মানুষের ইতিহাস (৫)

মানুষের ইতিহাস (৫)

কুর'আন রিসার্চ সেন্টার- কিউআরসি

৫. মানব-ইতিহাসের প্রথম পর্বের শেষ অংশ

২:৩৫-৩৯ আর তখন আমরা আদমকে বললাম: হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী বাস করো জান্নাতে এবং সেখানে যা খুশি আনন্দের সঙ্গে খাওতবে এই গাছের কাছেও যেয়ো নাতাহলে অন্তর্ভুক্ত হবে যালিমদের।

তারপর শয়তান তাদের দুজনকেই পদস্খলন ঘটায় এবং যে অবস্থার মধ্যে তারা ছিলো তা থেকে বের করে ছাড়ে। তখন আমরা বললাম- তোমরা সবাই নেমে যাও; তোমরা একে অপরের শত্রু; তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে একটা সময় পর্যন্ত অবস্থান এবং জীবনোপকরণ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

সে সময় আদম তার রবের কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখেছিল। তখন তিনি তার তওবা কবুল করে নেন। কারণ তিনিই তো তওবা কবুলকারী অতীব দয়াময়।

আমরা বললাম- তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাওতারপর যখনই আমার কাছ থেকে তোমাদের কাছে হুদা আসবেতখন যারাই আমার হুদার অনুসরণ করবেতাদের কোনো ভয়ও থাকবে নাদুশ্চিন্তাও থাকবে না।

আর যারা অবিশ্বাস করবে এবং অস্বীকার করবে আমার আয়াতসমূহতারা হবে আগুনের অধিবাসীসেখানে থাকবে তারা চিরকাল। 

যেমনটি আমরা আগেই বলেছি, মানুষকে যমিনে খলিফা‘ মর্যাদা দেওয়া হবে- এমন কথার পরই মালাইকারা আশঙ্কা করলেন যে- যমিনে ফ্যাসাদ ও রক্তপাত হতে পারে। সব মানুষ তা না করলেও কিছু মানুষ তা করবে। তখন পর্যন্ত ইবলিস বা জিন-শয়তানের অস্তিত্ব পাওয়া যায় না। তারও আগে থেকেই মানুষকে ভালো ও মন্দ কাজের শক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়। মানুষ যে কোনও পথ বেছে নিতে পারবে- সে ক্ষমতা দিয়েই মানুষকে তৈরি করা হলো।

এ অবস্থায় পরবর্তীতে যখন জিন শয়তান এলো, তখন তার অপকর্মের ধরণ কি হবে? এ বিষয়টি বোঝার জন্য শুরুতে জিন-জাতির গঠন বৈশিষ্ট্য জানা প্রয়োজন। তারপর দেখা যাবে, জিন তার ক্ষমতা ব্যবহার করে কীভাবে মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে পারে?  যে মানুষ আগে থেকেই ফ্যাসাদ ও রক্তপাত করবে, সে কী পথভ্রষ্ট হবে না? তাহলে জিন কীভাবে অপকর্ম করবে?
জিন-শয়তানের কবল থেকে বাঁচার জন্য কুর’আন থেকেই এ বিষয়টি জানা দরকার।

একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মহান আল্লাহ মানুষকে যমিনের খলিফা(জায়িলুন ফিল আরদি খলিফা) বানালেন। এর ভিত্তিতে জান্নাতের পুরস্কার এবং জাহান্নামের শাস্তির সিদ্ধান্তও দিলেন। অর্থাৎ জান্নাত জাহান্নাম পর্যন্ত খলিফারদায়ভার মানুষ বহন করে চলবে। জগতের সব মানুষই এই মর্যাদার দাবিদার। কারণ- ফলাফল লাভের পর তাদেরকেই বিশ্বাস ও কর্মের ভিত্তিতে জান্নাত-জাহান্নামে বণ্টন করে দেওয়া হবে। ঠিক যেন, স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান প্রজেক্টের পরীক্ষার মতো। প্রথম দফায় পাস, তারপর বিরাট পুরস্কার দেওয়া হলো।

তারপর কী? ‘তার’ আর ‘পর’ নেই, নেই কোনও ঠিকানা– ব্যাপারটি এমন নয়। পর আছে- তবে কী আছে? তা জানা যায় নি। যাই হোক। তবে মানুষ যে খলিফা হিসেবে থেকে যাচ্ছে- তা বোঝা যায়। কারণ, মানুষ সব সময়ই খলিফার মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকবে। এই মর্যাদা পৃথিবীর জীবনেই সীমাবদ্ধ নয়।

দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মানুষের জন্য প্রভুর প্রতিনিধিত্বের মর্যাদাজিনদের জন্যও মহা পরীক্ষার বিষয় ছিল। জিনের প্রতিনিধি ইবলিস সে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়। সে চূড়ান্তভাবে শয়তানখেতাব পায় এবং কিয়ামত পর্যন্ত এই অপকর্ম চালিয়ে যাবার অনুমতি পায়। ইবলিস মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা চায় নি। সে মানুষের বিরুদ্ধে শত্রুতা করার ইচ্ছা ও প্রার্থনা করেছে। সে তাই পেয়েছে! তবে, জগতের সব জিন ‘শয়তান’ না। আল-কুরআন থেকে সৎকর্মশীল জিন, আল্লাহর হুদাঅনুসরণকারী জিনদের খবরও আমরা জানতে পারি। জিন কোন কোন ক্ষেত্রে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, তা ইবলিসের কথা থেকেই আমরা জানতে পারি। সে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে স্বীকৃতি দিয়েছিল– 

  • তখন সে বললো- যেহেতু তুমি আমাকে বিপথগামী করলে, তাই আমি তাদের জন্যে তোমার সিরাতুল মুস্তাকিমে ওঁৎ পেতে থাকবো। তারপর আমি আসবো তাদের সামনে থেকে, তাদের পেছন থেকে, তাদের ডানে থেকে এবং তাদের বামে থেকে। ফলে তুমি তাদের অধিকাংশকেই পাবে না শোকরগুজার। {৭:১৬,১৭}

অর্থাৎ এটাই সুস্পষ্ট যে, শয়তানের অপকর্ম মানুষকে সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে বা সরল পথ থেকে দূরে সরানোর সঙ্গে জড়িতে। যেভাবে শয়তান ছিটকে পড়েছে সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে, সে মানুষকেও সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে সরিয়ে দিতে চায়।

তার চক্রান্ত সত্যিই ভয়াবহ। জিন-শয়তান বলেনি যে, সে মানুষের ইবাদত বা প্রার্থনার কাজকর্ম বন্ধ করে দেবে বা আল্লাহর স্মরণ থেকে ভুলিয়ে দেবে। সে সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছে- রবের হুদা বা গাইডলাইন থেকে বা সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে মানুষকে টেনে বের করে ছাড়বে। যেভাবে সে প্রাথমিক পর্যায়ে সফল হয়েছিল আল্লাহর সান্নিধ্যে থাকা আদম আলাইহিমুস সালামের ক্ষেত্রে।

এজন্য সার্বাগ্রে আমাদের জানা উচিত– সিরাতুল মুস্তাকিম কি? কি কি কাজ করলে একজন মানুষ ‘সিরাতুল মুস্তাকিমে’ থাকতে পারে। সেসব কাজ থেকে মানুষকে দূরে সরানোর জন্য কোটি কোটি বছর ধরে চেষ্টা করছে জিন-শয়তান! সেসব কাজ সম্পর্কে জানতে পারলেই বোঝা যাবে- শয়তান আমাদেরকে ‘সিরাতুল মুস্তাকিম’ থেকে ইতোমধ্যে সরিয়ে ফেলেছে কিনা!

তৃতীয় উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- আদমকে (মানুষকে) পৃথিবীর যমিনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েই তাকে খিলাফত বা প্রতিনিধিত্বের মর্যাদা দেওয়া হয়। ফেরেশতারাও ফ্যাসাদ ও রক্তপাতের আশঙ্কা করে। পৃথিবীতে পাঠানোর আগে আদম-দম্পতিদের জান্নাতে রাখা হয়। সেখানে জিন-শয়তান ও মানুষের একটা দুর্দান্ত ঘটনা বা পরীক্ষা ঘটে। কীভাবে ইবলিস শয়তান মানুষকে জান্নাতের পরিবেশেও সৃষ্টিকর্তার হুকুম মান্য করা থেকে বিভ্রান্ত করে- তা দেখা যায়। সে বন্ধুবেশে- কল্যাণকামী সেজে মানুষকে আল্লাহর বিধান অমান্য করতে উসকানি দেয়। জান্নাতে আদম-দম্পতির জন্য একটিই হুকুম ছিল। তা হলো-

  • তোমরা এই গাছটির কাছেও যেয়ো না, গেলে তোমরা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে। {৭:১৯}

সেই একটি হুকুম মানার ক্ষেত্রেও মানুষকে বাধা দেয় জিন-শয়তান। তারপর মানুষ (আদম আ.) ভুল করে ফেলেন। মহাজগতের প্রভু জিজ্ঞেস করেন- “আমি কি তোমাদেরকে এই গাছটির কাছে যেতে নিষেধ করিনিআমি কি বলিনি শয়তান তোমাদের সুস্পষ্ট দুশমন?{৭:২২} জবাবে তারা (মানুষ) বলে- “আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের প্রতি যুলুম করেছি। এখন আপনি যদি আমাদের ক্ষমা না করেন, দয়া না করেনআমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বো।” {৭:২৩}তখন তিনি তার তওবা কবুল করে নেন; কারণ তিনিই তো তওবা কবুলকারী অতীব দয়াময়।{২:৩৭}

