জিন-সমগ্র (প্রথম পর্ব)
মহান আল্লাহ মানবজাতি ও জিন-জাতি সৃষ্টি করেছেন। মহাগ্রন্থ আল-কুর’আনে বহুবার জিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের সৃষ্টি করা, মহাবিশ্ব ধ্বংসের সময় (কিয়ামত) জিনদের কাজের হিসাব নেওয়া ও শাস্তির কথাও বলা হয়েছে। এ অবস্থায় সৃষ্টিকর্তার কাছে আত্মসমর্পনকারী ভালো মানুষ অদৃশ্য জিনের ওপর স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বাস করে। এই বিশ্বাস জরুরিও বটে। কারণ, জিনদের মধ্যে একটি দল আছে যারা শয়তান (devil)। এরা মানুষের শত্রু। খারাপ জিন মানুষের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দেয় এবং ভালো চরিত্রের সব মানুষের বিরুদ্ধে (against all good human being) কাজ করে। তাই, এসব অশুভ জিনদের (Devil Jinn) আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য জিন সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান থাকা জরুরি।
অদৃশ্য প্রাণী জিন সম্পর্কে কীভাবে জানতে পারব? মানুষ এখনও অদৃশ্য কোনও অস্তিত্ব বা এলিয়েন (Alien) খুঁজে পায়নি। তাহলে যিনি মানবজাতিকে জানিয়েছেন যে- তিনি জিন সৃষ্টি করেছেন, অবশ্যই, তাঁর কাছ থেকেই প্রথমত জানতে হবে। তারপর, তাঁর দেওয়া তথ্যকে প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক ধারনা দিয়ে ব্যাখ্যা করে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে, মানুষের জন্য যতটুকু জানা প্রয়োজন, ততটুকু তথ্য অদৃশ্য মহাজাগতিক প্রাণী ‘জিনের’ স্রষ্টা আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে তাঁর পাঠানো কিতাবে জানিয়ে দিয়েছেন। এই প্রবন্ধে সেসব তথ্য উদঘাটন করা হবে এবং জগৎবিখ্যাত বিজ্ঞানীদের ধারণা দিয়েও তা যাচাই করা হবে।
দ্বিতীয় বিষয় হলো- একজন মানুষের চূড়ান্ত সফলতা বা জান্নাত লাভের জন্য জিনজাতির প্রতি বিশ্বাস করা মৌলিক কোনও শর্ত নয়। যেখানে মহাগ্রন্থ আল-কুর’আনে সুস্পষ্ট সুসংবাদ দিয়ে বলা হয়েছে-
- নিঃসন্দেহে যারা বলে- আমাদের রব (লালন-পালন-রক্ষাকর্তা) হলেন আল্লাহ, তারপর এ কথার ওপর অটল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা পাঠানো হয়; ভয় পেওনা দুশ্চিন্তা কোরো না; আর জান্নাতের সুসংবাদ নাও- যা তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। {৪১:৩০}
সুরা ফুসসিলাতে (৪১) বিচারদিবস/ আইনদিবস/ কিয়ামতের একটি ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। সেসময় একদল কাফির (অস্বীকারকারী) আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলবে- আমাদের প্রভু, জিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল তাদের দেখিয়ে দিন- আমরা তাদের পদদলিত করে অপদস্থ করতে চাই।
এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পরই মহান আল্লাহ মানবজাতিকে সুসংবাদ দিলেন। পৃথিবীতে যারা বলে- আল্লাহ আমার রব (রব্বুনাল্লাহ) তারপর (ছুম্মা) এই কথার ওপর দৃঢ়ভাবে থাকে (আসতাকমু), তাদের জন্যই জান্নাতের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তাই কোনও ভয় নেই, দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এই প্রবন্ধে আমরা যা জানার চেষ্টা করব-
১. জিনের সৃষ্টি
২. জিনের বৈশিষ্ট্য
৩. জিনের বাসস্থান
৪. জিনের কিছু ক্ষমতা
৫. মানুষের সঙ্গে জিনের যোগাযোগ (!) কীভাবে ?
৬. নফসের সুরক্ষা
৭. জিনের শেষ পরিণতি ও এলিয়েন সমাচার
৮. পরিশিষ্ট (রেফারেন্স)
১. জিনের সৃষ্টি
‘আল-জিন’ (ٱلۡجِنِّ) শব্দটি আরবি হরফ (ج ن ن) থেকে উদ্ভুত। গোটা কিতাবজুড়ে ج ن ن– দিয়ে ৮ ধরনের শব্দ পাওয়া যায়। যেমন- আজিন্নাতুন أَجِنَّةٞ (fetus (noun) ভ্রুণ), জান্না- جَنَّ (cover (verb transitive) ঢেকে দেওয়া; ঢেকে ফেলা; আড়াল করা; লুকিয়ে ফেলা), জিন্নাতিন جِنَّةٍ (madness (noun) [uncountable noun] পাগলামি), মাজনুন مَجۡنُونٞ (mad পাগল; মানসিক রোগী), আল জিন্না ٱلۡجِنَّ(jinn / genie English definition [জীনি] (noun) (আরব্য কাহিনি) আশ্চর্য ক্ষমতাসম্পন্ন জিন বা দৈত্য), জান্নাতিন جَنَّـٰت (heaven স্বর্গ; স্বর্গলোক; জান্নাত; পরলোক; লোকান্তর; আকাশ; গগন্; অন্তরীক্ষ; নভ; ব্যোম)
সর্বমোট ১৯৬টি আয়াতে ২০১ বার পাওয়া গেছে এই শব্দগুলো।
উল্লেখযোগ্য একটি সাদৃশ্য হলো- বিভিন্ন ধরনের শব্দ বা বিষয়ের মধ্যে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য বা মিল আছে। তা হলো- সবগুলোই হলো গোপন বা অদৃশ্য। মানুষ দেখতে পারে না। তা গোপন থাকে। মাতৃগর্ভের ভ্রুণ দেখা যায় না; জান্না মানেই হলো আড়াল করা, পাগল যে পাগলামি করে, সে তার মানবিকতা/ মনুষ্যত্ব/ স্বাভাবিক চরিত্র গোপন করে ফেলে; জান্নাত বা স্বর্গও দেখা যায় না; তেমনি জিনও আছে- কিন্তু দেখা যায় না। কেন? তার একটা অন্যতম কারণ হতে পারে, জিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে- অদৃশ্য কোনও পদার্থ দিয়ে। মানুষ্য দৃশ্যমান পদার্থ বা উপাদান দিয়ে তৈরি; তাই মানুষ দেখা যায়।
وَالْجَانَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِننَّارِ ٱلسَّمُومِ
- And the jinn We created before from scorching fire.
- আমরা আল-জিন তৈরি করেছি আগে আগুনের প্রচণ্ড উত্তাপ থেকে। {১৫:২৭}
وَخَلَقَ ٱلْجَآنَّ مِن مَّارِجٍ مِّن نَّارٍ
- And He created the jinn from a smokeless flame of fire.
- আর তিনি জিন তৈরি করেছেন আগুনের ধোঁয়াহীন দাবদাহ/প্রচণ্ড উত্তাপ থেকে। {৫৫:১৫}
এই দুটি আয়াতে জিনদের সৃষ্টির উপাদান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তাহলো- প্রচণ্ড উত্তাপ বা তাপ। মানুষ তাপ বুঝতে পারে ও মাপতে পারে, নির্দিষ্ট আবদ্ধ স্থানে তাপমাত্র ধরেও রাখতে পারে। তাহলে জিন কি আসলেই তাপ থেকে তৈরি হয়েছে? ‘উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়’ ঝগড়া-ঝাটির সময়ও যে পরিস্থিতি তৈরি হয়- তাকেও আমরা ‘তপ্ত বাক্য’ বলে থাকি। সূর্য তাপ বিকিরণ করে। কিন্তু দেখা যায় আলো, আর পরিমাপ করা যায় তাপমাত্র।
হতে পারে, জিন সৃষ্টির উপাদান এমন এক ধরণের প্রচণ্ড উত্তাপ; যা টের পাওয়া যায় না ও পরিমাপও করা যায় না। আর যদি সেই অদৃশ্য ও অপরিমাপযোগ্য ‘তাপ’ দিয়ে প্রাণী বানানো হয়- তাকে দেখাও যাবে না। সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের মহাবিশ্বে এমন কোনও তাপ বা শক্তি (energy) কি আছে? উত্তর হলো আছে।
জিন যদি পরিমাপ করা যায় এমন শক্তি (তাপ) দিয়ে তৈরি হতো তাহলে আশে পাশে জিন থাকলে মানুষের টের পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মানুষ কখনোই তা টের পায় না। ধারণা করা যায়, আল-কুর’আনের আয়াতের সঠিক অর্থ মানুষ বুঝতে পারে নি।
এর একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা আছে। দৃশ্যমান মহাবিশ্বের (visible universe) এক ধরণের তাপ সম্পর্কে মানুষ জানে– যা পরিমাণ করা যায়। আরেক ধরনের শক্তি (energy) আছে- যা পরিমাপ করা যায় না, ধরা-ছোঁয়া যায় না। সেই তাপ উৎপন্ন হয় বা সংযুক্ত থাকে মহাকাশের ব্ল্যাক হোলের (black hole) সঙ্গে)!
وَالْجَانَّ خَلَقْنَاهُ مِن قَبْلُ مِننَّارِ ٱلسَّمُومِ
And the jinn We created before from scorching fire.
আমরা আগে জিন তৈরি করেছি আগুনের প্রচণ্ড উত্তাপ থেকে। {১৫:২৭}
وَخَلَقَ ٱلْجَآنَّ مِن مَّارِجٍ مِّن نَّارٍ
And He created the jinn from a smokeless flame of fire.
আর তিনি জিন তৈরি করেছেন আগুনের ধোঁয়াহীন দাবদাহ থেকে/ আগুনের মিশ্রণ থেকে। {৫৫:১৫}
And the jinn We created before from scorching fire.
আগুনের প্রচণ্ড উত্তাপ, আগুনের দাবদাহ- ইত্যাদি হলো প্রচলিত অনুবাদ; যা আমরা আগে উল্লেখ করেছি।
এখানে একটি আয়াতের গুরুত্বপূর্ণ শব্দ হলো ٱلسَّمُوم সামুমি। আরবি শব্দ ‘সামুমি’র একটি অর্থ- ‘গর্ত’ বা hole।
তবে, সাধারণত একে ইংরেজিতে scorching বা ‘ঝলসানো’ হিসাবে অনুবাদ করা হয়। যেমন, কুর’আনেই বলা হয়েছে সুচের ছিদ্র বা সাম্মি (سَمِّ) {৭:৪০}।
তাহলে এই আয়াতের সঠিক অর্থ হতে পারে–
- আর জিন- আগে আমি সৃষ্টি করেছিলাম গর্তের আগুন থেকে। {১৫:২৭}
- And the Jinn I’ve created before from the FIRE of HOLE. {15:27}
আর উপরের আয়াতে ‘গর্ত’ মানে ‘ব্ল্যাক হোল’ বা কৃষ্ণগহ্বর। (সামুমির অর্থ গর্ত, দারুণ এই তথ্যটি দিয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জনাব জাকারিয়া কামাল। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা।)
- যারা আমার নিদর্শন/বক্তব্য (بِاٰيٰتِنَا) নিয়ে মিথ্যারোপ করে (كَذَّبُوا۟) এবং তাতে অহংকার করে (اسْتَكْبَرُوْا عَنْهَا), তাদের জন্যে আকাশের দরজা (اَبْوَابُ السَّمَاۤءِ) খোলা হবে না (لَا تُفَتَّحُ) এবং তারা জান্নাতে যেতে পারবে না (وَلَا يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ)- যতক্ষণ পর্যন্ত (حَتّٰى) উট না ঢুকবে (يَلِجَ الْجَمَلُ) সুচের ছিদ্র দিয়ে (فِيْ سَمِّ الْخِيَاطِ); আর এভাবেই আমি প্রতিফল দেই (وَكَذٰلِكَ نَجْزِى) অপরাধীদের (ٱلْمُجْرِمِينَ)। {৭:৪০}
এতদিন আমরা জেনেছি, যারা আল্লাহর আয়াতে মিথ্যারোপ করে, প্রত্যাখ্যান করে, বিরুদ্ধাচরণ করে—তারা কাফের এবং তারা জাহান্নামি। তবে, তার জন্যও আল্লাহ শর্ত দিয়ে বলছেন, ‘সুচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করার‘ শর্ত পূর্ণ হলেই কেবল ওইসব জাহান্নামিদের জন্য আকাশের বাধা (দরজা) খুলে দেওয়া হবে; যা দিয়ে জান্নাতে যেতে পারবে।
কীভাবে সুচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করতে পারে? শুধু উটই নয়, ব্ল্যাক হোলের গ্রাভিটেশনাল ফোর্সের টানে বিশালাকার কঠিন-পাথুরে বস্তু/ গ্রহ-নক্ষত্র- প্রচণ্ড চাপে ও তাপে- ভর (mass) সংকুচিত হয়ে- সরু ও সুতার মতো দীর্ঘ হয়ে- ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ-গহ্বরে গিয়ে পড়ে। চলে যায় অন্য কোথাও; অন্য এক জগতে!
জানা যায়, একটি ব্ল্যাক হোল প্রচণ্ড তাপ, চাপ ও ঘর্ষণের ফলে পরমাণু ভেঙে ফেলার মাধ্যমে ‘অ্যাক্রিশন ডিস্কে’ {অ্যাক্রিশন ডিস্ক: a rotating disk of matter formed by accretion around a massive body (such as a black hole) under the influence of gravitation.} আগুন তৈরি হয়। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের ধারণা অনুযায়ী, ভেঙে যাওয়া কণাগুলি মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র (gravitational field) থেকে শক্তি অর্জন করে এবং অ্যাক্রিশন ডিস্কে ঘুরতে থাকে। বিপরীত গতিসম্পন্ন অ্যান্টি-কণা (anti-particles) ব্ল্যাক হোলে গিয়ে পড়ে। পরস্পর বিপরীত কণার বিক্রিয়ায় বিস্ফোরণ হয় এবং ব্ল্যাক হোলে শক্তি ও তাপ তৈরি হয়। এভাবে চলতেই থাকে।
অর্থাৎ, একটি ব্ল্যাক হোল অ্যান্টি-ম্যাটারের বিশাল ভাণ্ডার। সুতরাং, উপরের আয়াতে, ‘গর্তের আগুন’ অর্থ ‘অ্যান্টি ম্যাটার’ বা ‘প্রতি পদার্থ’।
আর একমাত্র অ্যান্টি ম্যাটারের তৈরি প্রাণী হবার কারণেই ম্যাটারের তৈরি প্রাণী বা মানুষের সঙ্গে তার কখনও স্পর্শ হতে পারে না। একে অপরকে ভেদ করে চলে যায় কিন্তু স্পর্শ করতে পারে না।
আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির প্রায় ৯৬ ভাগই হলো ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি। একই ‘মহাকর্ষ বল’ (gravitational force) ম্যাটার ও অ্যান্টি ম্যাটারের তৈরি বিশ্ব বা universe-কে ধরে রেখেছে। এভাবে, দৃশ্যমান পদার্থ এবং অদৃশ্য পদার্থের তৈরি দুটি ভিন্ন মাত্রার জগতের সংযোগ তৈরি করে রেখেছে ব্ল্যাক হোল। তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন যে– প্রতিটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রেই রয়েছে ব্ল্যাকহোল। যা অ্যান্টি ম্যাটারের তৈরি ৫/৬ গুণ বড় অ্যান্টি-গ্যালাক্সি ধারণ করতে পারে।
আধুনিক বিজ্ঞানীরাও একই ধারণা করছেন। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বলেন-
“We now know that every particle has an anti-particle, with which it can annihilate (In case of the force carrying particles, the antiparticles are the same as the particles themselves). There could be whole anti-world and anti-people made out of anti-particles. However, if you meet your anti-self, do not shake hands! You would both vanish in a great flash of light.”
– A Brief History of Time by Stephen Hawking.
“However, we know that the universe must also contain what is called dark matter, which we cannot observe directly- One piece of evidence for this dark matter comes from spiral galaxies. These are enormous pancake-shaped collections of stars and gas. We observe that they are rotating about their centers, but the rate of rotation is sufficiently high that they would fly apart if they contained only the stars and gas that we observe. There must be some unseen form of matter whose gravitational attraction is great enough to hold the galaxies together as they rotate.”
– Black Holes and Baby Universes by Stephen Hawking.
“Another piece of evidence for dark matter comes from clusters of galaxies. We observe that galaxies are not uniformly distributed throughout the space; they are gathered together in clusters that range from a few galaxies to millions. Presumably, these clusters are formed because the galaxies attract each other into groups. However, we can measure the speeds at which individual galaxies are moving in these clusters. We find they are so high that the clusters would fly apart unless they were held together by gravitational attraction. The mass required is considerably greater than the masses of all the galaxies. This is the case even if we take the galaxies to have the masses required to hold themselves together as they rotate. It follows, therefore, that there must be extra dark matter present in clusters of galaxies outside the galaxies that we see.”
– Black Holes and Baby Universes by Stephen Hawking.
হকিং তার চিন্তা গবেষণায় নিশ্চিত হয়েছেন যে- অ্যান্টি ম্যাটার দিয়ে তৈরি অ্যান্টি পৃথিবী, অ্যান্টি মানুষ থাকতেই পারে। এটা যুক্তির কথা। কোনও কল্পবিজ্ঞান নয়। যদি অ্যান্টি-মানুষের ধারণা বৈজ্ঞানিক হয়, তাহলে কুর’আনে উল্লেখ করা জিনের ধারণা অবৈজ্ঞানিক হয় কীভাবে! যে মহাবিশ্বে ম্যাটার বা পদার্থের চেয়েও পাঁচগুণ বেশি ডার্ক ম্যাটার আছে, সেই মহাবিশ্বে ডার্ক-ম্যাটার বা অ্যান্টি-ম্যাটারের তৈরি প্রাণী থাকাই স্বাভাবিক। ম্যাটার (অণু-পরমাণু) দিয়ে যদি প্রাণী হয়, অ্যান্টি ম্যাটার দিয়ে কেন প্রাণী হতে পারে না!
উল্লেখ্য, অ্যান্টি-ম্যাটার হল এক ধরনের ডার্ক ম্যাটার।
মূলত, এই মহাবিশ্ব হলো জিনদের (অনুরূপ প্রাণীদের) আরামদায়ক বাসস্থান; যাদেরকে অ্যান্টি-ম্যাটার (‘গর্তের আগুন’ / ব্ল্যাক হোল) থেকে তৈরি করা হয়েছে। তারা পৃথিবী-বান্ধব প্রাণী নয়; তারা মহাকাশের সন্তান। জিনরাই এই মহাবিশ্বের প্রধান অধিবাসী।
- …আমি অবশ্যই জাহান্নাম ভরবো (لَاَمْلَـَٔنَّ جَهَنَّمَ) জিন ও মানুষ থেকে/দিয়ে একত্রে (أَجْمَعِينَ)।{১১:১১৯}
- …আমি অবশ্যই জাহান্নাম ভরবো (لَاَمْلَـَٔنَّ جَهَنَّمَ) জিন ও মানুষ থেকে/দিয়ে একত্রে (أَجْمَعِينَ)। {৩২:১৩}
- আর নিঃসন্দেহে আমি বহুগুণে বাড়িয়েছি (ذَرَأْنَا) জাহান্নামের জন্য (لِجَهَنَّمَ) জিন ও মানুষের মধ্যে অনেককে; তাদের অন্তর আছে (قُلُوبٌ), তবে তা দিয়ে তারা উপলব্ধি করেনা (لَّا يَفْقَهُوْنَ); এবং তাদের চোখ আছে (اَعْيُنٌ), তবে তা দিয়ে তারা দেখে না (لَّا يُبْصِرُوْنَ); আর তাদের কান আছে (اٰذَانٌ), তবে তা দিয়ে তারা শোনে না (لَّا يَسْمَعُوْنَ); তারা পশুর মতো- তার চেয়েও বিভ্রান্ত; তারাই ওরা- যারা উদাসীন (ٱلْغَٰفِلُونَ)। {৭:১৭৯}
একইভাবে ‘বিগ ক্রাঞ্চ’ বা ‘দ্বিতীয় নতুন শুরুর’ পর গড়ে ওঠা মহাবিশ্ব পুনরায় জিন ও ইনস্ বা মানুষ দিয়ে পূর্ণ করা হবে। আর ইনস্ বা মানুষ হবে তারা- যারা বর্তমান দুনিয়ায় স্রষ্টার পরীক্ষায় ব্যর্থ হবে। অবশ্যই তখন মানুষ বর্তমানের মতো নাজুক দেহধারী বা ম্যাটারের তৈরি দেহ হবে না। বরং, কিয়ামতের পুনরুত্থিত মানুষ হবে নফসের দেহধারী। নফস কি? নফস কীভাবে কাজ করে- তা আগের প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে।