বিশ্বজগতের আর কোথাও এমন উপভোগের সামগ্রী নাই। কিন্তু, এসব উপভোগ করতে প্রয়োজন দৃশ্যমান পদার্থ বা ব্যারিওনিক ম্যাটারের তৈরি দেহ- যা মানবজাতির রয়েছে। শুধুমাত্র মানুষই এসব উপভোগ করতে পারে, চিন্তা-গবেষণা করে- উপভোগের মাত্রা বাড়াতে পারে। মানুষকে তো উপভোগ করার ক্ষমতা দিয়ে এবং জান্নাতের উপযোগী করেই সৃষ্টি করা হয়েছে! মানুষই ভোগ করে ও করবে। কিন্তু উপভোগ করে মানুষের অন্তর, আত্মা বা নফস। মানুষের মস্তিষ্ক তাতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। কিন্তু, তৃপ্তির বিষয়টি হয় নফসে। দেখেও তৃপ্তি হয়, ধরেও তৃপ্তি হয়, খেয়েও তৃপ্তি হয়। সুন্দর দৃশ্য দেখে নফস পুলকিত বোধ করে। তৃপ্তির এই বিষয় বা মেকানিজমে ভাগ বসায় বা শরিক হয় ‘জিন’। মানুষকে এজন্যই তার প্রয়োজন। ভোগ করে মানব দেহ, উপভোগ করে আত্মা বা নফস। যে কোনও ধরনের সুখ সম্ভোগের তৃপ্তি লাভ করে নফস। দৃশ্যমান পদার্থ ও অদৃশ্য অনুভূতির সংযোগ বা প্রকাশ ঘটে নসফে। এই নফসই হলো অদৃশ্য শক্তির তৈরি জিনের আশ্রয়স্থল। ধারণা করা যায়, মানুষের নফস ছাড়া অসীম এই মহাবিশ্ব জিনের কাছে ‘খাঁ খাঁ অন্ধকার ও গণগণে জ্বলন্ত নক্ষত্রের জগৎ‘। এটা মানুষও দেখতে পায়। প্রচণ্ড এনার্জি বা শক্তির ছড়াছড়ি চারদিকে।
কিন্তু উপভোগের সামগ্রী শুধু পৃথিবীতে। আর তা উপভোগ করে শুধুমাত্র মানুষ। অন্য সব প্রাণী স্রেফ টিকে থাকে। তারা উপভোগের জন্য কিছু করে না। সব প্রাণীর নফস বেঁচে থাকার জন্য খায়-ঘুমায়। একমাত্র মানুষই সুখ-শান্তিতে থাকার জন্য পদ্ধতিগতভাবে নানা কাজ করে–করতেই থাকে। সুখ-শান্তি মূলত ‘উপভোগ্য বিষয়’ ছাড়া আর কিছুই না। ক্ষমতার লড়াই, বিশ্ব-শাসন, বস্তির মাস্তান, গলির গুণ্ডা–সবাই নিজের নফসের তৃপ্তি/ উপভোগের জন্য প্রতিটি কাজ করে।
যারা অমুসলিম, তারাও যদি শিরকমুক্ত থাকে, একজন স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস করে, জিন তাদের নফসে প্রভাব ফেলতে পারে না। কারণ, কুর’আনের ঘোষণা অনুযায়ী তাদের নফসকেও রক্ষা করা হয়। অমুসলিম জগতে এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এমন অসংখ্য মানুষ একজন মহান স্রষ্টাকে না-দেখে বিশ্বাস করে। তবে, যখনই তারা গরু-ছাগল-নদী-নালা-পাহাড়-পর্বত-আগুন-গগন-সূর্যকে সৃষ্টিকর্তা বলে মনে করে, তখনই তারা শিরকে লিপ্ত হয় এবং জিন-শয়তান তার ওপর অধিকার লাভ করে।
বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের ‘শিরক‘ করার পদ্ধতিও ভিন্ন। মুসলিম সমাজ এবং অমুসলিম সমাজ নিজেদের মতো করেই শিরকে লিপ্ত থাকে। তাই নিরাপত্তার জন্যই ‘শিরকের’ মতো সবচেয়ে বড় যুলম বা অন্যায়-অপরাধ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরি। (পড়ুন শিরকের ভয়াবহতা এবং ইজমা- শিরকের চোরাবালি।)
এবার আমরা দেখব, পশ্চিমা বিশ্বের এলিয়েন বা বহিরাগত প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা কি জিনদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? কারণ, পশ্চিমা বিশ্বের মহাকাশ-বিজ্ঞানীরা মানতে চান না যে- এই মহাবিশ্বে মানুষ একা। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে এই সুবিশাল, সীমাহীন মহাবিশ্বে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ঠিক এমনই একটি সময়ে মার্কিন বিমান বাহিনী ইউএফও (UFO– unidentified flying object) ধারণাটি সামনে আনে। তখন ১৯৫৩ সাল। এই ধারণার পেছনে আছে মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা, পেন্টাগন ও মার্কিন বিমানবাহিনী। বোঝাই যাচ্ছে এটা একটা জোটবদ্ধ উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা। এই প্রচেষ্টাকে গত ৫০/৬০ দশক ধরে মদদ দিয়েছে মার্কিন চলচিত্র জগৎ বা হলিউড। ধারাবাহিক নানা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে গোটা দুনিয়া থেকে যথেষ্ট পরিমাণ ডালার কামাই করেছে তারা।
পাশাপাশি জগৎজুড়ে শক্তিধর দেশগুলো যেসব গবেষণা চালিয়েছে, সবাই সিদ্ধান্ত নিলো যে- পৃথিবীতে ‘এলিয়েন’ আছে; কিন্তু তার কোনও প্রমাণ নেই।
কী এক আজব সিদ্ধান্ত!
তাই জিনজাতির সঙ্গে প্রচলিত এলিয়েন ধারণা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক এবং নিছক কল্পনাপ্রসূত
৮. পরিশিষ্ট (রেফারেন্স)
আরবি অভিধানে শব্দগুলোর অর্থ দেখুন।
The root jnn (ج ن ن) occurs 201 times in Quran,
in 8 derived forms: (Lane’s Lexicon, Hans Wehr, Lisan al-Arab and others)
আরও দেখুন এখানে–
0 – quranix.org
- 1 times as noun ajnẗ
- 1 times as verb jn
- 2 times as noun jnẗ
- 7 times as active noun jan
- 10 times as noun jnẗ
- 11 times as passive noun mjnwn
- 22 times as noun jn
- 147 times as jnẗ
96 times as
noun- 51 times as proper noun
196 verses found containing 201 instances of words formed by
the root letters ج ن ن
.
|
|
|
ج ن ن সংক্রান্ত বিভিন্ন আয়াত
2:25, 2:35, 2:82, 2:111, 2:214, 2:221, 2:265, 2:266, 3:15, 3:133, 3:136, 3:142, 3:185, 3:195, 3:198, 4:13, 4:57, 4:122, 4:124, 5:12, 5:65, 5:72, 5:85, 5:119, 6:76, 6:99, 6:100, 6:112, 6:128, 6:130, 6:141, 7:19, 7:22, 7:27, 7:38, 7:40, 7:42, 7:43, 7:44, 7:46, 7:49, 7:50, 7:179, 7:184, 9:21, 9:72, 9:89, 9:100, 9:111, 10:9, 10:26, 11:23, 11:108, 11:119, 13:4, 13:23, 13:35, 14:23, 15:6, 15:27, 15:45, 16:31, 16:32, 17:88, 17:91, 18:31, 18:32, 18:33, 18:35, 18:39, 18:40, 18:50, 18:107, 19:60, 19:61, 19:63, 20:76, 20:117, 20:121, 22:14, 22:23, 22:56, 23:19, 23:25, 23:70, 25:8, 25:10, 25:15, 25:24, 26:27, 26:57, 26:85, 26:90, 26:134, 26:147, 27:10, 27:17, 27:39, 28:31, 29:58, 31:8, 32:13, 32:19, 34:8, 34:12, 34:14, 34:15, 34:16, 34:41, 34:46, 35:33, 36:26, 36:34, 36:55, 37:36, 37:43, 37:158, 38:50, 39:73, 39:74, 40:8, 40:40, 41:25, 41:29, 41:30, 42:7, 42:22, 43:70, 43:72, 44:14, 44:25, 44:52, 46:14, 46:16, 46:18, 46:29, 47:6, 47:12, 47:15, 48:5, 48:17, 50:9, 50:31, 51:15, 51:39, 51:52, 51:56, 52:17, 52:29, 53:15, 53:32, 54:9, 54:54, 55:15, 55:33, 55:39, 55:46, 55:54, 55:56, 55:62, 55:74, 56:12, 56:89, 57:12, 57:21, 58:16, 58:22, 59:20, 61:12, 63:2, 64:9, 65:11, 66:8, 66:11, 68:2, 68:17, 68:34, 68:51, 69:22, 70:35, 70:38, 71:12, 72:1, 72:5, 72:6, 74:40, 76:12, 78:16, 79:41, 81:13, 81:22, 85:11, 88:10, 89:30, 98:8, 114:6 |
৫৫:৩৫,৩৭,৩৯,৪১
তোমাদের প্রতি পাঠানো হবে আগুনের শিখা এবং ধোঁয়াপুঞ্জ, তোমরা তা প্রতিরোধ করতে পারবেনা। যেদিন আকাশ ফেটে যাবে সেদিন হয়ে যাবে তা রক্তবর্ণ চামড়ার মতো। সেদিন কোনো মানুষকে তার পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবেনা, কোনো জিনকেও নয়।অপরাধীদের চেনা যাবে তাদের লক্ষণ দেখেই, তখন তাদের পাকড়াও করা হবে মাথার ঝুঁটি আর পা ধরে।
৫৫:৫৬ فِيهِنَّ قَـٰصِرَٰتُ ٱلطَّرْفِ لَمْ يَطْمِثْهُنَّ إِنسٌ قَبْلَهُمْ وَلَا جَآنٌّ
তাতে থাকবে বিনীত চোখের সঙ্গীরা- যাদের স্পর্শ (يَطۡمِثۡهُنَّ) করেনি কোনও মানুষ ও জিন। ৫৫:৭২,৭৪
তাঁবুতে থাকবে হুর (৫৫:৭২)।… তাদের স্পর্শ (يَطۡمِثۡهُنَّ) করেনি আগে কোনও মানুষ ও কোনও জিন। (৫৫:৭৪)
১১:১১৯ ….. وَتَمَّتْ كَلِمَةُ رَبِّكَ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ ٱلْجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ أَجْمَعِينَ
….‘আমি অবশ্যি জিন এবং ইনসানকে দিয়ে জাহান্নাম পূর্ণ করবো’ – তোমার প্রভুর এ ঘোষণা পূর্ণ হবেই।
৩২:১৩… وَلَـٰكِنْ حَقَّ ٱلْقَوْلُ مِنِّى لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنَ ٱلْجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ أَجْمَعِينَ
….কিন্তু আমি তো ফায়সালা করে রেখেছি: ‘আমি অবশ্যি পরিপূর্ণ করবো জাহান্নামকে জিন ও মানুষ দিয়ে।’
৩৭:১৫৮ তারা আল্লাহ্ এবং জিনদের মাঝে আত্মীয়তা স্থির করে। অথচ জিনরা জানে, অবশ্যই তাদেরকে তলব করা হবে
১১৪:৬ مِنَ ٱلْجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ
114:6 “From1 the jinna and mankind.”
১১৪:৫, ৬ যারা মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা/অসওয়াসা দেয়; হোক সে জিন ও মানুষ।
৭২:৬, ৭ কিছু মানুষ ছিল মানবজাতির মাঝে যারা আশ্রয় চাইতো মানুষের কাছে জিন থেকে; তাই তাদের বেড়ে গিয়েছিল رَهَقًا বোঝা/baseness/burden/ বোঝা এবং তারা ভাবতো যেভাবে তোমরা ভাবো আল্লাহ কাউকে ওঠাবেন না।
নিশ্চয়ই সে ও তার দল তোমাদের দেখে যেখান থেকে তোমরা তাদের দেখো না; অবশ্যই শয়তানদেরকে অবিশ্বাসীদের বন্ধু বানিয়ে দিয়েছি। ৭:২৭…………
২৭:১৭ সুলাইমানের জন্যে হাশর (সমবেত) করা হয় তার বাহিনীকে, যাদের মধ্যে ছিলো জিন, ইনসান ও পাখি। তাদের বিন্যস্ত করা হয় বিভিন্ন গ্রুপে
২৭:৪০, ৪১
জনৈক দৈত্য-জিন বলল, আপনি আপনার স্থান থেকে উঠার পূর্বে আমি তা এনে দেব এবং আমি একাজে শক্তিবান, বিশ্বস্ত। কিতাবের জ্ঞান যার ছিল, সে বলল, আপনার দিকে আপনার চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি তা আপনাকে এনে দেব। অতঃপর সুলায়মান যখন তা সামনে রক্ষিত দেখলেন, তখন বললেন এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করেন যে, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
৫৫:৩৩ হে জিন ও মানবজাতি যদি তোমরা মহাকাশ ও যমিনসমূহের সীমানা পার হতে পারো তাহলে যাও; পারবে না অনুমতি ছাড়া।