মহান রব্বুল আলামিন মানুষকে ক্ষমা করে দেন। কারণ, মানুষ ক্ষমা চাওয়া শিখেছিল এবং ক্ষমা চেয়েছিল। ক্ষমা করে দেওয়ার পর মানুষ (আদম) ফের নিষ্পাপ হয়ে যায়। তারপর সামাওয়াত ওয়াল আরদের মধ্যে ছোট্ট একটি অংশ- পৃথিবীর যমিনে পদার্পণ হয় মানুষের। সঙ্গে আসে জিন-শয়তান। পাশাপাশি, আল্লাহ মানুষের জন্য পাঠিয়ে দেন হুদাবা পথ-নির্দেশ। তাতে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে- সিরাতুল মুস্তাকিম কোন পথ। কোন পথে ফিরে যেতে হবে জান্নাতে। কোন কোন কাজ সঠিকভাবে করতে পারলে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হওয়া যাবে। কীভাবে জীবন যাপন করলে দুনিয়াতে সুন্দর জীবন ও আখিরাতের পুরস্কার নিশ্চিত হবে–এরকম অনেক অনেক সুস্পষ্ট বিষয়।

পৃথিবীতে মানুষের আগমন কোনোভাবেই পিতা আদম আ. বা জান্নাতে মানুষদের ভুলের পরিণতি নয়।কারণ, ‘সামাওয়াত ওয়াল আরদের’ (মহাবিশ্বের) যমিনে প্রতিনিধির মর্যাদা দিয়েই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সে কথা কুরআনের আয়াত থেকে সুস্পষ্ট। পৃথিবীতে আসার আগে কিছুকাল জান্নাতে থাকার সুযোগ পায় মানুষ। সেটা বিরাট সৌভাগ্য ছিল। যেমনটা আগেই বলা হয়েছে- জান্নাতের উপযোগী করেই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই যখন পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তখন পৃথিবীকেও (এখানকার সময় অনুযায়ী) কোটি কোটি বছর ধরে প্রস্তুত করা হয় মানুষের বসবাসের উপযোগী করে। নীল আকাশ, সুপেয় পানি, পাখির কলকাকলিসবুজ গাছগাছালি, জলে-স্থলে অফুরান খাদ্যভাণ্ডার, রাতের নক্ষত্র শোভিত আকাশ ইত্যাদি নানা ব্যবস্থা। এসব নিয়ামতের কোনটাই বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। সব সুযোগ সুবিধা জান্নাতের সুযোগ সুবিধার সর্বনিম্নতম অংশের চেয়েও অনেক কম (যা তুলনা করা যায় না)। নিঃসীম অন্ধকার মহাকাশে বিলিয়ন-ট্রিলিয়ন নক্ষত্র মানুষ দেখতে পেলেও, কোথাও পৃথিবীর মতো উপযুক্ত গ্রহ খুঁজে পাওয়া যায় নি! মানুষের বসবাস উপযোগী একটি নেয়ামত‘ কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি। অথচ, প্রাণ ধারণ ও প্রাণের বিকাশে প্রয়োজন লক্ষ কোটি মিলিয়ন বিলিয়ন নেয়ামত‘ বা ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’

শেষ প্রশ্ন: মানুষের শেষ পরিণতি কি

আল্লাহ জানিয়েছেন:

তোমরা দৌড়ে এসো তোমাদের প্রভুর ক্ষমার দিকে এবং সেই জান্নাতের দিকে যার প্রশস্ততা মহাকাশ এবং পৃথিবীর মতো; তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্যে {৩:১৩৩}

এটিই মানুষের প্রধান লক্ষ্য। জান্নাত পরবর্তী সময় কী হবে? তার ধারণা আল্লাহ দেন নি। এর অন্যতম একটি কারণ হতে পারে- বিষয়টি উপলব্ধি করা মানুষের পক্ষে সম্ভব না। বাস্তবতা হলো পৃথিবী পরবর্তী গন্তব্য (জান্নাত-জাহান্নাম) সম্পর্কেই মানুষ সঠিক ধারণা করতে পারে না। স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে বুঝিয়েছেন নানা রকম উদাহরণদিয়ে- যাতে মানুষের মনে হয়- কিছুটা বোঝা গেল! তাহলে জান্নাত-জাহান্নাম পরবর্তী সময়এই ধারণা মানুষ কীভাবে করবে। তবে যেহেতু আল্লাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন- সেহেতু আমরা বিশ্বাস করলাম, মেনে নিলাম, বিনীত হলাম, অনুগত হলাম।

  • দুর্ভাগারা থাকবে জাহান্নামে; সেখানে তাদের জন্যে থাকবে শুধু চিৎকার, আর্তনাদ! সেখানেই স্থায়ীভাবে থাকবে তারা- যতদিন মহাকাশ ও যমিন-সমূহ বিদ্যমান থাকবেযদি না তোমার প্রভু ভিন্ন কিছু চান। নিশ্চয়ই তোমার প্রভু যা চান তাই করেন।
    আর যারা সৌভাগ্যবান- তারা থাকবে জান্নাতে; চিরকাল তারা সেখানে থাকবে; যতদিন থাকবে মহাকাশ ও যমিন-সমূহ; যদি না তোমার প্রভু ভিন্ন কিছু চান। এ এক অনন্ত অবিরাম পুরস্কার। 
     {১১:১০৬,১০৭,১০৮}

  • যারা ঈমান আনে ও আমলে সালেহ করে- তাদের আতিথ্যের জন্যে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস; চিরদিন থাকবে তারা সেখানে। তারা সেখান থেকে স্থানান্তর হতে চাইবে না {১৮:১০৭,১০৮}

প্রশ্ন হলো- জান্নাত তো অনন্ত অবিরাম অফুরন্ত পুরস্কার। সেখান থেকে স্থানান্তরের কথা আসল কেন? রব্বুল আলামিন একটি শব্দও অপ্রয়োজনে বলেন না। এই ঘটনাটিও ঘটবে। নিশ্চয়ই জান্নাত পরবর্তী জীবনে ভিন্ন কোনও ব্যব্স্থা করবেন তিনি। কিন্তু, নেয়ামত প্রাপ্তরা সেখান থেকে বের হতে চাইবে না। দুনিয়ার সুখ শান্তি ও স্বচ্ছন্দের জীবন থেকেই মানুষ বের হতে চায় না ! আর সেই অকল্পনীয় আনন্দের মহা-বিস্ময়কর সমৃদ্ধির জান্নাত থেকে বের হওয়ার চিন্তা করার সুযোগও মানুষের থাকবে না।

পৃথিবীর স্বল্প মেয়াদী জীবনে নির্দিষ্ট সময়ের পাপ কর্মের জন্য অনন্তকালঅসীম সময় জাহান্নামে তিনি মানুষকে শাস্তি দেবেনএই প্রশ্ন চিন্তাশীল যে কেউ করতেই পারে। অথবাপৃথিবীতে নির্দিষ্ট সময়ের ভালো কাজের জন্য জান্নাতের সীমাহীন বা অসীম সময় মানুষ পুরস্কার পেতে থাকবেসেই চিন্তাও আসতে পারে। 

তবে- এটি অসীম হলেও আল্লাহর রাজ্যে কোনও কিছুই কমবে না, শেষ হবে না। মানুষের কোনও দুশ্চিন্তা নেই। আমরা শুধু বলছি- মহাজগতের প্রভু আমাদের একটু ইঙ্গিত দিয়েছেন মাত্র। বিস্তারিত বিষয় পরবর্তী জীবনের অধ্যায়ে জানা যাবে নিশ্চয়ই।

রব্বুল আলামিনের এই বিশাল সৃষ্টিকর্মের সঙ্গে মানুষের ভূমিকা রয়েছে। তার সঙ্গে খিলাফতের মর্যাদা জড়িত, মানুষের ইবাদতের স্বাধীনতা শক্তিশালীভাবে জড়িত- এটাও আমরা ধারণা করতে পারি। কারণ, এই বৈশিষ্ট্যগুলোই ফেরেশতা বা জিন জাতি থেকে মানুষকে আলাদা বৈশিষ্ট্যময় করেছে। এই বিষয় এবং এরকম অসংখ্য বিষয়- শুধুমাত্র আল্লাহ জানেন- অন্য কেউ জানে না।

পরিশেষে আমরা বলতে পারি, মহান রব্বুল আলামিন পৃথিবীতে ভালো ও মন্দ মানুষগুলো বাছাই করছেন। প্রতিটি ‘মানুষ’-এর সঙ্গে জড়িত তার নফস ও রুহ। মানুষ স্রষ্টার কাছ থেকে এসেছে, আবার সেখানেই ফিরে যাবে। সঠিকভাবে, সঠিক পথ ধরে তাঁর কাছে ফিরে যাবার জন্য ‘হুদা’ বা পথনির্দেশ দিয়েছেন তিনি। জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ড সেই নির্দেশনার আলোকে পরিচালিত করতে হবে। বিশেষ করে- তাঁর প্রতি বিশ্বাস এবং সেই বিশ্বাসের আলোকে নানা কর্মকাণ্ড যাচাই বাছাই করার যোগ্যতাকে সমৃদ্ধ করতে হবে। তাহলেই পরকালীন মুক্তির পথ সুষ্ঠু হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *